02/08/2025
সন্ধ্যা নামছে। ঢাকার ব্যস্ত রাস্তাগুলো একটু একটু করে ফাঁকা হতে শুরু করেছে। কিন্তু শাহরিয়ারের মনে এখনো সেই সকালটা বাজছে।
আজ তার জীবনের সবচেয়ে কাঙ্খিত পরীক্ষার ফলাফল বেরিয়েছে—BCS।
তিন বছর ধরে পড়াশোনা করে, ঘুমহীন রাত পেরিয়ে, কত স্বপ্ন চোখে বুনে এসেছিলো সে। কিন্তু ফলাফল বলছে, "You are not selected."
মাথার ভেতর যেন শূন্যতা নেমে এসেছে। বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে চায়ের কাপ ধরে আছে, কিন্তু চা ঠান্ডা হয়ে গেছে অনেক আগেই।
মা নরম গলায় বললো,
— "শাহরিয়ার, ফলটা খারাপ হইছে?"
— "হ্যাঁ মা, আরেকবার পারলাম না।"
একটা দীর্ঘ নীরবতা।
তারপর মা বললো,
— "বাবা তুই কি জানিস, আমি তোকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি নাই কখনো চাকরি পাবে কি না। আমি তো চাই তুই ভালো থাক, মানুষ হ, তোর মন যেন ভেঙে না পড়ে।"
এই কথাগুলো যেন ব্যর্থতার চেয়েও বেশি কাঁপিয়ে দিলো তাকে।
---
পরদিন সকালে বন্ধু মিশু ফোন করলো।
— "ভাই, ফেল করছিস, তার মানে তো শেষ না। তোর ভিতরে যা আছে, সেটা তো কোনো এক্সামে পরিমাপ হয় না!"
শাহরিয়ার হাঁফ ছেড়ে একটা নিঃশ্বাস ফেললো। তারপর বললো,
— "মনে হয় এবার একটু নিজের জন্য ভাববো। আমি লেখালিখি ভালোবাসি। হয়তো একটা বই লিখবো। নিজের গল্পটা বলবো, ব্যর্থতার দিনগুলো নিয়ে।"
মিশু হাসলো,
— "ভাই, ব্যর্থতা মানেই তো গল্পের শুরু। Happy ending কেবল সিনেমায় না, জীবনে ও হয়, কিন্তু সেটা একটু লেট করে আসে। তুই লিখ। আমি প্রথম কপি পড়বো।"
---
৬ মাস পরে
“ব্যর্থতার দিনগুলো” নামে একটি আত্মজীবনীমূলক বই প্রকাশ পায়। শাহরিয়ারের নিজের জীবন, নিজের কষ্ট আর ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প তাতে লেখা।
অনেক পাঠক বলেছে,
“এই বইটা পড়ে আমি বাঁচার সাহস পেয়েছি।”
“আমিও একদিন ব্যর্থ ছিলাম, এখন আবার স্বপ্ন দেখি।”
শাহরিয়ার জানে—
ব্যর্থতা কখনোই শেষ নয়। এটা কেবল অন্য এক রাস্তায় পা বাড়ানোর ডাক।
---
শেষ নয়... এটা তো কেবল শুরু।