
07/07/2025
বিকেল সাড়ে পাঁচটা।
লোকাল ট্রেনটা ঠিক সময়ে স্টেশনে ঢুকলো — সাদামাটা একটা স্টেশন, নামটা কেউ কষ্ট করে মনে রাখে না।
কিন্তু কেউ একজন আছে, যে প্রতিদিন ঠিক এই স্টেশনেই এসে দাঁড়ায়।
তার নাম নীরা।
হাতে একটা পুরোনো ডায়েরি, তাতে লেখা —
“সে আসবে। আমি জানি।”
ছোটবেলা থেকে চিঠি লেখে সে, এমন একজনকে যাকে কখনো দেখেনি।
বন্ধুরা হাসে। বলে, “ইন্টারনেটের যুগে তুমি কাকে চিঠি লিখছো?”
নীরা হাসে, কিছু বলে না। তার মন জানে — ভালোবাসা সবসময় দেখতে হয় না, অনুভব করলেই হয়।
অন্যদিকে, একটা ছেলেও আছে — নাম ইহান।
সে কলকাতা থেকে চিঠিগুলোর উত্তর পাঠায় —
একটা পোস্টবক্স থেকে।
সে কোনোদিন জানেনি, সেই মেয়েটি ঠিক কেমন দেখতে, কেমন হেসে উঠে, কিংবা কীভাবে বারান্দা দিয়ে চাঁদ দেখে।
তবু প্রতিদিন সে উত্তর লেখে —
কারণ ওই অচেনা চিঠিগুলোর মাঝে, সে তার নিজের একটা জীবনের ছায়া খুঁজে পায়।
একদিন, হঠাৎ করে, ইহান সত্যিই ঠিক করলো,
“আজ আমি যাবো। নীরাকে দেখতে।”
স্টেশনে ট্রেন থামে।
নীরার চোখ খোঁজে, বহু চেনা মুখের ভিড়ে একটা অচেনা চোখ।
ইহান নামলো। ব্যাগে পুরোনো সব চিঠি। সামনে দাঁড়ানো মেয়েটার মুখে এক ধরনের নিশ্চিন্তি —
যেন সে জানতো, আজই সেই দিন।
ইহান বললো, “আমি দেরি করে ফেলেছি?”
নীরা হেসে বললো, “ভালোবাসা কখনো দেরি করে না। ও শুধু সময় নিতে জানে।”
ওদের কোনো ছবি নেই।
কিন্তু প্রথমবার দেখা করার দিনটা ঠিক লেখে রাখে,
ডায়েরির পাতায়,
“আজও স্টেশনঘণ্টা বাজলো… ঠিক সময়মতো।”
⸻
তুমিও কি এমন কাউকে অপেক্ষা করো?
যাকে হয়তো কখনো দেখোনি, তবু মনে হয় — সে ঠিক কোনো এক স্টেশনে তোমারই জন্য নামবে?