29/06/2022
#গোমাতার মহিমা ♥♥
গাভীর আবির্ভাবঃ একসময় অমৃত লাভের ইচ্ছার দেবতা ও অসুর কর্তৃক সমুদ্র মন্থনকালে পাঁচটি গাভী উত্থিত হয়েছিল। তাঁদের নাম সুরভি, নন্দা, সুভদ্রা, সুশীলা ও বহুলা। মহর্ষি জমদাগ্নী,ভরদ্বাজ, বশিষ্ঠ, অসিত ও গৌতম মুনিকে তখন এ গাভীদের সমর্পিত করেছিল। সারা বিশ্বে যত গোবংশ আছে তা পঞ্চ গাভীর সন্তান।
শ্রীকৃষ্ণ গো ব্রাহ্মন হিতায় চ- ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গো এবং ব্রাহ্মনদের হিতকারী। তাই তিনি গো-কুলে আবির্ভূত হন আর গোলকধামে থাকেন। গাভীদের আনন্দ দানের জন্য তার আরেক নাম গোবিন্দ, গাভীদের পালন করার জন্য তার নাম গোপাল।
গাভী সনাতন সংষ্কৃতির মূল আধার। বেদে বলা হয়েছে- মাতরঃ সর্বভূতানাং গাবঃ – গাভী পৃথিবীর সমস্ত প্রানীর জননী। শাস্ত্রে সাত প্রকার মায়ের কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে গাভী মাতাও রয়েছেন। শ্রীল প্রভুপাদ বলেছেন, ব্রাহ্মণেরা হচ্ছেন আধ্যাত্নিক শিক্ষার প্রতীক আর গাভী হচ্ছে সবচেয়ে মুল্যবান খাদ্যের উৎস। বেদে আরও বলা হয়েছে- সর্বে দেবাঃ স্থিতা দেহে সর্বদেবময়ী হি গৌঃ- গাভীর দেহে সমস্ত দেব-দেবীদের বাস হওয়াতে গাভী সর্বদেবময়ী।
গোমাতার প্রনাম মন্ত্রঃ
যয়া সর্বমিদং ব্যাপ্তং জগৎ স্থাবরজঙ্গমম্।
তাং ধেনুং শিরসা বন্দে ভূতভব্যস্য মাতরম্।।
(মহর্ষি বশিষ্ঠ কর্তৃক উপদিষ্ট)
অনুবাদঃ যিনি সমস্ত চরাচর জগৎকে ব্যপ্ত করো রেখেছেন সেই ভূত ও ভবিষ্যতের জননী গোমাতাকে আমি নত মস্তকে প্রনাম করি।
নিবটং গোকুলং যত্র শ্বাসং মুচিত নির্ভয়ম্- গোমাতা যে স্থানে বসে শ্বাস নেয় সেই স্থানের শোভা বৃদ্ধি পায়। গাবো লক্ষ্ম্যাঃ সদা মূলং- গো-মাতা মহালক্ষীর মূল। বৈদিক যুগে সব থেকে ধনী তাকে বলা হতো যার যত গাভী ছিলো। নন্দ মহারাজের নয় লক্ষ গাভী এবং বৃষভানু রাজার ১২ লক্ষ গাভী ছিল।
পদ্মপুরাণ ভবিষ্য পুরাণ, স্কন্দ পুরাণ, ব্রহ্মাণ্ড পুরান ও মহাভারতে গাভীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে দেব-দেবীর স্থিতির বর্ননা রয়েছে। গাভীর মস্তকে ব্রহ্মা,ললাটে মহাদেব,উদরে কার্তিক, নেত্রে চন্দ্র ও সূর্য,জিহ্বাতে বরুণ, স্বরে সরস্বতী,গোবরে শ্রীলক্ষী, মূত্রে গঙ্গা। অথর্ব বেদে বলা হয়েছে গাভীই ভাগ্য আর গাভীই ঐশ্বর্য- ৪/২১/৫
দানের মধ্য শ্রেষ্ট দান হলো গাভী দান। পুন্যও পবিত্রে ত্রিলোকের মধ্যে কিছু নেই। গাভীদের স্থান দেবতাদের উপরে। তাই বসুন্ধরা নিজের সুরক্ষার জন্য ত্রিলোক ঘুরে গাভীতে আশ্রয় গ্রহন করেন। গাভী দান করে মনিষীরা স্বর্গে গমন করেন- ভীষ্মদেব