29/06/2025
সার্বিক ভিসা ইস্যু নিয়ে নয়, বাংলাদেশ সরকারের উচিত সুনির্দিষ্টভাবে প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের প্রতিষ্ঠানের জন্য কর্মী ভিসা চালুর দাবি তোলা
সংযুক্ত আরব আমিরাতে (UAE) প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য কর্মসংস্থানের বড় একটি ক্ষেত্র দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। প্রায় ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য worker ক্যাটাগরির নতুন ভিসা কার্যত বন্ধ রয়েছে। ফলে এখানে বসবাসরত অসংখ্য প্রবাসী ব্যবসায়ী, যারা রেস্টুরেন্ট, ক্লিনিং কোম্পানি, গ্রোসারি, ওয়ার্কশপ বা কন্ট্রাক্টিং ব্যবসা গড়ে তুলেছেন, তারা কর্মী সংকটে ভুগছেন এবং অনেকেই বাধ্য হয়ে ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন।
এই সংকট শুধু ব্যক্তি পর্যায়ে ক্ষতি নয়, বরং রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির জন্যও ভয়াবহ। দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ, এবং প্রবাসী বিনিয়োগের সুরক্ষা সবই এই সমস্যা দ্বারা আক্রান্ত হচ্ছে।
আমাদের বিশ্বাস, বাংলাদেশ সরকার যতবারই UAE সরকারের সঙ্গে ভিসা সংক্রান্ত আলোচনায় বসেছে, সেটি সামগ্রিক ভিসা ইস্যু কে কেন্দ্র করে হয়েছে—যার ফলাফল প্রায়শই আশানুরূপ হয়নি। কারণ হিসেবে দেখা গেছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তথ্য, পরিসংখ্যান বা প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে। অপরদিকে, UAE এর পক্ষ খুব সহজেই একটি পরিচিত অভিযোগ তুলে দেয়—"বাংলাদেশ থেকে কেউ ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার ভিসা নিয়ে এসে ক্লিনারের কাজ করছে, তোমাদের সার্টিফিকেট নকল।"
এই একক উদাহরণ পুরো আলোচনার গতিপথ ঘুরিয়ে দেয়। বাংলাদেশের আলোচকরা তখন বিতর্কে দুর্বল হয়ে পড়েন এবং আলোচনা ফলপ্রসূ হয় না।
কিন্তু আমরা যদি কৌশল পরিবর্তন করি এবং আবেগ নয়, যুক্তি ও বাস্তবতার ভিত্তিতে দাবি তুলি, তাহলে হয়তোবা খুলে যেতে পারে।
বাংলাদেশের উচিত সুনির্দিষ্টভাবে এই দাবি তোলা—
যেসব ব্যবসা প্রবাসী বাংলাদেশিদের মালিকানাধীন, সেসব প্রতিষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশি কর্মী ভিসা চালু করা হোক। এটা কোনো আবেগ বা অনুরোধ নয় — এটা যৌক্তিক অধিকার। প্রত্যেক দেশের সরকার তার দেশের নাগরিকএর host দেশে বিনিয়োগ এর সুরক্ষা দিতে কাজ করে.
কারণ, প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধভাবে অর্থ খরচ করে ব্যবসা খুলেছেন, অথচ কর্মী আনতে না পারায় তারা ব্যবসা চালাতে পারছেন না। এতে বিনিয়োগ নষ্ট হচ্ছে, কর্মসংস্থান নষ্ট হচ্ছে, এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবাহে বাধা তৈরি হচ্ছে।
সরকারের উচিত, বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে নিচের বিষয়গুলোতে তথ্য সংগ্রহ করা—
কোন প্রদেশে কতটি বাংলাদেশি মালিকানাধীন কোম্পানি রয়েছে
কোন খাতে তারা কাজ করছে!
তাদের কর্মী চাহিদা কত, এবং কোন ক্যাটাগরির কর্মী প্রয়োজন (unskilled/semi-skilled/skilled)
এই তথ্য হাতে থাকলে UAE সরকারের সঙ্গে আলোচনা বাস্তবসম্মত, গ্রহণযোগ্য ও সফল হবে।
আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো — বাংলাদেশি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে যদি বাংলাদেশি শ্রমিক না থাকে, তাহলে কোম্পানি চালানো কঠিন হয়ে পড়ে। ভাষাগত বোঝাপড়া, সাংস্কৃতিক মিল, অভ্যাসগত সহজতা—এসব বিষয়ের অভাবে কাজের মান ও কার্যকারিতা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে এটি শুধু আবেগ নয়, বরং অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক যুক্তিতেই এই দাবি প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব।
শেষ কথা হলো —
সব ভিসা চালুর কথা বললে তা UAE সরকারের চোখে বড় ঝুঁকি মনে হতে পারে, কিন্তু সুনির্দিষ্ট, সীমিত, তথ্যনির্ভর ও যৌক্তিক দাবি তারা অগ্রাহ্য করতে পারবে না।
প্রবাসীদের বিনিয়োগ রক্ষা করা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব।
তাই এখন সময় এসেছে কৌশলী, বাস্তবসম্মত এবং তত্ত্ব-ভিত্তিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার। আর আশা করি Professor Yunus স্যার এর সরকারের পক্ষে তা সম্ভব. স্যার যদি সুনির্দিষ্ট ভাবে আলোচনা করেন এই দেশের সরকার অবশ্যই স্যার এর জন্যে হলেও এই ব্যাপারে positive কিছু ভাববে.
#আবুধাবী_প্রবাসী #প্রবাসি #আসিফ
Probashi News - প্রবাসী সংবাদ