09/10/2025
বিচার হউক প্রত্যেক গুমের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের।
হুম্মাম কাদের চৌধুরী উনার গুমের সেলে একটা HQ লিখে এসেছিলেন।
বাট তদন্তকারী লোকজন যাইয়া দেখল, কোন লেখা নাই।
রং করে ঢেকে দেওয়া হয়েছে সব।
সাথে সাথে হুম্মামকে ভিডিও কল দেওয়া হলো।
হুম্মাম বললেন, হ্যাঁ, এই দেয়ালেই লিখে এসেছেন।
ভালো করে খুজতেই বেরিয়ে এলো, HQ এর উপরে সাদা রং এর প্রলেপ।
হুম্মামের রুম হাসিনার সময় রং করা হয় নাই।
রং করা হয়েছিল হাসিনা পালানোর পরে।
ব্যারিস্টার আরমানের চোখ ২৪ ঘন্টাই বেঁধে রাখা হত।
কিন্তু তিনি বলেছিলেন, তাকে টাইলস করা সিড়িতে উপরে তুলে বামের দরজাতে ঢুকানো হত।
গুম কমিশন যাইয়া দেখে সিড়ি আছে। টাইলস নাই।
বাম দিকে কোন রুমও নাই।
ডিজিএফআইয়ের অফিসার বলে বসেন, আমি তো টাইলস এক্সপার্ট না।
মনে রাইখেন, হাসিনা তখন দেশে নাই। অভ্যুত্থানের পক্ষের সরকার পাওয়ারে।
এরপরেও এদের কী দু:সাহস।
পরে চেক করে দেখা গেল, সিড়িতে টাইলস না থাকলেও টাইলস এর দাগ ঠিকই রয়ে গেছে।
দুই পাশের দেয়াল চেক করে দেখা গেল, ব্যারিস্টার আরমানের কথা মত বাম পাশে ঠিকই একটা দরজাও আছে।
হাসিনা পালানোর পর এরা সব প্রমাণ ধ্বংস করে দেওয়ার ট্রাই করেছে।
যাতে কোন শাস্তি না হয়।
যাতে এরা ভবিষ্যতে আবার গুম খুন করে যাইতে পারে।
গুম কমিশন দেওয়াল ভেঙে সেই দরজা বের করেছে।
ওর মধ্যেই পাওয়া গেছে ব্যারিস্টার আরমানের বলা সেই টাইলসের ভাঙা অংশও।
সব এভিডেন্স নিয়ে আসা হয়েছে।
ইউনূস একটা কাজ খুব সাহসের সাথে করেছেন। আয়নাঘর পরিদর্শন করেছেন মিডিয়া আর ভিল্টিমদের নিয়ে।
এই পরিদর্শন না হইতে দেওয়ার জন্য এমন কোন চেষ্টা নাই, করা হয় নাই।
বাট দিনশেষে , আজকে ডিজিএফআইয়ের বড় বড় অফিসারদের উপর গ্রেফতারি পরোয়ানা দিতে পেরেছে সরকার।
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মত এজেন্সির অফিসারদের বিচারের মুখোমুখি করা হচ্ছে।
এটা শেষ না।
এটা শুরু।
এই শুরু করতে পারাটা জরুরি ছিল।
ব্যারিস্টার আরমানের গুমের বিচার হওয়া মানে মাইকেল চাকমার বিচার্টাও একদিন না একদিন হবে।
এই বিচার আর গ্রেফতারি পরোয়ানার অর্থ হলো, যত বড়ই হও, যত বড় জানোয়ার ই হও, জনগণের খাঁচায় একদিন তোমাকে ধরা পড়তেই হবে।
এই বিচার করতে যাইয়া ইউনূস আর প্রসিকিউটরকে বিরাট বিপদ ফেস করতে হয়েছে।
ইভেন ইউনূসের জায়গায় অন্য কেউ থাকলে এই সরকার হয়তো পড়েও যেত এই কাজটা করতে গিয়ে।
বাট এই বিপদ ফেস করতে হওয়াতে আমি পার্সোনালি খুশি।
কারন, এত এত হুমকি আর চেষ্টা করেও গুমের সাথে জড়িত অফিসাররা মাফ পায় নাই। বিচার তাদের হবেই।
এই বিচার ই হবে ভবিষ্যতের আর কোন ব্যারিস্টার আরমান বা ভবিষ্যতের আর কোন হুম্মাম কাদের না হওয়ার গ্যারান্টি।
এই মহা ক্ষমতাধর অফিসারদের পরিনাম আরও বহু অফিসারকে নিবৃত্ত করবে টাইলস তুলে ফেলা থেকে।
স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত এদের আমরা বিচারের মুখোমুখি করতে পারি নাই।
এরা বরাবরই আমাদের ধরা ছোয়ার বাইরে ছিল।
আজ এদের প্রথমবারের মত ধরা গেল।
জুলাইতে আমাদের স্লোগান ছিল, ক্ষমতা না জনতা? জনতা, জনতা!!
আজ সেই স্লোগান অন্তত কিছু সময়ের জন্য সত্যি হলো।
এই যে গুম করা মহা ক্ষমতাধর এতগুলো অফিসারকে আজ জনতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলো, এটা এমনি এমনি আসেনি, বুকের রক্ত দিয়ে এই অধিকারটা বাংলাদেশের মানুষের আদায় করে নিতে হয়েছে।
এ দেশের সংগ্রামী জনতাকে জানাই আরও একটা বিজয়ের শুভেচ্ছা এবং অভিবাদন।