19/04/2025
একই দিন। তিনটি ভিন্ন শহর। তিনটি ভিন্ন ঘরে।
তিনটি মায়ের চোখে জল, কিন্তু সেই জলে ছিল ভিন্ন স্বাদ।
প্রথম মা—শহরের এক কোণায় বাস করা একজন। তাঁর মুখে দুঃখের ছাপ, বুক চাপড়ে কাঁদছেন। পুলিশ এসেছে, প্রতিবেশীরা ভিড় করেছে।
দুই সন্তান রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে খাটে।
মা বলছেন, "আমি বাইরে ছিলাম... এসে দেখি এ কী!"
তবে তদন্তে বের হলো—এই মা-ই গলা কেটেছেন সন্তানদের।
কারণ? মানসিক অসুস্থতা, পারিবারিক ঝামেলা, না কি হিংস্র কোনো নিঃসঙ্গতা—সেটা ঠিক বোঝা যায় না।
কিন্তু তাঁর কান্না? অভিনয়। ভেতরে ছিল না এক ফোঁটা মা।
দ্বিতীয় মা—একটা অজ পাড়া গাঁয়ের মানুষ।
পেটের টান, চাহিদার চাপ—তাঁকে ঠেলে দিয়েছে এক ভয়ংকর সিদ্ধান্তে।
মাত্র ৪৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন নিজের সন্তানকে।
সেই টাকা দিয়ে কিনেছেন মোবাইল, নুপুর, আর একটা নাকফুল।
ধরা পড়ার পর তিনি কাঁদলেন ঠিকই,
কিন্তু সেই কান্না ছিল ধরা খাওয়ার কান্না,
না ফেরার পথের ভয়, সমাজের দৃষ্টি—লজ্জার কান্না।
তৃতীয় মা—
একটা ড্রেন গিলে নেয় তাঁর ৬ মাসের শিশুকে।
চিৎকার করে ওঠেন তিনি,
ছুটে বেড়ান রাস্তা, ড্রেন, অন্ধকার গলির পর গলি।
১৪ ঘণ্টা পর নিথর দেহ মেলে ড্রেনের নিচে।
তাঁর কান্নায় ছিল না কোনো মুখোশ,
ছিল কেবল বুকফাটা আর্তনাদ, সন্তানহারা এক মায়ের পাথর হয়ে যাওয়া চোখ।
একই দিনে—তিনটা কান্না।
তিনটি মেয়ে—মা হয়ে উঠেছিলেন তিনভাবে।
কেউ মায়া বিক্রি করেছেন,
কেউ মায়াকে হত্যা করেছেন,
আর কেউ সন্তান হারিয়ে বুঝেছেন,
'মা' আসলে কী জিনিস।