11/09/2025
"ইন্টারনেট ঠিক করতে এসে সব নিয়ে গেলো!"
ঢাকার বসুন্ধরা এলাকার এক ফ্ল্যাটে থাকেন রাহাত ভাই, বেসরকারি একটা আইটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। পরিবার গ্রামের বাড়িতে, উনি একাই থাকেন ঢাকায়। কাজের চাপ থাকলে অফিস থেকেও বাসায় কাজ চালিয়ে নেন। তাই ইন্টারনেট ছাড়া যেন কিছুই চলে না।
গত সপ্তাহে শুক্রবার সকাল বেলা, হঠাৎ করে ইন্টারনেট কানেকশন কাজ করা বন্ধ করে দিলো। বারবার রাউটার রিস্টার্ট করেও কাজ হচ্ছে না। রাহাত ভাই তখন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারকে কল দেন। ওরা বলে, “আজকে ফিল্ড টিম পাঠানো হবে, চিন্তা করবেন না।”
প্রায় আধাঘণ্টা পরে, দুইজন ছেলে ও এক মেয়ে এসে দরজায় নক করে। হাতে সার্ভিস টুলস, গায়ে ইউনিফর্ম টাইপ কিছু, গলায় আইডি কার্ড ঝুলানো। পরিচয় দিলো— “স্যার, আমরা BanglaConnect থেকে এসেছি, রাউটার চেক করতে হবে।"
রাহাত ভাই ভাবলেন, ঠিকই তো, আমি তো ফোন দিয়েছিলাম। দরজা খুলে তাদের ভেতরে আসতে দেন।
তারা এসে প্রথমেই বলেন, “স্যার, আপনার রাউটারটা কোথায়?”
রাহাত ভাই দেখিয়ে দেন, তারা খুব কনফিডেন্টলি রাউটার খুলে চেক করা শুরু করে।
মেয়েটি বলে, “স্যার, আমরা ওভারঅল স্পিড টেস্ট করবো। আপনার ল্যাপটপ লাগবে।”
রাহাত ভাই তাঁর অফিস ল্যাপটপ দেন। মেয়েটি বলে, “আপনার ওয়াইফাই পাসওয়ার্ডটা দিন প্লিজ।”
সেটাও দিয়ে দেন।
আরেকজন তখন বলে, “স্যার, আমাদের টিম হেড বলেছে বিলিং সংক্রান্ত একটা কনফার্মেশন নিতে হবে। একটা OTP যাবে আপনার ফোনে।”
রাহাত ভাই কিছু না ভেবে OTP দিয়ে দেন, যা আসলে ছিল তার ব্যাংক অ্যাপে লগইন করার জন্য।
মিনিট দশেকের মধ্যে তারা সব কিছু চেক করে, কিছু বুঝে উঠার আগেই বলে, “স্যার, একটা পার্টস আনতে হবে। আমরা আধা ঘণ্টায় আসছি।”
তারা চলে যায়।
রাহাত ভাই ভাবেন, "ঠিক আছে, ওরা তো প্রফেশনাল লাগলো।"
কিন্তু তারপরই ফোনে নোটিফিকেশন আসে— “Your transaction of BDT 85,000 has been processed.”
তিনি তখনই ব্যাংক অ্যাপ খুলে দেখেন—আরও দুটি লেনদেন হয়ে গেছে। দ্রুত ব্যাংকে কল করে সব ব্লক করান, কিন্তু ততক্ষণে মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ক্রেডিট কার্ড থেকে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা উধাও।
পরে যখন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারকে আবার ফোন দেন, তারা জানায়—তারা কাউকে পাঠায়নি!
এই ঘটনার পর রাহাত ভাই থানায় যান, অভিযোগ দেন, কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।
Collected