30/07/2025
জানি, আজকের বাংলাদেশে এই documentary শেয়ার করাটা একদমই সঠিক সময় না। দেশ এখন পাকি হায়েনাপন্থিদের হাতে! সবাই তাই এখন পাকিদের মন জোগানো কথা আর দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতার জনককে ছোট করে বেশি বেশি লাইক, লাভ রিএকশন আর আলোচনায় থাকার পন্থা বেছে নিয়েছে! কিন্তু সবাই যা চায় বা করে, সেটা ফলো করা ব্যাপারটা হয়তো আমার রক্তেই নাই।পপুলারিটি দিয়েতো আমার জীবিকা নির্বাহ হয়না! আর তাছাড়া 'শেখ হাসিনা' যখন চরম প্রতাপশালী ছিলেন তখন রাগ, ক্ষোভ বা ইগ্নোরেন্সের কারনে ২০১৮ তে রিলিজ হওয়া এই জিনিস দেখার প্রয়োজনও বোধ করিনি!
যাইহোক, এইনিয়ে দুইবার বসে দেখলাম এই documentary! আর তিন চারবার ব্যাকগ্রাউন্ডে ছেড়ে রেখে অন্য কাজ করেছি! যেনো কানে ভাসতে থাকে প্রতিটা শব্দ, কথা, গান! প্রথমবার ভেবেছিলাম বাঙালির স্বভাবসিদ্ধ অতি আবেগে কাঁদছি! তাই আবেগ সরিয়ে, ক্রিটিক করার উদ্দেশ্যেই দ্বিতীয়বার দেখতে বসেছিলাম! কিন্তু failed miserably! দেখি সেই একই অবস্থা! চোখের পানি আটকাতে পারছিনা!
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা কেমন ছিলেন! কেমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা নিয়ে তর্ক, বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু 'প্রধানমন্ত্রী' হওয়ার আগ পর্যন্ত এই মানুষটা কেমন ছিলেন, কেমন পারিবারিক আবহ আর অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে মানুষটা আজকের নেত্রী হয়েছেন, জীবনের চড়াই উৎরাই পার হয়েছেন, জীবনের ভয়ংকর ট্রমা, সর্বোস্ব হাড়িয়ে ফেলার শুন্যতা, সবকিছু একদিকে সরিয়ে, দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে চাওয়া, দেশকে ভালোবাসা, নিজের পরিবারের হত্যার বিচার করা, এগুলো হয়তো শুধু বই পড়ে কখনোই এতো গভীরভেবে অনুধাবন করতে পারতাম না!
বাবার রাজনৈতিক জীবনের কারনে যে মানুষ জন্মের পর থেকে (আমিতো বলবো গর্ভে থাকা অবস্থায়ই) কখনো স্বস্তির শৈশব পায়নি, বাবাকে ঘিরে মায়ের চরম দুশ্চিন্তা, উৎকন্ঠা, নিরাপত্তাহীনতা দেখে দেখে বড় হয়েছে, তার আসলে অনেক কিছু সহ্য করার মানসিক দৃঢ়তা হয়তো অটোম্যাটিকিলি চলে আসে। তারসাথে যখন যুক্ত হয় নিজের পরিবারের প্রতিটা মানুষকে চীরতরে হারিয়ে ফেলার বিভৎসতা, তখন রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে তার হাতে 'fight or flight' মোডে যাওয়া ছাড়া অন্য উপায় থাকে না!
এছাড়াও বাবার মৃত্য সংবাদ পাওয়ার সাথে সাথে যে দেখেছে মাথায় তুলে রাখা মানুষরা তাদেরকে মাথা থেকে ছুড়ে ফেলে দিতে এক মুহুর্ত দেরি করেনি। আবার এর মাঝেই দু একজন সহমর্মিতা, ভালোবাসার হাতও বাড়িয়ে দিয়েছে! ভীনদেশের প্রধানমন্ত্রী যখন পরিবারহারা এক অসহায় তরুণীর মুখ দেখে বুঝে ফেলেন সারাদিনে হয়তো তার কিচ্ছু খাওয়া হয়নি, সেই অসহায়, ক্ষমতাহীন, 'আমি কেউ না' অবস্থায় থাকা একজন মানুষ সেই দু একজনকেই হয়তো পরমপ্রিয় হিসেবে আঁকড়ে ধরেন। আমার চরম দুঃসময়ে যে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তাকে সুসময়ে ভুলে যাওয়ার মতো চরম কৃতঘ্নতার পরিচয় সবাই হয়তো দিতে পারেনা! হয়তো আমাদের 'প্রধানমন্ত্রী'ও তেমন 'কৃতঘ্ন' কখনোই হতে পারেননি!
ইনফ্যাক্ট documentary টা দেখতে দেখতে ভাবছিলাম আমি নিজেই কি সেই খুনীকে ক্ষমা করতে পারতাম যদি জানতাম সে আমার পুরো পরিবারকে হত্যা করেছে! আমি নিজেই কি আমার দুঃসময়ের বন্ধুকে কখনো ভুলতে পেরেছি! যার কারনে আমি আজকের আমি! আমি নিজে যা পারবো না, তা কেন অন্যের বেলায় প্রত্যাশা করি! নিজে যা করবো না, তা কেন অন্যের বেলায় 'স্ট্যান্ডার্ড' ধরে বিচার করি!
আজকের যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে অনেক চড়াই, উৎরাই, সম্মান, ঘৃনা, অপমান, অপ্রত্যাশিত ভালোবাসা আর সীমাহীন আবেগের যোগফোল! উনি নাকি বিশ, বাইশবার মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরেছেন। দোয়া করি উনি আরও দীর্ঘজীবি হোন। উনার অনুপস্থিতিতে আজকের বাংলাদেশ যদি আরও ভালো থাকতো, তাহলে হয়তো বলতে পারতাম দেশ আর মানুষ জিতে গেছে! কিন্তু এখন প্রতিদিন প্রশ্ন জাগে, আসলেই কি জিতেছি!
©মুনলীন
Ekta Gaaner Golpo - Hasina A Daughter's TaleHere is a song from the documentary film "Hasina: A Daughter's Tale".This is a tribute to Sheikh Mujibur Rahman, ...