Shabz Diary

Shabz Diary ....where i keep all my random thoughts

এরি মামীর বাড়ি ইয়ামানাশিতে ঘুরতে গিয়ে, সেখানকার ফেমাস রেসিপি-Hoto Noodles Soup ট্রাই করেছিলাম। একদিন টোকিওতে মেজোমামার স...
25/06/2025

এরি মামীর বাড়ি ইয়ামানাশিতে ঘুরতে গিয়ে, সেখানকার ফেমাস রেসিপি-Hoto Noodles Soup ট্রাই করেছিলাম। একদিন টোকিওতে মেজোমামার সাথে দেখা করে ফিরতি ট্রেনে ইয়ামানাশিতে ব্যাক করে দেখি আজুসা আর এরি মামী আমাদের পিক আপ করার জন্য অপেক্ষা করছে। স্টেশন থেকে বের হয়ে কনকনে ঠান্ডার মধ্যে কাঁপতে কাঁপতে দেখি এরি মামী ডিনার করানোর জন্য এক শপে নিয়ে গেলো! ভেতরে গিয়ে ধিরে সুস্থে টেবিলে বসার পর মামী বললো ইয়ামানাশির এই ফেমাস আইটেম খাওয়ানোর জন্য নিয়ে আসছে এই শপে!

আমি আর আজুসা অর্ডার করলাম মাশরুম হোটো স্যুপ! এরি মামী চিকেন হোটো আর এরিশা অর্ডার করলো সয়াসস বেইজ হোটো স্যুপ। কারন মিসো বেইজ ব্রথ নাকি তার অতোটা পছন্দ না। বিশাল বাটি ভর্তি স্যুপ খেতে গিয়ে দেখি পেট ভরে যাচ্ছে কিন্তু স্যুপ আর শেষ হয়না। কিন্তু মামীর পয়সাতো উসুল করতেই হবে। রয়ে সয়ে স্যুপ খাই, টয়লেটে গিয়ে ব্লাডার একটু খালি করি, এই করতে করতে গলা পর্যন্ত স্যুপে টইটম্বুর! কিন্তু মাশরুম, সব্জি আর হোটো নুডলসের স্বাদটা দারুন লেগেছিলো! আর সত্যি বলতে, মিষ্টি কুমড়া যে স্যুপেও দেওয়া যায় আর সেটা খেতে এতো ইয়াম্মিও লাগতে পারে সে ব্যাপারে কোন ধারনাই ছিলো না।

যাইহোক, অস্ট্রেলিয়া ফেরার সময় এক প্যাকেট ফ্রেশ Hoto Noddles এর প্যাকেট নিয়ে এসেছিলাম। মামী আমাকে সুপার মার্কেটে নিয়ে পরে স্যুপ ব্রথ বানানোর জন্য জাপানিজ Dashi আর Kelp ও কিনে দিয়েছিলো। ফাইনালি সাহস করে নিজেই এই স্যুপ বানিয়ে ফেললাম। দোকানের রেসিপির মতো সব সবজি ব্যাবহার না করলেও, মিস্টি কুমড়োটা ঠিকঠাক মতো এড করেছি! কারন এটা Hoto Soup এর একটা প্রধান উপাদান। সাথে ছিলো গাজর, মুলা, চাইনিজ ক্যাবেজ, স্প্রিং অনিয়ন, ফ্রায়েড টফু আর শিমেজি মাশরুম!

প্রথম দিনের রান্নায় সবজির পরিমান অল্প করে দিয়েছিলাম স্বাদ কেমন হয় বোঝার জন্য! মিসোর পরিমান একটু বেশি হওয়ায় হালকা সল্টি লাগছিলো! আজকে তাই এক প্যাকেট মিসো ব্যাবহার করেছি! সাথে সবজির পরিমানও আরও বেশি ছিলো। বিশেষ করে মিষ্টি কুমড়ো। যা ছিলো পুরোটাই দিয়ে দিয়েছিলাম। আর Hoto এর বদলে ইউজ করেছি Udon noodle। তারপর এই ঠান্ডা দিনে ব্রাঞ্চে গরম গরম Udon soup! এরিশাও গপগপ করে কোন অভিযোগ ছাড়াই একবাটি সবজি সহ স্যুপ খেয়েছে।
মনে হচ্ছে এবারের শীতটা এই স্বাস্থকর প্লাস মজার এই স্যুপের উপরেই কাটিয়ে দেবো!

নিচের লিস্টটা দেখে ভাবছিলাম আসলেইতো কয়টা লাক্সারি আছে আমার জীবনে! কথায় আছেনা 'জীবন খাতায় হিসাব নিকাশ মেলানো'! সেটা মেলাত...
17/06/2025

নিচের লিস্টটা দেখে ভাবছিলাম আসলেইতো কয়টা লাক্সারি আছে আমার জীবনে! কথায় আছেনা 'জীবন খাতায় হিসাব নিকাশ মেলানো'! সেটা মেলাতে গিয়েই মনে হলো, আরে, খাতাতো একদমই শুন্য না!

১.সময় কার হাতে কতটুকু আছে সে কেই বা জানে। ২৫ বছরের টগবগে যুবক বা যুবতী, কি নব্বই বছরের অশতিপর বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা, কে যে কার আগে যাবে তা ভাগ্য ছাড়া আর কারই বা নিয়ন্ত্রণে আছে! হয়তো আপাতঃদৃষ্টিতে বয়স যত কম, তার হাতে সময় তত বেশি! কিন্তু আসলেই কি তাই! সময় হাতে থাকলেই কি মানুষ সবকিছু তার মনমতো পূরণ করতে পারে!

২. আমার হেলথ কম্প্লিকেশনের পুরোটাই একটা অনিশ্চিত যাত্রা! কিন্তু তারপরও আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ, কারন চাইলে এরচেয়েও বেশি খারাপ অবস্থায় আমাকে রাখতে পারতেন! বা হয়তো আমার সময়টা আরও আগেই কেড়ে নিতে পারতেন! সে হিসেবে আমিতো আসলেই অনেক ভাগ্যবান!

৩. অসুস্থতা আর একটা দীর্ঘ সময় হাসপাতালে কাটানোর অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে কিভাবে মন শান্ত রাখতে হয়! আর মন শান্ত বলেই হয়তো মানুষ বা চারপাশের জগৎকে পড়তে বা অবজার্ভ করতে ভালো লাগে। মনেহয় অনেক কিছুর ইকুয়েশন অনেক সহজে এখন মিলে যায়।
তারপরও পারিপার্শ্বিক বা বাইরের অনেক প্রভাবক এখনো আমাকে মাঝেমধ্যেই অস্থির করে তোলে। প্রাণপন চেষ্টা করছি সে অস্থিরতা থেকে বের হয়ে আসার। সো এটা এখনো লাক্সারি না।

৪. স্লো মর্নিং এর লাক্সারি এখনো ভাগ্যে জুটেনি। সাতসকালে উঠেই মেয়ের স্কুলের নাশতা বানানো, স্কুলে ড্রপ করা, সকালের ব্যাস্ত ট্রাফিক পার হয়ে আবার ড্রাইভ করে বাসায় ফেরা, কাজ শুরু করা, সবমিলিয়ে মর্নিং একদমি স্লো না।

৫.আলহামদুলিল্লাহ! ট্রাভেল করার মতো শারীরিক সক্ষমতা এখনো আছে। এটা যে কত বড় সৌভাগ্য! কোনদিন বাংলাদেশে যেতে পারবো না ভাবলেই আমার নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় মানুষ মনে হয়!

৬.ইয়েস! কোন গিল্টি ফিলিং ছাড়াই আমি ইচ্ছেমতো রেস্ট করতে পারি! ওমর এর উপর ঘরের সব কাজ ছেড়ে দিয়ে ইচ্ছেমতো ঘুমাতে পারি! ওমর এসে মাঝেমধ্যে চা বানিয়ে দিয়ে যায়। বা খোঁজখবর নেয় কিছু লাগবে কিনা! He is a great homemaker আলহামদুলিল্লাহ!

৭. শরীর খারাপ না থাকলে ইউজ্যুয়ালি আমার রাতের ঘুম ভালোই হয়! কিন্তু কোন কারনে যদি ঘুম ঠিকঠাক না হয়, তাহলেই আমার বারোটা বেজে যায়। অল্প ঘুমিয়েও সুন্দরমতো ফাংশন করতে পারা মানুষ আমি না!

৮.জীবনের দুই তৃতীয়াংশ পার করে দিয়ে, ফাইনালি 'calm' এবং 'boring days' এর মর্মার্থ আমি উপলব্ধি করতে পেরেছি! And I actually love my absolutely boring & calm days! সুখ বা আনন্দ বলতে যারা সবসময় হৈচৈ, এক্সাইটমেন্ট বা মিনিংলেস সম্পর্কের মাঝে ইনভেস্ট করা বোঝে, তাদের কাছে অবশ্য এগুলো লাক্সারি না। কিন্তু ঘুরেফিরে শেষ পর্যন্ত সবাইকেই হয়তো এর মর্মার্থ বুঝতে হয়! জীবন কাউকেই ছাড় দেয়না!

৯.দুঃখজনকভাবে আমি এখন পর্যন্ত দেশে থাকা বা দেশে এডাল্ট লাইফ পার করে আসা কোন বাংলাদেশি মানুষ পাইনি, যার সাথে মিনিংফুল কনভারসেশন চালানো যায়! যাদের সাথে চেষ্টা করেছি, খুব অল্প সময় পরেই বুঝে গেছি তারা শুধু কিছুক্ষণের জন্য 'তাল মেলানোর' চেষ্টা করছে বা শুধুই নিজেকে জাহির করার চেষ্টা করছে। কনভারসেশনটা আর টু-ওয়ে থাকেনি তখন। মিনিংফুলতো না ই না!
কিন্তু বাংলাদেশিদের বাইরে অনেক মানুষ পেয়েছি যাদের সাথে আমি লং-টাইম মিনিংফুল কনভারসেশন চালাতে পেরেছি, পারি! এদের মাঝে কিছু বাংলাদেশি আছে যাদের জন্ম দেশের বাইরে বা যারা খুব ছোটবেলায় দেশ ছাড়ায়, ভিন্ন ভাবে ভাবতে পারে! এরা সবাই আমার ভাবনার জগতকে সমৃদ্ধ করেছে, করছে! আমি তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ!

১০. আমি রান্না করতে ভীষন ভালোবাসি। আমার নানী (বরিশালের মেয়ে ছিলেন), দাদীর বাড়ি (শরিয়তপুর) আর নিজের হাতের রান্না করা খাবার অনেক পছন্দ! বাংলাদেশ, কলকাতার বিভিন্ন ট্র্যাডিশনাল (নানী, দাদীর রান্না) আমি ট্রাই করতে পছন্দ করি। সো হোম কুকড মিলের লাক্সারি আমার আছে, আলহামদুলিল্লাহ! মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যেনো আমি নিজে রান্না করে খেতে পারি এটাই আমার চাওয়া!

১১. আমার ভালোবাসার মানুষরা আমার চারপাশেই থাকে। এরিশা, ওমর, আম্মু, আমার বোন, আমার অফিস কলিগরা! আমার ভালোবাসা আমি খুব একটা প্রকাশ করতে পারিনা। কিন্তু তারপরও এরা আমাকে ভালোবাসে! ব্যাপারটা ভাবলেই আমার অবাক লাগে!

১২.ফ্যামিলির বাইরে আমার কলিগদের দেখেছি, কি প্রবলভাবে তারা তাদের ভালোবাসা আমার জন্য প্রকাশ করেছে যখন আমি অসুস্থ ছিলাম। আমার সিলেটি লন্ডনি ফ্রেন্ড, কাশেম-বিলিভার না হয়েও দিনরাত আমার জন্য দোয়া করেছে, এমনকি মা'কে নিয়ে হজ্ব করতে গিয়ে, আমার জন্য ওমরাহ করে এসেছে! আমার অল্প কদিনের লেখক জীবনের দু একজন পাঠক, আমার স্কুল ফ্রেন্ডস যাদের সাথে হয়তো স্কুল লাইফে খুব কাছ থেকে মেশাও হয়নি, কিন্তু তাদের ভালোবাসা দূর থেকেও আমি অনুধাবন করতে পেরেছি!

©মুনলীন

ঈদের দিন! এবারের ঈদের সময়টা কেন যেনো ভালো লাগছিলো না। সব কিছু কেমন গুমোট লাগছিলো! যেনো খুব খারাপ কিছুর জন্য মন অপেক্ষা ক...
13/06/2025

ঈদের দিন! এবারের ঈদের সময়টা কেন যেনো ভালো লাগছিলো না। সব কিছু কেমন গুমোট লাগছিলো! যেনো খুব খারাপ কিছুর জন্য মন অপেক্ষা করছে! একবার মনে হচ্ছিলো আমি নিজে কি হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পরবো! নাকি কাছের কারো কোন দুঃসংবাদ পেতে যাচ্ছি! কোনভাবেই মনের ভারবোধটা কাটাতে পারছিলাম না।

এরপর ঈদের দিন প্রথম একজনের মৃত্যু সংবাদ শুনলাম! আর ঈদের আমেজ শেষ হতে না হতে আরও কত কত প্রানের মুহূর্তেই শেষ হয়ে যাওয়ার সংবাদ! জীবন যে খুব ক্ষনস্থায়ী এ বোধ এখন এমনিতেই আমার প্রতি মুহুর্তের সংগী! তাই হয়তো অন্য সবার মতো জীবনের চাওয়া, পাওয়া, এ্যাচিভমেন্ট, র‍্যাট রেস, কার থেকে উপরে থাকতে হবে, কাকে দরকার শেষে ল্যাং মেরে ফেলে দিতে হবে, কাকে মুখে মুখে ভালোবাসা দেখাতে হবে এইসব নেগেটিভ tendency গুলো শারীরিক, মানসিক কোনভাবেই টলারেট করতে পারিনা।

মন যখন নেগেটিভিটি থেকে দূরে থাকে, তখন পুকুরের পরিষ্কার, স্বচ্ছ পানির মতো টলটলে থাকে। জগতের সব কিছুই তখন অনেক বেশি পরিষ্কার দেখা যায় আর বোঝা যায়। মাঝে মাঝে নিজের মনের আচার আচরন এখন ঐরকমই লাগে। নিজে বুঝে ওঠার আগেই মন অনেক কিছু আগাম ফিল করতে থাকে। একেই হয়তো বলে অবচেতন মন!

যাইহোক মন ভালো করার জন্যই এই লাল টকটকে শাড়ি পরা! ২০২২ এ কেনা শাড়ি, ফাইনালি ২০২৫ এ এসে পরা হলো! আমি আজীবন বাঙালী শাড়ি আর সাজগোজে অভ্যস্ত! বলিউড টাইপ ঝাকানাকা হাতে গোনা দু একবার পরা হয়েছে। সেটা অবশ্যই এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে আর কম্ফোর্ট জোনের বাইরে গিয়ে। বলাইবাহুল্য তেমন একটা উপভোগ করিনি! আর মনে হয়েছে আমাকে মানায়ওনি! তাই আমার সবসময়ের পছন্দ, স্বস্তি আর আরামের জায়গা এই বাঙালীয়ানা সাজ! মন খুব একটা হালকা না হলেও, শাড়ি পরে ভালো লাগছিলো, আরাম লাগছিলো! আর পরে ছবিতে টকটকে লাল রঙটা দেখে নিজের চোখই জুড়িয়ে গেছে! 😊

আমার হসপিটালের সামনে দাঁড়ানো আম্মুর সাথে এই ছবিটা আমার খুব প্রিয়! এই হসপিটালটাও আমার খুব প্রিয়! রেনাল স্পেশালিষ্ট, Dr Le...
12/06/2025

আমার হসপিটালের সামনে দাঁড়ানো আম্মুর সাথে এই ছবিটা আমার খুব প্রিয়! এই হসপিটালটাও আমার খুব প্রিয়! রেনাল স্পেশালিষ্ট, Dr Lee, ইমিউনোলজিস্ট, Dr Lin সবাই খুব প্রিয়। ইদানীং মাঝে মাঝেই ড্রাই মাউথ সিম্পটম হচ্ছে। রাতে এ কারনে মাঝে মাঝেই ঘুম ভেঙে যায়! মুখের ভেতর, জিভ, গলা সবকিছু ড্রাই হয়ে এমন খড়খড়ে অনুভূতি হয় যে মনে হয় ঠিক মতো নিঃশ্বাস নিতে পারছিনা। আর তখনই ঘুমটা ভেঙে যায়। গত পরশু রাতেও এমন হয়েছিলো! ঘুমে চোখ বন্ধ হয়ে আসছে, কিন্তু এই দম বন্ধ হওয়ার এক্সপেরিয়েন্সের ভয়ে ঘুমাতে ভয় লাগছে। কি যে ভয়ংকর সেই অনুভূতি! একবার ভাবছিলাম সেই রাত দুটোর সময়ই Dr Lee কে ইমেইল করবো কিনা। কিন্তু মোবাইলের স্ক্রিনের আলোতে চোখকে কষ্ট দিতেও ইচ্ছে হচ্ছিলো না।

কি করবো, কি করবো ভাবতে ভাবতে, ড্রয়ারের উপর রাখা কৌটা থেকে দুটো লবঙ্গ মুখে দিলাম। বোতলের পানি দিয়ে গলাটাও ভিজিয়ে নিলাম। তারপর দুটো উঁচু উঁচু বালিশ মাথার নিচে দিয়ে একদিকে কাত হয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। আল্লাহর রহমতে পরে আর ঘুম ভাঙেনি। কিন্তু সকালে উঠে দেখি শরীর ভালো লাগছেনা। রাতে কয়েকবার ঘুম ভাঙার কারনেই আসলে কেমন ম্যাজম্যাজে ভাব। একবার ভেবেছি সিক কল করবো। কিন্তু ঘর থেকেই যেহেতু কাজ করি তাই মনে হলো, থাক, কি দরকার!

কিন্তু রাতের সেই ভয় ভাবটা দেখি দিনেও পুরোপুরি যায়নি! কাজ করতে করতেই Dr Lee কে ইমেইল করলাম। সব খারাপের মাঝেও সামান্য কিছু ভালো যেমন থাকে। সেরকম এই রেয়ার ডায়াগনোসিসের কারনে আমার স্পেশালিস্টদের সাথে দরকার পড়লে যোগাযোগ করার সুযোগ আমার আছে। আর তাছাড়া Dr Lee কে আমার কেন যেন খুব কাছের বন্ধুর মতো মনে হয়! উনি যে সময় আর মনোযোগ দিয়ে আমার কথা শোনে, তাতেই মনে হয় আমার শরীর অর্ধেক ভালো হয়ে গেছে! তাই বেশ বড়ই একটা ইমেইল লিখলাম উনাকে। তিন ঘন্টা পর ইমেইলের রিপ্লাই আর সাথে কিছু সাজেশন পেয়ে মন আর শরীরে একটা স্বস্তির অনুভূতি বয়ে গেলো!

আসলে প্রতি ছয় মাস পর পর যে রিটাক্সিমেব ইনফিউশনটা (এন্টিবডি থেরাপি) আমাকে দেয়া হয় সেটা এবার হসপিটালের ইন্টারনাল কিছু মিসকমিউনেকেশনের কারনে দিতে দেরি হয়েছে। এপ্রিলে যেটা দেয়ার কথা সেটা আগামীকাল ১৩ই জুন দেয়া হবে। এখন এই দেরি হওয়ার কারনে, নাকি আমার যে একচ্যুয়াল ডায়াগনোসিস তার কারনে, কিছু কিছু সিম্পটম আমি আবার ফিল করা শুরু করেছি যেগুলো ২০২৩ এ হস্পিটালাইজড হওয়ার আগে ফিল করতাম। কিন্তু আমার প্রশ্নের উত্তর আসলে কোন ডাক্তার, স্পেশালিষ্টদেরই জানা নেই।

আমি যতদিন বেঁচে আছি, ততদিন তারা আমার মাঝেই উত্তর খোঁজার ট্রাই করবে। মরে গেলে যতদিন পর্যন্ত সুস্থ ভাবে বেঁচেছিলাম সে তথ্য, উপাত্তগুলোই ভবিষ্যত পেশেন্টদের চিকিৎসায় কাজে আসবে। এ কারনেই ডাক্তারদের কাছে আমি 'সেলিব্রিটি পেশেন্ট'-হসপিটালে থাকতে এক ডাক্তার আমাকে বলেছিলো 'তুমি আমাকে না চিনলেও, আমরা সবাই তোমাকে চিনি'। ইদানীং তাই মাঝে মাঝেই মনে হয়, জীবনটা একদমই সাধারণভাবে কেটে গেলে খুব কি ক্ষতি হতো!

09/06/2025

#অপ্রিয়কথা

সেদিন একটা র‍্যাংকিং চোখে পড়লো-২০২৪ এ কোন দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশী বই পড়েছে। র‍্যাংকিং এ প্রথম, দ্বিতীয় আর তৃতীয় হয়েছে যথাক্রমে USA, India আর UK! র‍্যাংকিং এর তথ্য অনুযায়ী আমেরিকাতে একজন মানুষ বছরে ১৭ টা বই পড়ে, ভারতে ১৬ আর ইউকেতে ১৫ টা! আর সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান কততে জানেন? ৯৭ তম! অর্থাৎ একজন বাংলাদেশি বছরে ২.৭৫ টা বই পড়ে! বাংলাদেশের পরে আর যে পাঁচটা দেশ আছে তারা হলো-UAE, Saudi Arabia, Pakistan, Brunei & Afghanistan!

সত্যি কথা হচ্ছে, তালিকাটা দেখে আমি একদমই অবাক হয়নি! এভারেজে বাংলাদেশি মানুষদের আই-কিউ যে খুবই কম সেটা নতুন করে বলার কিছু নাই! সোশ্যাল মিডিয়া ঘাটলে সেটা আরও প্রকট ভাবে বোঝা যায়। আর সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরে ব্যাপারটা বোঝা যায় দেশের লোকজনের সাথে কথাবার্তা চালাতে গেলে! এ ক্ষেত্রে অবশ্য শিক্ষিত অশিক্ষিতর ভেতর খুব বেশী পার্থক্য নেই!

আমাদের দেশে বেশীরভাগ মানুষ স্কুলের পড়াশোনার বাইরে বই পড়াকে খুব একটা ভালো চোখে দেখেনা! ছোটবেলায় আমার পরিবার আমাকে গল্পের বই পড়তে কখনো বাঁধা দেয়নি! সেটা তসলিমা নাসরিন, হুমায়ুন আজাদ, হুমায়ুন আহমেদ, সুনীল, সমরেশ যেই হোক না কেন! কিন্তু সে সময় আমার বয়সী অন্য অনেকের বাড়িতেই দেখেছি গল্পের বই পড়া একদম বাড়ন! হুমায়ুন আহমেদ একটু আধটু পড়তে পারলেও, তসলিমা নাসরিনের বই এরতো প্রশ্নই উঠেনা! বিশেষ করে বেশীরভাগ ফ্যামিলির পুরুষদের দেখতাম মেয়েদেরকে তসলিমা নাসরিন এর বই পরতে দেখলেই ক্ষেপে যেতো!

অর্থাৎ যা মানুষের মনে প্রশ্ন তৈরি করতে পারে, যা নিজেদের চেনা পৃথিবীর বাইরের দৃশ্যপট তুলে ধরতে পারে, যে সত্য অসুন্দর কিন্তু চারপাশে ঘটছে, তা চোখ কান ঢেকে রেখে জানতে না চাওয়াতেই বেশীরভাগ বাংলাদেশিরা অভ্যস্ত! তো এসব মানুষরা নিজেদের অতি পরিচিত, নন-থ্রেটেনিং গন্ডির বাইরে গল্প করার মতো, সচেতন থাকার মতো নলেজ বা deep thinking এর ক্ষমতা আসলে কিভাবে পাবে! কই থেকে পাবে!

আসলে পুরো বাংলাদেশেটাই হচ্ছে ভীষন ছোট্ট একটা কুয়ার মতো। যার ভেতর আটকে থাকা বেশীরভাগ মানুষজনেরই বাইরের পৃথিবী সম্পর্কে কোন ধারনা নেই! ইন্টারনেট, স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়া এদের হাতের মুঠোয় থাকলেও নিজেদের চেনা গন্ডির বাইরের পৃথিবীকে গ্রহণ করার মতো বুদ্ধি, সহনশীলতা বা সচেতনতা কোনটাই নেই! কারন সেইরকম চিন্তার পরিবেশ না তারা পরিবারে পায়, না সামাজিকভাবে এনকারেজ করা হয়! আর ধর্মীয়দিক থেকেও লজিক্যাল ভাবনাচিন্তাকে প্রমোট করার প্রশ্নই আসেনা! সময়ের সাথে সাথে পরিস্থিতির যে খুব একটা পরিবর্তন হয়েছে তা কিন্তু না! বরং বলা যায় আরও অবনতি হয়েছে! যুগের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের মানুষজন হাল ফ্যাশনের জামাকাপড়, মেইকআপ, টেকনোলজি চিনলেও, মেধা, মননে, ব্যাক্তিত্বে ধাড়ালো হয়ে উঠতে পারেনি। এখন ঘরে ঘরে গোল্ডেন এ প্লাস স্টুডেন্ট, কোরান শরীফ মুখস্থ করা হাফেজ, চিন্তা ভাবনা, পোষাক পরিচ্ছদে ধর্ম মেইনটেইন করা, আধুনিক ছেলেমেয়ে অনেক পাওয়া যাবে! কিন্তু ক্রিটিক্যাল থিংকিং করা ইয়াং জেনারেশন এর সংখ্যা যে ভয়াবহ রকম কম, সেটা দেশের ওভারঅল চিত্র দেখলেই বোঝা যায়!

আশি, নব্বই দশকের রক্ষণশীল বাংলাদেশে তসলিমা নাসরিন, হুমায়ুন আজাদ এর মতো লেখকেরা তাদের লেখা দিয়ে পাঠকের মনে প্রশ্ন জাগাতে পারলেও, এখন কেন বইমেলায় এমন লেখক পাওয়া যায়না! কেন কারও লেখা পড়ে নিজেকে জানার, পৃথিবীকে জানার কৌতুহল উদ্রেক হয়না! কেন মোশতাক, সাবরিনাদের অশালীন রিলস দেখে, লোকজন শুধুমাত্র 'মজা নিতে' এখন বইমেলায় যায়! এখনকার বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক জগতের দৈন্য দশার প্রমান সিমিন লুবাবা'র মতো শিশু কিশোররা! যে কিনা অল্প বয়সেই বুঝে গেছে বাংলাদেশে পপুলারিটি পেতে হলে হিজাব মাথায় 'ইসলামের কথা' বললেই হবে! ঠিক মতো কথা বলতে না পারলেও, হাজব্যান্ডের বানানো সি-গ্রেডের মুভিতে নায়িকা হয়ে, সেলিব্রিটি হওয়ার স্বপ্ন ফুলফিল করে, রমজান মাসে মাথায় ওড়না পেঁচিয়ে, ক্যামেরার সামনে বলে ফেললেই হয় 'ছেলে বড় হচ্ছে, তার মা নায়িকা হলে ভালো দেখায় না'! অথচ নায়িকা হওয়া যে 'এতো খারাপ' একটা ব্যাপার, সে কথা কেনো তাদের ছেলের মা হওয়ার আগে মনে থাকে না, কে জানে!
বাংলাদেশের মতো গন্ডমূর্খদের দেশ বলেই পিনাকী ভট্টাচার্য ইসলাম বন্দনা করে, বাংলাদেশী মুসলিমদদের 'গুড়ু' হতে পেরেছেন। অথচ সেই একিই মুসলিম নতুন ছাপা হওয়া টাকায় মন্দিরের ছবি থাকলে, সেটা পকেটে রেখে নামাজ হবে কিনা, এই ভাবনায় অস্থির!

যেহেতু গড়পরতা বাংলাদেশিরা স্কুল আর কোরান শরীফের বাইরে অন্য কোন বই পড়তে আগ্রহী না, এইজন্য তারা না নিজেরা কোন যুক্তি দিতে পারে না অন্যের যুক্তি বুঝতে পারে। কিন্তু কেউ বোঝাতে গেলে তাদের মুর্খ ফ্র্যাজাইল ইগো খুব অপমানিত হয়! অথবা তা ধর্ম অবমাননা মনে হয়! তখন গালাগালি বা খুনোখুনী করা ছাড়া এদের অন্য উপায় থাকেনা। এদের সব ইনফরমেশন সোর্স হয় ফেইক অনলাইন নিউজ পোর্টাল আর না হয় কোন আলেম হুজুর! যেখানে তাদের ব্রেইন ব্যাবহারের কোনও প্রয়োজনও পরে না! তো এই লেভেলের আইকিউ নিয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিশ্বের কোন দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় সেই উত্তর আতিপাতি করে খোঁজে আমার এ অবুঝ মন!

©মুনলীন

Adelaide থেকে ফেরার পথে একরাত আমরা নিউ সাউথ ওয়েলস (NSW) এর একটা রিজিওনাল শহর Hay তে থেকেছিলাম! সত্যি কথা বলতে  NSW স্টেট...
21/05/2025

Adelaide থেকে ফেরার পথে একরাত আমরা নিউ সাউথ ওয়েলস (NSW) এর একটা রিজিওনাল শহর Hay তে থেকেছিলাম! সত্যি কথা বলতে NSW স্টেটটা যে কত বিশাল সেটা এতোদিন শুধু শুনে এসেছিলাম। কিন্তু এবার লং ড্রাইভে Adelaide যাওয়া এবং ফিরে আসার পথে সেটা পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পেরেছি! তবে যাওয়ার পথে লং ড্রাইভটা বোরিং লাগলেও আসার পথে খুব ভালো লাগছিলো!

ফেরার জন্য যেদিন রওয়ানা দিলাম, সেদিন সকাল ছয়টা কি সাতটার মধ্যেই Adelaide এর হোটেল ছেড়েছিলাম। এরপর দশটার দিকে Mallee Highway তে থেমে পাশের ছোট একটা ক্যাফেতে সকালের নাশতায় কফি, স্যান্ডউইচ খেলাম। এরপর টানা তিন, সাড়ে তিন ঘন্টা ড্রাইভ করে NSW এর রিজিওনাল শহর, Tooleybuc এ এসে আবার একটা ব্রেক নিলাম।
যাওয়ার সময়ও এখান দিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু তখন জায়গাটা এক্সপ্লোর করা হয়নি! তাই এবার গাড়ি থেকে নেমে শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলা Murray River দেখতে গেলাম। Tooleybuc শহরটা ভিক্টোরিয়া আর নিউ সাউথ ওয়েলসের বর্ডারে পড়েছে!
Adelaide এর ঠান্ডা, ঠান্ডা ওয়েদার থেকে এসে নিউ সাউথ ওয়েলসের ওয়েদারে অনেক বেশি গরম লাগছিলো! যদিও সাঁতার জানিনা, কিন্তু শান্ত নদী দেখে গরমে মনে হচ্ছিলো ঝাপ দিয়ে নেমে পরি!

পাঁচ, দশ মিনিটের মতো থেকে গরমে অস্থির হয়ে আবার গাড়িতে ব্যাক করলাম! এরপর আবারও টানা ড্রাইভ। Hay এর কাছাকাছি এসে একটা অদ্ভুত জিনিস খেয়াল করলাম। এই এরিয়াতে আকাশ আর মেঘগুলোকে দেখলে মনে হয় একদম মাটির কাছাকাছি! কি যে ভীষন সুন্দর একটা দৃশ্য! মনে হচ্ছিলো 'দিগন্ত বিস্তৃত আকাশ' মনে হয় একেই বলে! মাথার উপর ঝকঝকে নীল আকাশ আর তুলোর মতো মেঘ। আর দুপাশে বিস্তৃত অস্ট্রেলিয়ান বুশল্যান্ড! কোথাও কোন মানুষজন নেই! হঠাৎ হঠাৎ শুধু দু একটা গাড়ি চোখে পড়ে! আমাদের অবশ্য ততক্ষণে একটু একটু ক্ষুধাও লাগছিলো! ঠিক করে রেখেছিলাম মোটেলে চেক ইন করে আশেপাশেই কোথাও লাঞ্চ করবো!

আমাদের মোটেলটা ছিলো হাইওয়ের উপরে। বেশ ভালো সংখ্যক গাড়ি, ট্রাক আর লড়ি যাওয়া আসা করতে দেখছিলাম!
আর মোটেলের বেশীরভাগ গেস্টদের দেখে মনে হচ্ছিলো হোয়াইট অজি ব্যাকগ্রাউন্ড! আসলে Hay শহরটা এতো বেশি রিজিওনাল যে অন্য জাতিগোষ্ঠী খুব বেশি দেখা যায়না।
তবে 'রিজিওনাল শহর' কাকে বলে আর কত প্রকার, তা টের পেয়েছি লাঞ্চ করতে গিয়ে! মোটেলের পাশে একটা কফি শপ চোখে পড়েছিলো, কিন্তু ভেতরে গিয়ে মনে হলো দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ছেলেটা! আর এক দোকানের সামনে গিয়ে দেখি লেখা পিজ্জা শপ! কিন্তু দোকানের সামনে ক্রিসমাস টাইমে যেসব পুতুল দিয়ে লোকজন ডেকোরেশন করে, ওরকম অনেক পুতুল আর খুব পুরানো দেখতে জিনিসপত্র দিয়ে সাজানো। পুতুলের দোকানে পিজ্জা কিভাবে আসলো বুঝতে না পেরে, ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখি, আসলেই পিজ্জা বিক্রি করে কিন্তু ততক্ষণে দোকান বন্ধ হয়ে গেছে! বুঝে গেলাম এই শহরে পছন্দমতো খাবার পাওয়া বা কেনাটা খুব একটা সহজ না।

মোটেলের অপজিটে, রাস্তার অন্য পাশে দেখলাম একটা পাব আছে। কিন্তু সেটা খুলবে সন্ধ্যা ছয়টায়। আর একটু হেঁটে সামনে আগাতেই চোখে পড়লো IGA সুপারমার্কেট! ভেতরে ঢুকতেই দেখি কেমন অন্ধকার হয়ে আছে। ওমর পরে বললো এরা নাকি এনার্জি সেইভ করার জন্য বেশীরভাগ লাইট অফ করে রেখেছে!
সুপারমার্কেটে রেডিমেড আর কি খাবার পাবো! প্রথমে ভাবলাম ফ্রোজেন কোন প্যাকেট ফুড কিনে মোটেলে গরম করে খাবো! কি নিবো খুঁজতে খুঁজতেই চোখে পড়লো দোকানের এক কর্নারে এরা ফ্রায়েড চিকেন পিসেস আর চিপস বিক্রি করছে। দেখে মনে হলো হাতে আকাশের চাঁদ পেলাম। ২৭ ডলার দিয়ে তিনজনের জন্য তিন পিস চিকেন, চিপস আর গ্রেভি কিনে মোটেলে ফিরে খেলাম। IGA থেকে তিন চারটা কলাও কিনেছিলাম। সেটাও অনেক দাম ছিলো! মনে হলো রিজিওনাল এরিয়াতে জিনিসপত্রের দাম সিডনির তুলনায় আসলেই অনেক বেশি!

চিকেন খেয়ে কোনমতে ইন্সট্যান্ট ক্ষুধা নিবাড়ন করলাম। প্ল্যান হচ্ছে সন্ধ্যায় পাব খুললে ওখানে গিয়ে ভালো মতো ডিনার করবো! Google ঘেটে দেখলাম Hay তে একটা জায়গা আছে যেখান থেকে নাকি খুব সুন্দর সূর্যাস্ত দেখা যায়। ভাবলাম সবাই শাওয়ার টাওয়ার নিয়ে, ফ্রেশ হয়ে সময় থাকলে বিকেলে সেখানেই যাবো! সেই অনুযায়ী সাড়ে পাঁচটার দিকে বেরও হলাম গাড়ি নিয়ে। শীতের সময় দ্রুত সন্ধ্যা হয় আর চারদিকে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। গাড়িতে যেতে যেতেই দেখি সূর্য্যর অস্ত যাওয়ার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে! কিছুদূর যেতে না যেতেই দেখি ছোট একটা ক্যাঙারু গাড়ির সামনে দিয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হলো! তাই দেখেই দেখি ওমরের টেনশন শুরু হয়ে গেছে!

কারন অস্ট্রেলিয়াতে রাতে গাড়ি চালাতে গেলে যে বিশাল প্রবলেমটা ফেইস করতে হয়, সেটা হলো রাতে গাড়ির লাইট দেখলে আশেপাশের বুশল্যান্ড থেকে ক্যাঙারু, কোয়ালা এসে লাফ দিয়ে গাড়ির উপর পড়ে! এজন্য বেশিরভাগ সময়ই হাইওয়েতে অসংখ্য মরে পড়ে থাকা এসব প্রানী দেখা যায়। তবে এই লাফ দেয়ায় অনেক সময় গাড়ির উইন্ডস্ক্রিনেরও অনেক ক্ষতি হতে পারে! তাই ওমর রিস্ক না নিয়ে আবার গাড়ি ঘুরিয়ে মোটেলে ব্যাক করলো! কারন সূর্যাস্ত দেখে ফিরতে ফিরতে নাহলে আরও বেশি অন্ধকার হয়ে যাবে।

আর ততক্ষণে যেহেতু অলরেডি ছয়টা বেজে গেছে, তাই আমরাও ডিনারের জন্য পাবের দিকে রওয়ানা দিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি মোটেলে যে কয়জন গেস্টকে দেখেছি তারা প্রায় সবাই সেখানে ডিনারের জন্য অপেক্ষা করছে। আশেপাশের অনেক লোকালও চলে এসেছে ডিনার করতে। বিশাল লাইন দিয়ে সবাই দাঁড়িয়ে আছি খাবার অর্ডার করার জন্য! আর লোকজনের সংখ্যা দেখে মনে হলো এই পাব আর পাবের খাবার হয়তো খুব পপুলার। অবশ্য আশেপাশে এছাড়াতো আর কোন অপশনও নাই। সবার বিনোদন, খাওয়া দাওয়া, পান করা আর আড্ডা দেওয়া সব হয়তো এই একই জায়গায়!

খাবার অর্ডার করার পরও আরও কিছুক্ষণ বসে থাকতে হলো খাবার আসার জন্য! ক্ষুধাপেটে যখন স্টেইকের ফার্স্ট বাইটটা মুখে দিলাম, মনে হলো হেভেনলি কিছু খাচ্ছি! আসলেই অনেক মজার ছিলো পাবের খাবারটা! ভরপেট খেয়ে দেয়ে যখন বের হলাম, তখনও অনেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে আছে খাবার অর্ডারের জন্য! বাইরের সিটিং এরিয়াতে অনেককে দেখলাম পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে একসাথে খাচ্ছে আর আড্ডা দিচ্ছে।
এরিশা মোটেলে গিয়ে রেস্ট করতে চাইলো, তাই ওকে রুমে পাঠিয়ে দিয়ে আমি আর ওমর আশেপাশে একটু হাঁটতে বের হলাম। দেখলাম আরও বেশ কয়েকটা মোটেল আছে আশেপাশে! এক মোটেলের রিসিপশনে দেখলাম একজন ইন্ডিয়ান কাজ করছে। এতো রিমোট শহরেও যে ইন্ডিয়ান পেয়ে যাবো একদমই ভাবিনি!

রাতে টানা ঘুম দিয়ে সকালে উঠে মনে হলো কফির অভাবে মাথা কেমন জ্যাম হয়ে আছে। সাত সকালে আবারও ওমর আর আমি বের হলাম মর্নিং ওয়াক প্লাস কফিশপের খোঁজে! কিন্তু সব শপ তখনও বন্ধ! আর ওইদিন পাবলিক হলিডে থাকায়, বেশ কয়েকটা শপের গায়ে দেখি নোটিশ ঝুলানো যে আজকে আর দোকান খুলবে না! কি আর করা! Hay পোস্ট অফিস আর কাউন্সিল অফিসের সামনে গিয়ে কয়েকটা ছবি তুলে আবার মোটেলের দিকে পা বাড়ালাম। কাছাকাছি আসতেই দেখি একটা ভ্রাম্যমাণ কফি শপ। থাই বা চাইনিজ ওয়াইফ আর অজি হাজব্যান্ড মিলে কফি বিক্রি করছে। তখনই দেখি চার/পাঁচজন কাস্টমার লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে কফি কেনার জন্য! আমি আর ওমরও গিয়ে দাঁড়ালাম। এই সাতসকালে, শহুরে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন এই শহরে যে এতো ভালো কফি পেয়ে যাবো, এতোটাও প্রত্যাশা করিনি। সাথে আবার একটা করে কুকি ফ্রী! আনন্দ নিয়ে কফিতে চুমুক দিতে দিতে মোটেলে ফিরে ১৫/২০ মিনিটের মধ্যে সব প্যাক করে আবারও সিডনি ব্যাক করার জন্য স্টার্ট করলাম।

রান্না করাটা আমার কাছে থেরাপির মতো! আবার অনেকটা মনের মাধুরী মিশিয়ে কোন কিছু সৃষ্টি করার মতোও! তাই শনি, রবিবার আসার আগ পর...
19/05/2025

রান্না করাটা আমার কাছে থেরাপির মতো! আবার অনেকটা মনের মাধুরী মিশিয়ে কোন কিছু সৃষ্টি করার মতোও! তাই শনি, রবিবার আসার আগ পর্যন্ত পুরো সপ্তাহই আমি আনন্দ নিয়ে ভাবতে থাকি 'কি রান্না করবো'! এ নিয়ে অবশ্য আলোচনা করতে গিয়ে আমার মুখে কথার খই ফোটেনা! যা সব কথা বার্তা সব নিজের মাথার ভেতরেই ঘুরপাক খেতে থাকে! এ অবশ্য আমার আজন্ম বদভ্যাস! মুখ দিয়ে কথা বের করতেই ভালো লাগেনা! ভীষন বিরক্ত লাগে! হয়তো এজন্যই লেখালেখি আমি বেশি উপভোগ করি!

যাইহোক কি লিখতে গিয়ে, কি লিখছি! গত সপ্তাহে বাজারে গিয়ে বাঙালি শপে সবজি দেখছিলাম আর ভাবছিলাম কি নেয়া যায়! কোন সবজিই খুব বেশি মনে ধরছিলো না। হয় দাম বেশি, না হয় দেখতে ফ্রেশ না। সাত সকালে দুটো দোকান ঘুরে অবশেষে চোখে পড়লো বড়সর, চকচকে সবুজ কতগুলো শিম! আঠারো ডলার কেজি! অবশ্যই 'টু মাচ' দাম! নেবো কি নেবো না হিসেব কষতে কষতেই মনে হলো, কি আর আছে জীবনে! এতো সুন্দর শিম সবসময় চোখে পড়েও না, পাওয়াও যায় না! বেছে বেছে নিলাম বেশ কয়েকটা!

যদিও এখন আর আলাদা করে মনে পড়ছে না কত দাম বা কতটুকু নিয়েছি! আমার ব্রেইন দুনিয়ার এই একটা ব্যাপারেই সবসময় 'ধরা খাওয়া'! টাকাপয়সার হিসাব রাখা আর গুনে গুনে চেইঞ্জ ফেরত নেওয়া! দেশ ছাড়ার পর ২০০৫ থেকে সেই যে কার্ড ইউজ করে এসব ঝামেলা এভয়েড করার মজা পেয়ে গেছি! তারপর থেকে দেশ ছাড়া অন্য কোথাও আমি ক্যাশ ব্যাবহার করিনা! আর দেশে গেলেও খুচরা পয়সা বা ছোট নোটগুলো আমি আম্মু বা সাথে অন্য কেউ থাকলে তাকে রেখে দিতে বলি! আমারে দিয়ে এইসব গুনাগুনি জিন্দেগীতে সম্ভব না!

তো শিম নেয়ার পর মনে হলো, এই জিনিস আমি রান্না করবো কি দিয়ে! বাসায় বড় মাছ দিয়ে শিম রান্না করতে দেখেছি! কিন্তু এখানে আমার দেশি বড় মাছ একদমই কেনা হয়না! দোকানের ফ্রিজার ঘেটেঘুটে দেখি ফ্রোজেন গুলশা মাছের ব্লক! সেটাই নিলাম। আর নিতে গিয়ে দোকানের ছেলেটাকে কোন কুক্ষণে যে জিজ্ঞেস করলাম দেশি ইলিশ মাছের কথা! আসলে ধরেই নিয়েছিলাম থাকবে না। কারন পরিচিত যে দোকান থেকে সবসময় ইলিশ কিনি, তার কাছেও ছিলোনা! কিন্তু বলার সাথে ছেলেটা খুঁজে পেতে চাঁদপুরের ইলিশ বের করে দিলো! বললাম, এটা নিশ্চই বার্মিজ ইলিশ! কারন বছর খানেক আগে অন্য এক বাঙালি দোকানি দেশি বলে আমাকে বার্মিজ ইলিশ ধরিয়ে দিয়েছিলো!

অল্প বয়সী ছেলেটা দেখি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলো, ইলিশ খেয়ে দোকানে এসে রিভিউ দিয়ে যেতে! মনে মনে ভাবছি, কি একটা অবস্থা! এখন দেখি মাছ নিতেই হবে! তারপর আবার বুদ্ধি করে বললাম, মাছতো কেটে দিতে হবে। আমি বাসায় এই জিনিস কাটতে পারবো না। ভেবেছিলাম পার পেয়ে যাবো! কিন্তু না! এই পিচ্চি আমাকে মাছ কিনিয়েই ছাড়বে। আমাকে দোকানে অপেক্ষা করতে বলে, সে তার নিজের পকেট থেকে দু ডলার খরচ করে অন্য দোকান থেকে মাছ কাটিয়ে এনে দিলো! তারপর চক্ষুলজ্জায় পরে মাছ নিয়েই আসতে হলো! যদিও বলে এসেছি, দেশি মাছ না হলে আমি নিজেই দোকানে গিয়ে জানিয়ে আসবো!

কাউন্টারে গিয়ে পে করতে করতেই ছেলেটার সাথে একটু কথা হলো! মাত্র পাঁচ মাস হলো সিডনি এসেছে স্টুডেন্ট ভিসায়! আইটি তে পড়ছে! আসার পর থেকেই নাকি এই দোকানে কাজ করছে! দোকানের সব আইটেম, কোথায় কি আছে সব নাকি তার মুখস্থ! বেশ গর্বের সাথেই বললো! দোকান আর কাজের ব্যাপারে সিনসিয়ারিটিটা বেশ ভালো লাগলো! কথাবার্তায় তখনও দেশের সারল্য লেগে আছে! আমাকে বললো দোকানে সর্ষে ইলিশের মশলা আছে! চাইলে তাও নিতে পারি! আর জিজ্ঞেস করলো, কি কি লাগবে! সে সব খুঁজে বের করে দিতে পারবে!

দেশে অনেকদিন যাইনা। দেশের সহজ সরল মানুষজন বহুদিন দেখিনা! তাদের কথা শুনিনা। তাই ছেলেটার সাথে গল্প করতে করতে দেশের একদম সাধারণ মানুষ, তাদের নিত্যকার জীবন যাপন, হাসি, আনন্দের কথা মনে হচ্ছিলো!

যাইহোক, এই উইকেন্ডে আর ইলিশ মাছ রান্না করিনি। শিম, জলপাই, টমেটো দিয়ে গুলশা মাছের মাখা মাখা ঝোল রেঁধেছিলাম! নিজের সেই রান্না খেয়ে আমি নিজেই মুগ্ধ! শিম আর মাছের কম্বিনেশন, সাথে টক টক ঝোল, সাদা গরম ভাতের সাথে পুরোই অমৃত! সাথে আরও ছিলো দেশি রেস্টুরেন্ট স্টাইলের পাঁচমিশালি সবজি, আলু দিয়ে মুরগীর গিলা কলিজা ভুনা আর আলু, বেগুন টমেটো দিয়ে ভেটকি মাছ ভুনা!

06/05/2025

#অপ্রিয়কথা

রাজু ভাস্কর্যে নারীর প্রতি কওমি জনগণের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ নামের একটা ভিডিও তে দেখলাম বেশ কয়েকজন মুসলিম পুরুষ তাদের মনের লুকানো ধর্ষকামীতা, নারী নির্যাতনের ক্ষুধা কুশপুত্তলিকার উপর মেটাচ্ছে! ব্যাপারটা দেখতে এতো বিভৎস, এতো ভয়ংকর লাগছিলো যে মনে হচ্ছিলো ধর্ম বইয়ে পড়া আইয়ামে জাহেলিয়াত এর প্রতিচ্ছবি দেখছি!

আমাদের দেশে ধর্ম বা মুসলমান নিয়ে কেউ টুঁ শব্দ করলেই জাতীয় শত্রুতে পরিনত হয়! আর তার সাথে এখন যুক্ত হয়েছে পলিটিক্যাল এজেন্ডা! তাই অনেক বিশিষ্ট ব্যাক্তিদেরও দেখছি এই ভিডিও ডিফেন্ড করতে চলে এসেছে! তাদের মতে এই কুশপুত্তলিকা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা কে উদ্দেশ্য করে তৈরি করা হয়েছিলো, তাই দেশের লিবারেল (পড়ুন, তাদের মতে লীগ সাপোর্টাররা) এবং যারা দাঁড়ি টুপি দেখতে পারেনা, তারা নারী নির্যাতনের ইস্যু এনে মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে!

মানে এইসব বিশিষ্ট মানুষরা বলতে চাইছেন কুশপুত্তলিকাটা শেখ হাসিনার হলেই তাকে উলঙ্গ করে পেটানো জায়েজ! তারমানে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর বংগভবনে গিয়ে নারীর অন্তর্বাসের ছবি হাতে নিয়ে উল্লাসও এসব বিশিষ্টজন উপভোগ করেছেন, কারন তা হাসিনাকে অপমান অপদস্থ করে! এরাই কিনা আবার প্রমান করতে চায়, দাঁড়ি টুপিওয়ালাদের ব্যাপারে নাকি লিবারেলদের এ্যালার্জি! দাঁড়ি টুপি দেখলেই নাকি লিবারেলদের 'ইসলামোফোবিয়া' কাজ করে!

যদি ব্যাপারটা তাই হয়! তাহলে ভুলটা কোথায়! ক্যামেরার সামনে নারী অবয়বের কুশপুত্তলিকাকে নির্যাতন করেছে তো এই দাঁড়ি টুপিওয়ালারাই! নারীদের বেশ্যা বলে গালি দিয়েছে এই দাঁড়ি টুপিওয়ালারাই! নারীকে রাস্তাঘাটে হেনস্তা করার পর, হেনস্তাকারীর হাতে কোরান শরীফ ধরিয়ে, থানা থেকে ছাড়িয়ে এনে উল্টো সেটা উদযাপন করেছে এই দাঁড়ি টুপিওয়ালারাই!
দেশের বিশিষ্ট জ্ঞানীগুনীজনরা যখন লিবারেল মতবাদকে 'ইসলামোফোবিয়া' হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে। তাহলে লিবারেলরাও দাঁড়ি টুপিতে এ্যালার্জিক হলে, খুব কি ভুল হবে!

তবে এটা স্বীকার করতেই হবে, এসব দাঁড়ি টুপির চাইতেও ভয়ংকর হচ্ছে এইসব তথাকথিত বিশিষ্টজন! যারা নিজেদের নিরপেক্ষতা বুঝাতে গিয়ে 'নির্বোধ' দাঁড়ি টুপিওয়ালাদের রেইপিস্ট আচার আচরনকে উৎসাহিত করে! এদের পক্ষে সাফাই গাইতে আসে! তারা নিজেদের নাম, খ্যাতি, পদ, পদবী আর ফ্যাসিবাদের প্রতি ক্ষোভের আড়ালে নারীর প্রতি বাঙালী পুরুষের চিড়ায়ত অবজ্ঞা, অবহেলা আর ঘৃনাকেই লালন পালন করেন!

শেখ হাসিনা 'ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী' হওয়ার আগেও একজন নারী! আর এইসব তথাকথিত 'বিশিষ্টজন' ফ্যাসিস্ট দমনের কথা বলে একজন নারীর কুশপুত্তলিকাকে উলঙ্গ করে নির্যাতন, হাসাহাসি করাটাকে জনগণের ক্ষোভের বৈধ বহিঃপ্রকাশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে! প্রগতিশীলতার আড়ালে লুকিয়ে রাখা মনের ইচ্ছেগুলো যখন এইসব দাঁড়ি টুপিওলা মানুষগুলোর মাধ্যমে পূরণ হয়, তখন তাকে আড়াল করার জন্য 'ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রতি ঘৃনা' বা 'ফ্যাসিস্টের কোন নারী পুরুষ নেই' এ জাতীয় অনেক কথাই প্রসব করা লাগে!

দিনশেষে যে যেই মতবাদেরই হোক না কেন, এটাতো স্বীকার করতেই হবে যে এক নারী প্রতিকৃতিতে শাড়ি পড়ানো হয়েছে, আর কয়েকজন পুরুষ মারতে মারতে সেই শাড়ি খুলে ফেলেছে! আর একজন নারী হিসেবে এরচেয়ে বড় লাঞ্ছনার দৃশ্য আর কি হতে পারে! আমি নিশ্চিত প্রতিটা নারীই এই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছে! সে হাসিনা বিদ্বেষী হোক কি না হোক! আর তাই এই জঘন্য আচরনের পক্ষে যে বা যারাই সাফাই গাইতে আসবে, ধরে নিতে হবে সেও আসলে মনেপ্রাণে নারী নির্যাতক! শুধু সুযোগের অভাবে নিপাট ভদ্রলোক!

©মুনলীন

Address

Barangaroo, NSW

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Shabz Diary posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Shabz Diary:

Share