20/11/2025
জকসু নির্বাচনে পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক’ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আনোয়ারা বরুমচড়ার ইমন আহমেদ।
‘স্মার্ট লাইব্রেরি ও ক্যারিয়ারমুখী সেমিনার’ গড়ার প্রত্যয়ে আনোয়ারা প্রার্থী ইমন আহমেদের ভাবনা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে বইছে ভোটের হাওয়া। দীর্ঘ ৩৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই ঐতিহাসিক নির্বাচন ঘিরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা যেমন তুঙ্গে, তেমনি প্রার্থীদের মাঝেও দেখা যাচ্ছে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে উৎসাহ। আসন্ন নির্বাচনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে ‘পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক’ পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মার্কেটিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইমন আহমেদ। সম্প্রতি তিনি গণমাধ্যমের কাছে নিজের ভাবনা ও নির্বাচনী পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
নির্বাচন নিয়ে নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে ইমন আহমেদ বলেন, "দীর্ঘ ৩৮ বছর পর 'জগাবাবুর পাঠশালা' খ্যাত আমাদের এই প্রিয় ক্যাম্পাসে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এটি কেবল একটি নির্বাচন নয়, বরং শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের উৎসব। ক্যাম্পাসে এখন এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। অনেক শিক্ষার্থী তাদের জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন, যা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য গর্বের।"
নিজের প্রার্থিতা ও অভিজ্ঞতার বিষয়ে তিনি বলেন, "২০২২ সালে পাবলিকিয়ান হিসেবে এই ক্যাম্পাসে আমার যাত্রা শুরুর পর থেকেই আমি দেখেছি, এই ছোট ক্যাম্পাসে আমাদের কত সীমাবদ্ধতার সাথে লড়াই করতে হয়। ক্লাসরুম সংকট থেকে শুরু করে লাইব্রেরি ও সেমিনার কক্ষের অপ্রতুলতা—এসব সমস্যা আমি নিজেও একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে প্রতিনিয়ত ফেস করছি। আমাদের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের অধিকারগুলো প্রায়ই আন্দোলন করে আদায় করতে হয়। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আমি অনুধাবন করেছি, একজন শিক্ষার্থীকে বিশ্বমানের নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে উন্নত পাঠাগার ও মানসম্মত সেমিনারের কোনো বিকল্প নেই।"
পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক নির্বাচিত হলে তিনি কী কী উদ্যোগ গ্রহণ করবেন, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু পরিকল্পনার কথা জানান। তার পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. পাঠাগারের আধুনিকায়ন: কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পরিধি বৃদ্ধি করে শিক্ষার্থীদের জন্য আরামদায়ক পড়াশোনার পরিবেশ নিশ্চিত করা। ২. ডিজিটাল বা ই-লাইব্রেরি সিস্টেম: জার্নাল, রিসার্চ পেপার ও আর্টিকেল তৈরির প্রক্রিয়া সহজ করতে ই-লাইব্রেরি পরিধি বৃদ্ধি করা। পাশাপাশি একটি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ তৈরি করা যেখানে একাডেমিক, ক্যারিয়ার, সাহিত্য ও গবেষণাধর্মী বইগুলোর পিডিএফ সংরক্ষিত থাকবে। ৩. বিভাগভিত্তিক পাঠকক্ষ: কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির চাপ কমাতে প্রত্যেকটি বিভাগে আলাদা পাঠকক্ষ (Reading Room) চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ। ৪. বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি: একাডেমিক বইয়ের পাশাপাশি সমসাময়িক ও নতুন প্রকাশিত বইয়ের সংগ্রহ বাড়ানো। ৫. স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও সেমিনার: প্রতি মাসে অন্তত দুটি সেমিনার বা ওয়ার্কশপ আয়োজন করা। এর মধ্যে সফট স্কিল, হায়ার স্টাডিজ, মেন্টরশিপ প্রোগ্রাম এবং ক্যারিয়ার বিষয়ক সেমিনার প্রাধান্য পাবে। পাশাপাশি জব ফেয়ার (Job Fair) আয়োজনের পরিকল্পনাও রয়েছে। ৬. মাল্টিমিডিয়া সেমিনার কক্ষ: সেমিনার কক্ষগুলোকে আধুনিক ও মাল্টিমিডিয়া সুবিধাসম্পন্ন করে গড়ে তোলা।
পরিশেষে শিক্ষার্থীদের সমর্থন চেয়ে ইমন আহমেদ বলেন, "আমার লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের জন্য একটি আইটিনির্ভর আধুনিক পাঠাগার ও প্রাণবন্ত সেমিনার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। খুব শীঘ্রই আমি আমার পূর্ণাঙ্গ ইশতেহার ঘোষণা করব। আমার এই লড়াইয়ে আমি আমার সকল শিক্ষার্থী ভাই-বোনদের দোয়া, পরামর্শ ও মূল্যবান ভোট প্রত্যাশা করছি।"
তার নির্বাচনী স্লোগান— "আইটিনির্ভর পাঠাগার ও প্রাণবন্ত সেমিনার, আপনার ভোটে বাস্তবায়িত হোক আমার অঙ্গীকার।"
#জকসু
#জকসুনির্বাচন২০২৫
#জগন্নাথবিশ্ববিদ্যালয়