20/07/2025
জমিদার প্রসন্ন কুমার সেন ছিল চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়ার প্রভাবশালী জমিদার। পি কে সেন হিসেবেই সবাই চেনেন।
১৮৯০ সালে পি কে সেন চট্টগ্রামের সদরঘাটে ১৬ শতক জমি কিনে তার ওপর নির্মাণ করেন ভবনটি।
কলকাতা থেকে দক্ষ কারিগর এবং প্রায় শতাধিক রাজমিস্ত্রি নিয়ে আসেন। এটি সাততলা ভবন হওয়ার কারণে জায়গাটির নাম হয় পি কে সেনের সাততলা।
সেই সময় সদরঘাট এলাকা জঙ্গলে ঢাকা ছিল। জঙ্গল সাফ করে রাস্তাও তৈরি করেন প্রসন্ন কুমার। সাততলা ভবনের চারতলা পর্যন্ত ছিল বসতবাড়ি। পঞ্চমতলায় ছিল মন্দির। এর পরের দোতলাজুড়ে গম্বুজ। এ গম্বুজের কারণেই ভবনটির বিশেষত্ব।
মূল ভবনের চারতলা আবাসিক। গম্ভুজের ভেতর খোলামেলা বৈঠকখানা ও চারিদিকে উন্মুক্ত বারান্দা ছিল। যেখান থেকে চমৎকার কর্ণফুলী নদীর দৃশ্য দেখা যেত।
চারতলা পর্যন্ত ভবনের মাঝখান বরাবর দুইটি নান্দনিক সিঁড়ি দুইদিক থেকে নিচে নেমে এসেছে।
শোনা যায় ‘চালমুগারা’ নামে এক ধরনের অ্যান্টিসেপটিক ওষুধ বিপণন করে প্রচুর টাকার মালিক হয়েছিলেন তিনি।
এখনকার ডেটল বা সেভলন যে কাজে ব্যবহার হয়, চালমুগারা ছিল অনেকটা সেই রকম ওষুধ। কাটাছেঁড়া সারানোর জন্য ব্যবহার হতো ওষুধটি।
এছাড়া তেলের ঘানিসহ আরো নানা ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছিল প্রসন্ন কুমারের।
দেশ ভাগের পর পঞ্চাশের দশকে ঘোষ পরিবারের কাছে বাড়িটি বিক্রি করে ভারতে পাড়ি জমান পি কে সেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পাক বাহিনী এ ইমারতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। হত্যা করে ঘোষ পরিবারের চিন্তাহরণ ঘোষকে।
একাত্তরের ধ্বংসযজ্ঞের পরও টিকে আছে দালানটি। তবে মূল ফটকসহ ভবনের অনেক কিছুই এখন আর নেই। চারপাশে গড়ে ওঠা অসংখ্য ভবন রীতিমতো টুটি চেপে ধরেছে দালানটির। শ্বাসরুদ্ধ হয়ে আসছে যেন।
সংগৃহীত