1971miles

1971miles I'm Sajnan, Long Distance Bicycle Traveler. Wish me, follow Me and Became an Active Fan .

Happy World Bicycle Day. I deeply miss those days of riding for hours on end, effortlessly covering 100, 200, or even 30...
03/06/2025

Happy World Bicycle Day. I deeply miss those days of riding for hours on end, effortlessly covering 100, 200, or even 300 kilometers. I truly hope my family and I can return to that wonderful life soon.

Place: Baralacha La Pass- 4850m
Photo: 1971miles (Clicked by me)

দ্বিতীয় পর্ব - খারদুংলা অভিযান: ভালোবাসার স্পর্শে পথ চলাদ্বিতীয় দিন: ১৪ই মে, ২০১৮ডুলহাজরা - বাঁশখালী - চট্টগ্রামসেদিনের ...
14/05/2025

দ্বিতীয় পর্ব - খারদুংলা অভিযান: ভালোবাসার স্পর্শে পথ চলা

দ্বিতীয় দিন: ১৪ই মে, ২০১৮
ডুলহাজরা - বাঁশখালী - চট্টগ্রাম

সেদিনের সকালটা আমার কানে ভেসে আসা বৃষ্টির মিষ্টি শব্দে শুরু হলো। ঘুম ভাঙলো ঠিক সকাল ৬টায়, কিন্তু ওই ভেজা সকালের আলসেমিতে আবার একটু ঘুমিয়ে নিলাম, উঠলাম সাড়ে আটটায়। বাইরে তাকিয়ে দেখি আকাশ একেবারে ঝলমলে, মেঘের কোনো চিহ্নই নেই। মনে একটা তাড়া অনুভব করলাম, তাই চটজলদি আমার ব্যাগপত্র গুছিয়ে নিলাম, সফরের জন্য তৈরি হলাম। আন্টি, যার আন্তরিকতায় আগের রাতটা দারুণ কেটেছিল, তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে পথে নামলাম।

আগের রাতে যখন এসেছিলাম, তখন চারদিকে নিকষ কালো অন্ধকার, কিছুই ঠাহর করতে পারিনি। সকালে গেট থেকে বের হয়ে বুঝলাম, রাতের ধারণাটা ভুল ছিল। এ তো ছবির মতো গ্রাম! আশেপাশে অজস্র গাছপালা, সবুজে সবুজ, যার প্রধান কারণ হলো কাছেই রয়েছে সাফারি পার্ক। আগের দিন রাতে যে মিষ্টি দাদুটির দোকানে নাস্তা করেছিলাম, আঙ্কেলের সাথে সেখানে গেলাম। দুটো কলা আর একটা রুটি খেলাম, আর ওনার থেকে বিদায় নিয়ে আবার আমার যাত্রা শুরু করলাম।

আজ আমার গন্তব্য চট্টগ্রাম। সাফারি পার্কের গেটে পৌঁছাতেই যেন মেঘেরা তাদের কান্না শুরু করে দিলো – ঝুম বৃষ্টি নামলো। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম, বৃষ্টি থামলে আবার সাইকেলে পা রাখলাম। শুরু হলো হালকা বাঁকানো আর ছোট ছোট টিলা মেশানো পথ। এই রাস্তায় আমার দ্বিতীয়বার সাইকেল চালানো, তবে এখানে সবসময়ই অনেক গাড়ির ভিড় থাকে। সাইকেল চালাতে চালাতে হঠাৎ করেই ত্রিপুরার বড় মুরার পাহাড়ি রাস্তার কথা মনে পড়ে গেল। ২০১৭ সালে নিয়াজ ভাইয়ের সাথে সাইকেল নিয়ে ত্রিপুরায় গিয়েছিলাম, সেই পথের সাথে এর বেশ মিল আছে। চকোরিয়া পার হয়ে পেকুয়ায় একটু দাঁড়ালাম, দুটো জুসের প্যাকেট নিলাম। এই গরমে একটু জুস শরীরটাকে শান্তি দেবে।

সকাল থেকেই চট্টগ্রাম থেকে একের পর এক ফোন আসতে শুরু করলো। কত সাইক্লিস্ট বন্ধু শহরে অপেক্ষা করছে আমার সাথে একটু দেখা করার জন্য! চট্টগ্রামের সুবীর দা তো দুপুরে একসাথে খাবেন বলে আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বুঝলাম, সময়মতো পৌঁছানো আমার জন্য কঠিন, তাই দাদাকে একটা ফোন করে জানিয়ে দিলাম। অন্যদিকে, আমার দুই বন্ধু সানজু ভাই আর দেলোয়ার চট্টগ্রাম থেকে আমার দিকেই রওনা হয়েছেন, আমাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। ভাবতেই মনটা ভরে গেল – এত মানুষের ভালোবাসা! সকালে বৃষ্টি হলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে রোদের তেজ বাড়তে লাগলো, তাই আর দেরি না করে দ্রুত বাঁশখালী পৌঁছালাম। একটা হোটেলে ঢুকে হালকা কিছু খেলাম এবং হঠাৎ মেরিন ড্রাইভের সেই আম এর কথা মনে পরলো, দেরী না করে হোটেল থেকে লবন নিয়ে আম টা খেয়ে নিলাম। সেখানে আমার সমবয়সী কয়েকজন সাথে আড্ডা জমে গেল, কিভাবে যে আধ ঘণ্টা পেরিয়ে গেল, বুঝতেই পারিনি।

গরমের তেজে গলা শুকিয়ে কাঠ, জল নিতেও ভুলে গেছি। সামনে একটা ছোট্ট চড়াই, দেখি একজন আইসক্রিমওয়ালা মামা যাচ্ছেন। তাকে ডেকে পাঁচ টাকা দিয়ে একটা কমলা আইসক্রিম নিলাম। মুহূর্তের মধ্যে গলাটা জুড়িয়ে গেল। আইসক্রিম শেষ না হতেই পেটে কেমন মোচড় দিলো! তাড়াতাড়ি একটা মসজিদের ওয়াশরুমে গিয়ে শান্তি পেলাম। পেট ঠান্ডা তো মনও ঠান্ডা, সাইকেলে যেই না উঠলাম, মুন্নার ফোন – সেও আসছে আমাকে এগিয়ে নিতে। ধীরে ধীরে পথ চলতে লাগলাম... সাঙ্গু নদীর ব্রিজ পার হতেই সানজু ভাইদের সাথে দেখা হয়ে গেল। ব্রিজের পাশেই সরকার হাট এলাকা, সেখানে বিশাল গরুর হাট বসেছে। তিনজন মিলে গেলাম তৈলার দ্বীপের দিকে, একটা পুরনো রাজবাড়ি দেখবো বলে। শুধু কি সাইকেল চালালেই হবে, দেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যও তো জানতে হবে, তাই না? রাজবাড়ি দেখে গেলাম আরও তিন-চার কিলোমিটার দূরে, একটা প্রাচীন মসজিদ দেখতে। এর মধ্যেই রাস্তায় মুন্নার সাথে দেখা।

ঘোরাঘুরি শেষে আমাদের গন্তব্য "বাবা লুঙ্গির" দোকান (কর্ণফুলী ব্রিজের পশ্চিম পাশে)। আপনাদের মতোই আমিও প্রথমে দোকানের নাম শুনে একটু থমকে গিয়েছিলাম! লুঙ্গি বাবার দোকানে গিয়ে দেখি অনেক সাইক্লিস্ট বন্ধু অপেক্ষা করছে – মিনহাজ ভাইসহ আরও অনেকে, যাদের নাম হয়তো এখনো অজানা। পেটে তখন রাজ্যের ক্ষুধা, তাই ওখান থেকেই হালকা কিছু খেয়ে নিলাম। সুবীর দার সাথে ফোনে কথা বলে পৌঁছালাম বাদল ভাইয়ের সাইকেলের দোকানে। সেখানে দাদা আমার জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন, আমার দেরি হওয়ায় আর বেশি সময় তার সাথে দেখা হলো না সেদিন। দাদা বিদায় নিয়ে তার কাজের উদ্দেশ্যে যান।

বাদল ভাইকে দিয়ে সাইকেলটা আরেকবার ভালো করে চেক করিয়ে নিলাম। সে শুধু চেকই করলো না, আমার পুরো সাইকেলটা একদম ঝকঝকে করে দিলো! এরই মধ্যে সিআরবিতে আরও অনেক সাইক্লিস্ট বন্ধু এসেছে আমার সাথে দেখা করার জন্য। তাদের সাথে বসে এতদিনের পথের কিছু গল্প আর অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম। শহরে পা দিতেই যেন ব্যস্ততা বেড়ে গেল, বাদল ভাইয়ের দোকানে কত চেনা মুখের সাথে দেখা! এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, চট্টগ্রামে আমি কতটা আপন মনে করছি। সেদিন রাতে দেলোয়ারের বাসায় ছিলাম। রাতে ওর মায়ের হাতের রান্না অমৃতের মতো লাগলো, তৃপ্তি করে খেলাম আর তারপর ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দিলাম বিছানায়।

পরের দিন সকালে সুবীর দার সাথে দেখা করার আর সিআরবিতে দ্বি-চক্রযান সাইক্লিস্টদের সাইকেল চালানো শেখানোর অনুষ্ঠানে থাকার পরিকল্পনা। ঢাকায় আমার নিজের পরিবার, আর চট্টগ্রামে যেন পেলাম আরেকটা ভালোবাসার পরিবার! এটা আমার পরম সৌভাগ্য।

টেকনাফের আঁধার থেকে ডুলহাজরার আলো১৩ই মে, ২০১৮: প্রথম দিন"খারদুংলা বাইসাইকেল এক্সপেডিশন"-এর স্বপ্নীল যাত্রা শুরু হলো আজ, ...
13/05/2025

টেকনাফের আঁধার থেকে ডুলহাজরার আলো

১৩ই মে, ২০১৮: প্রথম দিন

"খারদুংলা বাইসাইকেল এক্সপেডিশন"-এর স্বপ্নীল যাত্রা শুরু হলো আজ, তবে শুরুটা যেন এক রহস্যময় আঁধারে মোড়া। টেকনাফের রাতের আকাশ বিদ্যুতের অভাবে প্রায় ৭০ শতাংশ সময়ই ছিল নীরব, নিস্তব্ধ। ভোরের আলো ফোটার আগেই, যখন প্রকৃতি আলস্য ভাঙছে, ঠিক ৫:৩০-এ আমার ঘুম ভাঙলো। শরীরে তখন অভিযানের উত্তেজনা, তাই দ্রুত হাতে সাইকেলের ব্রেকগুলো পরীক্ষা করে নিলাম। সকাল ৬:২০-এর মধ্যেই ইমরানকে সাথে নিয়ে টেকনাফের সেই বহু আকাঙ্ক্ষিত জিরো পয়েন্টের দিকে রওনা হলাম।

অথচ নিয়তির খেলায় বাদ সাধলো দু'দিন আগের কালবৈশাখী। শাহপরীর দ্বীপের পথে প্রকৃতির রুদ্রমূর্তি রেখে যাওয়া ধ্বংসলীলার চিহ্ন স্পষ্ট। তাই বেশি দূর আর এগোনো হলো না। সাবরাংয়ের জিরো পয়েন্টে দাঁড়িয়ে বন্ধু ইমরানের কাছ থেকে বিদায় নিলাম। এবার মেরিন ড্রাইভের মসৃণ পথ আমার সঙ্গী, গন্তব্য তখনও বহুদূর। আকাশ জুড়ে তখন মেঘের লুকোচুরি, আর হঠাৎ করেই শুরু হলো দমকা হাওয়া। বাতাসের সেই অপ্রত্যাশিত সহায়তা যেন পালতোলা নৌকার মতো গতি এনে দিলো আমার সাইকেলে—স্পিড ছুঁলো ২৫-৩০ কিমি/ঘণ্টা। কিন্তু প্রকৃতির খেয়াল কখন বদলায় কে জানে! আচমকাই পিছন থেকে ধেয়ে এলো এক পশলা বৃষ্টি। আশেপাশে দাঁড়ানোর মতো নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে না পেয়ে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে প্রাণপণে প্যাডেল চাপতে লাগলাম। তবুও শেষ রক্ষা হলো না, হাল্কা ভিজে গেলাম। এক অদ্ভুত পরিস্থিতিতে পড়লাম—যেন সামনেও বৃষ্টি ধেয়ে আসছে, আর পিছনেও তার তাড়া! ভাগ্যিস কিছুদূর যেতেই রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায় এক ছোট্ট দোকান খুঁজে পেলাম। ব্যাগ থেকে তাড়াহুড়ো করে প্লাস্টিকের টার্প বের করে যখন সাইকেল ঢাকতে যাচ্ছি, তখন বুঝলাম একা এই বাতাসের সাথে পাল্লা দেওয়া কঠিন। দেবদূতের মতো একজন জেলে ভাই এগিয়ে এসে সাহায্য করলেন। বৃষ্টি আর বাতাসের সেই যুগলবন্দী যেন মেরিন ড্রাইভের পরিচিত সৌন্দর্যকে আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিলো।

বৃষ্টি থামতেই আবার শুরু হলো আমার পথচলা। শরীর তখন ক্লান্ত, কিন্তু গন্তব্যের হাতছানি উপেক্ষা করার সাধ্য নেই। একটু আগেই বৃষ্টি হয়ে গেল, আর এখন যেন আকাশ থেকে আগুনের হলকা নামছে! শাপলাপুরে পথের ধারে এক দোকান থেকে হাফ লিটার জুস পান করে শরীরে কিছুটা শক্তি ফিরে পেলাম। কিন্তু প্রকৃতির মতিগতি বোঝা দায়—কিছুদূর না যেতেই ফের আকাশের রং বদলালো। প্রায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা ধরে চললো সেই দমকা বাতাস। ইচ্ছে করছিল একটু দাঁড়াই, মেরিন ড্রাইভের পাশে বসে সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের খেলা দেখি, কিন্তু বৃষ্টির ভয়ে সাহস হলো না। সোনাপাড়া মোড়ের কাছে চোখে পড়লো এক ছোট্ট ছেলেকে, রাস্তার পাশে ডাব বিক্রি করছে। চলন্ত অবস্থাতেই হাঁক দিলাম—"দাম কত?" ছেলেটির সরল উত্তর—"মামা, আপনার জন্য ৩০!" বিশ্বাস হতে চায় না, কক্সবাজারে এত সস্তা ডাব! আর সাইজ? মাশাল্লাহ, বেশ ভালোই। ডাবের মিষ্টি জলে গলা ভেজালাম, আর সেই সাথে দেড় ঘণ্টা ধরে চললো বিশুদ্ধ বাতাসের সাথে আমার নীরব কথোপকথন। ছেলেটির সাথে জমে উঠলো এক অপ্রত্যাশিত বন্ধুত্ব, যেন বহুদিনের চেনা কেউ। আড্ডার ফাঁকে সে দুটো পাকা আমও দিলো, তবে লবণ না থাকায় সেদিন আর খাওয়া হলো না, এমনকি আমের কথা ভুলেও গেলাম।

হিমছড়ির আঁকাবাঁকা পথ পেরোনোর পরই যেন আকাশ ভেঙে নামলো বৃষ্টি। ভিজতে ভিজতেই চালালাম, মেরিন ড্রাইভ যেখানে শেষ হলো, সেখানেই চোখে পড়লো এক সাধারণ হোটেল। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মামা যেন আমাকে দেখেই চিনতে পারলেন। মনে পড়লো, আগের দিন কক্সবাজার থেকে ফেরার পথে তার কাছে এক গ্লাস জল চেয়েছিলাম। মানুষটা মনে রেখেছে! আমার ক্লান্ত সাইকেলটিকে হোটেলের ভেতরে টেনে নিয়ে ভেজা শরীরেই দুপুরের খাবারের জন্য বসলাম। সেই সাধারণ খাবারের স্বাদ আজও মুখে লেগে আছে—গরুর মাংস ষাট টাকা, পোয়া মাছ চল্লিশ, আলু ভর্তা দশ, ডাল দশ, পুঁই শাক বিশ আর তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলা সেই ভাতের দাম মাত্র পঁচিশ টাকা। এতক্ষণ ধরে শরীরে জমানো ক্যালোরির চেয়েও বেশি হয়তো খেলাম, তবে সেই তৃপ্তি ছিল অমূল্য।

পেটের পূজা শেষে আবার পথ ধরলাম—লক্ষ্য কক্সবাজারের জিরো পয়েন্ট, তারপর ডুলহাজরা সাফারি পার্ক। কিন্তু জিরো পয়েন্ট যেন এক গোলকধাঁধা! শহরের অলিগলি চষে ফেললাম, ক্লান্তিতে শরীর ভেঙে আসছিল। অবশেষে এক হোটেলের সামনে আবিষ্কার করলাম সেই কাঙ্ক্ষিত জিরো পয়েন্ট। আমার এই জিরো পয়েন্টের খোঁজ যেন উৎসুক মানুষের মনে কৌতূহলের ঢেউ তুললো।

হাইওয়েতে ওঠার পর বাতাসের প্রবল ধাক্কা যেন প্রতিটি প্যাডেল ঘোরাকেই কঠিন করে তুলছিল। ঈদগাঁও পৌঁছাতে যখন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো, তখন মনে হলো আজকের মতো বিশ্রাম প্রয়োজন। চট্টগ্রামের সাইক্লিস্ট তমাল ভাইয়ের বাড়ি আজ রাতের আশ্রয়স্থল। বিকেল থেকেই তমাল ভাইয়ের বাবার উদ্বিগ্ন ফোন আসতে শুরু করেছিল, সন্ধ্যা যত বাড়লো, ফোনের মাত্রাও তত বাড়লো। কটখালী বাজারে দাঁড়িয়ে যখন সাইকেলের সামনের আলো ঠিক করছিলাম, তখন প্রায় সাতটা বাজে। ওখান থেকে আরও চার কিলোমিটার পথ বাকি... স্থানীয়দের সাবধানবাণী—সামনে নাকি 'ডাকাত পড়ে', তাই ডানে-বামে না তাকিয়ে সোজা চলে যেতে হবে। তখনই বুঝলাম কেন সেই স্নেহময় আংকেল এতবার ফোন করছিলেন—এতো ভালোবাসা!

শুনেছিলাম, সাফারি পার্কের আশেপাশে একসময় ডাকাতির ঘটনা বেশি ঘটতো। বুকের ভেতর চাপা ভয় নিয়ে লাইট জ্বালিয়ে প্যাডেল চাপা শুরু করলাম। কিছুদিন আগে সুন্দরবনের ডাকাতদের নিয়ে একটা লেখা পড়েছিলাম, তখন থেকেই কেমন যেন একটা অদম্য কৌতূহল জেগেছিল—তাদের দেখার। কিন্তু আগ্রহের সাথে ভয়ও তো ছিল! ডাকাত আর দেখা হলো না সেদিন, তাই সাবধানে, সামনের আলো বন্ধ করে, নিঃশব্দে চালানোর চেষ্টা করছিলাম। চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, এর মধ্যে সেই অচেনা বাড়ি খুঁজে পাবো কিভাবে, তাও বুঝতে পারছিলাম না। শেষ চার কিলোমিটার পথ যেন আর শেষ হতে চাইছিল না। অবশেষে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা স্নেহময় আংকেল তার হাতের টর্চলাইটের আলো দিয়ে আমাকে ইশারা দিলেন। যাক, ডাকাতের খপ্পরে পড়িনি! এ যাত্রা বেঁচে গেলাম।

সত্যি বলতে, চট্টগ্রামের স্থানীয় ভাষার কিছুই আমি বুঝি না। সেই আন্তরিক আংকেল যখন তার আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলছিলেন, তখন কিছুই বুঝতে পারিনি। তবে তার চোখের স্নেহ আর মুখের উদ্বেগের ভাষা আমার কাছে স্পষ্ট ছিল। পেটে তখন রাজ্যের ক্ষুধা, কিছু বলার আগেই তিনি নিজের হাতে কলা আর রুটি এগিয়ে দিলেন। তাদের ছোট্ট সংসারে বিদ্যুতের ছোঁয়া নেই। রাতের অন্ধকারে, নাস্তা শেষ করে যখন তাদের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম, তখন কোন পথে হেঁটেছি, কোন দিক দিয়ে গিয়েছি কিছুই ঠাহর করতে পারিনি। বাড়ির সদর দরজা দিয়ে ভেতরে ঢোকার পর মনে হলো যেন এক ঘন জঙ্গলের মাঝে এসে পড়েছি।

ঘরের ভেতরে ঢুকেই আন্টির হাতের তৈরি অমৃতের মতো শরবত পান করে ভেজা জামাকাপড় বদলালাম। তারপর আন্টি আর আঙ্কেলের সাথে বসেই শুরু হলো আমার এই পাগলাটে ভ্রমণ নিয়ে গল্পের আসর। তাদের অজস্র প্রশ্নের উত্তর দিতে ভালোই লাগছিল। অনেকক্ষণ ধরে চলা সেই গল্পের শেষে, আঙ্কেলের সাথে বসেই রাতের খাবার খেলাম। খাবার শেষ করে যখন আমার জন্য নির্দিষ্ট ঘরে গেলাম, তখন আংকেল হাতে ধরিয়ে দিলেন তার লেখা একটি ছোট্ট বই। এরপর শুরু হলো তার জীবনের গল্প—এক করুণ অথচ অনুপ্রেরণাদায়ক কাহিনী। কতবার যে ট্রেনিং নিয়েও দেশের জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার সুযোগ পাননি, সেই আক্ষেপ আজও তার চোখে স্পষ্ট। বইটি আকারে ছোট হলেও প্রতিটি পাতায় ছিল দেশের প্রতি গভীর ভালোবাসা, নিজের জীবন সংগ্রামের কথা আর যুদ্ধের রক্তঝরা ইতিহাস। বইটি তিনি আমাকে উপহার দিলেন—যেন এক অমূল্য স্মৃতিচিহ্ন। এখন আমি ডুলহাজরা সাফারি পার্কের পাশেই এক বিদ্যুৎহীন গ্রামের কোনো এক বাড়িতে। প্রকৃতির নীরবতা আর সরল মানুষের উষ্ণতা—জীবন সত্যিই সুন্দর।

ইন্টাগ্রাম আইডি ফলো করুন:
https://www.instagram.com/1971miles.bd

16/09/2024
04/09/2024

এ সুর ও মায়ার প্রতি যে ভালোবাসা রয়েছে সেটি মুছে ফেলা কি এত সহজ ?

এমন কোন আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে আমরা ভুগছিনা যে জাতীয় সঙ্গীত ও পতাকা পরিবর্তন করার মত দাবি তুলতে হবে। দেশের জন্মটা ভুলে গেলে তো আমাদের নিজেদের অস্তিত্বও হারিয়ে যাবে। এধরনের দাবীর কোন যৌক্তিকতা নেই। সারা দুনিয়ার মানুষ লাল সবুজ পতাকা বলতে বাংলাদেশকে বুঝে, ইন্ট্যারন্যাশনাল ইভেন্ট গুলোতেও লাল সবুজ পতাকা উড়ছে, পাশাপাশি জাতীয় সঙ্গীত ও বাজছে।

বাংলাদেশের ৬৪ জেলার বিভিন্ন অঞ্চল খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমার ছোট্ট জীবনে, কী স্নেহ কী মায়া গো! আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।

বি:দ্র: ২০১৯ সালে বানানো হয়েছিলো ভিডিওটি,আজকে রিমেইক করেছি।

Link https://youtu.be/SzNviy-qX8I?si=SHP-ltzedvpmioNf

❤️
25/06/2024

❤️

৪৩ তম দিন: ২৪শে জুন ২০১৮

গতকাল থেকেই জড় মাথা ব্যাথা ছিলো। সব কিছু মিলেয়ে বেশ কঠিন সময় পার হচ্ছে দিল্লীতে। নিজের সাথেই নিজেই সলা পরামর্শ করে চেষ্টা করছি সমাধান বের করার জন্য। এটা চ্যালেঞ্জ জন্য আরেক ধরনের চ্যালেঞ্জ। নিজের কাপড় নিজের ধুতে হয়। নিজের খাবার নিজেকে খুজে বের করে এনে পেটকে শান্তি দিতে হয়। নিজে অসুস্থ হলে নিজেই নিজেকে সেবা শুশ্রূষা করতে হয়। যে কোন বাজে পরিস্থিতি নিজেকেই সামাল দিতে হয়। নিজেকেই নিজের মেন্টালি প্রেসার গুলো কমানোর ব্যবস্থা করতে হয়। বিষয় গুলো লেখা যত সহজ বাস্তব টা তার থেকে হাজার গুন বেশি কঠিন। আমি জানি না এখন পর্যন্ত ৫ টি মাউন্টেন পাস অতিক্রম করতে পারবো কিনা! ৫ টি না পারলেও ৪ টি মাউন্টেন পাস অতিক্রম করে তো নিজেকে নিজেরই শান্তনা দিতে হবে। গতকাল সারাদিন এ ভাবনা নিয়েই দিন কেটে গেছে!
সন্ধ্যায় বের হয়েছিলাম খানিক ক্ষনের জন্য এর মধ্যে ছবিতে যে সাইকেল দেখা যাচ্ছে এটা দেখে কিছুটা মন ভালো হয়ে যায় ♥ দিল্লীতে ৫ম দিন পার হয়ে গেলো :) এখন সত্যিই বোরিং লাগছে... কবে যে দিল্লি থেকে বের হবো সারাদিন এটাই মাথায় ঘুড়ছে। ভালো আছি বেশ :)

😔
24/05/2024

😔

Partho Saha : Breaking Barriers at 5370m! 🏔️Meet Partho Saha, the FIRST Bangladeshi to conquer the Khardungla challenge,...
08/09/2023

Partho Saha : Breaking Barriers at 5370m! 🏔️

Meet Partho Saha, the FIRST Bangladeshi to conquer the Khardungla challenge, emerging as the ultimate finisher at a breathtaking altitude of 5370 meters! 🇧🇩🏆

Celebrating this monumental achievement and applauding Partho's indomitable spirit!

Welcome to The Khardungla Family ❤️

Address

Badda

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when 1971miles posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to 1971miles:

Share