
04/07/2025
বাঘার রাজিব বন্ধুর সার্টিফিকেট দিয়ে ৮৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাত
নিজের ছবি ছাড়া জীবনবৃত্তান্তে নাম, বাবার নাম, ঠিকানা, সবকিছুই সনদ অনুযায়ী ব্যবহার করেছেন বন্ধু টিপু সুলতানের। এভাবে ১০ বছর বন্ধু টিপু সুলতানের সনদের ফটোকপি দিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আসছিলেন রাজিব আলম।
এভাবেই রাজধানীর একটি প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্রীয় গুদামের সহকারী ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন।
সম্প্রতি রাজিব আলমসহ তাঁর সহকর্মীদের বিরুদ্ধে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ৮৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকার মালামাল আত্মসাতের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ প্রকৃত টিপু সুলতানের বাড়িতে নোটিশ পাঠালে ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।
রাজিব আলমের বাবার নাম আলতাব হোসেন। তাঁর বাড়ি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আরিফপুর গ্রামে। তিনি ২০১১ সালে উপজেলার চন্ডিপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও তেঁতুলিয়া-পীরগাছা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট অ্যান্ড কারিগরি বিএম কলেজ থেকে ২০১৪ সালে এইচএসসি পাস করেন।
একই গ্রামে বাড়ি টিপু সুলতানের। বাবার নাম খয়বার আলী। টিপু সুলতান উপজেলার নওটিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালে এসএসসি, শরীফাবাদ মহাবিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে এইচএসসি ও রাজশাহী কলেজ থেকে ২০১৬ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর করেছেন। টিপু সুলতান সাত থেকে আট বছর ধরে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি করছেন। বর্তমানে একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পলমল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় গুদামের এজিএম (স্টোর) মশিউর রহমান (আইডি নম্বর ৮৩৯৫) ও রাজিব আলম (কাগজে–কলমে টিপু সুলতান আইডি নম্বর ৮৩৯৫) সহকারী ব্যবস্থাপক পদে কর্মরত ছিলেন। হিসাব নিরীক্ষণে ধরা পড়ে মশিউর ও রাজিবসহ কয়েকজনের যোগসাজশে অপরাধমূলক জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কোম্পানির ৮৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। পরে কোম্পানির কেন্দ্রীয় গুদামের এজিএম ফজলুর রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করেন। পুলিশ ঠিকানা ধরে টিপু সুলতানের বাড়িতে নোটিশ নিয়ে গেলে বিস্তারিত জানতে পারে।
এ বিষয়ে টিপু সুলতান বলেন, ‘রাজিব আমার সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরি করছে, সেটা আমার জানা ছিল না। মামলার পর আমার বাড়িতে পুলিশ গেলে জানতে পারি। বাঘা থানায় গিয়ে এ ব্যাপারে একটি জিডি করতে গেলে পুলিশ জিডি নেয়নি। পরে চারঘাট সেনা ক্যাম্পে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে লোকজন বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলেছেন। তবে আইনি জটিলতা হয় কি না, সে বিষয়ে আশঙ্কা করছি।’
রাজিব আলমের বাবা আলতাব হোসেন বলেন, বিষয়টি তাঁরা মীমাংসা করে নেবেন। কারও কোনো সমস্যা হবে না।
মামলার বাদী কোম্পানির এজিএম ফজলুর রহমান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি তিনি জেনেছেন। টিপু সুলতানের ভাই তাঁকে ফোন করে সব বলেছেন। তিনি রাজিব আলমের জাতীয় পরিচয়পত্রের ছবি আদালতে জমা দিয়েছেন। নির্দোষ টিপু সুলতানের যাতে কিছু না হয়, ব্যাপারটি তিনি দেখবেন।