09/02/2024
#চতুর্থ_অধ্যায়_জ্ঞানযো #গীতা
#শ্লোক২০
ত্যত্ত্বা কর্মফলাসঙ্গং নিত্যতৃপ্তো নিরাশ্রয়ঃ। কর্মণ্যভিপ্রবৃত্তোহপি নৈব কিঞ্চিৎ করোতি সঃ ।। ২০ ৷৷
ত্যক্বা-ত্যাগ করে; কর্মফলাসঙ্গম্-কর্মফলের আসক্তি; নিত্য- সর্বদা; তৃপ্তঃ- পরিতৃপ্ত; নিরাশ্রয়ঃ- আশ্রয়শূন্য; কর্মণি - কর্মে; অভিপ্রবৃত্তঃ - পূর্ণরূপে প্রবৃত্ত; অপি-সত্ত্বেও; ন-না; এব- অবশ্যই; কিঞ্চিৎ - কিছুই; করোতি-করেন; সঃ- তিনি।
অনুবাদঃ কর্মফলের আসক্তি সম্পূর্ণরূপে ত্যাগ করে সর্বদা তৃপ্ত থেকে এবং আশ্রয়ের অপেক্ষারহিত হয়ে তিনি সব রকম কর্মে যুক্ত হওয়া সত্ত্বেও কর্মফলের আশায় কোন কিছুই করেন না।
তাৎপর্যঃ কৃষ্ণভাবনায় ভাবিত হয়ে শ্রীকৃষ্ণের সন্তোষবিধানের জন্য সব রকম কর্ম করার মাধ্যমেই কেবল কর্মবন্ধন থেকে মুক্তিলাভ করা যায়। কৃষ্ণভাবনার অমৃত লাভ করেছেন যে ভক্ত, তিনি বিশুদ্ধ ভগবৎ-প্রেমের দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়ে কর্ম করেন, তাই তাঁর কোন রকম কর্মফলের প্রতি আগ্রহ থাকে না। তিনি এমনকি তাঁর ব্যক্তিগত জীবনধারণের ব্যাপারেও নিস্পৃহ থাকেন, কেননা তিনি সর্বতোভাবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপর নির্ভরশীল। তিনি কিছুই সংগ্রহ বা সঞ্চয় করতে চান না, কিংবা যা কিছু তিনি লাভ করেছেন, সে সবও সুরক্ষিত করতে চান না। তাঁর সাধ্য অনুসারে সর্বতোভাবে তিনি তাঁর কর্তব্য পালন করেন এবং সব কিছুর জন্য কৃষ্ণের উপর নির্ভর করেন। এই ধরনের নিরাসক্ত কৃষ্ণভক্ত ভাল ও মন্দ সব রকম কর্মফল থেকে মুক্ত, যেন তিনি কোন কিছুই করছেন না। এটিই অকর্ম, অর্থাৎ ফলহীন কর্মের লক্ষণ। তাই কৃষ্ণভাবনারহিত যে সমস্ত কর্ম, সে সবই জীবকে কর্মফলের বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখে; আর সেটিই প্রকৃত বিকর্ম, যে সম্বন্ধে পূর্বেই বলা হয়েছে।