12/09/2024
বাড়ি ছেড়েছি, ২০০৯ সালে! বাড়ি ছাড়ার পর আর বাড়িতে টানা এক সপ্তাহ থাকা হয় নি! যাই আর আসি! খুব জরুরী না হলে বাড়িতে যাওয়া হয় না।
গ্রামে থেকেছি আর কত বছর? ১৬ বা ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত! তারপর থেকেই এই শহরে থাকি! কত জায়গায় কতভাবেই এই শহরে থাকা হয় বা হয়েছে! হলে-হোস্টেলে-মেসে-বাসা বাড়িতে- অফিসে-ফ্যাক্টরীতে, গোপনে-আত্মগোপনে- কত রকমভাবেই থেকেছি!
তারুন্য ভরা জীবন নিয়ে এসেছিলাম এখন চুল সাদা হতে শুরু করেছে!
এতটা বছর এতটা সময় এ শহরে চোখের পলকে চলে গেলো, জীবন নিয়ে ভাবতেই পারি নি, অবসর নেই, অবকাশ নেই! জ্ঞান-বুদ্ধি-শিক্ষা-শ্রম- সময় সব আমি এ শহরকেই দিয়ে গেছি অকাতরে!
তবু এ শহর আমার আপন হয়ে উঠে নি। আমি এ শহরের কোন কিছুর প্রতিই কোন টান অনুভব করি না!
আমার টান আছে, আমার মাটির ভিটার টিনের চালের গ্রামের ঘরটার প্রতি! আমি অনুভব করি
যে নদীতে সাঁতার শিখেছিলাম তার বয়ে চলা স্রোত! যে মেঠো পথ ধরে হাঁটতে হাঁটতে ইস্কুলে যেতাম সেই পথ আমাকে টানে!
পাল তোলা নৌকা, কলা গাছের ভেলা, জাম্বুরার বল, কচু পাতার ছাতা আমাকে টানে!
মাঝে মাঝে ভাবনা হয়, যে বন্ধুগুলো গ্রামে থেকে গেল, ওরাই ভাল আছে! এ শহরে আসার খুব একটা প্রয়োজন ছিল না!
শহরের বিষন্নতা, হতাশা, একাকিত্ব, মানসিক যন্ত্রনা, মেকী বন্ধুত্ব, অকারণ ব্যস্ততা, অপ্রয়োজনীয় বস্তুর অবাধ ব্যবহার আমাকে পীড়া দেয়!
এ শহরকে যা দিয়েছি, তা আমার জন্মস্থান গ্রামের পাওনা ছিল!
এ শহর নিতান্ত স্বার্থপর শহর. পাষান শহর, অভিনয়ের শহর! অর্থ-বিত্তের জৌলুসে ভরপুর জটিল সমীকরণের এই শহর! মানুষের জীবন যেন পোকামাকডের জীবনের মতো!
১৬ বছর পর্যন্ত যারা আপন হয়ে উঠেছিল তাঁরাই জীবন শেষে আপন, পাখির কিচির মিচির, সন্ধ্যায় ঝিঁঝি পোকার আওয়াজ, ডাহুক পাখির ডাক, রাতেভর শিয়ালের হুক্কাহুয়া!
পূর্নীমা রাতে শুকনো বাঁশঝাড়ের মরনর শব্দ!
১৫ বছরে আমি এই শহরকে আপন করে নিতে পারি নি! এ শহরও আমাকে আপন ভাবে না! প্রয়োজন ভাবে!
পোষ্ট ভালো লাগলে পেজটির সাথেই থাকুন।