29/03/2024
বিড়ম্বনা – ১
যেহেতু আঙ্গুলের ছাপ মিলছে না সেহেতু বিকল্প ব্যবস্থা হলো নির্বাচন কমিশন থেকে NOC সংগ্রহ করা। কাস্টমার কেয়ারের পরামর্শে নির্বাচন কমিশন থেকে NOC (No Objection Certificate) সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশনে গেলাম। RD – 9 Project এ চাকরি করার সময় আমার সুপারভাইজার ছিলেন মোঃ সেলিম খান। সেই সময় উনি ছিলেন থানা কোঅর্ডিনেটর (TC) আর আমি ডেপুটি থানা কোঅর্ডিনেটর (DTC) । সেলিম খান অত্যন্ত অমায়িক, মানবিক এবং খুব সহায়ক একজন মানুষ। উনি এখন নির্বাচন কমিশনে ইভিএম ট্রেনিং কোঅর্ডিনেটর হিসেবে কর্মরত। আমার জন্য ভালই হলো। উনাকে বিষয়টি জানালাম। উনি আমার আইডি কার্ডের ফটোকপিতে নিজের সীল ছাপ্পর দিয়ে সুপারিশ লিখে আমাকে সাথে করে একজন সহকারী পরিচালকের কাছে নিয়ে গেলেন। সহকারী পরিচালক মহোদয় বললেন আমার আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষা না করে NOC দেয়া যাবে না। তিনি আঙ্গুলের ছাপ নেয়া হয় এমন এক সেকশনে পাঠালেন। সেখানে গিয়ে আঙ্গুলের ছাপ নেয়ার চেষ্টা করা হলো। আঙ্গুলের ছাপ নেয়া সম্ভব হলো না।
ওই সেকশন থেকে এই মর্মে একটা সুপারিশপত্র দেয়া হলো যে, হাতের রেখা মুছে যাওয়ায় একাধীকবার চেষ্ট করেও দুই হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও বাম হাতের তর্জনী আঙ্গুলের ছাপ নেয়া সম্ভব হলো না। সুপারিশ পত্রটি নিয়ে আবারও সেই সহকারী পরিচালক মহোদয়ের কাছে গেলাম। সরকারী কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও এই মানুষটিও অত্যন্ত বিনয়ী এবং সহযোগীতা মনোভাবাপন্ন । কিন্তু আমি আবারও বিড়ম্বনায় পড়লাম।
সহকারী পরিচালক মহোদয় নির্বাচন কমিশনের ওয়েব সাইটে গিয়ে দেখেন আমার আইডি লক করা। জাতীয় নির্বাচনের আগে আমি আমার NID Migration জন্য আবেদন করেছিলাম। মাইগ্রেশন বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন থাকায় আমার আইডি টা লক করা ছিল। আমাকে বলা হলো লক না ছুটানো পর্যন্ত আপনার আইডিতে কাজ করা যাবে না। বিড়ম্বনা শেষ হচ্ছেই না।
তাহলে কি করা? আমার পক্ষে এখন দুই উপজেলায় গিয়ে লক খুলার ব্যবস্থা করা তো দুরহ ও সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। তাঁকে অনুরোধ করলাম, স্যার এখান থেকে কিছু করা যায় কিনা? নির্বাচন কমিশনের এই পরিচালককেও মানবিক মনে হলো। উনি নিজেই বোদা এবং ডোমার উপজেলায় ফোন করে আমার আইডি এর লকটা খুলে দিতে বললেন। একদিন সময় লাগবে বললেন।
যাহোক পরদিন আবার গিয়ে শুনি লক খোলা হয়েছে । উনি তাঁর অফিস সহকারীর সাথে যোগাযোগ করতে বললেন। অফিস সহকারী আমাকে বললেন উনি ব্যস্ত আছেন। এক ঘন্টা পরে আসেন। আমার মোবাইল নম্বর দিতে বললেন। উনি নিজেই কল দিবেন বললেন। বারবার এখান থেকে ওখানে ঘুরতে ঘুরতে আমার নিজের মাথা ই ঘুরে গেছে। বিড়ম্বনা কাকে বলে?
আমি আমার নিজেরই মোবাইল নম্বর লিখতে ভুল করলাম। এক ঘন্টা যায় দুঘন্টা যায় কল আর আসে না। শেষমেশ আবারও অফিস সহকারীর কাছে গিয়ে শুনি আজকের মত উনি চলে গেছেন। আগামীকাল আসতে হবে। এতো দেখি মহা যন্ত্রণা।
আসলে আমিতো মহা বিড়ম্বনায় পড়ে গেছি। আমার মোবাইল নম্বর ভুল হওয়ায় অফিস সহকারী ভুল নম্বরে কল করেছেন। সেই ভুল নম্বরের ব্যক্তিটি হয়তো উল্টাপাল্টা কিছু বলেছেন। অফিস সহকারী রেগে মেগে ক্ষেপে গিয়ে নোট না লিখেই অফিস থেকে চলে গেছেন। ব্যস ………….(চলবে)