
28/03/2025
এই হচ্ছে আমার অবস্থা।
হেলমেটের কাহিনি শেষে দেওয়া আছে। পুরোটা পড়লে বুঝতে পারবেন৷
আনুমানিক ২০০৫ সাল থেকে পড়ালেখা শুরু করেছি৷ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে। শিশু শ্রেনীতে পড়ালেখা শুরু করার পর নিজের নামের সাথে আরও একজন ছাত্রীর নাম মিল থাকায় তার পরিক্ষার খাতার সাথে আমার খাতা মিলে গেলে আমি করি ফেল৷ আর আমার খাতা নিয়ে সে হয়ে গেলো পাস৷ আর আমি থেকে গেলাম আবারও সেই শিশু শ্রেনীতে।
তারপর পরের বছর পাস করে পরবর্তী শেনীগুলোতে একাধারে উত্তীর্ণ হয়ে কলেজ এর পাঠ চুকালাম৷
তারপর তাড়াতাড়ি চাকরি জীবনে ডুকা ও স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষ্যে বেছে নিলাম প্রফেশনাল স্টাডি নার্সিং।
শা*লার জীবনের কি নিয়ম। নার্সিং এ ডুকেই প্রায় ৩ মাসের মাথায়ই দেশে আসলো করোনা মহামারি। হলো লকডাউন৷ কলেজ হলো বন্ধ। টানা ১৮ মাসের জন্য ঘরে বসে গেলাম। নার্সিং ও আর শেখা হলোনা৷ কোনোদিকে চাকরিও আর করতে পারছিনা। অনলাইনে ক্লাস হতো৷ তেমন বুঝতাম না /তেমন গুরুত্ব-এর সাথে নিতাম না৷ তারপর ১৮ মাস পরে কলেজ খুলে দিলো৷ মাত্র দেড় মাস/২ মাস টানা ক্লাস হলো।
এই দেড় দুই মাসের ক্লাসের উপর ভিত্তি করেই হলো ফাইনাল পরিক্ষা। ফাস্ট ইয়ারের বোর্ড এক্সাম৷ কি এক নি*র্ম*ম অবস্থা আমাদের৷ প্রশ্নও সহজ করা হয়নি৷ কিংবা প্রশ্ন সহজ ছিলো৷ আমি /আমরাই পারিনি৷ নিশ্চিত ছিলাম ফেইল করবো৷
এরপর পরিক্ষা ও শেষ। লাস্ট পরিক্ষার দিনই আবার বন্ধ৷ বাসায় চলে গেলাম৷ তারপর বেশ অনেক দিন পরেই রেজাল্ট আসলো আমি নাকি পাস করছি৷ যাক হাফ ছেড়ে বাঁচলাম৷ তারপর আবার সেকেন্ড ইয়ারের ক্লাস শুরু হলো৷ কিছুদিন অনলাইনে ক্লাস হওয়ার পরে ফ্যিজিক্যালি শুরু হলো৷ দেওয়া হলো ক্লিনিক্যাল প্রাক্টিস। ডিউটি। ইনক্লুডিং নাইট।
আমরা ফ্রেসার। তাও হসপিটালে কোনো রোগী আসলে ডাক্তার ম্যামরা কাছে যেতে চাইতেন না। আমাদের দিয়ে সব কিছুই সেরে নিতেন৷ যাক ভয়কে জয় করে আল্লাহর উপর ভরসা করে করোনা টিকা নিয়ে সে যাত্রায় বেঁচে গেলাম৷
তারপর উঠলাম থার্ড ইয়ারে। চলছিলো সবকিছুই ভালো মতো। ক্লাস, প্রাকটিক্যাল ও ক্লিনিক্যাল ডিউটি। আরও সবকিছু৷ কিন্তু থার্ড ইয়ারের কোর্স ডিউরেশন চলে যায়, পরিক্ষার রুটিন আর পাইনা। প্রায় ৬ মাস দেড়ি করে রুটিন হলো পরিক্ষা হলো৷ কিন্তু রেজাল্ট তো আর হয়না৷
তারপর আবারও ৬ মাস দেড়ি করে রেজাল্টও আসলো সাথে ইন্টার্নশিপের আমলনামাও নিয়ে আসলো৷ ( আমার কি ভাগ্য এর মধ্যে আমি কলসিভও করে ফেলেছি৷ হ্যাঁ বিয়ে কিন্তু থার্ড ইয়ারের পরিক্ষার আগেই করে ফেলেছিলাম৷ ) এমনি করে ৩ বছরের কোর্স গিয়ে ঠেকে ৪ বছরের মাথায়৷ একটা বছর লস। এই অবস্থায় ইন্টার্নশিপ করতে থাকলে দিন যতই যায় আমি ততই দুর্বল হয়ে পড়ি৷ তাও ডাবল ডিউটি করে আমার ডেলিভারির ১ মাস আগেই ডিউটি কোর্স শেষ করি৷ ৬ মাসের ডিউটি ৫ মাসে শেষ করি তাও নাইট ডিউটি ছাড় দেওয়া হয়নি আমাকে৷ তারপর আমার বেবি আসলো। আলহামদুলিল্লাহ।🥰 তবে সিজারিয়ান এ বাচ্চা হওয়ায় আমি তো অনেক অসুস্থ ছিলাম। এই অবস্থায় ঢাকা গিয়ে বাচ্চা নিয়ে কি করে লাইসেন্স এক্সাম দিবো?
তাও গেলাম৷ পাসও করলাম। মাশাল্লাহ।
এরপর ১.৫ বছরের একটা গ্যাফ/লিভ নিলাম৷ কিন্তু কি আশ্চর্য। সারাটা জীবন পড়ালেখার পিছনে ছুটে,এত কষ্ট করে লাইসেন্স পেয়ে যখন চাকরির জন্য যাই তখন কিনা শুনতে হয় ১২ ঘন্টা ডিউটি স্যালারি ৬৫০০/= টাকা।যা শুনে মনে হলো কি হলো এই নার্সিং এর জন্য জীবনে এত কষ্ট করে। ৬৫০০/= যা একজন এইড নার্সের সমান হবে৷ আমরা ১০ গ্রেন্ডের চাকরিজীবী। ২য় শ্রেনীর কর্মকর্তা হয়ে একজন ডিপ্লোমা নার্স হয়ে যদি একজন এইড নার্সের চেয়েও কম সন্মানী অফার করা হয় চাকরিতে তাহলে এই প্রফেশনে কে আসতে চাইবে বা নার্সি কে কে/কারা সন্মান করবে বলুন?
আবার যেখানে ভালো সালারি অফার করা হয় সেখানেও ১০কে এর উপরে কেউ উঠতে চায়না৷ আহা
তারপর আসি হেলমেটের প্রশ্নে৷ আমার হেলমেটও এদেশের হসপিটাল মালিকদের মতো আর এর সিস্টেম প্রনেতাদের মতো। আমার চোখ ডেকে রেখেছে আমার হেলমেট যাএই সমাজের ওই কর্তৃপক্ষদের প্রতিনিধিত্ব করে।