09/09/2025
★ এক ছেলে গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর কথাপ্রসঙ্গে তার বাবাকে জিজ্ঞাসা করল, বাবা, সফল জীবন কাকে বলে?
বাবা সরাসরি এই কথার জবাব না দিয়ে বললেন, আমার সাথে চলো, আজ আমরা ঘুড়ি ওড়াব। তখন তোমার প্রশ্নের উত্তর দেব।
ছেলে অবাক হয়ে বলল, কি বলছেন বাবা! এই বয়সে আপনি ঘুড়ি ওড়াবেন!
বাবা তখন ছেলেকে হাত ধরে টানতে টানতে বাড়ির পিছনের মাঠে নিয়ে গেলেন। সেখানে কয়েকটি বাচ্চা ছেলেমেয়ে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিল। বাবা ওদের একজনের কাছ থেকে তার ঘুড়িটা চেয়ে নিয়ে ওড়াতে শুরু করলেন। তিনি নাটাই থেকে সুতা ছাড়ছেন আর ছেলে মনোযোগ দিয়ে দেখছে। আকাশে ঘুড়ি বেশ খানিকটা উপরে উঠে যাবার পর বাবা বললেন, ওই দেখো, ঘুড়িটা অতো উঁচুতেও কেমন বাতাসে ভেসে আছে। তোমার কি মনে হয় না, এই সুতার টানের কারণে ঘুড়িটা আরো উপরে যেতে পারছে না?
ছেলে বলল, তা ঠিক, সুতো না থাকলে ওটা আরও উপরে যেতে পারত!
বাবা আলগোছে সুতা কেটে দিলেন। ঘুড়িটা সুতার টান মুক্ত হয়ে প্রথমে কিছুটা উপরে উঠে গেল, কিন্তু একটু পরেই নিচের দিকে নামতে নামতে দূরে অদৃশ্য হয়ে গেল।
এবার বাবা ছেলের পিঠে হাত বুলিয়ে বললেন, শোনো খোকা, জীবনে আমরা যে উচ্চতায় বা পর্যায়ে আছি বা থাকি, সেখান থেকে প্রায়ই মনে হয় ঘুড়ির সুতার মতো কিছু কিছু বন্ধন আমাদের আরও উপরে যেতে বাধা দেয়। যেমন ঘর, মা-বাবা, স্ত্রী, সন্তান, পরিবার, বন্ধুবান্ধব, অনুশাসন ইত্যাদি। আর আমরাও সেইসব বাঁধন থেকে কখনো কখনো মুক্ত হতে চাই। বাস্তবে ঐ বন্ধনগুলোই আমাদের উঁচুতে টিকিয়ে রাখে; আমাদেরকে স্থিরতা দেয়, নিচে পড়তে বাধা দেয়। এই বন্ধন না থাকলে আমরা হয়ত ক্ষণিকের জন্য কিছুটা উপরে যেতে পারি, কিন্তু অল্পসময়েই আমাদেরও পতন হবে ঐ বিনে সুতোর ঘুড়ির মতোই! জীবনে তুমি যদি উঁচুতে টিকে থাকতে চাও, তবে কখনোই ঐ বাঁধনগুলো ছিঁড়বে না। সুতা আর ঘুড়ির মিলিত বন্ধন যেমন আকাশে ঘুড়িকে দেয় ভারসাম্য; তেমনি সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধনগুলো আমাদের সাফল্যের শিখরে টিকে থাকার ভারসাম্য দেয়। আর এটাই প্রকৃত সফল জীবন।