DH. SAYED

DH. SAYED I'm a writer, designer & SMM. I can give full support of your digital marketing & Writing project... This is Delower Hossain. I'm from United Arab emirate.
(6)

I'm a Digital Marketer and writer.

শিরোনাম -- নির্মমতার নগ্ন নৃত্যতারিখ ------ ২৬-০৭-২০২৫কলমে ------ ডি এইচ সাইদ, বরিশাল মানুষ আজ আর নিছক কোন প্রাণী নয়,সে ...
25/07/2025

শিরোনাম -- নির্মমতার নগ্ন নৃত্য
তারিখ ------ ২৬-০৭-২০২৫
কলমে ------ ডি এইচ সাইদ, বরিশাল

মানুষ আজ আর নিছক কোন প্রাণী নয়,
সে এক বিপর্যস্ত সত্তা! এক নিছক অশরীরী উদ্বন্ধন!
অন্তর্লীন ক্ষুধার অসুরীয় ছায়ায় আচ্ছন্ন।
মানবিক অনুশোচনা, সংবেদনার আভাস নির্বাসিত,
সেখানে তার দৃষ্টিপাতে শুধু লোভাতুর অতৃপ্তি,
কণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয় নির্মম কপটতা।
সম্পর্কের গূঢ় শিকড়সমূহ যেন নিষ্ঠুর স্বার্থপরতার আগ্নি-স্রোতে জ্বলে পুড়ে মৃত ছাই!
হৃদয়ের কোমল অনুভবগুচ্ছ আজ নির্বাসিত হয়েছে এক শুষ্ক বিবেকহীন পরিসরে।
যেখানে ভালোবাসা, সহানুভূতি, আর মায়া কেবল দুর্ভিক্ষপীড়িত শব্দাবলী।

সভ্যতার মুখোশ খুলে গেলে যে গহ্বর দেখা দেয়,
তা এক নিষ্ঠুর পৈশাচিকতা!
যেখানে বিবেক নিঃশব্দ, আর সত্য নির্বাসনের দ্বারপ্রান্তে অনিশ্চয়তায় দাঁড়িয়ে।
মানবরূপী হিংস্রতা যখন শিকারের নেশায় উন্মত্ত,
তখন সভ্যতা হয়ে পড়ে প্রহসনের পংক্তি,
মানবতা রূপান্তরিত হয় ধূলিধূসরিত কঙ্কালে।
আত্মার অন্তর্লীন আকুলতা যেন আজ অহংকারের শাণিত ছুরিতে ক্ষতবিক্ষত,
সম্পর্কের স্পন্দন অনুতপ্ত নিস্তব্ধতায় বিলীন।

এই যে নিঃশেষ হয়ে আসা আধ্যাত্মিকতা,
এই যে নিঃসীম অন্তঃশূন্যতা—
এটাই যেন মানুষের নতুন পরিচয়পত্র।
নিষ্ঠুর স্বার্থপরতার নিরবধি পিপাসা প্রতিটি বিশ্বাস, প্রতিটি বন্ধন, প্রতিটি মানবিক স্পর্শকে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে এক অন্তহীন আত্মমোহে নিমগ্ন রাখে।
মানুষের ভেতর ‘মানুষ’ আজ নির্বাসিত,
চতুর্দিকে কেবল নিষ্ঠুর নির্মমতার উল্লাস।

ভালোবাসা আজ বিস্মৃত প্রাচীন কিংবদন্তি,
মায়া একরাশ ক্ষীণ স্মৃতি,
আর সহানুভূতি নিসর্গের হারিয়ে যাওয়া এক ভাষা। সভ্যতার আলোর আড়ালে লুকিয়ে থাকা অন্ধকার আজ গর্জে উঠেছে।
মানুষ হয়ে মানুষকে গ্রাস করছে মানুষই,
যেন এই হিংস্রতা ও লোভই তার চূড়ান্ত বিবর্তন।
এ এক দহনময় মানবসভ্যতা—
যেখানে আত্মা নীরব, হৃদয় পাষাণ, আর জীবন এক দারুণ শূন্যতার দীর্ঘশ্বাস।

=========

বাংলা কবিতার সবচেয়ে জনপ্রিয় পোর্টাল। কবিতা প্রকাশের মাধ্যম এবং লক্ষাধিক কবিতার সমৃদ্ধ আর্কাইভ।

শিরোনাম -- ন্যায়ের বিস্মৃত ভাস্কর্যতারিখ ------ ২৫-০৭-২০২৫কলমে ------ ডি এইচ সাইদ, বরিশালসমৃদ্ধির উদ্ধত প্রবাহে বিবেকের ...
25/07/2025

শিরোনাম -- ন্যায়ের বিস্মৃত ভাস্কর্য
তারিখ ------ ২৫-০৭-২০২৫
কলমে ------ ডি এইচ সাইদ, বরিশাল

সমৃদ্ধির উদ্ধত প্রবাহে বিবেকের কাণ্ডারী দিশাহীন,
দায়িত্বের দালানে জমে অলসতার অচল শৈবাল। কর্তব্যের শিকল জীর্ণ হতে হতে সমাজের মেরুদণ্ড আজ নতজানু,
নিষ্ক্রিয়তার মরিচা গ্রাস করে কর্মশীলতার শেষ ধারা।
অতিরিক্ত স্বস্তির মায়াবী বিভ্রমে চেতনার প্রাসাদ এখন শূন্যগর্ভ,
অলসতার রঙিন বিষাক্ত ধোঁয়ায় হারিয়ে যায় পরিশ্রমের নির্মল সুরভি।

সংগ্রামবিহীন প্রাচুর্যের কুয়াশায় ন্যায়বোধের দীপ শীতল কঠিন!
শক্তিহীন করতল নির্বাক দাঁড়িয়ে থাকে দিগন্তের প্রান্তে।
অতৃপ্ত বাসনার অতিপূর্ণ ভারে সমাজের প্রতিটি শিরা আজ জর্জরিত,
যেখানে ন্যায়ের আসন পরিণত হয় বিস্মৃতির স্তব্ধ স্মারকে।

সমাধানের অপরিসীম ভারে সত্য-মিথ্যার সীমানা ঝাপসা হয়ে আসে,
বিভ্রান্ত চিন্তাধারায় সমাজের ধমনীগুলিতে জমে থাকে অবচেতনের জমাট হতাশা।
নির্বিকার সন্তুষ্টি নেয় এক নিষ্প্রাণ মরুরূপ!
যেখানে দায়িত্ববোধের স্তব্ধতা ধ্বংস করে সমস্ত প্রতিধ্বনি, সমস্ত প্রত্যাশা।

=========

বাংলা কবিতার সবচেয়ে জনপ্রিয় পোর্টাল। কবিতা প্রকাশের মাধ্যম এবং লক্ষাধিক কবিতার সমৃদ্ধ আর্কাইভ।

24/07/2025
 #অন্তিম_প্রেমের_অনন্ত_স্বরলিপি                                   ✍️ DH. SAYED রাত্রি তখন আধো জ্যোৎস্নার আচ্ছাদনে নিমগ্ন...
24/07/2025

#অন্তিম_প্রেমের_অনন্ত_স্বরলিপি
✍️ DH. SAYED

রাত্রি তখন আধো জ্যোৎস্নার আচ্ছাদনে নিমগ্ন। শহরের নিস্তব্ধতা যেন কোনো এক অতল ব্যথার প্রতিধ্বনি।
সেই নিস্তব্ধতাকে বিদীর্ণ করে, ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে একটি ছায়ামূর্তি— "রুদ্রানিল"।

চোখে তার দূরাগত অতীতের কুয়াশা, মনে অপূর্ণতার নিঃশব্দ গর্জন।
বহুদিন পর ফিরে এসেছে সে তার নিজ জন্মশহরে,
যেখানে— প্রেম একদিন তাকে করেছিল একসাথে নিঃস্ব আর নবজাগরিত।

রুদ্রানিল, একজন স্বভাবচিন্তক, অভ্যন্তরীণ জগতের ঘাত-প্রতিঘাতে ক্ষতবিক্ষত মানুষ।
সে একসময় ভালোবেসেছিল এক নারীকে—"অভিশারিণী নীলমাধুরী"।

নীলমাধুরী—
যার নয়নে ছিল নৈরাশ্যের মেঘলা সমুদ্র,
যার হাসিতে লুকিয়ে ছিল সহস্র অভিমানিত স্বপ্ন,
যার প্রতিটি কথায় ছিল চিরন্তন ব্যঞ্জনার স্পর্শ।

তারা একসময় ছিল একে অপরের অস্তিত্বের ব্যাখ্যা—
কিন্তু সময়ের চোরাবালিতে নিঃশব্দে তলিয়ে গেছে সেই অধ্যায়।
আজ, দশ বছর পর, রুদ্রানিল আবার সেই শহরে—
যেখানে প্রেম রচিত হয়েছিল আর প্রেমই ভেঙে গিয়েছিল।

সে হাঁটে— যেন প্রতিটি পা ফেলে সে তার অতীতকে পুনরাবিষ্কার করছে।
স্মৃতির প্রতিটি দেয়ালে আজো অদৃশ্য কালি দিয়ে লেখা আছে নীলমাধুরীর নাম— অনুভবের অদ্ভুত ব্যাকরণে।

হঠাৎ
পুরনো এক লাইব্রেরির পাশ দিয়ে যেতে গিয়ে চোখে পড়ে তার— এক কণ্ঠ, এক ছায়া,
যা রুদ্রানিলের হৃদয়ে এক অদ্ভুত কম্পন সৃষ্টি করে।

কণ্ঠটি বলে—
“আকাশকে কখনও ভুলে যাস না, রুদ্র…
সে কখনো তোমার নয়, তবু তার নীচে তুই দাঁড়িয়ে ছিলিস…”

রুদ্রানিল থেমে যায়। শিরায় রক্ত চলাচলের মতোই থেমে যায় সময়।
সে জানে—
এই শব্দ… এই সুর… এই ব্যথা…
এ নীলমাধুরীর।

রুদ্রানিলের শরীরে এক অজানা শীতলতা ছড়িয়ে পড়ে। তার হৃদয়ের প্রতিটি কোষে যেন এক অদৃশ্য অগ্নিস্রোত প্রবাহিত হচ্ছে, যা স্মৃতির প্রতিটি স্তরকে স্পর্শ করে। সে পুনরায় তাকায়, কিন্তু চোখে পড়ে না সেই অপ্রকাশিত চিত্র— "নীলমাধুরী"। শুধু তার কণ্ঠের প্রতিধ্বনি, যেন শূন্য থেকে এক ঝলক অনুভূতির বন্যা।

"এত বছর পর, তুমি কি সত্যিই আমাকে চিনতে পারবে, নীল?"— নিজের মনেই প্রশ্ন তোলে রুদ্রানিল।
তার মনের গভীরে এক প্রবল শিহরণ জাগে, যেমন কোনও পুরানো অভিমানী সুর ফিরে আসে, কিন্তু ভাঙ্গা সুরে কোনো উচ্চারণ নেই।

সে চুপচাপ লাইব্রেরির দিকে এগিয়ে যায়। সেখানে অনেক বইয়ের ভীড়ে সে নিজেকে হারাতে চায়, কিন্তু মনের মধ্যে এক বিশাল ফাঁকা জায়গা, যেখানে নীলমাধুরীর অস্তিত্ব ছড়িয়ে আছে, আর তাকে শূন্য করে তোলে।
লাইব্রেরির খোলামেলা জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে আসে ঝলমলে রোদ, কিন্তু তা যেন অন্ধকারের আরও গভীরে ডুব দিতে চায়।

বইয়ের দিকে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করে রুদ্রানিল, কিন্তু তার মনের পর্দায় নীলমাধুরীর মুখাবয়ব বারবার ভেসে ওঠে। সে জানে, এই মুহূর্তে এই শহরে, কোনও না কোনও স্থানে, নীলমাধুরী রয়েছে— তার সেই হাসি, তার সেই দুঃখভরা চোখ, আর সেই কন্ঠের লেশ যেন এখনো তার অন্তরে সুর দিয়ে গুঞ্জরিত।

বইয়ের মলাটে চোখ রেখে সে এক গভীর অনুভূতিতে ডুবে যায়। অতীতের কথাগুলো ফিরে আসে, কিন্তু সে কি ভুলে যেতে পারবে সেসব? সেই মুহূর্ত, যখন তারা একে অপরকে অভ্যন্তরীণভাবে চেনেছিল। যখন পৃথিবী ছিল তাদের হাতের মুঠোয়, কিন্তু নীলমাধুরীর অভিমানী মনে, রুদ্রানিলের অব্যক্ত ভালোবাসা কোনও এক মেঘে হারিয়ে গিয়েছিল।

একদিন, কোনো এক সন্ধ্যায়, রুদ্রানিল নিজের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করতে গিয়েছিল— কিন্তু নীলমাধুরী তাকে থামিয়ে দিয়েছিল।
“প্রেমকে পোষ মানাতে হয় না, রুদ্র… এটা এমন এক শ্বাসরুদ্ধকর প্রক্রিয়া, যা শুধুই অপেক্ষা করতে শেখায়।”

তার পরপরই, তারা একে অপর থেকে দূরে চলে যায়, জীবন নিজস্ব পথ ধরে চলে যায়। কিন্তু রুদ্রানিল জানে, নীলমাধুরী কোথাও তার অন্তরে এখনও আটকে আছে— একদম ঠিক যেমন সে ছিল, ঠিক যেমন তাকে সে ভালবাসতো।

হঠাৎ রুদ্রানিলের দৃষ্টি একদম নতুন একটি বইয়ের দিকে চলে যায়। বইটির নাম “অলিখিত চিহ্ন”। সে মলাট খুলে, একটি পাতা উল্টে দেখে, সেখানে তার হাতের লেখা—

"ভালোবাসা কখনও শেষ হয় না, শুধু রূপ পরিবর্তন করে।"

এটাই তার জীবনের শ্লোক। এটা নীলমাধুরী তার জন্য লিখে গিয়েছিল।

এখন, রুদ্রানিল জানে, সে এক নতুন যাত্রায় পা রাখতে চলেছে। এটি তার আত্মার যুদ্ধ, যা শেষ হবে নাকি শুধুই নতুন করে শুরু হবে—
এখন পর্যন্ত সেই উত্তর অজানা।

রুদ্রানিলের চোখ স্থির হয়ে থাকে বইটির পাতায়, যেখানে তার অতীতের প্রতিধ্বনি জেগে ওঠে এক নিঃশব্দ গর্জনে।
এই লাইনটি—
"ভালোবাসা কখনও শেষ হয় না, শুধু রূপ পরিবর্তন করে"
সে নিজে একদিন বলেছিল, কিন্তু আজ, এই বাক্য যেন নিজের বিপরীতে দাঁড়িয়ে তাকে প্রশ্ন করছে।

কে রেখেছে এই বই এখানে?
নীলমাধুরী?
নাকি নিয়তির নিখুঁত পরিহাস?

তাকে কিছুতেই বোঝানো যাচ্ছিল না এই ঘটনাটিকে কেবল ‘দৈবতা’ বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তার মনোজগতের সমস্ত গোপন দ্বার খুলে গিয়েছিল যেন।
অবচেতনে যে স্মৃতি সে কবর দিয়ে রেখেছিল,
তা আজ রক্তক্ষরণ করতে শুরু করেছে— ধীরে, অথচ নিশ্চিতভাবে।

রাত্রি ঘনিয়ে এসেছে। শহরের বাতাসে এখন আর তাপ নেই, আছে কেবল থমকে থাকা নিঃশ্বাস।
রুদ্রানিল হেঁটে চলে আসে নদীর ধারে—
যেখানে তারা একবার বসেছিল নীরবতায় ডুবে, অথচ হৃদয়ের শব্দ ছিল উচ্চারিত।

সেই নদী—
যা এখনো বহমান,
কিন্তু তার ধারায় নেই সেই চঞ্চলতা,
যেমন নেই রুদ্রানিলের হৃদয়ে প্রশান্তির ব্যঞ্জনা।

হঠাৎ, সাঁঝবাতির আলোকে রুদ্রানিলক দেখতে পান
এক জননীমূর্তি—
সে বসে আছে সিঁড়িতে, হালকা নীল শাড়ি পরে, চোখ দুটি স্থির নদীর গহীনে।
চোখের কোণজুড়ে অদ্ভুত এক দ্যুতি,
যা নিঃসন্দেহে বলে দেয়— সে নীলমাধুরী।

তবে সময় তার রূপের ভাষা পাল্টে দিয়েছে।
আগের মতো আর বিদ্রোহিণী নয় সে—
বরং একধরনের অন্তর্গত মৌনতা তাকে ঘিরে রেখেছে।

রুদ্রানিল কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে—
এ যেন কোনো দেবীমূর্তির দর্শন,
যার দিকে তাকালেও উচ্চারণ করা যায় না কোনো শব্দ।

কিন্তু তার ভিতরে চলে এক অবর্ণনীয় উথালপাথাল—
ভালোবাসা, ক্রোধ, ব্যথা, স্মৃতি, প্রশ্ন—
সব একসাথে গলিত হয়ে ছুটে আসছে তার কণ্ঠের দিকে।

হঠাৎ নীলমাধুরী বলে ওঠে,
“তুমি জানো, সময় আমাদের চিঠি পাঠিয়েছে, কিন্তু আমরা একে অপরকে গন্তব্যই লিখিনি—
তাই হয়তো সব পত্র ফেরত গিয়েছে।”

রুদ্রানিল স্তব্ধ হয়ে যায়।
সে বলতে চায়, “তুমি কি আজও আমাকে অনুভব করো?”
কিন্তু তার কণ্ঠে উঠে আসে শুধুই নিঃশ্বাস।

নীলমাধুরী ধীরে উঠে দাঁড়ায়, চোখ তুলে রুদ্রানিলের দিকে চায়।
তার চোখে লেখা—
অস্পষ্ট অভিমান, অথচ গোপন মমতা।

সে শুধু বলে—
“আজ নদীর জল স্বচ্ছ, রুদ্র…
আমরা কি এবার ডুবে দেখতে পারি, কে কাকে কতটা হারিয়েছে?”

মাধুরী সামনে হেঁটে যায়—
পেছনে ফেলে যায় রুদ্রানিলের ভেতরের অতলান্ত প্রশ্নসমূহ।

রুদ্রানিল স্থবির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে— তাকে যেন সমগ্র শহর ভুলে গিয়েছে,
শুধু চারপাশের বাতাস, পায়ের নিচের ধূলি,
আর তার বুকে দহন জাগানো নীলমাধুরীর সেই বিদীর্ণ বাক্যই—
“আমরা কি এবার ডুবে দেখতে পারি, কে কাকে কতটা হারিয়েছে?”

এ কী ছিল?
পুনর্মিলনের আভাস?
না কি নৈরাশ্যের স্বগতোক্তি?
সে বুঝে উঠতে পারে না।

শহরের পুরাতন রেলস্টেশনের দিকে পা চালায় রুদ্রনিল— যেখানে তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল।
একটা শরৎকালীন দুপুর, কাশফুলের মত নিস্তব্ধ,
আর এক অচেনা সাদা ওড়না—
যা বাতাসে ভেসে এসে তার বুকের মধ্যে পড়ে গিয়েছিল,
যেন ভবিষ্যতের এক অনিবার্য ঘোষণা।

আজ সেই প্ল্যাটফর্মের কাঠের বেঞ্চগুলো ভাঙা,
কিন্তু সময় যেন কিছুই ভাঙতে পারেনি তাদের স্মৃতি থেকে।
রুদ্রানিল জানে— আরেকবার কথা বলতেই হবে নীলমাধুরীর সঙ্গে,
তবে এবার শব্দের ব্যাকরণ ছাড়িয়ে অনুভবের ব্যাকরণে।

সে অপেক্ষা করে।
যেন নিজেকে এক অবিরাম স্থবিরতায় বেঁধে রাখে।
চারিদিকে মানুষ আসছে-যাচ্ছে, সময় এগিয়ে যাচ্ছে,
কিন্তু সে দাঁড়িয়ে থাকে এক চেতনাহীন চৌরাস্তায়—
যেখানে হৃদয় ও যুক্তি একে অপরকে পথ ছেড়ে দিতে নারাজ।

এমন সময়, এক শিশুর কণ্ঠে ভেসে আসে—
“দিদি! তোমার বই পড়ে ফেলেছি!”
রুদ্রানিল চমকে উঠে দেখে,
এক বাচ্চা মেয়ে হাতে একটি বই ধরে আছে যার লেখক নীলমাধুরী!

তাহলে সে এখন একজন লেখিকা?
যে নিজের অনুভবগুলো ছড়িয়ে দিয়েছে অক্ষরের সঞ্চারে?
তাহলে কি সেই "অলিখিত চিহ্ন" বইটিও তারই লেখা?
রুদ্রানিলের মস্তিষ্কে চলতে থাকে ঘূর্ণাবর্ত।

সে বইটি নিয়ে পড়ে—
প্রথম পাতায় লেখা:
"এই গ্রন্থ উৎসর্গ— তাকে,
যে নীরব থেকে আমায় বলেছিল—
‘তুমি একদিন আমার গল্প হবে।’"

রুদ্রানিল আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না।
সে যেন ধসে পড়ে এক অদৃশ্য স্রোতে—
যেখানে ভালোবাসা, বিসর্জন, মূক অভিমান ও দহনের শব্দ একসাথে গুঞ্জরিত।

সে ঠিক করে— আগামীকাল সন্ধ্যা।
নদীর ধারে, শেষ আলোয়,
সে নীলমাধুরীর সামনে দাঁড়াবে।
তাকে বলবে—
এই দীর্ঘ নীরবতার নাম ছিল ভালোবাসা।
যা উচ্চারিত হয়নি, তাই তো চিরস্থায়ী সে।

নদীর ধারে সেই সন্ধ্যা—
এক অদ্ভুত রঙ ছড়িয়ে রেখেছে আকাশজুড়ে।
সূর্য অস্ত যাচ্ছে, ঠিক যেমন প্রেম অস্ত যায়, তবু নিভে না।

রুদ্রানিল আগে থেকেই এসেছে।
আজ আর সে দ্বিধায় নন, না সংকোচে।
আজ সে তার সমস্ত অনুক্ত কথাকে অক্ষরে রূপ দিতে চায়,
যতই তা হোক অসম্পূর্ণ অথবা অব্যক্তের অতল থেকে উঠে আসা।

নীলমাধুরী আসে।
চিরচেনা শাড়ি, কিন্তু চোখে আজ অন্যরকম ভাষা—
একান্ত নির্লিপ্ত, অথচ গভীরভাবে আকুল।
তারা মুখোমুখি দাঁড়ায়, যেন সময়কে থামিয়ে রেখে।
তাদের মাঝখানে ছিল না কোনো স্পর্শ,
ছিল কেবল অতীতের ছায়া আর ভবিষ্যতের প্রতীক্ষা।

রুদ্রানিল বলে না “কেমন আছো?”
সে বলে না “আমি এখনো তোমায় ভালোবাসি।”
সে কেবল বলে—
“আমরা কি শেষ হতে পারি, যদিও কোনো শুরু ছিল না?”

নীলমাধুরী একটু হেসে ফেলে।
তবে সে হাসি নয়—
তা ছিল এক দীর্ঘ সহানুভূতির চাপা উজ্জ্বলতা।
সে বলে—
“তুমি কি জানো, ভালোবাসাহীন ভালোবাসা কেমন হয়?
যেখানে নেই দাবি, নেই প্রত্যাশা,
আছে কেবল এক অলিখিত সংলাপ—
যা হৃদয়ে প্রতিধ্বনিত হয়,
কিন্তু মুখে উচ্চারিত নয়।”

রুদ্রানিল চুপ করে শোনে।
সে বোঝে, নীলমাধুরী বদলে যায়নি—
বরং বিবর্তিত হয়েছে।

সে বলে—
“আমার মনে হয়, আমাদের প্রেমটা একেকজন আলাদা ভাষায় লিখেছি।
তুমি অভিমান দিয়ে, আমি অপেক্ষা দিয়ে।
তাই শব্দগুলো কখনও একে অপরের অর্থ বুঝতে পারেনি।”

নীলমাধুরী নদীর দিকে তাকিয়ে থাকে।
সে বলে—
“তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা আজও নিঃশব্দ,
তবে তাতে শব্দের ঘাটতি নেই।
তুমি শুধু ভুল করেছো ভাষা নির্বাচন করতে,
আর আমি ভুল করেছি সময়।”

এই সংলাপ—
এই অদ্ভুত, প্রশান্ত অথচ জ্বলন্ত মুহূর্ত—
তাদের জীবনের সবচেয়ে গভীর সংলাপ হয়ে থেকে যায়।

তারা উঠে পড়ে—
একসাথে হাঁটতে থাকে,
কিন্তু সেই হাঁটায় নেই প্রেমিক-প্রেমিকার স্পর্শ,
আছে সহযোগী স্মৃতির দুই সঞ্চারিত আত্মা।

বিদায়ের আগে নীলমাধুরী বলে—
“ভালোবাসা শেষ নয়, রুদ্র,
আমরা কেবল তার ব্যাকরণ বদলে ফেলেছি।
তাই আজ আমরা শব্দের প্রেমিক, কিন্তু বাক্যহীন।”

রুদ্রানিল তাকিয়ে থাকে তার পেছনে চলে যাওয়া পদক্ষেপে—
যা নিঃশব্দ অথচ উচ্চারিত হয়ে থাকে হৃদয়ের প্রতিটি ধ্বনি-তন্তুতে।

রাত্রি গভীর।
আকাশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে এক অন্তঃস্থ বিষাদের ক্যানভাস—
তাঁরা নেই, চাঁদ নেই,
তবু অন্ধকারের বুক চিরে জ্বলছে এক ধরণের মৃদু আলো,
যা রুদ্রানিলের হৃদয়ে জন্ম নিয়েছে নীলমাধুরীর বিদায়ের মুহূর্তে।

সে জানে,
এই ভালোবাসা বাহ্যিক নয়—
এ এক অন্তর্মুখ প্রেম,
যা শব্দে নয়, চেতনায় বাস করে।
প্রেম, যা কোনো পরিণতির সন্ধান চায় না—
শুধু অস্তিত্বে এক প্রকার অনির্বচনীয় উত্তাপ রেখে যায়।

রুদ্রানিল আজ নিজেকে প্রশ্ন করে—
“ভালোবাসা যদি স্পর্শে না থাকে, তবে কি তা নিঃশেষ হয়?”
সে উত্তর খুঁজে পায় না,
কারণ তার বুকের ভেতরে এক বহ্নিশিখা জ্বলছে,
যা নীলমাধুরীর কোনো এক নিঃশব্দ স্পর্শ থেকে জন্ম নিয়েছিল।

সে লিখে।
প্রতিটি রাতে সে তার ডায়েরির পাতায় লিখে ফেলে সেই অনুভূতির ভাষ্য,
যা উচ্চারিত হয়নি,
কিন্তু অস্তিত্বের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জীবন্ত হয়ে আছে।

“নীল,
তুমি আজও আমার মধ্যে আছো,
কিন্তু আমার ছায়ার মতন নয়—
বরং আমার নিঃশ্বাসের মতো—
যা আমি অনুভব করি,
তবু কখনো দেখতে পারি না।”

নীলমাধুরীও কি ভাবে তাকে নিয়ে?
সে কি এখনো সেই পুরাতন নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে নিজের গল্পগুলো নতুন করে লেখে?
তাদের দেখা নেই, কথা নেই,
তবু ভালোবাসা আছে।
একটি বিপরীতমুখী ঘূর্ণির মতো—
যা বাহিরে নয়,
হৃদয়ের গভীরে ঘুরপাক খায়।

একদিন হঠাৎ,
রুদ্রানিল ডাক পায় এক সাহিত্য সম্মেলনে।
বিষয়— “মৌন প্রেমের ব্যাকরণ”।
সেই আলোচনায়, এক অপরিচিত লেখিকা আসে,
যার মুখ আড়াল, কিন্তু কণ্ঠ......
রুদ্রানিল শিউরে উঠে।

সেই কণ্ঠ বলে—
“ভালোবাসার সবথেকে শক্তিশালী রূপ হলো তা,
যা কেউ জানে না—
তবু তীব্রভাবে অনুভব করে।”

রুদ্রানিল বুঝে যায়—
এ কোনো এলোমেলো সম্মেলন নয়—
এ এক আত্মিক সম্মিলন।

সেদিন তারা আর মুখোমুখি দাঁড়ায় না,
তবে তাদের হৃদয় দুটি একই বহ্নিশিখায় দীপ্তিমান থাকে।
এবার, কারো কিছু বলার দরকার পড়ে না।

সম্মেলনের পরবর্তী সকাল—
রুদ্রানিল একা বসে থাকে এক নির্জন ক্যাফেতে,
সম্মেলনের হলঘরের কাছে,
যেখানে বাতাসও আজ অতীতের মতো ভারী,
আর কফির তাপে ছুঁয়ে থাকে স্মৃতির ঠাণ্ডা রেখা।

সে জানে, গতকাল যা ঘটেছে,
তা কোনো দৈব নয়, কোনো কাকতাল নয়,
বরং—
একটি অমোচনীয় প্রমাণ যে,
ভালোবাসা কখনো ভোলার বিষয় নয়,
বরং গ্রহণের অধ্যায়।

নীলমাধুরীর মুখ সে দেখেনি,
কিন্তু তার কণ্ঠের প্রতিটি কম্পন,
তার উচ্চারণের প্রতিটি যতি,
রুদ্রানিলের হৃৎকম্পের সাথে সমান্তরাল ছন্দে নেচে উঠেছিল।

সে উপলব্ধি করে—
তাদের প্রেম এখন আর জীবনের কাঠামোর মধ্যে নেই।
তা আজ সময়-উত্তীর্ণ, শরীর-অতিক্রান্ত, বাস্তব-উপরিত।

তার প্রেম এখন এক ধরণের আধ্যাত্মিক উপলব্ধি,
যা বলায় নয়, থাকা যায় নির্বচনে।

সে লেখে তার ডায়েরির শেষ পাতায়—
“নীল,
তোমাকে হারাইনি।
তোমাকে আর চাইও না।
কারণ তুমি এখন আমার মধ্যে আছো—
একটি ‘চাওয়া’র পরবর্তী রূপে—
যেখানে নেই আহ্বান,
নেই প্রত্যুত্তর,
তবু আছো, প্রতিটি নিঃশ্বাসে।”

এমনই এক দিনের শেষবেলায়,
সে আবার হাঁটে সেই নদীর পাড়ে।
একটি চিঠি হাতে,
যার প্রাপক— অলিখিত,
তবে পাঠানো ঠিকানায় লেখা—
"নীলমাধুরীর হৃদয়ের এক কোণ, যেখানে আমাদের প্রেম এখনো জেগে আছে।"

সে চিঠিটি নদীর জলে ভাসিয়ে দেয়।
না ফেরার আশায় নয়,
চির থেকে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষায়।

চিঠির প্রথম বাক্য ছিল—
“প্রেম যদি সত্য হয়, তবে তাকে পাঠাতে হয় বাতাসে…
যতক্ষণ না সে নিজে ফিরে আসে—
একটি নতুন ব্যঞ্জনা নিয়ে।”

চিঠি ভেসে যায়।
রুদ্রানিল ফিরে আসে।
পিছনে পড়ে থাকে কেবল ভালোবাসার এক না-হওয়া শেষ অধ্যায়—
যা শেষ নয়,
তবু শেষের মতো পূর্ণ।

-------

শহরের ব্যস্ততা, কোলাহল, আলো, যানজট—
সবই থেমে যায় যখন হৃদয় নিজস্ব এক অচিন্ত্য সুরলিপি বাজাতে শুরু করে।

রুদ্রানিল এখন নিজেকে আর খুঁজে ফেরে না;
সে জেনে গেছে—
নীলমাধুরীকে হারানো মানে তাকে হারানো নয়,
বরং ভালোবাসার নতুন রূপে পুনর্জন্ম দেওয়া।

সে নিয়মিত লেখে,
কিন্তু তার লেখাগুলোর পাঠক আর কেউ নয়—
শুধু সময় আর স্মৃতি।

একদিন, এক নিঃশব্দ বিকেলে
একটি ডাকবাক্সে পড়ে থাকা একটি চিঠি হাতে পায় সে—
চিঠির খাম সাদা, কালি নীল,
অদ্ভুতভাবে চেনা হস্তাক্ষরে লেখা—
“রুদ্রানিল”।

ভেতরে কেবল একটি লাইন—
"ভালোবাসা শেষ হলে তবেই সে চিরস্থায়ী হয়।"
— নীল।

রুদ্রানিলের ঠোঁটে তীক্ষ্ণ এক হাসি।
না, তা আনন্দের নয়—
তা সম্পূর্ণতার তীব্র নিঃশ্বাস।

সে জানে—
তারা কোনোদিন একে অপরের কাছে ফিরবে না।
কোনো ছাদের নিচে বসে শীতের বিকেলে কফি খাবে না,
কোনো ছবি তোলার মুহূর্তে একে অপরকে জড়িয়ে ধরবে না।

তবু—
তাদের প্রেম শেষ নয়।
কারণ এই প্রেম নিরাবরণ, নির্গন্ধ, নির্বাক,
তবু অতীব জীবন্ত।

এ প্রেম,
যা রক্তে নেই, তবু রক্তপ্রবাহে,
শরীরে নেই, তবু প্রতিটি ছায়ার ভিতর,
স্পর্শে নেই, তবু আত্মার গভীরতম স্তরে দগ্ধ হয়ে আছে।

আজ থেকে রুদ্রানিল লিখে না আর,
সে শুধু জেগে থাকে,
প্রতিটি নিশীথে—
যেন কোনো সুর একদিন বাতাসে ফিরে আসে,
যা নীলমাধুরীর কণ্ঠে ছিল একসময়,
আর এখন হয়ে উঠেছে অন্তিম প্রেমের অনন্ত স্বরলিপি।

*****

রুদ্রনীলে'র ভালোবাসা কোন উপন্যাস নয়,
এ এক চেতনা— যা সময় ও শরীরের বাইরে,
আর শুধু তাদের নয়— এ লেখা সব ভালোবাসাহীন ভালোবাসার জন্য চিরন্তন উৎসর্গ।

==========

শিরোনাম -- চিরশান্তির চুম্বকত্বতারিখ ------ ২৩-০৭-২০২৫কলমে ------ ডি এইচ সাইদ, বরিশাল ধূলিমাখা গোধূলির প্রতিচ্ছবিতে যখন ...
23/07/2025

শিরোনাম -- চিরশান্তির চুম্বকত্ব
তারিখ ------ ২৩-০৭-২০২৫
কলমে ------ ডি এইচ সাইদ, বরিশাল

ধূলিমাখা গোধূলির প্রতিচ্ছবিতে যখন শহরতলির ক্ষীণচেতা বাতিগুলো জ্বলে উঠছে, তখনই শুরু হলো এক অলিখিত আত্মসংলাপ।
অভিমন্যু— এক নিঃসঙ্গ অথচ বোধপূর্ণ যুবক, যার চোখে স্বপ্ন নেই, তবু নিরন্তর দেখে যাচ্ছে এক অচিন প্রান্তরের প্রমিথিউস।

তাঁর প্রতিদিনের অনুষঙ্গ ছিলো— ‌নিঃশব্দ কাঠের জানালার বাইরে দৃষ্টিহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা, চায়ের তপ্ত বাষ্পে হারিয়ে যাওয়া চিন্তার ধোঁয়া, আর এক অবিনশ্বর নাম: নন্দিনী।

নন্দিনী— যে ছিলো অভিমন্যুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অলিখিত অধ্যায়, এক অজ্ঞাতসূত্রে যুক্ত তৃষ্ণার নাম।
তার হাসি ছিলো একেকটা শব্দ-উপলব্ধির দোলাচলে বিস্তারিত সৌন্দর্য।
তবে সে ছিলো অবিনির্ণেয়, অপ্রাপ্য, এবং এক অন্তর্গত অন্তর্হানির মতো।

কোনদিন বলা হয়নি ভালোবাসার কথা।
তবু, নন্দিনীর চোখে একবার দেখা দেওয়া বেদনার অতল গভীরতা আজও অভিমন্যুকে রাত্রির বেহিসেবি জাগরণে নিমজ্জিত রাখে।

আজ— বিশ বছর পর, হঠাৎ একটি ইমেইল।

বিষয়বস্তু: "তুমি কি এখনও শোনো মৌনতার গান?"

ইমেইলের নিঃশব্দ আগমন অভিমন্যুর অভ্যন্তরে এক অদৃশ্য ভূমিকম্প সৃষ্টি করল।
প্রেরক— নন্দিনী সেন।

ঠিক সেই বানান, সেই উপাধি— যার প্রতিটি অক্ষর অভিমন্যুর হৃদয়ে ছিল গোপন রাখালের মতন লুকিয়ে থাকা গীত।

মেইল খুলে সে যে বাক্যটি পড়ে— "তুমি কি এখনও শোনো মৌনতার গান?"

সেই এক পংক্তির মধ্যেই যেন যুগপৎ সমস্ত অতীত, অব্যক্ততা ও অনুশোচনার সারমর্ম একত্রিত।

অভিমন্যু বুঝল, নন্দিনী ফিরে এসেছে— শুধুমাত্র স্পর্শে নয়, চিন্তায়।
সে জানত, এমন প্রশ্ন শুধু তার পক্ষেই সম্ভব;
কারণ মৌনতা ছিলো তাদের ভাষাহীন যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন।

সেই সময় মনে পড়ল—
বিশ বছর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই বারান্দায় দাঁড়িয়ে তারা একবারও সরাসরি কথা বলেনি,
তবু একদিন হঠাৎ ঝড়বৃষ্টির রাতে, নন্দিনী তার পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলেছিল—
"তোমার চোখে কি কখনো ঘুম নামে না?"

সে প্রশ্ন ছিল না, বরং এক আত্মিক আবেদনের সূচনা।

আজ, ঠিক সেইরকম এক অব্যক্ত প্রশ্ন আবার ফিরে এসেছে।

অভিমন্যু উত্তরে লিখল:

"মৌনতা তো কেবল গান নয়,
তা এক রাত্রি-নিষিক্ত ঋতুস্রাবিত নিঃশ্বাস,
যা তুমি রেখে গেছো বাতাসে।"

ইমেইল পাঠানোর পর যেন একটা মানসিক মুক্তিস্নান সম্পন্ন হলো।
অথচ…
পরদিন ভোরবেলা যখন অভিমন্যু তার ইনবক্স খুলল,
একটি নতুন মেইল অপেক্ষা করছিল:

বিষয়: "তুমি কি জানো, আমি এখন বিবাহিতা?"

বার্তা:
"তবু তোমার চোখের সেই মৌনতাই আমাকে বারবার টেনে আনে সেই অপরাধী আত্মবিশ্লেষণে।
তুমি কি এখনও ভালোবাসো?"

নন্দিনীর শেষ লাইন—
"তবু তোমার চোখের সেই মৌনতাই আমাকে বারবার টেনে আনে সেই অপরাধী আত্মবিশ্লেষণে।
তুমি কি এখনও ভালোবাসো?"
এই একটি বাক্যে অভিমন্যুর হৃদয়ের গূঢ়তম স্তরে যেন শৈত্যপাত হয়েছিল।

সে জানত, এ প্রশ্ন উত্তর চায় না।
এ এক আত্মসমর্পণের ঢেউ— যা না বলা ভালোবাসার ওপর হিমবাহের মত চাপা পড়ে থাকা আকাঙ্ক্ষার চিৎকার।

অভিমন্যু সারা দিন একটিও শব্দ লেখেনি।
সে নীরবতা দিয়েই উত্তর দিতে চেয়েছিল।

কিন্তু…
নৈঃশব্দ্যও তো একপ্রকার প্রতিধ্বনি।
আর সেই প্রতিধ্বনি ভেদ করে রাতে এল আরেকটি মেইল:

নন্দিনীর বার্তা:
*"আমার স্বামী অর্ক একজন নির্মোহ মানুষ।
সে ভালো, ভীষণ ভালো।
তবু তার ছোঁয়ায় যে বিষণ্নতা জেগে থাকে আমার অন্তঃকর্ণে—
তা কি তুমি বুঝতে পারো?

তোমার একটুখানি চোখে তাকানোয় যে বিপন্নতা আমি অনুভব করতাম,
তা আমার বৈবাহিক জীবনের নীরব ভোজে নেই।

তুমি কি বুঝতে পারো, ভালো থাকা আর ভালোবাসা এক নয়?"*

পাঠ শেষ করে অভিমন্যু যেন অনুভব করল—
সমস্ত বাতাস ভারী হয়ে এসেছে।
প্রেম— যা ছিল একপাক্ষিক, অতঃপর নিষিদ্ধ—
আজ তা তারই প্রাক্তন অনুরক্তার বিবাহিত জীবনের পর্দার ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আসছে নিঃশব্দ আকুতি হয়ে।

সে লিখল না কিছুই,
শুধু নিজের ডায়েরিতে লিখল একটি পংক্তি:

"তুমি যদি অপরের হও, তবে কেন আমার নিঃশ্বাসে এত তোমার স্বর!"

তবে সেই রাতে,
প্রথমবারের মতো নন্দিনী তার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চাইল।

শব্দহীনতা আর সাহসের ফাঁকে দাঁড়িয়ে,
তারা ঠিক করল— দেখা করবে।

একটি ক্যাফে— পুরনো শহরের প্রান্তে।
যেখানে নন্দিনী বলবে,
"তোমার নৈঃশব্দ্য ছিল আমার হৃদয়ের সবচেয়ে সত্য উচ্চারণ।"

শহরের প্রান্তে, পুরনো এক ক্যাফে—
যার কাঁচের জানালায় সময় জমেছে সেলাইয়ের পরিপাটি ছাঁকে,
সেইখানে বসে ছিল অভিমন্যু।
একটি টেবিল, দুটি কাপ, একটি অপ্রকাশিত ব্যাকুলতা—
আর প্রতীক্ষা।

ঘড়ির কাঁটা তার মতোই অভ্যন্তরীণ কৌতূহলে কাঁপছিল।

অবশেষে,
জ্বরধরা বিকেলের মতো— নন্দিনী এল।

সে পরেছিল ধূসর শাড়ি, চোখে হালকা কাজল,
আর কপালে এক বিন্দু অভিমান।

কোনো প্রাথমিক সম্ভাষণ নয়,
কোনো অবান্তর সংলাপ নয়,
সরাসরি প্রশ্ন:

নন্দিনী:
“তুমি কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসতে?”

অভিমন্যু:
“ভালোবাসতাম না— তাইতো কোনোদিন বলিনি।
ভালোবাসলে হয়তো বলেই ফেলতাম।”

এই বাক্যে জমে থাকা অপরাধবোধ— নন্দিনীর চোখের পাতায় নেমে এল জল হয়ে,
তবে তা কান্না নয়,
বরং সংবৃত বেদনার নীরব প্রতিচ্ছবি।

তারা চুপচাপ বসে রইল।
চারপাশে শহরের কোলাহল ছিল, কিন্তু তাদের চারপাশে ছিল এক অন্তর্গত নির্জনতা—
যেখানে শব্দের কোনো প্রয়োজন নেই,
যেখানে অতীত এক গোপন অভিসার হয়ে বর্তমানকে স্পর্শ করে।

নন্দিনী ফিসফিস করে বলল:
“তুমি জানো? আমি আজও মনে করি—
তুমি যদি একদিন শুধু একবার আমার দিকে এগিয়ে এসে বলতে ‘চলো’,
তাহলে আমি আমার সমস্ত নির্মিত জীবন ভেঙে ফেলতাম তোমার জন্য।”

অভিমন্যু হাসল না, চোখ নামাল না, পালাল না।
শুধু বলল—
“তুমি তখন চঞ্চলা ছিলে, আজ তুমি স্থিত।
আমার ভালোবাসা মাঝপথেই থেমে গিয়েছিল—
তোমার দৃষ্টিতে অপরাধী হয়ে নয়,
তোমার হাত না ধরার দায়ে আমি অপরাধী।”

নন্দিনী চোখ নামিয়ে বলল,
“তুমি এখনো ঠিক আগের মতো— অপরাধ নিয়ে গর্বিত, অথচ নিঃশব্দ।”

সেদিন, কোনো প্রতিশ্রুতি হয়নি।
কোনো ভবিষ্যতের স্বপ্ন আঁকা হয়নি।
তারা কেবল দুজনে,
দুই ভিন্ন জীবন বহন করেও,
একটি অপরিসীম অন্ধকার অনুভূতিকে ছুঁয়ে দেখল।

তাদের ভালোবাসা— এখনো এক অসমাপ্ত বাক্য,
যার শেষে নেই প্রশ্নচিহ্ন,
আছে শুধু নিষিদ্ধতার অন্তরালে লুকানো অপরাধের অনুগল্প।

দেখা শেষে তারা আলাদা হয়েছিল ঠিক যেমন আলাদা হয়েছিল বছর বিশেক আগে!
কিন্তু এবার তাদের মধ্যে ছিল না এক অসম্পূর্ণতা, বরং ছিল এক পূর্ণ জ্ঞাপন—
ভালোবাসা উচ্চারিত নয়, তবু প্রতিধ্বনিত।

অভিমন্যু ফিরে এসেছিল তার নিঃসঙ্গ কক্ষের অন্তঃস্থ বিষাদে।
রাতের পর রাত, তার ঘুম এখন পরিণত হয়েছে নন্দিনী-তাড়িত নৈঃশব্দ্যবহ চেতনাবিধ্বস্ত বিভ্রমে।

এক রাতে, সে একটি চিঠি লিখল।
নন্দিনীকে নয়।
লিখল নিজেকেই।

"প্রিয় অভিমন্যু,"
"তুমি যে ভালোবাসো, তা এখন অস্বীকার করার উপায় নেই।
তবে সেই ভালোবাসা এখন আর নন্দিনীর প্রতি নয়—
তা সেই নন্দিনী-সংজ্ঞার প্রতি,
যে সংজ্ঞা তোমার ভিতরে গঠিত,
ভ্রান্ত, বিমূর্ত, এবং পলাতক।"

"বাস্তবতা আমাদের ব্যাকরণ ভেঙেছে—
আমরা যে ক্রিয়াপদে বাঁধা, তাতে ভালোবাসা এক অব্যয়,
নির্বিকার অথচ নির্ণায়ক।
তাকে স্থায়ী করতে নেই কোনো কাল— নেই কোনো কালের বিভাজন।
নন্দিনী এখন এক অলৌকিক ব্যাকরণবিধ্বস্ততা—
যেখানে তুমি প্রতিনিয়ত মিশে যাচ্ছো নিজেকেই হারিয়ে।"

"তুমি তাকে পাওনি বলেই আজ সে তোমার।
আর যদি পেতে, তবে হয়তো প্রেম হারাতো তার অলৌকিকতা।
এটাই প্রেমের শ্রেষ্ঠ অভিশাপ—
যা পূর্ণ হলেই ফুরিয়ে যায়, আর অসম্পূর্ণ থাকলেই চিরন্তন।"

চিঠি লিখে সে পুড়িয়ে ফেলল,
তবে ছাইটুকু রেখে দিল জানালার পাশে।

পরদিন সকালে, সে নন্দিনীকে আর একটি ইমেইল পাঠাল—
না অভিযোগে, না আকাঙ্ক্ষায়,
শুধু একটি পঙক্তিতে:

“তুমি ছিলে, আছো, থাকবে—
তবে বাস্তবতায় নয়, ব্যাকরণভাঙা আত্মায়।”

নন্দিনী আর কখনো উত্তর দিল না।
তবু প্রতিটি মৌনতা, প্রতিটি স্বপ্ন, প্রতিটি অসমাপ্ত বাক্য আজও অভিমন্যুর চেতনায় বলে চলে—

“ভালোবাসা কখনো কেবল পাওয়া নয়—
তা এক স্বর্গীয় অনুপস্থিতির পূর্ণ অভিজ্ঞতা।”

বছরখানেক কেটে গেছে।
নন্দিনীর আর কোনো চিহ্ন আসেনি— না শব্দে, না সুরে, না সঞ্চারে।
অথচ অভিমন্যুর প্রতিদিন ঠিক একরকম রয়ে গেছে,
ঠিক যেমন একটি নদী শুষ্ক মরুপ্রান্তে গোপনে জলধারা বয়ে রাখে—
চোখে পড়ে না, কিন্তু নিঃশব্দে ভিজিয়ে দেয় অতল মাটি।

সে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান করে— "নীরবতা ও ব্যাকরণহীন অনুভব"-এর উপর।
তার প্রতিটি বক্তৃতা শুরু হয় এই লাইন দিয়ে—
“কিছু ভালোবাসা ভাষা চায় না, কিছু অভিমান কোনো ব্যাখ্যার অধীন নয়।”

একদিন, ছাত্ররা জানতে চাইল—
“স্যার, আপনি কি কোনোদিন প্রেমে পড়েছিলেন?”

অভিমন্যু একটু থেমে, এক ফালি হাসি নিয়ে বলল—
“হ্যাঁ, পড়েছিলাম।
তবে সেটি প্রেম ছিল না, ছিল এক ধরনের চুম্বকত্ব—
যা আমাকে টানত সেই মানুষটির দিকে,
যাকে আমি কখনো ছুঁইনি,
কিন্তু যার দিকে ফিরে তাকানো মানেই ছিল
নিজেকে আরও গহীনে চিনে ফেলা।”

অভিমন্যুর ঘরে এখনো সেই জানালা আছে—
যার পাশে একবার বসেছিল নন্দিনীর ছায়া, মনে মনে।
আর আছে সেই পুরোনো ছাইরঙা কাগজ, যেখানে লেখা এক পঙক্তি:

"তুমি যদি অপরের হও, তবে কেন আমার নিঃশ্বাসে এত তোমার স্বর!"

-------

এক অপরাহ্ণে অভিমন্যু ছাদে উঠে চেয়ে থাকে সায়াহ্নের আকাশের দিকে।
নির্বাক, নিশ্চল, অথচ গভীর এক শান্তির মধ্যে।

সে জানে—
নন্দিনীকে সে কোনোদিন পায়নি।
তবু যেভাবে সে তাকে হারায়নি,
সেভাবেই চিরকাল তাকে ধরে রেখেছে নিজের একান্ত ভেতরে।

এই প্রেম কোনো কবিতা নয়, কোনো উপন্যাসও নয়,
এ এক আত্মীয়তা-মণ্ডিত মৌন চুম্বকত্ব—
যা নামহীন, ক্লেদহীন,
তবু চিরন্তন।

=========

22/07/2025

আজ সহমর্মিতার ভাষা যেন পাপপঙ্কিল পৃথিবীতে বিলীন,
অভিব্যক্তির সমস্ত শব্দ শোকের ভারে নিস্তব্ধ,
তবু তোমার দয়ার সিংহাসনে, হে রহমান, হে রাহিম— তুলে ধরি নিঃশব্দ আকুলতা।

দুঃখে জর্জর হৃদয়ের অন্তরতম শিরা দিয়ে—
বইছে যে হাহাকার নিহত ও আহত স্বজনের শূন্যতায়,
তাদের জন্য প্রার্থনা করি,
দাও হে রব, সবরের শাশ্বত শক্তি,
যেন তারা শোকের তীব্রতাকেও ইবাদতের সওয়াব জ্ঞান করে।

আর যারা চলে গেছে এ দুনিয়ার অশান্তি ছেড়ে—
নিষ্পাপ শিশুর মতো নিঃকলুষ যেসব আত্মা,
তাদের করো জান্নাতুল ফিরদাউসের অধিবাসী,
জ্যোতির্ময় ফেরেশতাগণের ছায়ায় রাখো তাদের,
সিদরাতুল মুনতাহার শান্তিতে।

হে পরম দয়ালু, হে অন্তর্যামী,
দেহ নিঃশেষ হলেও, আত্মা তো তোমার কাছেই আশ্রয়প্রার্থী,
তাদের রুহ যেন চিরজীবী হয় তোমার নৈকট্যে—
আর যারা রয়ে গেছে, তাদের হৃদয়ে দাও নূরের পরশ,
যাতে তারা তোমার হিকমতে বিশ্বাস রাখে,
বেদনায়ও খুঁজে পায় তোমার অনন্ত রহমতের ছায়া।

🤲

ভাষাহীন ছুটির ঘণ্টা                   DH. SAYED স্কুল ছুটি হয়েছে—তবু কোথাও বাজে না ঘণ্টাধ্বনি।সময়ের চামড়ায় ছেঁড়া সেই শব্...
22/07/2025

ভাষাহীন ছুটির ঘণ্টা
DH. SAYED

স্কুল ছুটি হয়েছে—
তবু কোথাও বাজে না ঘণ্টাধ্বনি।
সময়ের চামড়ায় ছেঁড়া সেই শব্দ, এখন মৃত পাখির পালকের মতো
উড়ে বেড়ায় নির্বাক আকাশের গ্রন্থিমুখে।

আমি ফিরি—
তবে কোনো রাস্তায় নয়,
ফিরি এক কালচ্যুত খোলসে,
যেখানে শরীর নেই,
তবু হাঁটুর ব্যথা আছে
আর নিঃশ্বাসের বদলে নিঃস্বতা জমে।

মা—
তুমি কি এখনও দাঁড়িয়ে থাকো সেই বারান্দার হেমন্তলতা হয়ে?
তোমার হাতের তোয়ালে কি আজও শুকায় আমার অস্তিত্বের ফাঁকা ঘরে?
জানো না তুমি—
আমি এখন এক নিঃচেতা কণ্ঠস্বর,
যে ডাকতে পারে না,
তবু প্রতিধ্বনির ভেতর আটকে থাকে।

আমি এখন এক
টিফিন না খাওয়া দুপুরের পিচ্ছিল আলো,
একজন অনুপস্থিত ছাত্র,
যার নামে প্রতিদিন চুপ করে বসে থাকে
লাল কালির নিচে ক্ষুদ্র এক বৃত্ত।

ফেরাটা এখন আর ফেরার মতো নয়,
এ এক ধূসর বিন্দু—যেখানে শব্দগুলো
নিজেদেরই অর্থ ভুলে গেছে,
আর স্কুলব্যাগে বইয়ের বদলে থাকে
ধুলোর কঙ্কাল আর সময়ের নাভি থেকে গড়িয়ে পড়া ঘুম।

তোমার রান্নাঘরের ধোঁয়া কি এখনো জানে
আমি কতবার “আজ কী রাঁধলে” জিজ্ঞাসা করতে চেয়েছিলাম?
আমার চকলেটের মোড়ক হারিয়ে গেছে
তবু পকেটের গহ্বরে এখনো শব্দ জেগে থাকে
যা লেখা হয়নি কোনো খাতায়,
শুধু নিঃশব্দে কেঁদে যায় খয়েরি পাতার ফাঁকে।

স্পর্শ এখন এক অন্ধ আলোর আকাশ—
অদৃশ্য, তবু গ্রহের মতো ঘোরে তোমার চুলের ঘ্রাণে।
আমি ফিরেছি—
তবে ক্যালেন্ডারের পাতায় নয়,
ফিরেছি মৃত্যুরও পূর্ববর্তী এক অন্তর্বর্তী শূন্যতায়,
যেখানে “শেষ প্রস্থান” মানে নয় অন্তিম,
বরং এক অসমাপ্ত ছায়ার অপার প্রশ্নচিহ্ন।

========

Address

Barishal

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when DH. SAYED posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to DH. SAYED:

Share