02/06/2025
বিয়ের জন্য কেমন ছেলে চুজ করা উচিত?
বিয়ে জীবনের এমন এক অধ্যায়। যেখানে ভুল সিদ্ধান্ত মানে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। আর সঠিক সিদ্ধান্ত? জীবনের বাকি অংশটা শান্তি আর সুখে কাটানোর এক অব্যর্থ টিকিট। তাই প্রশ্ন হলো, আপনি কেমন জীবন চান?
জীবনসঙ্গী বাছাই মানে শুধু একজন মানুষের সঙ্গে বাকি জীবন কাটানো নয়, বরং একটা ভবিষ্যতের বীজ বোনা।
সেই ভবিষ্যৎ কীভাবে গড়ে উঠবে, তা নির্ভর করে জীবনসঙ্গীর গুণাবলির উপর। আমাদের সমাজ, ধর্ম এবং বাস্তবতা—সব জায়গাতেই এ নিয়ে দারুণ কিছু নির্দেশনা রয়েছে।
বিয়ে মানে শুধু দুইজন মানুষের একসঙ্গে থাকা নয়, বরং দুটো পরিবারের সম্মিলন, দুটো মননের মেলবন্ধন। আর এজন্য জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
১. শিক্ষা ও ভালো ফ্যামিলি:
শিক্ষা শুধু ডিগ্রির সীমানায় আবদ্ধ নয়। একজন মানুষের চিন্তাভাবনার গভীরতা, নৈতিকতা, এবং দায়িত্ববোধও তার শিক্ষার পরিচায়ক। আর ভালো পরিবার? আপনার সঙ্গীর পরিবার আপনার জীবনের সঙ্গী হয়ে উঠবে। ভালো পরিবেশে বেড়ে ওঠা ছেলে সাধারণত ভালো মূল্যবোধ নিয়ে বড় হয়। অজাত- কুজাতের পাল্লায় পড়া যাবে না।
২. ইনকাম ও কর্মক্ষমতা:
স্বপ্ন যতই রঙিন হোক, বাস্তবতার নাম টাকাপয়সা। একজন কর্মক্ষম ছেলে যে নিজের জীবনের দায়িত্ব নিতে পারে, সে-ই তো অন্যের জীবনের দায়িত্ব নেবে। মনে রাখতে হবে, ইনকাম শুধুমাত্র মাসিক বেতন নয়; এটি তার কর্মদক্ষতা এবং জীবন চালানোর পরিকল্পনার প্রতিফলন।
৩. ইসলামিক মূল্যবোধ:
দ্বীনদারি, নামাজ-রোজা, এবং আল্লাহর প্রতি ভয় থাকা একজন ছেলের চরিত্রে পবিত্রতা আনে। এমন একজন সঙ্গী শুধু স্বামী নয়, বরং আখিরাতের সঙ্গীও হতে পারে।
৪. মানসিক অবস্থা:
আপনার জীবনসঙ্গী মানসিকভাবে স্থিতিশীল এবং পজেটিভ দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী কিনা তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। রাগী বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষ সম্পর্কের ওপর চাপ তৈরি করে।
৫.হাইট ও গায়ের রং:
এক্ষেত্রে বোঝা দরকার, আপনার পছন্দের মানদণ্ড কী। তবে ভবিষ্যত প্রজন্ম কেমন চান- সেটার জন্য এগুলা দেখতে হয়। এটা আপনার রুচি অনুযায়ী চুজ করতে পারেন।
৬. আচরণ:
যেভাবে সে অন্যদের সঙ্গে আচরণ করে, সেটাই তার প্রকৃত চরিত্র। বাবা-মা, বন্ধু, এবং পরিচিতদের সঙ্গে তার ব্যবহার লক্ষ্য করুন। কারণ একজন রাগী বা অহংকারী স্বামী আপনার জীবনে বিষ ঢেলে দিতে পারে।
৭. পার্সোনালিটি:
একজন আত্মবিশ্বাসী ও আকর্ষণীয় পার্সোনালিটির ছেলের প্রতি সবারই আকর্ষণ থাকে। এ ধরনের ছেলে দায়িত্বশীল হয় এবং যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে সক্ষম।
৮. বয়স ২৮-৩৫ এর মধ্যে হওয়া:
অধিকাংশ ক্ষেত্রে ২৮ -৩৫ বছরের মধ্যে একজন মানুষ আর্থিক ও মানসিকভাবে কিছুটা স্থিতিশীল হয়। এর আগে স্যাটেল হওয়া ফিনান্সিয়ালি অনেক সময় সম্ভব হয় না।
৯. বাবা পরিবারের কর্তা কিনা:
পরিবারের দায়িত্ব কে বহন করেন, সেটা লক্ষ্য করুন। একজন ছেলে যদি তার বাবার কাছ থেকে দায়িত্বশীলতার শিক্ষা পায়, তবে সে তার ভবিষ্যৎ পরিবারেও সেই মানসিকতা বহন করবে।
১০. মেয়ে বেস্ট ফ্রেন্ড থাকা যাবে না:
দাম্পত্য জীবনে বিশ্বাস এবং স্পষ্টতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এমন কাউকে বেছে নিন যার সম্পর্কে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা নেই।
আপনার জীবনসঙ্গী কেবল আপনার সুখের অংশীদার হবে না, বরং দুঃখের দিনগুলোরও সঙ্গী হবে। সে কি আপনাকে মানসিক শক্তি জোগাতে পারবে? আপনি কি তার সঙ্গে আপনার সব স্বপ্ন ভাগাভাগি করতে পারবেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গিয়ে বুঝতে পারবেন, সঠিক সঙ্গী পাওয়া কেন এত জরুরি।
একজন ভালো জীবনসঙ্গী আপনার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর অধ্যায় রচনা করতে পারে। আর একজন ভুল সঙ্গী? আপনাকে জীবনভর কেবল শূন্যতার গল্প শোনাবে। সুতরাং, সঙ্গী বাছাইয়ের আগে একটু সময় নিন, ভেবে দেখুন, আর প্রার্থনা করুন যেন আল্লাহ আপনার জন্য সঠিক মানুষটিকে পাঠান।
এটাই আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত।
ভুল করার সুযোগ নেই।