01/07/2025
বাচ্চাদের মোবাইল আসক্তি: স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও সমাধান |
বর্তমান ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোন যেন শিশুদের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। খেলাধুলার মাঠ ছেড়ে এখন তারা বেছে নিচ্ছে ইউটিউব, গেমস, কার্টুন, এবং সোশ্যাল মিডিয়ার জগৎ। প্রথমে নিরীহ মনে হলেও দীর্ঘ সময় মোবাইল ব্যবহারে শিশুদের স্বাস্থ্য এবং মানসিক বিকাশে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।এই লেখায় আমরা জানবো — মোবাইল আসক্তি কীভাবে শিশুদের ক্ষতি করে এবং সচেতন বাবা-মা কীভাবে এটি প্রতিরোধ করতে পারেন।
মোবাইল আসক্তি কী?
যখন কোনো শিশু দিনে ২–৩ ঘণ্টার বেশি সময় মোবাইল স্ক্রিনে কাটায় এবং এটি ছাড়া থাকতে অস্থিরতা অনুভব করে, তখন তাকে মোবাইল আসক্ত বলা হয়।
মোবাইল আসক্তির ৫টি মারাত্মক ক্ষতি
১. চোখের ক্ষতি ও দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া
- দীর্ঘ সময় স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে চোখ শুকিয়ে যায়, মাথাব্যথা হয়
- কম বয়সেই চশমার প্রয়োজন দেখা দেয়
২. মনোযোগের অভাব ও শেখার আগ্রহ কমে যাওয়া
- ক্লাসে মনোযোগ থাকে না
- পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে
৩. রাগ, জেদ ও মানসিক অস্থিরতা
- মোবাইল না দিলে চিৎকার, মারধর, কান্না
- ধীরে ধীরে মুড সুইং ও আচরণগত সমস্যা তৈরি হয়
৪. ঘুমের ব্যাঘাত
- রাতে মোবাইল দেখলে ঘুম আসতে দেরি হয়
- পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর ও মস্তিষ্ক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়
৫. শারীরিক দুর্বলতা ও স্থূলতা
- এক জায়গায় বসে মোবাইল ঘাঁটার কারণে খেলাধুলা হয় না
- ফলে ওজন বাড়ে, শরীর দুর্বল হয়
প্রতিকার ও সমাধান
১. স্ক্রিন টাইম নির্ধারণ করুন
- দিনে ৩০–৬০ মিনিটের বেশি নয় (বয়স অনুযায়ী)
- নির্দিষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট অ্যাপে স্ক্রিন ব্যবহার অনুমতি দিন
২. একসাথে সময় কাটান
- গল্প শোনান, খেলুন, একসাথে রান্না করুন
- বাবা-মা নিজেও স্ক্রিন টাইম কমান — শিশুরা অনুকরণ করে শেখে
৩. বিকল্প বিনোদনের ব্যবস্থা রাখুন
- বই পড়া, খেলনা, আর্ট বা মিউজিক
- স্থানীয় মাঠে নিয়ে যান খেলতে
৪. ঘুম ও খাবারের রুটিন তৈরি করুন
- স্ক্রিনের বদলে ঘুম ও সঠিক খাওয়ার অভ্যাস শেখান
৫. ধৈর্য ও ইতিবাচক মনোভাব
- একদিনে পরিবর্তন হবে না
- ধৈর্য ও ভালোবাসায় ধাপে ধাপে নিয়ন্ত্রণ করুন
শিশুরা প্রযুক্তির সুবিধা গ্রহণ করুক—এটা আমরা সবাই চাই। তবে তা যেন আসক্তিতে পরিণত না হয়, সে দায়িত্ব অভিভাবকদের। শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য তাদের সময়, মনোযোগ, এবং ভালোবাসা দিন। আজ থেকেই সিদ্ধান্ত নিন ,মোবাইল নয়, সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়ি।”
#মোবাইলআসক্তি #শিশুদের_স্বাস্থ্য