
09/07/2025
চাতুর্মাস্য ব্রতকথা
চাতুর্মাস্য কি, এবং কেন??
চাতুর্মাস্য চলাকালীন কি কি করণীয়?
বিস্তারিত জানতে ধৈর্য সহকারে পোষ্টটি পড়ুন এবং শেয়ার করে টাইমলাইনে রেখে দিন। হরিবোল 🙏
চাতুর্মাস্য সময়কাল ২০২৫ ইং
১ম মাসঃ (১০ জুলাই - ০৮ আগস্ট) : শাক বর্জন
২য় মাসঃ (০৯ আগস্ট - ০৬ সেপ্টেম্বর) : দই বর্জন
৩য় মাসঃ (০৭ সেপ্টেম্বর - ০৬ অক্টোবর) : দুধ বর্জন
৪র্থ মাসঃ (০৭ অক্টোবর - ০৫ নভেম্বর) : আমিষ বর্জন
#চাতুর্মাস্য ব্রতকথা:
শ্রাবণ-ভাদ্র-আশ্বিন ও কার্তিক এ চারমাস শ্রীভগবান বিষ্ণু ক্ষীর সাগরে শ্বেতদ্বীপে অনন্ত শয্যায় নিদ্রিত হন। বলা হয় শয়নী একাদশী (জগন্নাথ রথযাত্রার পর আষাঢ়ী শুক্লা একাদশী) তিথিতে ভগবান শয়ন গ্রহণ করেন। পার্শ্ব একাদশী (ভাদ্র শুক্লা একাদশী)তে পার্শ্ব পরিবর্তন করেন, এবং উত্থান একাদশী (কার্তিক শুক্লা একাদশী)তে উত্থিত হন।
বছরের এই চারি মাস প্রাকৃতিক কারণে মানুষের দেহ ও মনে রজো ও তমোগুণী প্রভাব অধিক দেখা যায়। অঘটন বেশী ঘটে। তাই কায়মনোবাক্যে সংযত থাকা বাঞ্ছনীয়। কোনও কোনও বিষয়ে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
ভক্তগণ কৃষ্ণভক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে চাতুর্মাস্য ব্রত নিয়ম করেন।
চতুর্মাসেষু কর্তব্যং কৃষ্ণভক্তি বিবৃদ্ধয়ে ॥
পুরাণে বলা হয়েছে....
যো বিনা নিয়মং মর্ত্যো
ব্রতং বা জপ্যমেব বা।
চাতুর্মাস্য নয়েন্ মূর্খো
জীবন্নপি মৃতো হি সঃ ॥
যে ব্যক্তি নিয়ম, ব্রত বা জপ ব্যতীত চাতুর্মাস্য যাপন করে, সেই ব্যক্তি অজ্ঞ ও জীবন্মৃত।
শ্রীব্রহ্মা নারদমুনিকে বলছেন, হে নারদ, চাতুর্মাস্য ব্রত ভক্তি সহকারে পালন করলে মানুষ পরমাগতি লাভ করার সুযোগ পাবে।
ব্রত নিয়মগুলি হলো :-
১) বেশী বেশী করে হরিনাম জপ করতে হবে। যারা হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করেন না, তাঁরা শুরু করে দেবেন। যারা নিয়মিত মন্ত্র জপ করেন, তাঁরা জপসংখ্যা বৃদ্ধি করবেন। কলিবদ্ধ জীবের সদ্গতি লাভের একমাত্র উপায় হরিনাম। আমাদের মনকে সুরক্ষা দান করে মন্ত্র হরিনাম।
২) প্রতিদিন গীতা-ভাগবত শ্রবণ বা পাঠ করতে হবে। ভগবানের কথা, ভক্তের কথা আলোচনাই আমাদের অসার হৃদয়ে আশা ও আনন্দ সঞ্চার করে থাকে। যারা ভগবৎ কথায় সময় দিতে পারে না, তারা আজেবাজে কথায় সময় পেয়ে বসে।
৩) তর্ক, গালগল্প এড়িয়ে চলতে হবে। কলিযুগের মানুষ আমরা তর্ক করতে, ঝগড়া বাধাতে, গালগল্পে খুবই উন্মুখ হয়ে থাকি।
৪) প্রত্যূষে স্নান সারতে হবে। মঙ্গলময় শ্রীহরির কৃপাকটাক্ষ লাভের উপযুক্ত ব্রাহ্মমুহূর্তে শুচিশুদ্ধ হয়ে জেগে থাকা বাঞ্ছনীয়।
৫) শ্রাবণে শাক, ভাদ্রে দই, আশ্বিনে দুধ এবং কার্তিকে মাষকলাই ডাল খাওয়া চলবে না। এই সময়ে এই দ্রব্যগুলি রোগ সৃষ্টি করে। মন বিক্ষিপ্ত করে।
স্কন্দ পুরাণে বলা হয়েছে-
"শ্রাবণে বর্জয়েৎ শাকং
দধি ভাদ্রপদে তথা।
দুগ্ধম্ আশ্বযুজে মাসি
কার্তিকে চামিষং ত্যজেৎ"।
বিশেষতঃ কার্তিক মাসে বেগুন, বরবটি, শিম আহার নিষিদ্ধ।
৬) শ্রীহরি অর্চন কিংবা শ্রীহরিভক্তিমূলক অন্য কোনও সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে হবে। সবসময় জানতে হবে অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। আচারে হোক, প্রচারে হোক যেকোনও সেবায় সবসময় সংযুক্ত থাকতে হবে, তাহলেই আমরা ভালো থাকবো।
বিঃদ্রঃ এই চাতুর্মাস্য ব্রতের ব্রতকারীরা কেউ শয়ন একাদশী থেকে উত্থান একাদশী পর্যন্ত, কেউ আষাঢ় মাসের গুরু পূর্ণিমা থেকে কার্তিক মাসের হৈমন্তী রাস পূর্ণিমা পর্যন্ত, আবার কেউ কর্কট সংক্রান্তি থেকে মকর সংক্রান্তি পর্যন্ত- এইভাবে পালন করে থাকেন। মোটামুটি যে দিন শুরু করবেন তার চার মাস পরে সমাপন করবেন।
হরিবোল হরিবোল 🙏
কৃপাকরে আপনি এই মহান ব্রত পালন করুন ও অন্যদের উৎসাহিত করুন।
পোষ্টটি ভালো লাগলে শেয়ার করে সবাইকে জানিয়ে দিন অথবা আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এছাড়াও নিত্য নতুন ধর্মীয় কন্টেন্ট পেতে আমাদের ইউটিউব চ্যানেল (GaurNitaiTV) সাবস্ক্রাইব করে দিন এবং ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, ইউটিউব ফলো করে যুক্ত হোন আমাদের সাথে।
জয় শ্রীল প্রভুপাদ 🙌 জয় গুরুমহারাজ 🙌
#চাতুর্মাস্য #চাতুর্মাস্য_ব্রত #দামোদর_মাস #ভীষ্মপঞ্চক_ব্রত #চাতুর্মাস্য_মাহাত্ম্য #ইসকন #ব্রত #চাতুর্মাস্য_ব্রতকথা