06/05/2025
একটি চশমা, একটুকরো পেন্সিল, আর অটুট বিশ্বাস
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাহারা মরুভূমিতে ভেঙে পড়ে একটি যুদ্ধবিমান। পাইলট প্রাণে বাঁচলেও চারদিকে শুধু ধু-ধু বালির সমুদ্র আর প্রখর সূর্যরশ্মি। খাবার নেই, পানি নেই কেবল একটি পানির বোতল আর কিছু শুকনো বিস্কুট।
তিন দিন পর পানিটুকুও শেষ হয়ে যায়। প্রচণ্ড রোদ, তৃষ্ণা, আর নিঃসঙ্গতা ধীরে ধীরে পাইলটকে নিঃশেষ করে দিতে থাকে। মৃত্যুর ছায়া নেমে আসে চোখের সামনে। এমন সময় হঠাৎ মনে পড়ে পাইলট হওয়ার আগেও তার একটা পরিচয় ছিল, সে ছিল একজন শিল্পী। পকেটে তখনো একটি ভাঙা চশমা আর একটুকরো পেন্সিল।
সে শুরু করে বালুর ওপর আঁকা তার পরিবার, প্রিয় শহর, পরিচিত রাস্তা, আর স্বপ্নের জলধারা। প্রতিটি রেখায় মিশে যায় তার মনের আবেগ, স্মৃতি আর বেঁচে থাকার তীব্র আকুতি। আশ্চর্যভাবে, ছবি আঁকতে আঁকতে তৃষ্ণা কিছুটা কমে আসে, মন শান্ত হয়। সে ভাবে, “আমি এখনো বেঁচে আছি। স্বপ্ন দেখতে পারি মানে, আমি এখনো হার মানিনি।”
অষ্টম দিনে এক ফরাসি উদ্ধারকারী দল তাকে খুঁজে পায়। তারা দেখে কঙ্কালসার দেহ, ফেটে যাওয়া ঠোঁট, ক্লান্ত দু’চোখ কিন্তু সেই পাইলট তখনো বালির ওপর ছবি আঁকছে, যেন কোনো নিঃশব্দ মন্ত্রমুগ্ধ শিল্পী!
উদ্ধারের পর পাইলট বলেছিল,
“আমি বেঁচে ছিলাম কারণ আমি বিশ্বাস হারাইনি। আমার ভাঙা চশমা আর একটুকরো পেন্সিলও মরুভূমিতে আমাকে বাঁচার শক্তি দিয়েছে।”
শিক্ষা:
জীবন অনেক কিছু কেড়ে নিতে পারে, কিন্তু আপনার বিশ্বাস কেড়ে নিতে পারে না। যদি নিজের ওপর বিশ্বাস থাকে, কেউ আপনাকে হারাতে পারবে না।