12/05/2025
ইসলামি শাসনব্যবস্থার নাম হলো খেলাফত। খেলাফত সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মদিনা নামক রাষ্ট্রে। আর এরাষ্ট্র পরিচালনায় মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাঃ পৃথিবির মধ্যে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান প্রণয়ন করেন। উল্লেখ্য তিনিই পৃথিবীতে সর্বপ্রথম আধুনিক রাষ্ট্র-কাঠামোর প্রবর্তক এবং সর্বজনীন রাষ্ট্র ব্যবস্থারেও তিনি বিরল দৃষ্টান্ত। মদিনার সনদ, হুদাবিয়ার সন্ধি ও বিদায় হজ্বের ভাষণে যা পরিলক্ষিত। সর্বশেষ ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে উসমানি খিলাফতের খলিফা দ্বিতীয় আব্দুল মজিদকে নির্বাসনের মধ্য দিয়ে কামাল আতাতুর্কের আনুষ্ঠানিক খিলাফত বিলুপ্তির ঘোষণা আসে। খিলাফতে নির্বাচন পদ্ধতি বহুমুখী। ইসলামের দৃষ্টিতে তিনটি (৩) বিষয়ের সমষ্টি, ১. সাক্ষ্য প্রদান ২. সুপারিশ ৩. প্রতিনিধিত্বের সনদ প্রদান। অর্থাৎ কোন প্রার্থীকে ভোট দেওয়া মানে ওই প্রার্থী ভালো এবং যোগ্য বলে আপনি সাক্ষ্য দিচ্ছেন। তিনি ভালো এবং যোগ্য বলে আপনি সুপারিশ করছেন। তিনি ভালো এবং যোগ্য বলে আপনি তার প্রতিনিধিত্বের বৈধতার সনদ প্রদান করছেন। ইসলামে প্রতিদ্বন্দ্বিদের পক্ষে-বিপক্ষে সাক্ষ্য দেওয়া, সুপারিশ করা, সনদ দেওয়া এ তিনটি জিনিসেই গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতরও। তাই সর্বাধিক সতর্কতার বিকল্প নেই। ভোটের ক্ষেত্রে উল্লেখিত তিনটি বিষয় অত্যান্ত গুরিত্বপূর্ণ। আপনি যার পক্ষে সাক্ষ্য দিলেন বাস্তবেই যদি তিনি ভালো এবং যোগ্য হন এক্ষেত্রে আপনার সাক্ষ্যটা হবে সত্য সাক্ষ্য, অন্যথায় মিথ্যা। আর মিথ্যা সাক্ষ্য যে বড় গুনাহ ও হারাম( নিষিদ্ধ) কাজ।
সহিহ বুখারির একটি বর্ণনায় রয়েছে হযরত আবু বকর (রা.) বলেন যে, রাসুলুল্লাহ একদা এক জায়গায় হেলান দিয়ে বসা অবস্থায় তিনবার সাহাবীদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমি কি তোমাদেরকে কবীরা গুনাহগুলোর মধ্যে বড় কবীরা গুনাহের কথা বলব? সাহাবীরা হ্যাঁ সূচক উত্তর দেওয়ার পর তিনি বললেন, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা, পিতা-মাতার অবাধ্যতা (এ দুটি কথা বলার পর তিনি সোজা হয়ে বসলেন) এবং বললেন, শুনে নাও! মিথ্যা সাক্ষ্য অনেক বড় কবীরা গুনাহ। বিখ্যাত হাদিস বিশারদ শামসুদ্দীন যাহাবী রাহঃ মিথ্যা সাক্ষ্যকে চারটি বড় গুনাহের সমষ্টি বলে আখ্যা দিয়েছেন। সেগুলো হলো ১. মিথ্যা সাক্ষ্য ২. যার বিরুদ্ধে সাক্ষী তার উপর জুলুম। ৩. যার পক্ষে মিথ্যা সাক্ষ্য তার উপরেও জুলুম। কারণ, সে যা কিছু পাওয়ার যোগ্য ছিল না মিথ্যা সাক্ষীর ফলে তাকে তার অধিকারী করা হলো।