07/07/2025
:
---
"উর্মির বিয়ে আর আমাদের সমাজের মুখোশ"
একটা মেয়ে—নাম উর্মি। মা-বাবা নেই। নানা-নানীর আদরে বড় হয়েছে। বড় হয়েছে কষ্টে, সীমাহীন আর্থিক সংকটে।
উর্মির বিয়ে হচ্ছিল না, কারণ তার নিজের ঘরে টাকা নেই। যত ভালো গুণই থাকুক না কেন—বিয়ের বাজারে তার মূল্য শূন্য। পাত্রপক্ষ আসেও, ফিরে যায়। কারণ, দিয়ে আসলেও ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা নেই! কেউই তাকে স্বাভাবিকভাবে, মানবিক চোখে গ্রহণ করতে চায়নি।
কিন্তু হঠাৎ একদিন কেউ উর্মির গল্পটা ফেসবুকে শেয়ার করে। সমাজ নড়ে ওঠে। সাহায্যের বন্যা বয়ে যায়। এবং, কিছুদিন পর—ধুমধাম করে বিয়ে হয় উর্মির।
পাত্র ভালো, সমাজ পাশে, পাড়া প্রতিবেশী খুশি—সবকিছু যেন ঠিকঠাক।
তবু একটা প্রশ্ন থেকে যায়:
যখন মেয়েটার নিজের কিছুই ছিল না, তখন কেন কেউ তাকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে বেছে নিতে চায়নি?
কেন তখন কেউ বলেনি—"আমি তোমাকে যেমন আছো তেমনভাবেই ভালোবাসি"?
আজ আমরা তার পাশে দাঁড়িয়েছি, সেটা ভালো। কিন্তু যেটা কষ্ট দেয়—তা হলো, এই সমাজে এখনও সেই ‘মানসিক ধনী’ মানুষের বড় অভাব, যে মেয়েটাকে ভালোবাসবে তার আত্মাকে দেখে, পকেট দেখে নয়।
সাহায্যের টাকায় বিয়ে হয়তো হয়, কিন্তু প্রশ্নটা মনুষ্যত্বের—
আমাদের হৃদয়ে কি এমন জায়গা আছে, যেখানে একটা মেয়ে শুধু মানুষ হিসেবেই সম্মান পায়?
বিয়ের জন্য মঞ্চ, সাজ, গয়না—সব লাগতেই পারে, কিন্তু এক ফোঁটা নিঃস্বার্থ মমতা যদি না থাকে, তাহলে সেটাও কি সত্যিকারের জীবনসঙ্গ?
একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই—
টাকার ওপর যাদের ভালোবাসা দাঁড়িয়ে থাকে, তারা মানুষকে নয়, সম্পদকেই বিয়ে করে।
আর যারা ভালোবাসতে জানে—তারা মানুষকে বোঝে, গায়ে গয়না দেখে না।
উর্মির গল্পটা শুধুই একটা ঘটনা নয়, এটা আমাদের মুখে পড়া একটা আয়না।
নিজেকে দেখে নিও—তুমি কী ধরনের মানুষ?