Chormonai media

Chormonai media পেইজটিতে লাইক, ফলো দিয়ে পাশে থাকুন

07/09/2025

দেশের মানুষ সচেতন হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আগামীতে ইসলামকে ক্ষমতায় নেয়ার জন্য একসাথে লড়াই করবে-

শাহ ইফতেখার তারিক
কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

হাটহাজারী মাদ্রাসায় হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশদেশকে অস্থিতিশীল করার বহুমাত্রিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ধর্মীয় মতপা...
07/09/2025

হাটহাজারী মাদ্রাসায় হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ

দেশকে অস্থিতিশীল করার বহুমাত্রিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ধর্মীয় মতপার্থক্য কেন্দ্রিক সংঘাত সৃষ্টি করা হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে
-ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান আজ ৭ সেপ্টেম্বর, রবিবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জন্মবার্ষিকি মানবতার জন্য একটি শুভ সূচনা। আমরা এইদিনের আনন্দে উদ্বেলিত। কিন্তু পালন করার রীতি ও প্রথা কি হবে তা নিয়ে নানা মতভেদ আছে। একই রকমভাবে ইসলামে এর ব্যাখ্যা নিয়েও নানামত আছে। কিন্তু সেগুলোকে কেন্দ্র করে উম্মাহর মধ্যে ফাটল তৈরি করা এবং উম্মাহর একটা অংশকে শক্র জ্ঞান করার মতো যে মানসিকতা তৈরি হয় তা ভয়ংকর একই সাথে ইসলামের চেতনা বহির্ভুত। গতকাল হাটহাজারী মাদ্রাসার ওপরে যেভাবে হামলা করা হয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ইসলাম প্রসারে এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদ উৎখাতে হাটহাজারী মাদ্রাসার অবদান শীর্ষে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ভালোবাসার সবচেয়ে রক্তময় নজরানা হাটহাজারী মাদ্রাসার নেতৃত্বেই পেশ করা হয়েছে। সেই হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রতি যে কটাক্ষ ও যে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করা হয়েছে এবং যে মানসিকতা থেকে করা হয়েছে তা ঘৃণ্য অপরাধ। বাংলাদেশের একটা শ্রেণী অব্যাহতভাবে দেশের প্রধান ইসলামী চিন্তাধারার প্রতি নানারকম বিদ্বেষ ছড়িয়েই যাচ্ছে। তারই একটি সহিংস প্রতিক্রিয়া হলো হাটহাজারী মাদ্রাসার ওপরে হামলা করা। ইসলামী আন্দোলন মনে করে, ইসলামের ভেতরকার মতভেদ নিয়ে পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ চর্চা পরিহার করতে হবে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব বলেন, হাটহাজারী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ যে, তারা কুশলতা ও দ্রুততার সাথে উত্তেজনা কমিয়ে আনতে চেষ্টা করেছেন এবং কোন উস্কানীতে পা দেয়া থেকে শিক্ষার্থীদের বিরত রেখেছেন।

তিনি সতর্ক করে বলেন, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য বহুমাত্রিক চক্রান্ত চলমান। ধর্মীয় মতপার্থক্য কেন্দ্রীক সংঘাত তৈরি করা তারই একটা অংশ হতে পারে। ফ্যাসিবাদ দেশকে অস্থির করতে এবং দেশকে অকার্যকর করতে এই ধরণের উত্তেজনার সুযোগ নিতে পারে। তাই সংশ্লিষ্ট সকলকে এই বিষয়ে সতর্ক থাকার আহবান করছি।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান এই ঘটনার পেছনের কারণ উদঘাটন করার আহবান জানান এবং অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানান।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মালয়েশিয়া শাখার উদ্যোগে সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত।‌ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোল...
07/09/2025

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মালয়েশিয়া শাখার উদ্যোগে সদস্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত।‌

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সহকারী মহাসচিব কেএম আতিকুর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা নেছার উদ্দিন।

30/08/2025

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূরের ওপর হা/ম/লার প্রতিবাদে

30/08/2025

নূরের ওপর হা/ম/লার প্রতিবাদ। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বিক্ষোভ মিছিল

ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের সাহসী নেতা নুরুল হক নুরের ওপরে হামলা মেনে নেয়া যায় না -ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন ব...
29/08/2025

ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের সাহসী নেতা নুরুল হক নুরের ওপরে হামলা মেনে নেয়া যায় না -ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্মমহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান আজ ২৯ আগস্ট, শুক্রবার রাতে ফ্যাসিবাদ বিরোধী লড়াইয়ের সাহসী ও নির্যাতিত নেতা নুরুল হক নুরের ওপরে প্রশাসনের হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছেন, ফ্যাসিবাদ উত্তর এই সময়ে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপরে এই ধরণের হামলা কোন যুক্তিতেই মেনে নেয়া যায় না, সহ্য করা যায় না।

মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের প্রধান চাওয়া হলো, ফ্যাসিবাদের সম্ভাব্য যে কোন ধরণের উত্থান রুখে দেয়া। বিগত আমলে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে ও ফ্যাসিবাদের পক্ষে জাতীয় পার্টির ন্যাক্কারজনক ভূমিকা সকলের জানা। বলতে গেলে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের আইনী পাটাতন নির্মাণে প্রধান ভূমিকা ছিলো তাদের। ৫ আগষ্টের পরে জাতীয় পার্টির বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার ছিলো। সেটা করা হয় নাই। এখন জাতীয় পার্টির ইস্যুতে নুরের মতো একজন ফ্যাসিবাদ বিরোধী নেতাকে রাস্তায় লাঠিপেটা করা স্পষ্টত জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র বলেন, আমরা বিশ্বাস করতে চাই, এটা মাঠে থাকা সেনা ও পুলিশ সদস্যের তাৎক্ষণিক নেয়া ভুল সিদ্ধান্তের ফল। সেজন্য তারা কেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী শীর্ষ একজন নেতাকে মারধোর করলো তার জবাবদিহি করতে হবে এবং এর পেছনে কার মদদ বা উস্কানি আছে বের করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

আমরা এই বিষয়ে সরকারের শীর্ষ কর্তাদের দ্রুত ও কার্যকর ভূমিকা দেখতে চাই অন্যথায় ফ্যাসিবাদের পক্ষে কারা দাড়ানোর সাহস করে তা ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি দেখবে।

ডাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত প্যান...
26/08/2025

ডাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ মনোনীত প্যানেল।

শহীদদের রক্ত আজও আমায় কাঁদায়লেখক- আহমাদ আবদুল কাইয়ূম১৫ আগস্ট ২০০২। ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। কেননা সেদিন ক্ষমতা...
16/08/2025

শহীদদের রক্ত আজও আমায় কাঁদায়
লেখক- আহমাদ আবদুল কাইয়ূম

১৫ আগস্ট ২০০২। ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। কেননা সেদিন ক্ষমতায় থাকা ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী সরকারের হিংস্র আঘাতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কর্মী হাফেজে কুরআন মাদরাসা ছাত্রদের নির্মমভাবে শহীদ হতে হয়েছে। ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার দোহাই দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে ইসলামের ধারক-বাহক হাফেজে কুরআন ও আলেমদের খুন করে কি মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল তারা? আল্লাহর ঘর মসজিদ ভাঙ্গার প্রতিবাদ করা কি অপরাধ? একটি মসজিদ ভাঙ্গাকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত।
ঘটনার স্থল রাজধানী ঢাকার মালিবাগ টিএন্ডটি বায়তুল আজিম জামে মসজিদ। যা বর্তমানে শহীদী মসজিদ নামে নামকরণ করা হয়েছে। বিরানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে আল্লাহর ঘর মসজিদ ভেঙ্গে তদস্থলে মার্কেট নির্মাণ করার দুঃসাহস মেনে নেয়নি আদর্শিক কাফেলা ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। সেদিন ইশা ছাত্র আন্দোলন ছাড়া মাঠে প্রতিবাদ করার কেউ ছিল না। দেশে জোটের রাজনীতির চর্চার কারণে ইসলামপন্থি সংগঠনগুলো জোটে সম্পৃক্ত থাকায় আল্লাহর ঘর মসজিদ ভাঙ্গার মত মহা অপরাধের প্রতিবাদটুকুও তারা করতে পারে নি। অপরদিকে নো আওয়ামীলীগ, নো বিএনপি ইসলাম ইজ দ্যা বেস্ট, এই নীতিতে বিশ্বাসী ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কারো কাছে মাথা বিক্রি করেনি। সেজন্য তাদের কাউকে জমা-খরচও দিতে হয় না। সকল সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রচণ্ড প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে ফেটে পড়ে আদর্শিক কাফেলা ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। আর সে কারণেই আল্লাহর ঘর মসজিদ ভেঙ্গে মার্কেট নির্মাণ করার স্বপ্ন বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়নি সংগঠনটি। আল্লাহর বাণী, “যে ব্যক্তি আল্লাহর ঘর মসজিদসমূহে তাঁর নাম উচ্চারণ করতে বাধা দেয় এবং সেগুলোকে উজার করার চেষ্টা করে তার চাইতে বড় অত্যাচারী আর কে?’’
(সূরা বাকারা- ১১৪)

কুরআনে বর্ণিত নির্দেশ জালিমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে শহীদী কাফেলা ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কর্মী শহীদ হাফেজ আবুল বাশার, শহীদ রেজাউল করীম ঢালী, শহীদ ইয়াহইয়া, শহীদ জয়নাল আবেদীনকে নির্মমভাবে খুন হতে হয়। আনসারের গুলিতে আহত হয় আরো ৬০জন। মসজিদ রক্ষার আন্দোলনে গুলি চালিয়ে শহীদ করার ঘটনা বিশ্বে বিরল। অথচ ইসলামী মূল্যবোধের ধ্বজাধারী বিএনপি ও দলীয় সন্ত্রাসীর গুলিতে এই হত্যাকাণ্ড মুসলিম উম্মাহকে মর্মাহত ও ব্যথিত করেছে। ইতিহাসে মুসলমান কেন, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মাঝেও এমন ঘটনা বিরল। পরস্পর হিংসাপরায়ণ ও বিরোধপূর্ণ হয়ে নিজেদের উপাসনালয় ভেঙ্গে দিয়েছে। এর আগের সরকার (আওয়ামীলীগ) ফতোয়াকে কেন্দ্র করে বি-বাড়ীয়ায় আটজন হাফেজে কুরআনকে শহীদ করেছে। শহীদ হাফেজদের রক্তের উপর পা দিয়ে ২০০১ সালে ইসলামী মূল্যবোধের সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে শহীদের খুনের বিচার না করে আরো চারজনকে শহীদ করে দেশবাসী বিশেষ করে ইসলামী জনতাকে মর্মাহত করেছে।

১৫ আগস্ট ২০০২ বৃহস্পতিবার মালিবাগের সামনে মসজিদ রক্ষার দাবীতে অনুষ্ঠিতব্য মিছিলে পুলিশ ও আনসারের গুলিতে শহীদ হওয়ার ঘটনায় আমি কয়েকজন সাথীকে নিয়ে মালিবাগ ঘটনাস্থলে গিয়ে শহীদদের না দেখলেও তাদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত এ দৃশ্য দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিলাম না। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চার শহীদের লাশ দেখে চোখের পানি সংবরণ করতে পারিনি। রক্তমাখা জামাসহ লাশের প্রতিচ্ছবি আজো ভেসে ওঠে চোখের সামনে। আর লাশ থেকে বেহেস্তের খুশবু আজো আমাকে নাড়া দেয়। আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় হযরত সাহাবায়ে কিরামের কথা। তাদের তাঁজা রক্তে আজো দীন টিকে আছে। মহান আল্লাহর বাণী, “যারা আল্লাহর পথে মৃত্যুবরণ করে তাদেরকে মৃত বলো না; বরং তারা জীবিত। তোমরা তা বুঝতে পার না।” (সূরা আল বাকারা)

আসলেই সেদিন শহীদদের লাশ দেখে মনে হয়নি তাঁরা মৃত। তাদের চেহারা আলোকিত ও হাস্যোজ্জ্বল। মনে হয় তাঁরা ঘুমিয়ে আছে। শহীদ ভাইদের কথা মনে হলে আজও নিরবে আত্মা কেঁদে উঠে, অশ্রুসিক্ত হয়ে যায় মন তখন ঠিক থাকতে পারি না। যারা আমাদেরকে ঋণী করে রেখেছে তাদের জন্য যখন কিছু করা না যায় তখন ব্যথিত ও মর্মাহত না হয়ে পারি না। শহীদদের জন্য আমাদের করার কিছু আছে। আর তা হলো শহীদী তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে দীন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা আরো শাণিত করা। মসজিদ রক্ষার আন্দোলনে শাহাদাত বরণকারী চারশহীদের ঘটনায় পুরো মুসলিম উম্মাহ ব্যথিত হলেও জোটভুক্ত উলামায়ে কিরামের মধ্যে কোন প্রকার প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি। তার কারণ ছিল ক্ষমতার মোহ বা লোভ। মন্ত্রীত্ব পাবার লোভ। কিন্তু আফসোস, আজ তাদের মুখ থেকে বের হয় “হক্বের পতাকাবাহী ও আদর্শিক পরিবর্তনের রূপকার পীর সাহেব চরমোনাই” সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য। পীর সাহেব চরমোনাই নাকি দিনে সরকারের বিরুদ্ধে মিছিল করে আর রাতে সরকারের সাথে বৈঠক করেন। আমি জানি না, এমন মন্তব্য তারা নিজেদের স্বভাব-চরিত্র ও বৈশিষ্টের আলোকে করেন কিনা। তবে মিথ্যা ধারণা করা নেহায়েত অন্যায়। একথা সত্য, সংগঠন যত বড় হবে তার বিরুদ্ধে তত অপপ্রচার বাড়বে। কেননা, হিংসুকরা জ্বলে-পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন দেশের সর্বস্তরের ছাত্র জনতা, পেশাজীবী মানুষ এই কাফেলায় শরীক হচ্ছে। ঘটনার পরদিন ১৬আগস্ট ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রের উদ্যোগে গণজমায়েত ছিল রাজধানীর মুক্তাঙ্গনে। তাতে হযরত পীর সাহেব চরমোনাই (রহ.) প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রেখেছিলেন। সেখানে তিনি জোট সরকারের কাছে চার দফা দাবী পেশ করেছিলেন। ১. খুনী তৌফিক, ছাত্রদল নেতা হানিফসহ খুনিদের গ্রেপ্তার করে অবিলম্বে বিচার, ২. খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা, ৩. সরকারী জায়গায় যত মসজিদ আছে ঐ সকল জায়গাকে মসজিদের নামে ওয়াক্ফকরণ এবং ৪. শহীদ পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। কিন্তু কোন দাবীই মানেনি জোট সরকার। মসজিদের নির্মাণ কাজ করলেও তা বন্ধ। দীর্ঘ কয়েক বছরেও মসজিদের কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেনি।

শহীদ হাফেজ আবুল বাশারের পরিচয়
নাম- হাফেজ আবুল বাশার। পিতা- হাফেজ আব্দুস সাত্তার। গ্রামের বাড়ি- পিরোজপুর সদর থানার খলিশাখালী। পাঁচভাই একবোনের মধ্যে সে বড়। তার মাও একজন হাফেজা। আবুল বাশার ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর জনশক্তির দ্বিতীয় পর্যায়ের অর্থাৎ কর্মী ও খিলগাঁও থানার দায়িত্বশীল ছিল। ছাত্র আন্দোলনের সকল কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার কারণে সকলেই তাঁকে ভালোভাবে চিনত। শহীদ হওয়ার পর তাঁর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের তৎকালীন মুহতারাম মহাসচিব মাও. নূরুল হুদা ফয়েজী ও ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
হাফেজ আবুল বাশার মালিবাগ মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্র ছিল। ইসলামী আন্দোলনের বই পড়া ছিল তাঁর নেশা। লেখালেখির প্রতি ছিল প্রচণ্ড ঝোঁক। শহীদ আবুল বাশারের পুরো পরিবারই আলেম পরিবার। তাঁর ৩ভাই হাফেজ, ছোটভাইও হিফজ খানায় পড়ে। বোনও মাদরাসায় পড়ুয়া। শহীদ হওয়ার পর শহীদ বাশারের মা-বাবার অনুভুতি আমাদের যুগিয়েছে নতুন প্রেরণা।

পিতার অনুভূতি :
শহীদ আবুল বাশারের পিতা হাফেজ আব্দুস সাত্তার বলেন, “আল্লাহ তা’য়ালা আমার ছেলেকে শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন এর চাইতে সৌভাগ্য আর কি হতে পারে? তিনি বলেন, আবুল বাশার অত্যন্ত নম্র-ভদ্র ও খোশ মেজাযের ছিল। তাকে নিয়ে আমার গর্ব হয় যে, আল্লাহর ঘর মসজিদ রক্ষার আন্দোলনে সে শহীদ হয়েছে। আমি আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জানাই। শহীদদের রক্তের পথ ধরে এদেশে ইসলামের পতাকা উড্ডীন হবে এ প্রত্যাশা করছি। আমি শহীদ আবুল বাশারের জন্য জালিম সরকারের কাছে কোন বিচার চাই না, আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি। তিনি ছাত্র আন্দোলনের ভাইদের উদ্দেশ্যে বলেন, আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠা করতে হলে রক্ত দেয়া ও রক্ত নেয়ার কোন বিকল্প নেই। তিনি শহীদদের পথ ধরে দীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করার জন্য সকলকে আহবার জানান। শহীদ আবুল বাশার ছাত্র আন্দোলনের কর্মী হওয়ায় তিনি শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন।”

মায়ের অনুভূতি :
শহীদ হাফেজ আবুল বাশারের মা বলেন, “আবুল বাশার আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেল। আবুল বাশার বাড়ি থেকে আসার সময় বলেছিল, আমার হয়তো আর বাড়িতে আসা হবে না। তার মা বলল, তুমি কি বলছ? তখন বাশার বলল, মা আমি পরবর্তীতে যখন আসব তোমার গর্বিত সন্তান হয়ে আসব। তার কথা অনুযায়ী ঠিক সে গর্বিত সন্তান হয়েই বাড়িতে ফিরে গেছে। তাঁর মা বলেছিল, তাহলে কি আমার বাশার আল্লাাহর পক্ষ থেকে এভাবে কোন ইঙ্গিত পেয়েছিল। প্রকৃত শহীদরা কি এভাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে ইশারা পেয়ে থাকে? তিনি পীর সাহেব চরমোনাই’র সাথে বাশারের সম্পৃক্ততা থাকায় গর্ববোধ করেন। তেমনিভাবে তাঁর ভাই-বোনেরাও শহীদের ভাই ও বোন হিসেবে পরিচয় দিতে পেরে শুকরিয়া প্রকাশ করেন এবং সহযোগীতা ও খোঁজ খবরের জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। ছাত্র আন্দোলনের এই শহীদী কাফেলাকে মনজিলে মকসুদে নিয়ে যাওয়ার জন্য আহ্বান জানান।”

শহীদ রেজাউল করীমের পরিচয়
নাম- মুহাম্মাদ রেজাউল করীম ঢালী। পিতা- আব্দুল আউয়াল ঢালী। গ্রামের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার শ্রীনগর গ্রামের ঢালী বাড়ি।

শহীদ রেজাউল করীম ঢালী ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সদস্য ছিল। সদস্য হয়েও ছাত্র আন্দোলনের প্রায় সকল কর্মসূচিতে সে নিয়মিত অংশগ্রহণ করত। শহীদ হওয়ার পর তাঁর গ্রামের বাড়িতে আন্দোলনের আমীর পীর সাহেব চরমোনাই রহ., অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, তৎকালীন দায়িত্বশীল মুফতি নূর হোসাইন নূরানী, আমি, সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ নেছার উদ্দিন ভাইসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ গিয়ে শহীদ রেজাউল করীমের কবর যিয়ারত করি। তাঁর মা-বাবা ও আত্মীয় স্বজনকে সান্ত্বনা দেই এবং তাঁর স্মৃতিকে ধরে রাখতে শহীদ রেজাউল করীম স্মৃতি সংসদ ও পাঠাগার প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন হযরত পীর সাহেব রহ.। শহীদ রেজাউল করীম চৌধুরীপাড়া মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্র ছিল। শহীদী তামান্না ছিল তার হৃদয়ে জাগ্রত। তাঁর পুরো পরিবারে একমাত্র মাদরাসা পড়ুয়া ছিল সে-ই। রেজাউল করীমরা দুই ভাই-বোন। সে ভাই বোনদের মধ্যে সবার ছোট। বড় আলেম হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়েই মাদরাসায় পড়তে এসেছিল। সে নাহবেমীর জামাতের ছাত্র ছিল।

বাবার অনুভূতি:
শহীদ রেজাউল করীম ঢালীর পিতা আব্দুল আউয়াল ঢালী বলেছিলেন, আমার ছেলেকে আল্লাহর পথে দিয়েছিলাম। আল্লাহর পথে নেমে তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেছে এতে দুঃখিত হওয়ার কিছু নেই; বরং আমি গর্বিত। পীর সাহেব চরমোনাই’র নেতৃত্বাধীন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সদস্য হওয়ার কথা শুনে তিনি খুশি হন এবং তিনি বলেন, একজন আল্লাহওয়ালা ব্যক্তির সংগঠনে থেকে আমার রেজাউল খাঁটি মানুষ হতে পেরেছিল। পীর সাহেব চরমোনাইসহ ছাত্র আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ তার বাড়িতে যাওয়ায় তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

মায়ের অনুভূতি:
রেজাউলের মা বলেছিলেন, ঘটনার ২দিন পূর্বে তার ছোট চাচাতো ভাইকে কোলে নিয়ে বলল, ভাইয়া আমি যদি শহীদ হয়ে যাই তুমি কি কান্না করবে? ছোট ভাই বলল, হ্যাঁ আমি কান্না করব। এ কথাগুলো তাঁর মা শুনতে পেয়ে জিজ্ঞেস করে, রেজাউল তুমি কি বলছ, রেজাউল বলে, হ্যাঁ মা আমি শহীদ হয়ে যেতে পারি। আমাদের মাদরাসার পাশে একটি মসজিদ সন্ত্রাসীরা বন্ধ করে দিয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার সে মসজিদ উদ্ধারের আন্দোলনে যাবো। মা তুমি কি কাঁদবে? মা, তুমি কাঁদলে আমার শহীদী আত্মা কষ্ট পাবে। এ বলে সে ঘটনার আগের দিন বাড়ি থেকে মা-বাবাসহ সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসে। তার মা কথাগুলো বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আবার শান্ত হয়ে শুকরিয়া আদায় করেন। তিনি বলেন, আল্লাহর ঘর মসজিদের জন্য আর যেন কাউকে প্রাণ দিতে না হয়। আমাদের রেজাউলের জন্য দোয়া করবেন।

হাফেজ ইয়াহইয়াও মালিবাগের ছাত্র ছিল। তার বাবা একজন প্রখ্যাত আলেমেদীন। আট ভাই ও বোনদের মধ্যে সে ছিল তৃতীয়। ইয়াহইয়া মেধাবী ছাত্র ছিল। তাঁর গ্রামের বাড়ি মোমেনশাহী জেলার ফুলপুর থানার বড়ইকান্দি গ্রামে। জেলা নেতৃবৃন্দ অভিভাবকের সাথে সাক্ষাত করে খোঁজ খবর নিয়েছেন।

শহীদ জয়নুল আবেদীন ছিল নিতান্ত খেটে খাওয়া মানুষ। মেয়ের বিয়ের তারিখ ছিল ২০আগস্ট। একমাত্র মেয়ের বিয়ের টাকা জোগাড় করতে ঢাকায় আত্মীয়-স্বজনদের কাছে এসেছিল সাহায্যের জন্য। ঘটনার দিন মালিবাগ এসেছিল তার ভায়রা ভাইয়ের সাথে সাক্ষাত করতে। কিন্তু ঘাতকদের বুলেট তাকেও রেহাই দেয়নি। বিয়ের টাকার পরিবর্তে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন জয়নাল। জয়নালের গ্রামের বাড়ি ফেনী সদর উপজেলার উত্তর ডুমুরিয়ার মাঝি বাড়ি গ্রামে। তাঁর গ্রামের বাড়িতে গিয়ে শোকাহত পরিবারের সাথে তৎকালীন দায়িত্বশীল মুফতী নূর হোসাইন নূরানী ও আমিসহ জেলা আন্দোলন ও ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ দেখা করেছি। শহীদ জয়নুল এর পরিবারকে সান্ত্বনা দিয়ে তাদের খোঁজ খবর নিই এবং নগদ আর্থিক সহযোগিতাসহ তাঁর মেয়ের বিয়ের খরচ বহন ও ছেলেদের লেখা-পড়ার দায়ভার গ্রহণের ঘোষণা করেন মুফতি নূরানী সাহেব।

সবশেষে বলা যায়, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কর্মীদের শাহাদাতের মধ্য দিয়ে দেশবাসী ও সচেতন ছাত্রদের কাছে এই ম্যাসেজ ও শিক্ষা দেয়া হয়েছে, দীনকে বিজয়ী করতে হলে শহীদী তামান্না বুকে লালন করে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

আন্দোলনের এ পথ ভোগের নয়, ত্যাগের। আরামের নয়, কষ্টের। এই ধারাবাহিকতা ঠিক রাখতে পারলে এই কাফেলা একদিন মনজিলে মকসুদে পৌঁছবেই, ইনশাআল্লাহ। শহীদদের পথ ধরে আমরাও যেন জীবন ও রক্ত দিতে পারি সে তামান্না রাব্বুল আলামীনের দরবারে।

আমিন।

প্রকাশ : ছাত্র সমাচার (জুলাই-আগস্ট সংখ্যা ২০১৭)

ইসলামী মূল্যবোধ ভূলুণ্ঠিত হয়েছিলো মালিবাগ শহীদি মসজিদ চত্বরে- কে এম আতিকুর রহমান২০০২ সাল। ইসলামী মূল্যবোধ তখন রাজনৈতিক অ...
16/08/2025

ইসলামী মূল্যবোধ ভূলুণ্ঠিত হয়েছিলো মালিবাগ শহীদি মসজিদ চত্বরে
- কে এম আতিকুর রহমান

২০০২ সাল। ইসলামী মূল্যবোধ তখন রাজনৈতিক অঙ্গণে বিশেষ পরিচিত শব্দ। শব্দটির উৎপত্তি কুরআন হাদীস থেকে না হলেও ইসলাম শব্দটি থাকার কারণে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে ছিল এটি মুক্তির মূলমন্ত্র। আর এ শব্দের প্রয়োগে জাতীয় নির্বাচন উৎরে যাওয়ায় “ইসলামী মুল্যবোধের সরকার” হিসেবে জনশ্রুতি ব্যাপক পরিচিত করে তুলেছিল তৎকালিন চারদলীয় জোট সরকারকে। তখনকার সদ্যবিদায়ী আওয়ামী শাসনামলের বিভিন্ন বিতর্কিত ও ইসলামবিরোধী কর্মকা- বিশেষ করে ক্ষমতার শেষভাগে ফতওয়া নিষিদ্ধ করে দেয়া হাইকোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় দেশব্যাপী ফুঁসে উঠা ধর্মপ্রাণ মুসমানদের ওপর সরকারের হামলা-মামলা ও বি-বাড়িয়ায় ছয়জনকে শহীদ করায় এমনিতেই জনগণ ক্ষিপ্ত ছিল। সে সময়ে ইসলাম রক্ষার মহান দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়ে কয়েকটি ইসলামী দল নিঃশর্তভাবে বিএনপির নেতৃত্বে জোটে যোগ দেয় এবং ‘ইসলামী মূল্যবোধ’ সে জোটের মৌলিক শ্লোগান হিসেবে প্রচার করে। ওলামায়ে কেরামের একটি অংশ সেই জোটে যোগ দিলেও চরমোনাই পীর সাহেবসহ অপরাপর ওলামায়ে কেরাম নিতান্তই ইসলামী স্বার্থরক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা নেই দেখে জোটে যোগ দেননি।

সাধারণ মানুষের ধারণা ছিল ওলামায়ে কেরামের সংশ্লিষ্টতায় যেহেতু ইসলামী মূল্যবোধের বিএনপি সরকার ক্ষমতায়, তাই দেশে অতীতের চেয়ে মুসলমানদের ঈমান-আকীদা বেশি হেফাজতে থাকবে। কিন্তু মানুষের সে ভুল ভাঙতে বেশি দিন সময় লাগেনি। ১৫ আগস্ট ২০০২ সালে রাজধানীতেই বিএনপি দলীয় নেতার গু-াবাহিনীর হাতে প্রাণ দিতে হয়েছিল মসজিদ রক্ষা করতে যাওয়া বীর মুজাহিদদের। আর এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে গিয়ে শীর্ষ ওলামাদের হাতেই ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল তথাকথিত শ্লোগান “ইসলামী মূল্যবোধ” এর।

যেভাবে ঘটনা : কয়েক বছর আগে রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় প্রধান সড়কের পাশে টিএন্ডটি কলোনীতে এলাকার মানুষ নামাজ আদায়ের জন্য একটি মসজিদ তৈরি করে। ধীরে ধীরে মুসল্লী সংখ্যা বাড়তে থাকে, মসজিদের নামকরণ হয় বাইতুল আজিম জামে মসজিদ। কিন্তু পার্শ্ববর্তী জমির দখলদার যুবদল নেতা ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক ও তার সহযোগীদের সেই জায়গায় মার্কেট বানানোর প্ল্যানে ছেদ পড়ে। মসজিদ যাতে মুসল্লীহীন হয়ে পড়ে সেজন্য প্রচেষ্টা চালায় বিভিন্নভাবে। মসজিদকে অবৈধ বানাতে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বেশ কয়েকবার সালিশ দরবারও করে। কিন্তু ইমাম, খতিব ও মুসল্লীদের সচেতনতার কারণে পেরে উঠছিল না কিছুতেই। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেয় ক্ষমতা ও অস্ত্রের জোর ব্যবহার করার। ১৫ আগস্ট ফজরের নামাজ পড়তে গেলে মুসল্লীরা দেখতে পায় মসজিদের প্রবেশপথ দেয়াল তুলে আটকানো। ইশার নামাজে যেপথ দিয়ে তারা বের হয়েছে, ভোরবেলা সেপথ বন্ধ হয় কিভাবে? তাদের আর বুঝতে বাকী থাকে না এ কাজ তৌফিক গংদের। মুসল্লীদের আনাগোনা নিয়ন্ত্রণে এনে মসজিদটি পরিত্যাক্ত ঘোষণা করে দখল করার ফন্দি এটেছে সে। দ্রুত সকল মুসল্লী এবং স্থানীয় মাদরাসা চৌধুরীপাড়া ও জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগের শিক্ষক ও ছাত্রদের কানে এ খবর গেলে উত্তেজনায় ফেটে পড়ে সকলে। ডাক দেয়া হয় বিক্ষোভ সমাবেশের।
আর কিছু নয়, মসজিদ দখল করা হয়েছে, তাও আবার মসজিদের শহর ঢাকাতে? বিক্ষোভে উত্তাল মানুষের মধ্য থেকে দাবী উঠতে থাকে এখনই মসজিদকে দখলমুক্ত করা হোক।

ওদিকে তৌফিক গং মসজিদের দখল বজায় রাখতে চারিদিকে স্বশস্ত্র আনসারদের পাহারা বসিয়েছিল। সমাবেশের এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ জনতার একটি দল ছুটলো মসজিদের প্রবেশপথে তৈরি করা নতুন দেয়াল ভাঙতে। আনসাররা বাধা দিলেও জনতার রুদ্রমূর্তি দেখে প্রথমে পিছু হটে তারা। দেয়াল প্রায় ভেঙে ফেলেছে এ পর্যায়ে আনসাররা আবার এগিয়ে আসে, তৌফিক গংদের নির্দেশে অতর্কিত গুলি চালায় তারা। নিরস্ত্র মুসল্লী ও মাদরাসার ছাত্ররা হতভম্ব হয়ে যায় ঘটনার আকস্মিকতায়। রক্তে রঞ্জিত হয়ে যায় মালিবাগের রাজপথ। গুলিবিদ্ধ আহতদের হাসপাতালে নেয়া হয়, খবর আসে গুলিবিদ্ধ তিন ছাত্র ও এক মুসল্লী গুরুতর আহত।

বিক্ষুব্ধ মানুষ তখন আরও ক্ষিপ্ত হয়ে আশে পাশে দোকানপাটে ভাংচুর চালিয়ে মসজিদে ঢুকে পড়লে আনসাররাসহ দখলদাররা পালিয়ে যায়। এর মধ্যে চার জন নিহতের খবর আসলে তা মসজিদের মাইকে প্রচার করা হয় ও শহীদদের জন্য মাগরীব বাদ সেখানে দোয়ার আয়োজন করা হয়। ইতোমধ্যে নিহতদের পরিচয় সনাক্ত হয়- ১। শহীদ হাফেজ আবুল বাশার (মালিবাগ মাদরাসার ছাত্র), বাড়ি পিরোজপুর জেলার খলিশাখালীতে, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কর্মী ও খিলগাঁও থানার দায়িত্বশীলও ছিল। ২। শহীদ রেজাউল করীম ঢালী (চৌধুরীপাড়া মাদরাসার ছাত্র) বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানায়, সেও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য ছিল ৩। শহীদ হাফেজ ইয়াহইয়া (মালিবাগ মাদরাসার ছাত্র) বাড়ি মোমেনশাহী জেলার ফুলপুর থানায়। ৪। শহীদ জয়নাল আবেদীন (ফেনী জেলার ডুমুরিয়া গ্রামের দিনমজুর) যিনি মেয়ের বিয়ের টাকা যোগাতে ঢাকায় এসেছিলেন।

মসজিদ দখলমুক্ত হলেও আন্দোলনকারী বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতার মনে তখন প্রচ- দ্রোহ। শহীদদের লাশের অপেক্ষা করছিল সবাই, একনজর দেখে জানাজা দাফন দিয়ে কিছুটা কষ্ট ঘুচানোর পরিকল্পনাও করছিল অনেকেই। কিন্তু ওদিকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে আরেক অধ্যায়। ইসলামী মূল্যবোধের সরকারের ভাবমূর্তি কোনক্রমেই নষ্ট হতে দেয়া যাবে না, তাতে যদি আবারও গুলি চালাতে হয় তাও চলবে এমন পরিকল্পনাই চলে রাতভর। উদ্দেশ্য শহীদদের খুনীদের বিচার নয়, ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে খুনিদের রক্ষা করা। সেটাই স্পষ্ট হলো তাদের পরবর্তী কর্মকা-ে। প্রথমে মিটিং থেকে বের হয়ে তারা প্রতিবাদ সমাবেশ ও জানাজার কথা বললেও সকালে জানাজার অপেক্ষমানদের জানানো হলো, ঢাকায় কোন জানাজা হবে না, গ্রামের বাড়িতে হবে।

শহীদদের লাশ দেখা ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে বিশাল জানাজায় অংশগ্রহণের সৌভাগ্য আর হলো না সতির্থদের। এখানেই শেষ নয়, কেউ যাতে এ নিয়ে পরে আন্দোলন না করে সে ব্যাপারেও হুশিয়ার করে দেয়া হলো। পরদিন বিভিন্ন মাদরাসায় জোটভুক্ত ইসলামী দলের নেতারা গিয়ে বলে দিল, কোন মিছিলে যাতে কেউ না যায় তা নিশ্চিত করতে। কোন এক অদৃশ্য হালুয়া রুটি শহীদদের মাদরাসার ওস্তাদদেরও মুখ বন্ধ করে দিল নিমিষেই। যে মাদরাসার ছাত্র শহীদ হয়েছে তার সাথী ভাইরা একটু প্রতিবাদ করবে সে অধিকারও বন্ধ করে দেয়া হলো। কিন্তু একজনের মুখ সেদিন বন্ধ করতে পারেনি শাসকগোষ্ঠী ও তাদের উচ্ছিষ্টভোগিরা।

তিনি হলেন তৎকালীন ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের আমীর মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ ফজলুল করীম পীর সাহেব চরমোনাই রহ.। তিনি পরদিনই মালিবাগ বাইতুল আজিম শহীদী মসজিদ নামকরণ করে মসজিদ পুরোপুরি দখলমুক্ত করাসহ শহীদদের খুনিদের গ্রেফতার ও শহীদ পরিবারের ক্ষতিপুরণ দাবী করে কর্মসূচি ঘোষণা করলেন। ধারাবাহিক কর্মসূচি চলাকালে তিনি সরকারের সাহায্যের আশায় না থেকে সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক শহীদের পরিবারের কাছে প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নগদ অর্থ পাঠান। এরপর ধারাবাহিক কর্মসূচি চালান কয়েক মাস। এখনও প্রতিবছর আগস্ট এলেই কর্মসূচি পালন হয়, কিন্তু দাবী আজও বাস্তবায়ন হয়নি। সেদিন জোটে থাকা আলেমদের শহীদদের বিরুদ্ধে নেয়া কুটকৌশল সাময়িকভাবে তাদেরকে স্বস্তি দিলেও ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল তাদের “ইসলামী মূল্যবোধ”। প্রমাণিত হয়েছিল আওয়ামীলীগ শুধু নয়, বিএনপির কাছেও ইসলাম পুরোপুরি অনিরাপদ।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিতইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে রাজনী...
12/08/2025

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দলের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সঙ্গে রাজনীতি, নির্বাচন, সংস্কার, নাগরিক অধিকার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাণিজ্য ও সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। আজ ১২ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৫৫/বি পুরানা পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক আরোপিত শুল্ক পুনর্বিবেচনা করে সহনীয় করায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীরের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।

মতবিনিময় সভায় আগামীর বাংলাদেশে নির্মাণে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ভাবনা ও তার যৌক্তিকতা তুলে ধরেন দলের যুগ্মমহাসচিব ও মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। একই সাথে সংস্কার কমিশনে ইসলামী আন্দোলনের নীতিগত অবস্থানের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।

বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, পলিটিক্যাল অফিসার জেমস স্টুয়ার্ট, পলিটিক্যাল স্পেশালিষ্ট ফিরোজ আহমেদ ও পলিটিক্যাল এসিস্ট্যান্ট ইকবাল মাহমুদ।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. বেলাল নূর আজিজী, দফতর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, সহ-প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক কেএম শরীয়াতুল্লাহ, আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য খায়রুল আহসান মারজান, মুহাম্মাদ রাজন শিকদার।

10/08/2025

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের - মাওলানা গাজী আতাউর রহমান

নেক্সাস ডিফেন্স এন্ড জাস্টিজ কর্তৃক জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত নির্বাচনমুখী জুলাই ঘোষণাপত্র শহীদদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান।

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংস্কারের দাবীতে আন্দোলনরতদের কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহণ করেন ইসলামী আ...
10/08/2025

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সংস্কারের দাবীতে আন্দোলনরতদের কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে অংশগ্রহণ করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম (শায়খে চরমোনাই)

Address

Hizla
Barishal

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Chormonai media posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Chormonai media:

Share