19/07/2025
🥀🌹কুরআন সুন্নাহ তথা ইলমে ওহীর আলো পৃথিবীময় ছড়িয়ে দেয়ার প্রত্যয়ে বিশ্ববিখ্যাত শিক্ষাকেন্দ্র দারুল উলুম দেওবন্দের অনুকরনে যে সকল দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এদেশে মুসলমানদের তাহযীব তামাদ্দুন ইসলামী চিন্তা চেতনা জাগিয়ে তুলতে ভূমিকা পালন করে আসছে। জামিয়া আশরাফিয়া জান্নাতুল বাক্বী বরগুনা Jamia Ashrafia Jannatul Baqi মাদরাসা সেই ধারাবাহিকতারই এক অনন্য দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
বেসরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি বিগত দেড় যুগ যাবৎ কেবলমাত্র ধর্মপ্রান মুসলমানদের দোয়া ও সার্বিক সাহায্য সহযোগিতায় মুসলমানদের সন্তানদেরকে ধর্মীয় ভাবধারায় বহুমুখী যোগ্য গড়ে তোলাসহ ইসলামি শিক্ষার প্রচার প্রসারে ঐতিহ্যবাহি এ প্রতিষ্ঠানটি দেশের অন্যতম প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীয় পরিচয় লাভ করে প্রসংশনীয় ভূমিকা পালন করে আসছে।
🌹১৪২৫ হিজরী মোতাবেক ২০০৫ ইং সনের শুরুর দিকে তদানিন্তন বরগুনা পৌরসভা ও তার পার্শবর্তী এলাকায় কোন দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় অত্র এলাকায় দিন দিন ধর্মীয় মূল্যবোধ হ্রাস পেতে থাকে। তাই মুসলিম সন্তানদেরকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত এবং নববী আদর্শে আদর্শবান করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্য হাকীম মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল হক সাহেব রহঃ বরিশালী (সাবেক শিক্ষক Darul Uloom Mueenul Islam দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী এর অনুপ্রেরণায় শাইখুল হাদীস মুফতি গোলাম মাওলা জাহিদ কাসেমী দাঃবাঃ মুরুব্বিদের তত্ত্বাবধায়নে বিশেষভাবে তার মা-বাবা ও বড়ভাই মাওলানা ইদ্রিসুল আলম দাঃবাঃ, হাফেজ মুজাম্মেল হক দাঃবাঃ এদের উদ্দিপনা ও অক্লান্ত পরিশ্রমে একটি মক্তব ও হেফজখানা চালু করেন। পরবর্তীতে শাইখুল হাদীস আল্লামা শাহ্ আবদুল মতিন বিন হোসাইন দাঃবাঃ এর কদমের বরকত ও শাইখুল হাদীস আল্লামা মুফতি নজরুল ইসলাম কাসেমী দাঃবাঃ এর পৃষ্ঠপোষকতায়, হযরতওয়ালারই সুযোগ্য খলিফা শাইখুল হাদীস মুফতি গোলাম মাওলা জাহিদ কাসেমী দাঃবাঃ এর সুদক্ষ পরিচালনায় আজ জামিয়া আশ্রাফিয়া জান্নাতুল বাক্বি মাদ্রাসা বর্তমানে দাওরায়ে হাদীস (মাষ্টার্স) পর্যন্ত দেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুখ্যাতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ।
🔴এক নজরে জামিয়া
নামঃ- জামিয়া আশ্রাফিয়া জান্নাতুল বাক্বী বরগুনা। ঠিকানাঃ- বাইতুল আকসা সড়ক, ক্রোক, বরগুনা।
🔴আদর্শ
জামিয়া আশ্রাফিয়া জান্নাতুল বাক্বী বরগুনা,বিশ্ব-বিখ্যাত মাদারে ইলমি দারুল উলুম দেওবন্দের সিলেবাসভুক্ত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আদর্শ ভিত্তিক একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
🔴লক্ষ্য-উদ্দেশ্য
ক) ইসলামি জ্ঞান ভান্ডার সংরক্ষন ও ব্যাপক প্রচার প্রসার যার মাধ্যমে আল্লাহ তা'য়ালার বিধানাবলি ও সুন্নাতে নববী প্রতিষ্ঠার লক্ষে নিয়মতান্ত্রিক শিক্ষা দীক্ষার মাধ্যমে দূরদর্শী হক্কানী আলেম তৈরি করা এবং তাদেরকে বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশ-জাতি ও বিশ্ব সেবায় নিয়োজিত হওয়ার উপযুক্ত করে গড়ে তোলা।
খ) আহ্লে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আকিদা-বিশ্বাস অনুযায়ী হাদীস, আছার ও ফিকহে হানাফীর সংরক্ষন এবং দেওবন্দী সিলেবাস মোতাবেক শিক্ষা-দীক্ষার যথাযথ বাস্তবায়ন।
🔴জামিয়ার শিক্ষাধারা
জামিয়া আশ্রাফিয়া জান্নাতুল বাক্বী মাদ্রাসা গতানুগতিক কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নয়। সূদুর প্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে এ জামিয়া সাজিয়েছে তার পাঠ পদ্ধতি ও শিক্ষা সিলেবাস। এখানে শিশু শ্রেণী থেকে দ্বীনি শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদীস (মাষ্টার্স) সমমান পর্যন্ত ডিগ্রী অর্জনের নিমিত্তে বেশ কয়েকটি অনুষদ বিদ্যমান। সেখানে অধ্যায়ন ও গবেষণার বিপুল সুযোগ সুবিধা রয়েছে। যেন জাতিকে যোগ্যতা সম্পন্ন আলেম উপহার দেয়া যায়।
🔴তরবিয়ত
১। প্রত্যেক সোমবার বাদ যোহর ছাত্রদের ইসলাহী তরবিয়তী মজলিস হয়। এই মজলিসে ছাত্রদেরকে চরিত্র গঠন ও অভিষ্ট লক্ষ অর্জনে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হয়। বুযুর্গানে দ্বীনের মালফুযাত ও ঘটনাবলি শুনানো হয়। এ উপলক্ষে অনেক সময় মেহমান হিসেবে মুরুব্বিদেরকে দাওয়াত করে আনা হয়।
২। ছাত্রদেরকে আজান একামত ও নামাজের আমলি মশ্ক করানো হয়।
৩। দৈনিক বাদ আসর পর্যায়ক্রমে ফাজায়েলে আমল ও ফাজায়েলে সাদাকাত থেকে তালীম হয় এছাড়াও পর্যায়ক্রমে সুন্নাতের আমলী মশ্ক হয়।
৪। বাদ মাগরিব ও বাদ ফজর সূরায়ে ওয়াকিয়া, সূরায়ে ইয়াসীন, সূরায়ে এখলাস, সূরায়ে ফালাক, সূরায়ে নাস, আয়াতুল কুরসী, সূরা হাশরের শেষ ৩ আয়াতসহ আদইয়ায়ে মাসনুনার আমল হয়।
৫। সালাতুত্ তাস্বীহ জুময়ার দিনের সুন্নাত, খাওয়ার সুন্নাত, ঘুমানোর সুন্নাত, জুমার দিন মাগরিবের পূর্বে বিশেষ দোয়া ইত্যাদি সুন্নাতের আমল মশ্ক হয়।
🔴ইসলাহি জলসাঃ
প্রত্যেক ইংরেজী মাসের শেষ শুক্রবার আম মুসলিম উম্মাহ ও ছাত্র শিক্ষকের আত্মশুদ্ধির জন্য জামিয়ার ক্যাম্পাসে এসলাহি জলসা অনুষ্ঠিত হয়। এরদ্বারা উম্মাত আত্মশুদ্ধির সাথে সাথে আল্লাহ তায়ালার সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করার সুযোগ পায়।
🔴ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
১। আসাতিযায়ে কেরামের জন্য মানসম্মত আবাসিক ভবন নির্মাণ করা।
২। ইফতা বিভাগ চালু করা।
৩। উলুমুল হাদীস বিভাগ চালু করা।
৪। দাওয়াহ বিভাগ চালু করা।
৫। বাংলা সাহিত্য ও গবেষণা বিভাগ চালু করা।
৬। মাদ্রাসার জন্য আধুনিক মসজিদ নির্মাণ করা।
৭। বয়স্ক শিক্ষা চালু করা
🔴জামিয়ার বৈশিষ্ট্য ও অবদান
রাজনীতি মুক্ত অত্র জামিয়া দেশের আনাচে কানাচে ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে অনন্য ভূমিকা পালনের সুবাদে ইতিমধ্যে সুখ্যাতি অর্জন করেছে। সত্য বলতে কি! দোচালা একটি টিনের ঘর তথা নুরাণী মাদ্রাসাকে কঠোর পরিশ্রম, অক্লান্ত সাধনা ও জীবনের সবকিছু উজার করে দিয়ে আজ এত বড় সু-বিশাল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন যিনি। তিনি এই জামিয়ার সম্মানিত মুহ্তামীম মহান শিক্ষাবীদ একনিষ্ঠ জ্ঞান তাপস শাইখুল হাদীস মুফতি গোলাম মাওলা জাহিদ কাসেমী দাঃবাঃ। তার আসাধারণ প্রজ্ঞা, দক্ষতা ও বিচক্ষণতার বদৌলতে জামিয়া আশ্রাফিয়া জান্নাতুল বাক্বী মাদরাসা"المدرسة الجنةالباقيه আজ আলেম-ওলামা ও শিক্ষার্থীদের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
🤲দোয়া।
আল্লাহ পাক এ মহান কর্মবীর আমাদের প্রাণ প্রিয় শায়খকে দীর্ঘায়ু করুক এবং তার দক্ষ পরিচালনায় জামিয়া আশ্রাফিয়া জান্নাতুল বাক্বী মাদ্রাসা ও এর আওতাভুক্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ফুলে ফুলে সুবাসিত করুক। আমিন।
Muhammad Abul Hasan
#জান্নাতুলবাকী
#মাদ্রাসা
#জামিয়া
#বরগুনা