22/05/2025
শিক্ষণীয় গল্প(শুধু পিঁপড়ে নয় আমাদের জীবন),,,,
একটি পিঁপড়ার কলোনিতে থাকতো একটি ছোট পিঁপড়ে। না ছিলো সে সবচেয়ে শক্তিশালী, না সবচেয়ে দ্রুতগামী, না সবচেয়ে বুদ্ধিমান, কিন্তু তার একটি গুণ ছিল যা তাকে
অন্যদের থেকে আলাদা করতো,,,, আর তা হলো - সে কখনোই অন্যের কষ্ট উপেক্ষা করতে পারতো না।
যদি কেউ ক্লান্ত হয়ে পড়ে এবং শস্যের দানা বাসায় নিয়ে যেতে না পারে, সে সাহায্য করতো। যদি কেউ হোঁচট খেয়ে পড়ে যেতো, সে তাকে তুলে দিতো। যদি বৃষ্টিতে সুড়ঙ্গ ধসে যেতো, সে-ই সবার আগে তা মেরামত শুরু করতো।
পিঁপড়ারা তার সবসময় পাশে থাকার অভ্যস্ত হয়ে উঠেছিলো। তারা জানতো, যদি তারা কোনো বোঝা ফেলে দেয়, সে তা তুলে নেবে। যদি তারা কোনো পথ শেষ না করে, সে তা শেষ করবে। যদি তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ে, সে তাদের কাঁধ দেবে ভর দিয়ে চলার জন্য।
কিন্তু কেউ কখনও জিজ্ঞেস করেনি,,,, সে নিজে কি ক্লান্ত,,,,?
দিনের পর দিন, সে শুধু নিজের কাজই করত না, সবার কাজও করে যেতো। তার কখনও বিশ্রামের সময় ছিল না, কিন্তু সে নিজেকে বোঝাতো,,,, “আর একটু, তারপর সব ঠিক হয়ে যাবে।” তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো—অন্যদের যেন কষ্ট কম হয়।
একদিন, পিঁপড়েটি লক্ষ্য করলো তার পা কাঁপছে ক্লান্তিতে। সে আর আগের মতো দ্রুত শস্য বয়ে নিতে পারছিলো না। তার পিঠ ব্যথা করছিলো আর চোখে ক্লান্তি জমে ছিলো সেই অন্তহীন কাজের চাপ দেখে। কিন্তু সে তো পিঁপড়ার ঢিপিকে নিরাশ করতে পারতো না।
যখন এক পিঁপড়ে তাকে একটি বোঝা বয়ে নিতে সাহায্য চাইলো, সে তার শেষ শক্তিটুকু জড়ো করে রাজি হলো।
যখন দ্বিতীয় পিঁপড়ে তাকে নিজের কাজ শেষ করতে বললো, সে দাঁত কামড়ে হ্যাঁ বললো।
যখন তৃতীয় পিঁপড়ে বললো, “তোমার তো সবসময় সময় থাকে, আমাকেও সাহায্য করো,” তখনও সে না বলতে পারলো না।
আর তখনই ঘটলো এমন কিছু, যা সে নিজেও আশা করেনি। সব দায়িত্বের ভারে তার পা ভেঙে পড়ল। সে মাটিতে পড়ে গেলো। অথচ পাশ দিয়ে ছুটে যাওয়া পিঁপড়ারা খেয়ালই করলো না যে সে আর নড়ছে না।
প্রথমে কেউ তার অনুপস্থিতি লক্ষ্যই করলো না। তারপর “ও নিশ্চয়ই শিগগিরই ফিরে আসবে,” তারা বললো।
কিন্তু দিন কেটে গেলো, আর কাজ আরও কঠিন হয়ে উঠলো। আর কেউ পড়া শস্য তুলে নেয় না। আর কেউ কাঁধ দেয় না। আর কেউ সুড়ঙ্গ মেরামত করে না।
পিঁপড়ার ঢিপিতে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠলো।
সব পিঁপড়ারাই এক এক করে বুঝতে শুরু করলো,,,,সে তাদের ধারণার চেয়ে অনেক বেশি কিছু করতো। তারা তাকে খুঁজলো, কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া গেল না।
আর তখনই, পিঁপড়ার ঢিপির এক কোণে থাকা এক বৃদ্ধ পিঁপড়ে একদিন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,,,, “সে চলে গেছে।”
তার কাজের মূল্য তখনই বোঝা গেলো যখন সে আর ছিল না।
“কিন্তু সে আমাদের বলল না কেন,,,,?পিঁপড়ারা ক্ষুব্ধ হলো।
বৃদ্ধ পিঁপড়া বললো,,,,“তোমরা কি কখনো তাকে জিজ্ঞেস করেছিলে, সে কেমন আছে?” পিঁপড়ারা চুপ করে রইলো।
তারা বুঝতে পারলো,,,, তারা তার সাহায্যকে স্বাভাবিক মনে করেছিলো। সে সবসময় পাশে থাকতো, সাহায্য করত, সবাইকে কঠিন সময় থেকে রক্ষা করতো। আর যখন সে নিজেই কষ্টে ছিলো, তখন কেউ তা টেরও পায়নি।
☄️ নৈতিক শিক্ষা
প্রতিটি সমাজে কিছু মানুষ থাকে যারা অন্যদের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেয়।তারা সাহায্য করে, পাশে থাকে, সবার চেয়ে বেশি পরিশ্রম করে। তারা তখনও “হ্যাঁ” বলে যখন তারা খুব ক্লান্তও থাকে। তারা অন্যদের জীবন সহজ করে তোলে কিন্তু কেউ তাদের জিজ্ঞেস করে না,,,,তারা কেমন আছে।
একদিন যখন তাদের শক্তি শেষ হয়ে যায় আর তারা চলে যায়, তখনই সবাই বোঝে তারা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।
-কপি-পেস্ট