09/02/2025
অনেকেই বলে আমরা সনাতন ধর্মের মানুষেরা নিজেদের হিন্দু বলি কেন?
"হিন্দু" শব্দের উৎপত্তি "হীনম দুষ্যতি ইতি হিন্দু" থেকে হয়েছে, অর্থাৎ যে অজ্ঞানতা ও হীনতাকে ত্যাগ করে, তাকেই হিন্দু বলে, হিন্দু শব্দ হাজার হাজার বছরের প্রাচীন, সংস্কৃত শব্দের থেকে এসেছে, যদি এই সংস্কৃত শব্দের সন্ধি বিচ্ছেদ করা হয় তাহলে পাওয়া যাবে,,,,
হীন + দু = হীন ভাবনা + থেকে দূর, অর্থাৎ যে হীন ভাবনার থেকে বা দুর্ভাবনা থেকে দূরে থাকে বা মুক্ত থাকে তাকেই হিন্দু বলে, আমাদের বারবার মিথ্যা বলা হয় যে মুঘলরা হিন্দু শব্দটা দিয়েছে, যেটা "সিন্ধু" থেকে "হিন্দু" হয়েছে, যেটা হিন্দুদের ভুল বোঝানো হয়েছে।
2⃣) কোথা থেকে এসেছে এই হিন্দু শব্দ আর কোথার থেকেই উৎপত্তিঃ
হিন্দু শব্দ বেদ থেকেই উৎপত্তি হয়েছে, কিছু লোক বলে সিন্ধু শব্দ থেকে হিন্দু শব্দটি এসেছে, আর এটি ফারসি শব্দ, কিন্তু এরকম কিছুই নয়, এটা শুধু মিথ্যা প্রচার, আমাদের বেদ ও পুরাণেও হিন্দু শব্দের উল্লেখ পাওয়া যায়, বিশদে জানা যাক হিন্দু শব্দের উৎপত্তি কোথা থেকে এসেছে, "ঋগ্বেদের বৃহস্পতি অগ্যমে" হিন্দু শব্দের উল্লেখ এইরকম-
▪️"হিমালয়ং সমারম্ভম যাওদ্ ইন্দুসরোবরং তং দেব নির্মিতং দেশং হিন্দুস্তানং প্রচক্ষতে"
অর্থাৎ- হিমালয় থেকে ইন্দু সরোবর পর্যন্ত বিস্তৃত দেবনির্মিত দেশকে হিন্দুস্থান বলা হয়, শুধু বেদ নয় শৈব গ্রন্থেও হিন্দু শব্দের উল্লেখ এইরকম করা হয়েছে-
▪️"হীনম চ হিন্দুরীত্যুচ্চ দুষ্যতেব তে প্রিয়ে"
অর্থাৎ- যে অজ্ঞানতা ও হীনতাকে ত্যাগ করে তাকেই হিন্দু বলা হয়, এইরকম প্রায় একই কথা "কল্পদ্রুমে" লেখা আছে, হীনম দুষ্যতি ইতি হিন্দু, অর্থাৎ অজ্ঞানতা হীনতা ত্যাগ করা ব্যক্তিকেই হিন্দু বলা হয়,
3⃣) পারিজাত হরণে হিন্দুকে কিছুটা এইরকম ভাবে ব্যক্ত করা হয়েছেঃ
▪️"হিনাস্তি তপসা পাপাং দৈহিকাং দুষ্টং, হেতিভি: শত্রুবর্গ স চ হিন্দুরভিধিয়তে"
অর্থাৎ- যে নিজের তপস্যার দ্বারা দুষ্ট ও শত্রুর পাপ নাশ করে সেই হলো হিন্দু, মাধব দীগ্বিজয়ে হিন্দু শব্দের ব্যাখ্যা কিছুটা এইরকম উল্লেখ করা হয়েছে-
▪️"ওমকারামন্ত্রমুলাধ্যায়া পুনর্জন্ম দৃঢ়াশ্চয়,
গৌভক্ত ভারত: গরুহিন্দুহিসন দুষক"
অর্থাৎ- যে ওমকারকে ঈশ্বরীও শব্দ মানে, কর্মে বিশ্বাস করে, গো-পালক হয়, অশুভ অধর্মকে দূরে রাখে সেই হিন্দু হয়,
4⃣) শুধু এটাই নয় আমাদের ঋগ্বেদে হিন্দু নামের অনেক পরাক্রমী ও দানবীর রাজার নাম উল্লেখ আছে, যারা 46 হাজার গোমাতা দানে দিয়েছিল, আর "ঋগ্বেদ মন্ডলেও" এর উল্লেখ আছে, অশুভ ও অধর্মকে সর্বদা দূর করার প্রয়াসকারীকে, ও সনাতন ধর্মের পালন পোষণকারীকে হিন্দু বলা হয়, - "হিনস্তু দুরিতাম" ।