03/07/2025
আল্লামা কুতুবউদ্দীন বখতিয়ার কাকী ওফাতের আগে তার সন্তান ও খলিফাদের ওসিয়ত করলেন যে,
আমার মৃত্যুর পর যাকে-তাকে দিয়ে আমার জানাযা পড়াবে না।
আমার জানাযা যে ব্যক্তি পড়াবে; তার মধ্যে ৪টি গুণ থাকতে হবে।
যদি এ ৪টি গুণ কোনো ব্যক্তির জীবনে পাওয়া না যায়; তবে বিনা জানাযায় আমার লাশ দাফন করবে।
খাজা কুতুবউদ্দীন বখতিয়ার কাকী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির শর্তগুলো হলো-
>> যে ব্যক্তি জীবনে কোনো দিন তাকবিরে উলা ব্যতিত নামাজ পড়েনি; এমন ব্যক্তি।
>> যার জীবনে একদিনও তাহাজ্জুদ কাজা হয়নি; এমন ব্যক্তি।
>> যে ব্যক্তি তার চোখের দ্বারা পরনারী দেখে কখনো গোনাহের কল্পনা করেনি; এবং
>> যে ব্যক্তি জীবনে কোনো দিন আছরের সুন্নাতও কাজা করেনি।
খাজা কুতুব উদ্দীন বখতিয়ার কাকী ওফাত করলেন। ওফাতের পর তাঁকে জানাযার জন্য প্রস্তুত করে মাঠে নেয়া হলো।
সেখানে উল্লেখিত ৪টি শর্ত উল্লেখ করে ঘোষণা করা হলো- যিনি বা যারা এ গুণগুলোর অধিকারী; তিনি খাজা কুতুবউদ্দীন বখতিয়ার কাকীর জানাযা পড়ানোর জন্য সামনে আসুন।
মাঠ ভর্তি মানুষ।
কোনো সাড়া শব্দ নেই।
এতো অনেক বড় গুণের কথা।
এ গুণ অর্জন করা সহজ ব্যাপার নয়।
সারা মাঠের লোকগুলো মাথা নিচু করে অশ্রু বিসর্জন দিতে লাগলো।
নিজেদেরকে অপরাধী মনে করে নিরবে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকল।
মাঠ থেকে কোনো প্রতি উত্তর না আসায় খাজা কুতুবউদ্দীন বখতিয়ার কাকী’র ছেলে, খলিফা, ছাত্রসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা বিনা জানায়া তাকে দাফনের সিদ্ধান গ্রহণ করলেন।
সন্তান ও খলিফারা লাশের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁকে বিনা জানাযায় দাফন করার জন্য রওয়ানা হবেন। এমন সময়-
সামনের কাতার থেকে একজন লোক কদম বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘থামো!’ কফিনে হাত লাগিয়ে বললেন, ‘আমি জানাযা পড়াব।
এ ব্যক্তি আলেম নয়, তবে সাধারণ মানুষও নয়; তিনি হলেন দিল্লির সুলতান শামসুদ্দিন আল-তামাশ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি।
দিল্লির সুলতান শামসুদ্দিন আল-তামাশ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি, কফিনের সামনে গিয়ে কাফন সরিয়ে খাজা কুতুব উদ্দিন বখতিয়ার কাকীর কপালে চুমু খেয়ে বললেন, ‘ওগো আল্লাহর ওলি! সারা জীবন নিজে আমল করে করে; তোমার আমল গোপন করে তুমি চলে গেলে; আর আজকের এ ময়দানে আমার আমলগুলোকে প্রকাশ করে দিলে।
আমি ভয় করি; আমার আমলগুলো প্রকাশ হয়ে যাওয়ায় না জানি আমি ধ্বংস হয়ে যাই।