02/07/2025
আইনে Random Law বলে একটা টার্ম আছে। কোনো একটা সমস্যা হলো তড়িঘড়ি করে একটু সংশোধন বা নতুন আইন তৈরী করা হলো। এতে সমস্যা আরো বৃদ্ধি পায়, কমে না। একটা নতুন আইন প্রনয়ন বা সংশোধন এর আগে গবেষণা করতে হয়, স্টেক হোল্ডারদের সাথে কথা বলতে হয়। কিন্তু সেরকম কিছু আমাদের দেশে বাস্তবে হয় না। আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০ সালের যে সংশোধন করা হয়েছে সেটাও Random আইন বলেই মনে হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জুডিসিয়াল অফিসার বা বিচারক আমার ইনবক্সে এই আইনের পরিবর্তন বা সংশোধন নিয়ে তার তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। আমি ব্যক্তিগত ভাবে নিজেও উনার সাথে একমত। সেই কারণে উনার প্রতিক্রিয়াটি আমি হুবহু কপি করে আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
আইন বদলাচ্ছে, কিন্তু বিচার কি সহজ হচ্ছে?
[একজন বিচারকের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ]
আইন তৈরি হয় মানুষের উপকারের জন্য যাতে তারা সহজে ও দ্রুত ন্যায়বিচার পেতে পারে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, এসব আইন মানুষের জীবনে উপকারের বদলে জটিলতা তৈরি করছে। মনে হয় যেন সাধারণ মানুষকে নিয়েই চলছে এক নীরব আইনি পরীক্ষা।
আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে যাই, সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের ওপর আইনের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ দেখে। এইতো ৩/৪ বছর আগের কথা। হঠাৎ সিদ্ধান্ত এলো, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(গ) ধারার অধীনে সাধারণ আঘাতজনিত অপরাধের অভিযোগ আর মেডিকেল সার্টিফিকেট ছাড়া গ্রহণযোগ্য হবে না।
এর ফলস্বরূপ, ট্রাইব্যুনালে এই ধরনের অভিযোগ কমে গেলেও, বিচারপ্রার্থীরা ভিন্ন পথ অবলম্বন করতে বাধ্য হন। অনেকেই নির্যাতনের প্রসঙ্গ চেপে গিয়ে কেবল যৌতুক দাবির জন্য ১৯৮০ সালের যৌতুক নিরোধ আইন, ধারা ৩/৪ অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করতে শুরু করেন। কারণ, একটি মেডিকেল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা একজন নির্যাতিত নারীর জন্য কতটা কষ্টকর তা একমাত্র ভুক্তভোগীরাই বোঝেন।
মাত্র তিন মাস আগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন এলো। ফলে, যৌতুক দাবির কারণে সাধারণ নির্যাতনের অভিযোগ অর্থাৎ ১১(গ) ধারার মামলা আবারও ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের হওয়া শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের মতো অতিরিক্ত আনুষ্ঠানিকতা এখানে নেই। বিচারপ্রার্থীরা সহজে মামলা করতে পারছিলেন এবং প্রতিকার পাচ্ছিলেন। মনে হচ্ছিল, দীর্ঘদিনের এক অকার্যকর ব্যবস্থার জট খুলছে, বিচার ফিরছে মানুষের দুয়ারে।
কিন্তু এই স্বস্তির সময়কাল স্থায়ী হলো না তিন মাস