15/07/2023
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=746088690859559&id=100063753055020&mibextid=Nif5oz
হানিফ এমপি'র সাথে সাক্ষাতের ৪ দিন অতিবাহিত
কুষ্টিয়া নিউজ বিডি ২৪ 📝
এবার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহাবুবউল আলম হানিফ এমপি'র সাথে সাক্ষাত করেছেন বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (ব্যাট) কুষ্টিয়া লীফ ফ্যাক্টরীতে কর্মরত মৌসুমি শ্রমিকরা। গত ১১ এপ্রিল সকালে কুষ্টিয়ার হানিফ নগরে এমপির বাসভবনে তার সাথে সাক্ষাত করেন মৌসুমি শ্রমিকরা।
সাক্ষাতের ৪ দিন অতিবাহিত হলেও এমপি সাহেবর মুখ চেয়ে আছেন ভুক্তভোগী শ্রমিকরা। তারা বলছেন- কুষ্টিয়ার মাটি মানুষের নেতা মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি'র হাত দিয়েই এই সংকট সমাধান হবে এবং তারা তাদের ন্যায্য পাওনা বুঝে পাবেন।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ব্যাট এর ডিভিশনাল ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন, প্ল্যাট ম্যানেজার আলম সাহেব, এইচ আর ম্যানেজার রিয়াজ সাহেব, মেইনটেনেন্স অফিসার সৈয়দ শাকিল আহমেদ এর যোগসাজশে শ্রমিকদের এই ন্যায্য পাওনা বুঝে পাওয়ার আবেদন নস্যাৎ হতে চলেছে। গোপনে বেলায়েত হোসেনের নেতৃত্বে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, প্রভাবশালী নেতা ও মন্ত্রীদের সাথে এই বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ চলছে বলেও গুঞ্জন উঠেছে।
এদিকে শ্রমিকদের দুঃখ দুর্দশার কথা শুনে সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন- শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বুঝে পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে তিনি ব্যাটের ঢাকাস্থ কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবেন। এজন্য ৭ দিনের সময়ও চেয়েছেন হানিফ এমপি। এভাবেই হানিফ এমপির বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন ভুক্তভোগী শ্রমিকরা। তবে এই বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ন্যায্য পাওনা বুঝে না পেলে শ্রমিক অসন্তুষ্ট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। হানিফ এমপি'র সাথে সাক্ষাত শেষে প্রতিবেদকের সাথে কথোপকথন কালে এমপির মতামতের এসব কথা জানান ভুক্তভোগী শ্রমিকের একাংশ।
এসময় তারা আরো জানান- এমপি সাহেব সংকট সমাধানে ব্যর্থ হলে প্রয়োজনে তারা গণতন্ত্রের মানসকন্যা ও মানবতার মা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার দারস্থ হবেন। এভাবে তিলে তিলে মারা যাওয়ার থেকে একেবারে মরে যাওয়া ভালো বলেও জানান ভুক্তভোগী শ্রমিকরা। হানিফ এমপির সাথে সাক্ষাতকালে শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা বুঝে পাওয়ার জন্য সহযোগিতা কামনা করার পাশাপাশি তাদের দৈনন্দিন দুঃখ দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। তারা দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ তারা কোম্পানী ও শ্রম আইনের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। শেষ পর্যন্ত দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পরিবার নিয়ে বাঁচতে বাধ্য হয়ে ন্যায্য পাওনা বুঝে পেতে সরব হয়েছেন তারা। ২০১২/২০১৩ সালে তারা ১৪৬ জন মৌসুমি শ্রমিক কোম্পানীর অধিন লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে ও উত্তীর্ণ হয়ে কুষ্টিয়া লীফ ফ্যাক্টরীতে তামাক প্রক্রিয়াজাত করনের সাথে সরাসরি জড়িত আছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা কোম্পানী ও শ্রম আইনের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়ে আছি। এর মধ্যে এক নিয়োগপত্র, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্রাচুইটি, বীমা, ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, কোম্পানির মুনাফা অন্যতম। তাছাড়া তারা ১৪৬ জন মৌসুমি শ্রমিক যাদের স্থলাভিষিক্ত তারা ২০১২ সালে অবসরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সকল সুবিধা ভোগ করেছে।
শ্রমিকরা আরো বলেন- দীর্ঘ ১২ বছর আমরা উপরে উল্লেখিত দাবিগুলো আদায়ের জন্য সিবিএ নেতাদের লিখিত ও মৌখিক ভাবে জানিয়ে আসছি। কিন্তু সিবিএ নেতারা বরাবরই নিয়োগ বানিজ্য সহ নিজেদের স্বার্থ আদায়ে কোম্পানীর ব্যবস্থাপকদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে। ২০১৩ সালে কোম্পানীর বাৎসরিক মুনাফা বন্টনের সময় কোম্পানীর ট্রাষ্ট্রিবোর্ড ২০১২ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত ১১৬ জন মৌসুমি শ্রমিককে মুনাফায় অন্তর্ভুক্ত রেখে মুনাফার টাকার অংশ ঘোষনা করে। ঐ সময় ট্রাষ্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন ভাদু মিনু পরিষদের নির্বাচিত সভাপতি গোলাম রসুল ভাদু। কিন্তু ঐ বছর নির্বাচন থাকায় বিরোধী দলের আপত্তির কারণে ১১৬ জন শ্রমিক কোম্পানীর মুনাফা থেকে বঞ্চিত হই। তখন থেকে আমরা ১৪৬জন মৌসুমি শ্রমিকরা কোম্পানীর মুনাফায় অংশগ্রহণের দাবি আদায়ে সোচ্চার হয়ে উঠি। কিন্তু আমাদের ন্যায্য দাবিকে তোয়াক্কা না করে ২০১৫ সালে কোম্পানীর বাৎসরিক মুনাফা বন্টনের সময় কোম্পানীর ট্রাষ্টিবোর্ডের মিটিং-এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক কোম্পানীর ব্যবস্থাপকদের ৫শ জনের অধিক কর্মকর্তা কর্মচারিকে কোম্পানীর মুনাফায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ফলে ১৪৬ মৌসুমি শ্রমিকদের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং প্রতিবাদ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের সিবিএ-র নির্বাচনে সিবিএ ও ম্যানেজমেন্টের যোগসাজশে ১৪৬ জন মৌসুমি শ্রমিককে ভোটাধিকার প্রয়োগে বিরত রাখা হয় যা এখনও অব্যাহত আছে। অথচ ২০১৩ ও ২০১৫ সালের সিবিএ নির্বাচনে আমরা ১৪৬ জন মৌসুমি শ্রমিক ভোট প্রয়োগ করি। বিভিন্ন দাবি আদায়কে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে সকল শ্রমিকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে যে কোন মূহুর্তে শ্রমিক অসন্তুষ্ট দেখা দিতে পারে। সংকট সমাধানে আমরা কুষ্টিয়ার মাটি মানুষের নেতা মাহবুবউল আলম হানিফ এমপির দ্বারস্থ হয়েছি।
এই বিষয়ে বিএটি বাংলাদেশের মুখপাত্র বলেন-
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দেশের একমাত্র টোব্যাকো প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিএটি বাংলাদেশ দেশের প্রযোজ্য সকল আইন ও নীতিমালা শ্রদ্ধার সাথে মেনে চলে ১১৩ বছর ধরে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এ সময় বিএটি বাংলাদেশ নিশ্চিত করেছে যেনো এর শ্রমিক ও কর্মীরা আইন অনুযায়ী সকল অধিকার ও সকল সুবিধা উপভোগ করেন। দায়বদ্ধ করপোরেট প্রতিষ্ঠান হিসেবে ভবিষ্যতেও আমরা আমাদের কর্মীদের প্রতি সকল প্রতিশ্রুতি ধারাবাহিকভাবে দেশের প্রযোজ্য আইন ও নীতিমালা মেনে পূরণ করে যাবো।