
15/05/2025
ছিল না কোন প্রটোকল, ছিল না কোনো গাড়িবহর। ছিলেন রাষ্ট্রের প্রধান তবুও চলাফেরায় অতি সাধারণ। ৫ বছরের ক্ষমতায় সম্পদ বলতে তেমন কিছুই ছিল নেই। 👍
ছিল কেবল তিন পেয়ে কুকুর, দাদার আমলের গাড়ি আর একটি জরাজীর্ণ বাড়ি। বর্তমান দুনিয়ায় এমনভাবে চলাই যেখানে দায়, সেখানে উল্টো পথে হেঁটেছেন তিনি নির্দ্বিধায়!
ভিনগ্রহের এই মানুষটির নাম হোসে মুজিকা। পদমর্যাদায় ছিলেন উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট। তার অন্য পরিচয় পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্র রাষ্ট্রপ্রধান!
হোসে মুজিকা প্রেসিডেন্ট হয়েও কোনোদিন প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বসবাস করেননি। ভাঙাচোরা কুঁড়েঘরে সদস্য বলতে ছিলো স্ত্রী আর ম্যানুয়েলা নামের তিন পেয়ে একটি কুকুর!
কোনো ব্যাংক হিসেব ছিল না মুজিকার। প্রেসিডেন্ট হিসেবে বরাদ্দকৃত ১২,৫০০ মার্কিন ডলার বেতনের মাত্র ১০ শতাংশ নিতেন বাকিটা দান করে দিতেন।
তার ভাষ্য ছিলো- এর চেয়েও কম টাকায় উরুগুয়ের অনেক মানুষের জীবন চলে, আমার তো বেশ চলে যাচ্ছে।
রাষ্ট্রপ্রধান হবার আগেও কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন, হবার পরেও স্ত্রীকে সঙ্গে করে চালিয়ে গেছেন কৃষিকাজ। নিজেকে রাষ্ট্রপতি বলার চেয়ে কৃষক বলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য হোসে মুজিকার!
পুরোনো গাড়িটা নিজেই চালাতেন। রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে বিমানে চড়লেও কোনোদিন প্রথম শ্রেণীতে চড়েননি, চড়েছেন ইকোনমি ক্লাসে!
যখন তাকে পৃথিবীর দরিদ্র প্রেসিডেন্ট বলে আখ্যায়িত করা হত, তখন তিনি বলতেন- আমি গরিব নই, গরিব তারা যাদের আরো চাই!
কিশোর বয়সে হোসে মুজিকা ছিলেন একজন টুপামারো গেরিলা। যারা ধনীর সম্পদ লুন্ঠন করে গরীবের মাঝে বন্টন করতো। টুপামারো আন্দোলনের একজন স্থপতিও তিনি।
তিনি ৬বার পুলিশের হাতে গু*লিবি*দ্ধ হন। এর মধ্যে ১৯৭২ সালে তো প্রায় ম*রেই গিয়েছিলেন, কোনমতে বেঁচে যান। গণ মানুষের অধিকার আদায়ের উপহার স্বরূপ খেটেছেন ১৫ বছর জেল।
১৯৮৫ সালে উরুগুয়েতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর তিনি জেল থেকে মুক্তি পান। যোগ দেন বাম রাজনীতিতে। ১৯৯৪ সালে তিনি সিনেটর নির্বাচিত হন, ২০০৫ সালে মন্ত্রী আর ২০১০ এ প্রেসিডেন্ট।
২০১০ এর নির্বাচনে পূর্বতন প্রেসিডেন্ট তাঁকে দলীয় মনোনয়ন দেননি। দলের নেতানেত্রীদের চরম বিরোধীতার মুখে বাধ্য হয়ে হোসে মুজিকাকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মনোনয়ন দেয়া হয়।
হোসে মুজিকা উরুগুয়ের দূর্বল অর্থনীতিকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে দিয়েছিলেন।✊
©