19/04/2025
ভোলা: অবহেলিত এক সম্ভাবনার নাম
বাংলাদেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ দ্বীপ জেলা — ভোলা। অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদ আর সম্ভাবনার পায়ে শিকল পড়েছে দীর্ঘ দিনের অবহেলা ও বৈষম্যের।
ভোলায় কি নেই?
➡️ রয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাস, যা উত্তোলন করে সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
➡️ রয়েছে নদীর অমূল্য উপহার ইলিশ, কিন্তু সেই ইলিশই দামি হয়ে ওঠায় ভোলার অনেক পরিবার খেতেই পারে না।
➡️ সুপারি, নারকেল, দই — আমাদের স্থানীয় পণ্যে রয়েছে জাতীয় স্বীকৃতি।
তবুও বিনিময়ে কী পাচ্ছে ভোলা?
১. চিকিৎসা ব্যবস্থার করুন চিত্র:
গ্রাম পর্যায়ে একটু জটিল রোগ বা দুর্ঘটনা হলেই ছুটতে হয় জেলা শহরে, সেখান থেকেও পাঠানো হয় বরিশালে। ভোলার মানুষ যেন এখনো আধুনিক চিকিৎসা সুবিধার বাইরে!
২. যাতায়াত ব্যবস্থার বেহাল দশা:
ভোলার সাথে দেশের আর কোনো জেলার সরাসরি সড়কপথ নেই। নদীপথই একমাত্র ভরসা। বহু বছর ধরে 'ভোলা-বরিশাল সেতু'র কথা বলা হলেও তা আজও বাস্তব হয়নি। বাধা তৈরি করে রেখেছে লঞ্চ সিন্ডিকেট আর সুবিধাভোগী মহল।
৩. অর্থনৈতিক উন্নয়ন যেন কল্পনা:
সড়ক যোগাযোগ না থাকায় গড়ে ওঠেনি বড় কোনো গার্মেন্টস, ফ্যাক্টরি বা শিল্প প্রতিষ্ঠান। কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি আটকে আছে দুর্বল অবকাঠামোর ফাঁদে।
৪. শিক্ষা ও বিদ্যুৎ:
চরাঞ্চলের অনেক স্থানে আজও বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ নেই বহু চরে। মূল শহরে কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও নেই কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিকেল কলেজ।
৫. নদীভাঙন: এক জীবন্ত আতঙ্ক:
প্রতি বছর হাজার হাজার পরিবার সব হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে। চরাঞ্চলের মানুষ নিরাপত্তার খোঁজে শহরে ছুটে আসছে, বাড়ছে জনসংখ্যার চাপ, জমির দাম, এবং পরিবেশগত সংকট।
ভোলা বঞ্চিত, ভোলা অবহেলিত — আর নয়!
ভোলার এই দীর্ঘ দিনের বঞ্চনার অবসান চাই।
আপনারা, ভোলার সচেতন নাগরিকরা, এগিয়ে আসুন।
ভোলার কথা বলুন, দাবি তুলুন —
সরকারি মেডিকেল কলেজ চাই।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় চাই।
ভোলা-বরিশাল সেতু চাই।
নদীভাঙন প্রতিরোধ চাই।
বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা — চরাঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে।
ভোলা কোনো উপেক্ষিত নাম নয় — এটি দেশের দক্ষিণের সম্ভাবনার প্রতীক।
চুপ থাকলে পিছিয়ে পড়বো — আওয়াজ তুললে বদলে যাবে ইতিহাস!