22/04/2025
বাসে করে যাচ্ছিল নারী কমিশনের এক নারী। কপালে ইয়া বড় টিপ, বাটি চুল, কানে দুল। ব্লাউজ পরেছে ঠিকই, সমুদ্র সৈকত দেখাতে কার্পণ্য করেনি। শাড়িকে ব্লাউজের উপর দিয়ে নিয়ে কাঁধের পেছনে ঝুলিয়ে দিয়েছে। বাসের সিটে বসে জানালার দিকে তাকিয়ে আছে। মাঝেমধ্যে বাস ব্রেক করলে খেই হারিয়ে সামনের সিটে গিয়ে বাড়ি খায়। এভাবে কয়েকবার হলে রাগে দাত গিজগিজিয়ে বলে, ‘এজন্যই বাসে উঠতে ইচ্ছে হয় না। খালি ব্রেক করে।’
পাশে বসা ছিল আরেক হিন্দু নারী। তার কাপড়চোপড়ে শালিনতা ছিল। সে শুনে বলল, ‘কী করবেন আপা। রিয়েলিটি মাইনা নাও।’
‘কেন, মাইনা নিতে হবে কেন?’
‘আজ রাইতে ড্রাইভার একটু রোমান্টিক হতে চাইছিল। জড়িয়ে ধরে দুয়েকটা চুমু দিতেই স্ত্রী বলে, ‘যা ইচ্ছে করতে পারো তবে একটা শর্ত আছে।’
স্বামী ভেবেছিল সামান্য কিছু চাইবে, সেটা আর পূরণ করতে বাঁধা কীসের! স্বামীও সরল মনে চাইতে বলল। জানেন আপা, স্ত্রী কী চেয়েছিল?
মহিলা কৌতূহল নিয়ে বলল, কী চেয়েছিল?
‘হীরার নেকলেস। তা না হলে নাকি স্ত্রী ধর্ষণের মামলা ঠুকে দেবে। স্বামী রাগে-ক্ষোভে বিছানা ছেড়ে নিচে ঘুমাল। সেই রাগটা এখন বাসের উপর ঝাড়ছে।
মহিলা চোখ বড় করে ফেলল। অবাক হয়ে বলল, ‘এই বেটার কি নেকলেস কেনার সামর্থ আছে? ঐ বেডিরে নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরানো উচিত।’
‘তাকে ঘুরানোর আগে তো আপনাকে ঘুরানো উচিত। আপনারাই তো এই আইন বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন শুরু করলেন। আচ্ছা আপা, আরেকটা কথা কন তো দেখি চাই, স্ত্রীকে জোর করে করল নাকি সম্মতিতে সেটার প্রমাণ কীভাবে হবে? আর রাতে শোবার ঘরে তারা দুজন ছাড়া আর কেউ নেই যে সাক্ষী দিবে!
‘স্ত্রী বলবে। মামলা করবে। স্ত্রী কি মিথ্যা বলবে?’
‘বলতেও তো পারে। ক্ষোভ মেটাতে অনেক কিছুই করতে পারে।’
মহিলা হতাশ হয়ে বড় আওয়াজে নিঃশ্বাস ফেলল। ‘কী বলব আপা দুঃখের কথা। আমরা নারী, আমাদেরও তো ইচ্ছে হয়, স্বামী আমাদের কাছে আসুক, আদর করুক। কিন্তু স্বামী আসে না। বলে, তোমাকে দেখে আমার কিছু করার ইচ্ছে জাগে না।’
মহিলার চোখের কোণে পানি খেলা করছে। বাম হাত দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে বলল, ‘যখন কোনো মহিলা তাদের রোমান্টিকতার কথা আমার সামনে বলে, খুব কষ্ট হয়। জেলাস ফিল করি। কষ্টে কলিজা ফেটে যায়। স্বামীর কাছে গিয়ে অনেক আবদার করি, স্বামী সাই দেয় না। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, কষ্ট শুধু আমরা একা কেন পাব, পেলে সবাই পাবে। তাই এমন নারীদের একত্র করি, যাদের প্রতি স্বামীর অনীহা আছে।’
পাশে থাকা হিন্দু মহিলা বলল, ‘তো আপনারা আপনাদের সাজকে পরিবর্তন করেন। স্বামীর আগ্রহ বাড়ে এমনভাবে সাজেন। পুরুষকে বশ করার কৌশল তো নারীদের ভালোই জানা।’
‘সেটাই তো পারি না। সেটা করতে গেলে টাকা আসা বন্ধ হয়ে যাবে, খানা বন্ধ হয়ে যাবে। আমাদের সৌখিন জীবন হাতছাড়া হয়ে যাবে। জানেন, এই সাজের জন্য এনজিও থেকে আমরা প্রচুর অর্থ পাই?
ক