24/03/2025
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
প্রচণ্ড গর্জনে চারপাশ কাঁপিয়ে নেমে এলো এমিরেটস এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৪৭ উড়োজাহাজ। ধীরে ধীরে রানওয়ে স্পর্শ করলো বিমানটি। রানওয়ে ধরে কিছুক্ষণ ছোটার পর কমে এলো গতি। এক সময় দাঁড়িয়ে পড়লো দানবাকৃতির আকাশযানটি। কয়েক মিনিট পর খুলে গেল দরজা। ঘড়িতে তখন বেলা ১২টা। একে একে নামতে শুরু করলেন যাত্রীরা। দরজার কাছে এসেই ঘাড় ঘুড়িয়ে চারপাশটা দেখে নিলো মাহিম। এক সপ্তাহ পর প্রিয় দেশটাকে দেখলো ও; কিন্তু মনে হলো কতদিন যেন দেশ ছেড়ে দূরে পড়ে ছিল। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিলো বিমানের সিড়ির মুখে দাঁড়িয়ে। তারপর ধীরে ধীরে নামতে শুরু করলো।সাথে সাথে প্রবাসীদের কথা মনে পড়লো ওর। মাত্র এক সপ্তাহ দেশ ছেড়ে থাকতেই এমন লাগছে, তাহলে যারা বছরের পর বছর সংসারের বোঝা বহনের জন্য, প্রিয়জনদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য বিদেশে পড়ে থাকেন তাদের কেমন লাগে। অথচ এই মানুষগুলো কত হাসিখুশি আর আন্তরিক। এই এক সপ্তাহে দুবাইতে অনেক প্রবাসীর সাথে ওর দেখা হয়েছে। অনেকেই ওকে দারুণ খাতির করেছেন। কেউ বাসায় দাওয়াত করেছেন, কেউ ঘুরতে নিয়ে গেছেন। মানুষগুলোর জন্য খারাপ লাগছে এখন।
ভাবতে ভাবতে টার্মিনাল ভবনের দিকে হাঁটতে শুরু করলো মাহিম। ওর আগে আগে হাঁটছেন জাকির স্যার। এই সফরে যিনি ছিলেন ওর অভিভাবক। রোবটিক্সের ওপর একটি প্রদর্শনীতে অংশ নিতে দুবাইয়ের কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণ পেয়েছিল মাহিম। ওর তৈরি করা একটি রোবট জাতীয় পর্যায়ে সেরা হওয়ার পর দুবাই ইন্টারন্যাশনাল রোবটিক্স এক্সিবিশনের আমন্ত্রণ আসে। যে সাতটি আমিরাত নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত দেশটি গঠিত হয়েছে তার একটি দুবাই। দুবাই আমিরাতের রাজধানী শহরের নামও দুবাই। বর্তমান বিশ্বের উন্নত ও অভিজাত নগরীগুলোর একটি দুবাই। এক সপ্তাহ আগে জাকির স্যার ওকে নিয়ে উড়াল দেন দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে।
চৌদ্দ বছরের জীবনে এর আগে কখনো এক সপ্তাহ বাড়ির বাইরে থাকেনি মাহিম। এবার বাড়িই শুধু নয়, দেশ থেকেই দূরে থাকতে হয়েছে। আত্মীয়স্বজন, পরিচিত মানুষ, স্কুলের বন্ধুরা সবাইকে ছাড়া এই একটা সপ্তাহ কাটাতে কষ্ট হয়েছে ওর। তবে প্রবাসী অনেকের সাথেই দেখা হয়েছে। অচেনা মানুষগুলো ওকে এতটাই আপন করে নিয়েছে, যেন মনে হয়েছে কতদিনের
চেনা! যার কারণে সময়টা ভালোভাবেই কেটে গেছে।অন্য যাত্রীদের সাথে টার্মিনাল ভবনে প্রবেশ করলো মাহিম। বিশাল বিমানের কয়েকশো যাত্রী টার্মিনাল ভবনে প্রবেশ করে নির্দেশনা দেখে দু'দিকে ভাগ হয়ে গেল। এবার ইমিগ্রেশন সম্পন্ন করার পালা। নিদের্শনা মতো বাংলাদেশিরা এক দিকে আর বিদেশিরা অন্য দিকের কাউন্টারে চলে গেল। স্যারের পেছনে দাঁড়িয়ে লাইন ধরে ইমিগ্রেশন কাউন্টারের দিকে এগোতে থাকে মাহিম। ওর লাইনে সবাই বাংলাদেশি বলে খুব বেশি সময় লাগছে না। দ্রুত পাসপোর্ট চেক করে সিল মেরে দিচ্ছেন ইমিগ্রেশন অফিসার। অল্প সময়েই কাউন্টারের কাছাকাছি চলে এলো মাহিম। ওর পাসপোর্ট হাতে নিয়ে মিষ্টি একটা হাসি দিয়ে ভ্রমণ কেমন হলো জানতে চাইলেন অফিসার।
'দারুণ'। এক কথায় জবাব দিলো মাহিম। তারপর সিল মেরে পাসপোর্টটা ওর হাতে দিলেন
অফিসার।
এই সময় পাশেই কয়েকজন ইমিগ্রেশন পুলিশকে ছুটে আসতে দেখা গেল। কয়েক সেকেন্ড মাত্র, এর মধ্যে দৌড়ঝাপ শুরু হলে গেল কাউন্টারের কাছে। পুলিশ দেখেই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এক যাত্রী বেড়া টপকে পালাতে চেষ্টা করলো। পুলিশ সদস্যদের কয়েকজন ছুটে গিয়ে তাকে ধরে ফেললো। দু'জন পুলিশ দু'পাশ থেকে ধরে লোকটিকে নিয়ে গেল একটি কক্ষে। কালো টি-শার্ট পরা লোকটির হাতে একটি ছোটো ব্যাগ।
লোকটিকে চিনতে পারলো মাহিম। বিমানে অপর পাশের সিটেই ছিল। দীর্ঘ সাড়ে ৫ ঘণ্টার যাত্রায় লোকটির সাথে অনেক আলাপ হয়েছে মাহিমের। মাহিম কেন দুবাই গিয়েছে সেসব খুব কৌতূহলের সাথে জানতে চেয়েছে লোকটা। শোনার পর খুব প্রশংসা করেছে। 'ক্ষুদে বিজ্ঞানী' বলেও ডেকেছে ওকে। দীর্ঘ আলাপচারিতায় মাহিম কোন স্কুলে পড়ে, কোথায় বাড়ি সব কিছুলোকটা। দেখা নিজের পরিচয় দিয়েছেন ঢাকার বাসিন্দা হিসেবে। এক্সপোর্ট ইমপোর্টের ব্যবসা করেন।
একটু আগে পরিচয় আর গল্পগুজব করা লোকটিকে হঠাৎ পুলিশের হাতে বন্দি হতে দেখে একটা ধাক্কা খেল মাহিম। সেদিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। স্যার তাড়া দিলেন ওকে, 'চলো
গল্প : #সোনার_পিস্তল
লেখক : Md Rifat
নোট: আসসালামু আলাইকুম আমি নতুন লেখক যদি কোন ভুল-ত্রুটি হয় গল্পের মধ্যে তাহলে আপনারা কমেন্টে জানিয়ে দিবেন আমি পরবর্তীতে যেন ভুলক্রটি সূত্রে নিতে পারে,, আপনাদের এ পর্ব টি যদি ভালো লাগে তাহলে সবাই রেসপন্স করবেন পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই দিবো
গল্প তাড়াতাড়ি পেতে পেজটি ফলো করে রাখুন সবার আগে এখানে দেওয়া হবে গল্প