শামীমুল ইসলাম

শামীমুল ইসলাম Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from শামীমুল ইসলাম, Digital creator, Chittagong, Chandgaon.

28/01/2025

কাউকে নিজের ব্যাপারে বুঝিয়ে বলা অনেক কঠিন, তাই চুপ থাকি”

জীবনে এমন অনেক সময় আসে, যখন মনের কথা প্রকাশ করা কঠিন হয়ে পড়ে। হয়তো কিছু অনুভূতি এতটাই গভীর যে সেগুলো শব্দে প্রকাশ করা যায় না। কিংবা কিছু অভিজ্ঞতা এতটাই জটিল যে বোঝানোর জন্য যতই চেষ্টা করা হোক, শুনতে পাওয়া মানুষটি হয়তো বুঝবে না। তখন আমরা চুপ করে থাকি।

“চুপ থাকা” কোনো দুর্বলতা নয়, বরং এটি আত্মনিয়ন্ত্রণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কখনো কখনো চুপ থাকার মধ্যে লুকিয়ে থাকে অগণিত শব্দ, মনের গভীর বেদনা কিংবা অজস্র অপ্রকাশিত গল্প। আমরা হয়তো জানি, কেউ যদি আমাদের কথা বুঝতে না পারে, তবে সেসব বলারও কোনো মানে নেই। বরং চুপ থাকা আমাদের মানসিক শান্তি বজায় রাখে।

তবে চুপ থাকার মানে এই নয় যে, আমরা দুর্বল বা আত্মবিশ্বাসহীন। বরং এটি আমাদের অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞার প্রতিফলন। কিছু অনুভূতি শুধুই অনুভবের জন্য, বোঝানোর জন্য নয়। কিছু কথা প্রকাশ না করলেই তা আরও বেশি অর্থবহ হয়ে থাকে।

তবুও, চুপ থাকা সবসময় সঠিক সমাধান নয়। যদি কোনো সম্পর্ক কিংবা পরিস্থিতিতে ভুল বোঝাবুঝি বাড়তে থাকে, তাহলে সেটা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা জরুরি। কারণ, অনেক সময় চুপ থাকাও ভুল বোঝার জন্ম দেয়।

তাই, কখন কথা বলতে হবে আর কখন চুপ থাকতে হবে, সেটি বুঝতে শিখুন। কারণ, শব্দের মতোই নীরবতাও একধরনের ভাষা–যা কেবল বোঝার ক্ষমতা থাকা মানুষের জন্য।

পৃথিবীর অনেক কিছুই রিপ্লেসেবল। তবে কিছু কিছু জিনিস কখনোই রিপ্লেসেবল নয়; এই যেমন ধরুন, আপনি বেকার থাকাকালীন আপনার যে-বন্ধ...
27/01/2025

পৃথিবীর অনেক কিছুই রিপ্লেসেবল। তবে কিছু কিছু জিনিস কখনোই রিপ্লেসেবল নয়; এই যেমন ধরুন, আপনি বেকার থাকাকালীন আপনার যে-বন্ধুটি নিজের পকেটের সীমিত টাকার মধ্য থেকেও আপনার শূন্য পকেটের অবস্থা বুঝে চায়ের বিলটি দিয়ে দিত। আপনার যে-প্রেমিক কিংবা প্রেমিকাটি আপনার দারিদ্র্য বা অসহায়ত্ব সম্পর্কে জানার পরও আপনার সাথে থেকে গিয়েছিল, তার কোনো রিপ্লেসমেন্ট হয় না।

আপনার বিষণ্ণতার খোঁজ জানতে পেরে আপনার দুর্দিনে যে-মানুষটি মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে “ভয় পেয়ো না, আমি আছি।” বলেছিল, তার কোনো রিপ্লেসমেন্ট কিছুতেই হয় না।

একদিন আপনার অনেক কিছু হবে। অনেক বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন আপনার সামনে-পিছে ঘুরঘুর করবে; আপনার কিছু লাগবে কি না, তার জন্য একপায়ে খাড়া হয়ে থাকবে অনেকেই। এরা আসলে আপনার কেউই হয় না, এরা আপনার সুসময়ের ঘ্রাণে-কেনা কিছু মৌমাছি কেবল।

তারাই আপনার আপনজন আর কাছের জন, যারা আপনার শূন্য পকেটের পাশে ঘ্রাণ ছাড়াই কখনো ছাদ হয়ে মাথার উপর, কখনোবা মাটি হয়ে পায়ের নিচে ঠাঁই হয়ে ছিল।

বড়ো হোন, ততটুক‌ই বড়ো হোন, যতটুক বড়ো হলে আপনার মাথাটা আকাশ ফুঁড়ে বেরিয়ে যেতে পারে। ক্ষুদ্র হোন, ততটুক‌ই ক্ষুদ্র হোন, যতটুক ক্ষুদ্র হলে আকাশ-ছাড়ানো উঁচু লতাটির মতন সেই মাটির তলায় নুয়ে পড়া যায়, যে-মাটি একদিন আপনার শূন্য অবস্থায়ও ঠাঁই হয়ে পায়ের তলায় থেকে ছিল।

মানুষের জীবনে বড়ো একটা লস কী, জানেন?

জীবন থেকে এমন কাউকে হারিয়ে ফেলা, যে-মানুষটাকে একদিন আপনি তীব্রভাবে ভালোবাসতেন।

তবে আপনার জীবনে তার চেয়েও হাজারগুণ বড়ো লস কোনটা, জানেন? জীবন থেকে এমন কাউকে হারিয়ে ফেলা, যে-মানুষটা আপনাকে নিখুঁতভাবে ভালোবাসত।

যেদিন বুঝবেন, আপনাকে আদুরে বেড়ালের মতন স্নেহে-আদরে যে-মানুষটা তীব্র মমতায় ভালোবাসত, সে আপনাকে আর ভালোবাসে না, সেদিন বুকে চিনচিন ব্যথা করবে, ঘুমোতে গিয়ে রোজ মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে যাবে।

আপনি ভালোবাসেন, এমন কাউকে হারিয়েছেন, তার জন্য নয়; বরং আপনাকে ভালোবাসত, এমন কাউকে হারিয়েছেন, এই আফসোসে আপনি সেদিন কাতরাবেন। আপনি যাকে ভালোবাসেন, তার প্রতি আপনার মুগ্ধতা একদিন শুকনো নদীর মতন শুকিয়ে যাবে, কিন্তু আপনাকে ভালোবাসত, এমন একটা মানুষকে হারানোর আফসোসে আজীবন আপনার বুকের ভেতর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা ছাড়াই জ্বালাপোড়া করবে।

পৃথিবীতে এমন হাজারো মানুষ আপনার জীবনে আসবে যাবে, যাদেরকে আপনি তীব্রভাবে ভালোবাসবেন, আবার ভুলেও যাবেন। কিন্তু আপনাকে তীব্রভাবে ভালোবাসবে, এমন মানুষ আপনার গোটা জীবনে বড়োজোর এক-দুই জন পাবেন; বেশিরভাগ সময়ই, এক জন‌ও পাবেন না।

বাড়ি হারালে নতুন বাড়ি কিনতে পারবেন, গাড়ি ভাঙলে জোড়া লাগাতে পারবেন, জমি বেচে-কিনে বা হাত বদলে হাজার হাজার জমির মালিকও হতে পারবেন, কিন্তু শখের মানুষটাকে একবার হারালে তেমন শখের মানুষ আর কখনোই খুঁজে পাবেন না।

আপনার পথ চেয়ে কুকুরের মতন যে-মানুষটা অপেক্ষা করত, সে এখনও অপেক্ষা করে, তবে আপনার জন্য নয়।‌ আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে যে-মানুষটা মরে যেতেও দ্বিধা করত না, সে এখনও মরে যেতে দ্বিধা করে না, তবে তা আপনার জন্য নয়। আপনার বুকে মাথা রেখে যে-মানুষটা হাজার বছর বাঁচতে চাইত, সে এখনও বাঁচতে চায়, তবে আপনার বুকে মাথা রেখে নয়।

এই যে এমন নিখুঁত একটা মানুষ হেলায় হারিয়ে ফেললেন, এর ক্ষতিপূরণ পুরো জীবনটাই দিয়ে দিলেও হয় না।

মানুষ তার ভালোবাসার মানুষটাকে পেতে তীব্র জোয়ারে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া হরিণছানার মতন নদীর পাড়ে আটকে গিয়ে খড়কুটো আঁকড়ে ধরে হলেও কোনোমতে থেকে যেতে চায়।

কিন্তু সে ভেসে যাচ্ছে তো যাচ্ছেই, আপনি তাকে এক বারও ধরে আটকালেন না, হাতে ধরে জোয়ারের পানি থেকে টেনে পাড়ে তুললেন না। মনে করলেন, সে তো থাকতেই চায়, আটকাতে চায়, তাই সে কোনো না কোনোভাবে ঠিক‌ই আটকে থাকবে।

অথচ একদিন রোদজ্বলা মিষ্টি ভোরে ঘুম ভেঙে জেগে দেখলেন, ঝড় থেমে গেছে, জোয়ার নেমে গেছে, কিন্তু কিনারায় আটকে থাকতে চাওয়া মানুষটা আর নেই, জোয়ারে ভেসে গেছে অন্য কোনো নদীতে অথবা ভিন্ন কোনো সাগরে। অনেকসময় মানুষ নিজে সরে না গেলেও, আটকে রাখতে না জানলে, ঝড় তাকে ঠিক‌ই সরিয়ে নিয়ে যায়।

আপনি তাকে ছুঁয়ে দেখবেন, তার কাছ ঘেঁষে তাকে গিয়ে বলবেন, আমাকে একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দাও। দেখবেন, মানুষটার ছোঁয়ায়, মায়ায় কিংবা কায়ায় কোথাও আপনি নেই।

ঠিক এই জায়গাটায় আপনার বড়ো পরাজয়, বড়ো লসটা হয়ে গেল।

মানুষটা আছে, অথচ মানুষটা নেই।

এই যে হারিয়ে ফেললেন, একদিন দেখবেন, মানুষের ভারে নুয়ে-পড়া দুনিয়াটাকে আপনার কাছে মানুষশূন্য মরুভূমি মনে হবে।

হাজার-কোটি মানুষ আছে চারিদিকে, অথচ আপনার কোনো মানুষ নেই। আপনাকে পায়, এমন হাজারো মানুষ আছে; অথচ আপনি পান, এমন মানুষ এক জনও নেই।

এমন ভয়ানক ক্ষতির সারাটা জীবনেও কোনো ক্ষতিপূরণ হয় না, এমন সুজন হারানোর পর তার অলটারনেটিভ কোনো পরিপূরক হয় না।

হয় না, হয় না, সত্যিই হয় না। একবার হারিয়ে দেখুন, খুব স্পষ্ট করে সব বুঝে যাবেন।

তাই সময় থাকতে প্রকৃত বন্ধুর মূল্যায়ন করুণ...

06/01/2025

১০০টি কালো পিঁপড়ার সাথে ১০০টি লাল পিঁপড়াকে একটি বৈয়ামের ভিতরে রেখে দিলে, অস্বাভাবিক কিছুই ঘটবে না।

কিন্তু,
বৈয়ামটিকে ঝাঁকিয়ে দিতেই,
পিঁপড়েগুলো পরস্পরকে মেরে
ফেলতে শুরু করবে
লাল পিঁপড়ারা ধারণা করবে,
কালো পিঁপড়াগুলো তাদের শত্রু,
এবং কালো পিঁপড়ারা মনে করতে আরম্ভ করবে লাল পিঁপড়াগুলো তাদের শত্রু,
অথচ প্রকৃত শত্রু হচ্ছে
বৈয়ামটিকে যে ঝাঁকিয়ে দিয়েছিলো সে,

মানব-সমাজে ঠিক এটিই ঘটে।

পরস্পরকে মারতে ছোটার আগে,
আমাদের অন্তত একবার ভেবে দেখা উচিৎ বৈয়ামটি ঝাঁকাচ্ছে কে!

25/12/2024

জিহ্বার ব্যবহার ও হেফাজত

মানুষ জিহ্বা দ্বারা কথা-বার্তা বলে থাকে। জিহ্বার ব্যবহার ছাড়া কোনো মানুষই কথা বলতে পারেন না। এ কারণে জিহ্বার অপর নাম জবান। যে জবান থেকে মানুষের কথা প্রকাশ পায়। হাদিসে পাকে জিহ্বার হেফাজতের ব্যাপারে প্রিয়নবি অনেক উপদেশ প্রদান করেছেন।

মহান আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেনঃ
مَّا يَلْفِظُ مِن قَوْلٍ إِلَّا لَدَيْهِ رَقِيبٌ عَتِيدٌ سورة ق ﴿١٨﴾
অর্থঃ মানুষ এমন কোন কথা বলে না, যা লিপিবদ্ধ করা হয় না। (সূরা ক্কাফঃ ১৮)

জিহ্বা একটি নরম গোস্তের টুকরা হলেও এটি মহান আল্লাহ তা’আলার একটি বড় নিয়ামত। এটি দিয়ে যেমন অগণিত পুণ্যের কাজ করা যায়, ঠিক এর বিপরীত অসংখ্যক গুনাহের কাজ এটি দিয়েই সংগঠিত হয়। শ্রেষ্ঠতম সম্পদ তথা ঈমান এই জিহবা দিয়ে উচ্চারিত হয়, অপর দিকে কুফরীও এই জিহবা দিয়েই বের হয়। এ ছাড়া প্রত্যেক বস্তু তা উপস্থিত হোক বা অনুপস্থিত, স্রষ্টা হোক বা সৃষ্টি, জানা অথবা অজানা, বাহ্যিক অথবা আভ্যন্তরীণ সকল কিছুই এই নরম গোস্তের খণ্ড দিয়েই বর্হিগমন ঘটে। উদাহরণ স্বরূপঃ জ্ঞান যে বস্তুকে বেষ্টন করে, জিহবা তা বর্ণনা করে তা সত্য হোক বা মিথ্যা হোক। জ্ঞানের বাইরে কিছুই নেই। এটি এমন এক বৈশিষ্ট্য যা জিহবা ছাড়া অন্য কোন অঙ্গ প্রতঙ্গের মধ্যে পাওয়া যায় না। যেমনঃ চোখের কাজ দেখা, কানের কাজ শোনা, পায়ের কাজ চলাচল করা ইত্যাদি। কিন্তু জিহবার কর্মক্ষেত্র বিস্তৃত। এর কোন সীমা পরিসীমা নেই। সুতরাং যে ব্যক্তি তার জিহবাকে সংযত রাখে না, শয়তান তাকে দিয়ে অনেক কিছু বলাতে পারে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করতে পারে। রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেনঃ
ثَكِلَتْكَ أُمُّكَ يَا مُعَاذُ وَهَلْ يَكُبُّ النَّاسَ فِى النَّارِ عَلَى وُجُوهِهِمْ أَوْ عَلَى مَنَاخِرِهِمْ إِلاَّ حَصَائِدُ أَلْسِنَتِهِمْ ». قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ.
অর্থঃ জিহবার কারণেই মানুষকে উপুড় করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। (তিরমিযি ও ইবনে মাজা)

জিহবার কারণেই শত্রু বন্ধুতে পরিণত হয়, আবার খুবই নিকটতম বন্ধু শত্রুতে পরিনত হয়ে যায়। জিহবার শক্তি তরবারির চেয়েও ধারালো। একজন আরব্য কবি ইয়াকুব হামদূনী (রহ.) যথার্থই বলেছেনঃ
وقد يُرْجَى لجُرْح السيف بُرْءٌ ** ولا بُرْءٌ لما جرح اللِّسانُ
جِرَاحَاتُ السِّنَانِ لَهَا التِئَامٌ ** وَلا يَلْتَامُ مَا جَرَحَ الِّلسَانُ
وَجُرْحُ السَّيْفِ تَدْمِلُهُ فَيَبْرَا ** وجُرْحُ الَّدهَرِ مَا جَرَح اللِّسانُ
আশা করা যায় তরবারীর আঘাতের ক্ষত নিরাময় হবে। কিন্তু জিহ্বার আঘাতের ক্ষত নিরাময় হয় না। তরবারীর আঘাতে যদি কোন ক্ষত হয় তা চিকিৎষার মাধ্যমে সারানো সম্ভব, কিন্তু জিহবার মাধ্যমে যে ক্ষত হয় তা সারানো সম্ভব নয়। তরবারীর আঘাত চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়। কিন্তু জিহ্বার আঘাত সারা জীবন রয়ে যায়।
নবী কারিম (সঃ) এরশাদ করেছেনঃ
4672 الصَّمْتُ حِكَمٌ, وَقَلِيلٌ فَاعِلُهُ) رواه البيهقي:
অর্থঃ চুপ থাকা প্রজ্ঞা ও সাবধানতা। (বায়হাকী: ৪৬৭২)
তিনি আরো বলেছেনঃ
مَنْ صَمَتَ نَجَا
যে চুপ থাকে সে মুক্তি পায়। হযরত ওকবা ইবনে আমের বলেন, আমি রাসূলকে (সা.) জিঙ্গেস করলাম মুক্তির উপায় কি? নবীকুল শীরমনি সর্বশেষ ও শ্রেষ্ঠ নবী (সা.) বললেনঃ
أَمْسِكْ عَلَيْكَ لِسَانَكَ وَلْيَسَعْكَ بَيْتُكَ وَابْكِ عَلَى خَطِيئَتِكَ (رواه الترمذي وحسنه)
অর্থঃ জিহবাকে সংযত রাখ, ঘরের মধ্যে থাক এবং গোনাহের জন্য কান্নাকাটি কর (তিরমিযি ও হাসান)। ইমাম বুখারী উল্লেখ করেছেনঃ
عَنْ سَهْلِ بْنِ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : مَنْ يَضْمَنْ لِي مَا بَيْنَ لَحْيَيْهِ وَمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَضْمَنْ لَهُ الجَنَّةَ * صحيح البخارى (رواه البخاري)
অর্থঃ হযরত সাহাল ইবনে সাদ বলেন, রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেনঃ যে আমাকে জিহবা ও লজ্জাস্থানের নিশ্চয়তা দিবে, আমি তাকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দিব। (সহীহুল বুখারী)
হযরত এবনে মাসউদ (রা.) সাফা পাহাড়ে উঠে বলতেনঃ
يَا لِسَانُ قُلْ خَيْرًا تَغْنَمْ وَاسْكُتْ عَنْ شر تسلم مَن قبلِ أن تَندم إني سمعتُ رسول الله صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يقول: أكثر خطايا ابن ءادم من لسانه (رواه الطبراني وغيره)
অর্থঃ হে জিহ্বা ভাল কথা বল গনিমত পাবে, এবং অনিষ্ট থেকে অনুতপ্ত হওয়ার পূর্বে চুপ কর, বিপদমুক্ত থাকবে (তাবরানী)। লোকেরা জিজ্ঞেস করলঃ এটা কি আপনি নিজের পক্ষ থেকে বলছেন? তিনি বললেনঃ না। বরং আমি আল্লাহ রাসল (সা.) কে বলতে শুনেছি, বণি আদমের অধিকাংশ গোনাহ তার জিহবার মধ্যে।
হযরত ওমর (রা.) বলেনঃ
عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: مَنْ كَفَّ لِسَانَهُ سَتَرَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَوْرَتَهُ ، وَمَنْ مَلَكَ غَضَبَهُ وَقَاهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ عَذَابَهُ ، وَمَنِ اعْتَذَرَ إِلَى اللَّهِ عَزَّ وَجَلَّ قَبِلَ عُذْرَهُ – رواه الطبراني في الأوسط والبيهقي في الشعب
অর্থঃ যে জিহবা সংযত রাখে মহান আল্লাহ তার দোষক্রটি গোপন রাখেন। যে রাগ সংবরন করে আল্লাহ তাকে আজাব থেকে রক্ষা করেন। যে আল্লাহর সামনে ওযর পেশ করে আল্লাহ তার ওযর কবুল করেন। (বায়হাকী ও তাবরানী)
হযরত আবু হুরায়রা (রঃ) বলেনঃ
مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ … فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ
অর্থঃ যে আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে।
হযরত ফাতিমা (রা.) বলেন, রাসুল (সঃ) এরশাদ করেছেনঃ
وسُئِل عَن حَدِيثِ فاطِمَة بِنتِ الحُسَينِ ، عن فاطمة بنت رسول الله صَلَّى الله عَلَيه وسَلم ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى الله عَلَيه وسَلم ، قال : شِرارُ أُمَّتِي الَّذِين غُذُّوا فِي النَّعِيمِ ، الَّذِين يَأكُلُون أَلوان الطَّعامِ ، ويَلبَسُون أَلوان الثِّيابِ ، ويَتَشَدَّقُون فِي الكَلامِ
অর্থঃ আমার উম্মতের মধ্যে মন্দ লোক তারা, যারা ধন-দৌলতের মধ্যে লালিত পালিত হয়, নানাবিধ খাদ্য ভক্ষণ করে, বৈচিত্র পোষাক পরিধান করে এবং কথা বলার ক্ষেত্রে লৌকিকতা করে। (মুরসাল ফাতেমা)
আল্লাহর রাসুল বলেনঃ
وَإِيَّاكُمْ وَالْفُحْشَ فَإِنَّ اللَّهَ لا يُحِبُّ الْفُحْشَ وَلا التَّفَحُّشَ رواه أحمد والحاكم وابن حبان وهو حديث صحيح
অর্থঃ তোমরা অশ্লীলতা থেকে বেঁচে থাক। আল্লাহ তা’আলা অশ্লীলতা ও সীমাতিরিক্ত কথাবার্তা পছন্দ করেন না। (আহমদ, হাকেম)
বদর যুদ্ধে যে সকল মুশরিক নিহত হয়েছিল, রাসূল (সা.) তাদের গালি দিতে নিষেধ করে বলেছিলেনঃ তাদেরকে গালি দিয়ো না। কেননা তোমরা যা বল তাতে তাদের কিছুই হয় না, কেবল জীবিতদেরই কষ্ট হয়ে থাকে। আর সাবধান মন্দ বলা নীচতা।
চুপ থাকা অথবা উত্তম কথা বলা একটি উৎকৃষ্ট বৈশিষ্ট্য, তার কারণ হচ্ছে কথা বলার মধ্যে বহুবিধ বিপদাশঙ্কা থাকে যেমনঃ মিথ্যা, গীবত, ভুল, চোগলখুরী, রিয়া, কপটতা, নির্লজ্জতা, কথা কাটাকাটি, আত্মপ্রশংসা, বাড়িয়ে বলা, হ্রাস করা, অপরকে কষ্ট দেওয়া, গোপন বিষয় ফাঁস করা ইত্যাদি সবগুলো গর্হিত বা অন্যায় যা জিহবা দিয়ে সংগঠিত হয়। অপর দিকে চুপ থাকার মধ্যে অনেক ফয়দা আছে যেমনঃ মনে সাহস ও সংহত থাকে, ভয়ভীতি কম থাকে, জিকির ও এবাদাতের জন্যে অবসর সময় হাতে আসে। মূল কথা চুপ থাকলে কথা বলার বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং পরকালের হিসাব থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। মু’মিনদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেনঃ
وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ ﴿٣﴾
অর্থঃ (মু‘মিনদের বৈশিষ্ঠ) যারা অনর্থক কথা বার্তায় লিপ্ত হয় না। (সূরা মু‘মিনূন: ৩)
চুপ থাকা অথবা উত্তম কথা বলা একটি উৎকৃষ্ট বৈশিষ্ট্য, তার কারণ হচ্ছে কথা বলার মধ্যে বহুবিধ বিপদাশঙ্কা থাকে যেমনঃ গীবত, মিথ্যা, ভুল, চোগলখুরী, রিয়া, কপটতা, নির্লজ্জতা, কথা কাটাকাটি, আত্মপ্রশংসা, বাড়িয়ে বলা, হ্রাস করা, অপরকে কষ্ট দেওয়া, গোপন বিষয় ফাঁস করা ইত্যাদি সবগুলো গর্হিত বা অন্যায় যা জিহ্বা দিয়ে সংগঠিত হয়। অপর দিকে চুপ থাকার মধ্যে অনেক ফায়দা আছে যেমনঃ মনে সাহস ও সংহত থাকে, ভয়ভীতি কম থাকে, জিকির ও এবাদাতের জন্যে অবসর সময় হাতে আসে। মূলকথা চুপ থাকলে কথা বলার বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং পরকালের হিসাব থেকে নিষ্কৃতি পাওয়া যায়। মু’মিনদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেনঃ
وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ
অর্থঃ (মু‘মিনদের বৈশিষ্ট্য) যারা অনর্থক কথা বার্তায় লিপ্ত হয় না। (মু‘মিনুনঃ ৩)

হযরত ইয়াযীদ ইবনে বাবনুস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমরা উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (রা.) কে জিজ্ঞেস করলামঃ রাসূল (সা.) এর চরিত্র কেমন ছিল? উত্তরে তিনি বলেনঃ কুরআনই ছিল রাসূলুল্লাহ (সা.) এর চরিত্র। অতপর তিনি قَدْ أَفْلَحَ الْمُؤْمِنُونَ হতে وَالَّذِينَ هُمْ عَلَىٰ صَلَوَاتِهِمْ يُحَافِظُونَ পর্যন্ত পাঠ করেন। অতপর বলেনঃ রাসূল (সা.) এর চরিত্র এরূপই ছিল। এরই মধ্যে মু’মিনদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেনঃ
وَالَّذِينَ هُمْ عَنِ اللَّغْوِ مُعْرِضُونَ
অর্থঃ (মু‘মিনদের বৈশিষ্ট্য) যারা অনর্থক কথা বার্তায় লিপ্ত হয় না। (মু‘মিনুনঃ ৩) মহান আল্লাহ বলেনঃ যারা অসার ক্রিয়া-কলাপ হতে বিরত থাকে। অর্থাৎ মু’মিনরা বাতিল, শিরক, পাপ এবং বাজে ও নিরর্থক কথা হতে দূরে থাকে। মহান আল্লাহ বলেনঃ وَإِذَا مَرُّوا بِاللَّغْوِ مَرُّوا كِرَامًا অর্থ- এবং যখন তারা অসার ক্রিয়া-কলাপের সম্মুখিন হয় তখন স্বীয় মর্যাদার সাথে তা পরিহার করে। (সূরা ফুরকান: ৭২) এখানে অসার ক্রিয়া-কলাপ বলতে জমহুর ওলামায়ে কেরাম গীবত ও চোগলখুরীকে বুঝিয়েছেন, যা জিহ্বার মাধ্যমে সংগঠিত হয়। রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : ” أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ ؟ قَالُوا : اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ ، قَالَ : ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ ، قِيلَ : أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ ؟ قَالَ : ” إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدِ اغْتَبْتَهُ ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ فَقَدْ بَهَتَّهُ
অর্থ- হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূল (সা.) কে জিজ্ঞেস করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! গীবত কি? উত্তরে তিনি বলেন, গীবত হলো এই যে, তুমি তোমার (মুসলমান) ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে তার সম্বন্ধে এমন কিছু আলোচনা করবে যা সে অপছন্দ করে। আবার প্রশ্ন করা হল, তার সম্বন্ধে যা আলোচনা করা হচ্ছে তা যদি তার মধ্যে বাস্তবে থাকে? জবাবে তিনি বললেন, হ্যাঁ গীবত তো এটাই। আর যদি বাস্তবে দোষ তার মধ্যে না থাকে তবে ওটা তো অপবাদ। (মুসলিম: ৪৬৯৬)
গীবত বা পরনিন্দা একটি মারাত্মক গোনাহ। গীবত হলো কোন (মুসলমান) ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কথা বলা যা সে অপছন্দ করে। গীবত বা পরনিন্দা ঈমান ও আমল দুইটাই ধ্বংস করে দেয়। গীবত এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- অপবাদ, অসাক্ষাতে নিন্দা, কুৎসা রটনা, কারো চরিত্র হননের জন্য বিবৃতি দেয়া ইত্যাদি। ইসলামী পরিষাভায় গীবত হচ্ছে কারো সম্বন্ধে তার অনুপস্থিতিতে এমন কোনো কথা বলা, যা শুনলে অপ্রিয় মনে হবে। গীবত হল অপরের দোষের দিকে দৃষ্টি রেখে যে কথা বলা হয়। মহান আল্লাহ দ্বার্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اجْتَنِبُوا كَثِيرًا مِّنَ الظَّنِّ إِنَّ بَعْضَ الظَّنِّ إِثْمٌ ۖ وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَب بَّعْضُكُم بَعْضًا ۚ أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَن يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ ۚ وَاتَّقُوا اللَّـهَ ۚ إِنَّ اللَّـهَ تَوَّابٌ رَّحِيمٌ ﴿١٢﴾
অর্থ- হে মু’মিনগণ! তোমরা বহুবিধ অনুমান হতে দূরে থাকো। কারণ অনুমান কোন কোন ক্ষেত্রে পাপ এবং তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের পশ্চাতে নিন্দা করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভ্রাতার গোশত ভক্ষণ করতে চাইবে? বস্তুত তোমরা তো এটাকে ঘৃণাই কর। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আল্লাহ তাওবা গ্রহণকারী পরম দয়ালু। (সূরা হুতুরাত: ১২)
মহান আল্লাহ অনত্র বলেনঃ
وَالَّذِينَ يُؤْذُونَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُؤْمِنَاتِ بِغَيْرِ مَا اكْتَسَبُوا فَقَدِ احْتَمَلُوا بُهْتَانًا وَإِثْمًا مُّبِينًا
অর্থ- মু’মিন পুরুষ ও মু’মিন নারী কোন অপরাধ না করা সত্ত্বেও যারা তাদেরকে কষ্ট দেয় (মিথ্যা অপবাদ বা গীবত), তারা মিথ্যা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে। (সূরা আহযাব: ৫৮)
রাসূলে কারীম (সা.) বলেন:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِيَّاكُمْ وَالظَّنَّ فَإِنَّ الظَّنَّ أَكْذَبُ الْحَدِيثِ وَلَا تَحَسَّسُوا وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا تَحَاسَدُوا وَلَا تَدَابَرُوا وَلَا تَبَاغَضُوا وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا . رواه البخاري (৬০৬৪(
অর্থ- হযরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণেত, রাসূল (সা.) বলেছেন, তোমরা কু-ধারণা হতে বেঁচে থাকো, কু-ধারণা সব চেয়ে বড় মিথ্যা কথা। তোমরা কারো গোপন তথ্য সন্ধান করো না, একে অপরের বুযুর্গী লাভ করার চেষ্টায় লেগে থেকো না। হিংসা বিদ্বেষ পোষণ করো না, একে অপরের পশ্চাতে নিন্দা করো না এবং সবাই মিলে তোমরা আল্লাহর বান্দারা ভাই ভাই হয়ে যাও। (বুখারী: ৬০৬৪)
একজন মু’মিন বান্দার মর্যাদা মহান আল্লাহর নিকট অনেক বেশি, যে কারণে হাদীসে বর্ণিত দোষ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (সা.) কে দেখেছি যে, তিনি কা’বা ঘরের তাওয়াফ করছেন এবং বলছেন, “তুমি কতই না পবিত্র ঘর,। তোমার গন্ধ কতই না উত্তম, তুমি কতই না সম্মানিত, তুমি কতই না মর্যাদা সম্পন্ন”। যাঁর হাতে মুহাম্মাদ (সা.) এর প্রাণ, তাঁর শপথ! মু’মিনের মর্যাদা, তার জান ও মালের মর্যাদা এবং তার সম্পর্কে শুধুমাত্র ভাল ধারণা পোষণ করা হবে এই হিসেবে তার মর্যাদা আল্লাহ তা’আলার নিকট তোমার মর্যাদার চেয়েও বেশি বড়। (ইবনে মাযাহ)
হযরত আয়েশা (রা.) একদিন নবী (সা.) এর সম্মুখে বললেনঃ “সুফিয়া (রা.) তো এরূপ এরূপ অর্থাৎ বেঁটে”। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁকে বললেন, তুমি এমন কথা বললে যে, যদি তা সমুদ্রের পানিতে মিলানো যায় তবে সমুদ্রের সমস্ত পানিকে নষ্ট করে দিবে। হযরত আয়েশা (রা.) অন্য একটি লোক সম্বন্ধে এই ধরনের কথা বললে, রাসূল (সা.) বলেন, আমি এটা শুনতে পছন্দ করি না যদিও এতে আমার বড় লাভ হয়। (আবু দাউদ)
মোদ্দাকথা গীবত হারাম বা অবৈধ এবং এর অবৈধতার উপর মুসলমানদের ইজমা হয়েছে। তবে শরীয়তের যৌক্তিকতায় কারো এ ধরনের কথা আলোচনা করা গীবতের অন্তর্ভুক্ত হবে না। যেমন (১) সতর্ক করণ (২) উপদেশ দান (৩) মঙ্গল কামনা করণ। যেমন রাসূল (সা.) একজন পাপাচারী লোকের সম্পর্কে বলেছিলেন, তাকে তোমরা আমার কাছে আসার অনুমতি দাও, তবে সে তার গোত্রের মধ্যে বড় মন্দ লোক। আল্লাহর রাসূল (সা.) অনত্র বলেছেন, “মুআবিয়া দরিদ্র লোক আর আবুল জাহম বড়ই প্রহারকারী ব্যক্তি”। একথা তিনি ঐ সময় বলেছিলেন যখন তাঁরা দু’জন হযরত ফাতিমা বিনতে কায়েস (রা.) কে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আরো কিছু ক্ষেত্রে অনুমতি রয়েছে। বাকী সর্বক্ষেত্রেই গীবত হারাম ও কবীরা গুনাহ। বিদায় হজ্জ্বের ভাষণে রাসূল (সা.) বলেছিলেন, “তোমাদের রক্ত, তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের মান-মর্যাদা তোমাদের উপর এমনই পবিত্র যেমন পবিত্র তোমাদের এই দিনটি, এই মাসটি ও এই শহরটি। মানবতার শ্রেষ্ঠ ও শেষ নবী (সা.) এরশাদ করেছেনঃ
وَعَنْ أنَسٍ رضي اللَّه عنهُ قالَ: قَالَ رسُولُ اللَّهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وسَلَّم: “لمَّا عُرِجَ بي مررْتُ بِقَوْمٍ لهُمْ أظْفَارٌ مِن نُحاسٍ يَخمِشُونَ وجُوهَهُمُ وَصُدُورَهُم، فَقُلْتُ: منْ هؤلاءِ يَا جِبْرِيل؟ قَال: هؤلاءِ الَّذِينَ يَأْكُلُونَ لُحُوم النَّاسِ، ويَقَعُون في أعْراضِهمْ،” رواهُ أَبُو داود ১৫২৬
অর্থ- হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসূল (সা.) এরশাদ করেছেন, মি’রাজের রাত্রে আমি দেখি যে, কতকগুলো লোকের তামার নখ রয়েছে, ঐগুলো দিয়ে তারা নিজেদের চেহারা খামছি মারছে। আমি হযরত জিবরাইল (আ.) কে জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? উত্তরে হযরত জিবরাইল (আ.) বললেন, “এরা তারাই যারা লোকদের গোশত ভক্ষণ করত (গীবত করতো) (আবু দাউদ: ১৫২৬)।
রাসূল (সা.) অন্য হাদিসে বলেছেনঃ
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ , قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ” إِيَّاكُمْ وَالْغِيبَةَ فَإِنَّ الْغِيبَةَ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا ” ، قَالُوا : يَا رَسُولَ اللَّهِ , وَكَيْفَ الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا ؟ قَالَ : ” إِنَّ الرَّجُلَ قَدْ يَزْنِي , ثُمَّ يَتُوبُ فَيَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِ ، وَإِنَّ صَاحِبَ الْغِيبَةِ لا يُغْفَرُ لَهُ حَتَّى يَغْفِرَ لَهُ صَاحِبُهُ ” .
হযরত জাবের ও আবু সাঈদ (রা.) হতে বর্ণিত তাঁরা উভয় বলেনঃ তোমরা গীবত করা থেকে বিরত থাক, নিশ্চয় গীবত করা যিনা করা থেকেও নিকৃষ্ট। তারা বললেন, গীবত কিভাবে যিনা হতে গর্হিত? রাসূল (সা.) বললেন: কোন মানুষ যিনা করে আল্লাহর নিকট তাওবা করলে, আল্লাহ তাকে মায়াফ করে দেন। আর গীবতকারীকে ততক্ষণ ক্ষমা করা হয়না যতক্ষণ না তাকে যার গীবত করা হয়েছে তিনি ক্ষমা না করেন। (ইবনে আবী দুনিয়া)
বর্তমান বাস্তবতায় গীবত বা পরনিন্দা সমাজে এমন স্থান করে নিয়েছে যে, সাধারণ গ্রাম থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত এর ব্যাপ্তি। প্রিন্টং মিডিয়া, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন পত্রিকা, ব্লগ, ফেসবুক, টুইটার, বিভিন্ন টকশো থেকে শুরু করে সাংবাদিক ভাই বোনেরাও এর বাইরে নেই। এক শ্রেণীর আলিম তারাও এই বাতাসে তাদের শরীর এলিয়ে দিয়েছেন। গীবতের মাধ্যমে নিরপরাধ দেশের সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের চরিত্র হরণ করা হচ্ছে। সমাজের এই অবক্ষয় ক্যান্সার থেকে ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করেছে। এর থেকে বাঁচতে না পারলে মানবতা বিপন্ন হয়ে যাবে। প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেছেনঃ

كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ
অর্থ- এক মুসলমান অন্য মুসলমানের রক্ত, সম্পদ ও সম্মানহানী হারাম। (মুসলিম: ২৫৬৪ আহমদ: ৭৭১৩)। যারা গীবত বা পরনিন্দা করে দুনিয়া ও আখিরাতে চরম শাস্তি ভোগ করতে হবে বলে মহান আল্লাহ ঘোষণা দিয়েছেন। মহান আল্লাহ সুবহানাহু অ’তাআলা পবিত্র কুরআনুল কারীমে দ্বার্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছেনঃ
وَيْلٌ لِّكُلِّ هُمَزَةٍ لُّمَزَةٍ
অর্থ- দূর্ভোগ তাদের, যারা পশ্চাতে ও সম্মুখে লোকের নিন্দা (গীবত) করে বেড়ায়। (সূরা হুমাযাহ: ১) ।

আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকেই জিহ্বার সঠিক ব্যবহার ও হেফাজত করার তাওফিক দান করুন ।

সংগৃহীত

26/10/2024

নারীদের ধ্বংসের ৮টি কারণ

১. "ধ্বংস হোক ঐসব নারী, যারা চোখের উপরের লোম ( ভ্রুপ্লাগ) উঠায় এবং অন্যকে উঠাতে সাহায্য করে।" -সহিহ বুখারী: ৪৮৮৬)

২. "ধ্বংস হোক তারা যারা নারী হয়েও পুরুষের বেশ ধারণ করে।" - (বুখারী, মিশকাত শরীফ: ৪৪২৯)

৩. "ধ্বংস হোক তারা, যেসব নারী সুগন্ধি মেখে বের হলো এবং অন্য কোনো পুরুষের নাকে সেটার ঘ্রাণ গেলো, ঐ নারী ব্যাভিচারিণী।" - (সহিহুল জামে: ৪৫৪০)

৪. "ধ্বংস হোক ঐসব নারী, যারা শরীরে উল্কি (ট্যুট) আকেঁ এবং অন্যকেও এঁকে দেয়।" -(সহিহ মুসলিম: ২১২৫)

৫. "অভিশাপ তাদের জন্য যেসব নারী পরচুলা (আলগা চুল) পরিধান করে।" - (সহিহ বুখারী: ৪৮৮৬)

৬. "ঐসব নারী যারা স্বামীর রোজগারে অসন্তুষ্ট থাকে।" -

(সহিহ বুখারী: ৬৬৫৭)

৭. "ঐসব নারী যারা না জেনেই ধারণা করে অন্যের নামে মিথ্যা অপবাদ রটায়।" - (সহিহ মুসলিম: ২৫৬৩)

৮. "ধ্বংস ঐসব নারীদের জন্য যারা অন্যের পিছনে সমালোচনা, গিবত করতে নিজের মূল্যবান সময় নষ্ট

করে।" -(সুনানে আবু দাউদ: ৪৮৭৪)

আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের সবাইকে হিদায়াত দান করুক, আমিন।

17/10/2024

🌹নীরবতার সাতটি উপকারিতা🌹

‍‍➡️ নীরবতা পরিশ্রম ছাড়াই ইবাদত

➡️ নীরবতা অলংকার ছাড়াই সৌন্দর্য

➡️ নীরবতা ক্ষমতা ছাড়াই প্রভাব বিস্তারকারী

➡️ নীরবতা প্রাচীর ছাড়াই দুর্গ

➡️ নীরবতা কোন প্রকার ওজর-আপত্তি
প্রকাশ করা থেকে নিরাপত্তা

➡️ নীরবতা কিরামান কাতিবীন
ফেরেশতাদের জন্য প্রশান্তি

➡️ নীরবতা নিজের দোষ ক্রুটিসমূহের
আচ্ছাদন

এভাবে বরই খাওয়ার মতো লোক অনেক আছে
22/09/2024

এভাবে বরই খাওয়ার মতো লোক অনেক আছে

22/09/2024
26/05/2024

মোদির জন্মের কাহিনী

19/04/2024

ভয় পাই

Address

Chittagong
Chandgaon

Telephone

+8801820332390

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when শামীমুল ইসলাম posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to শামীমুল ইসলাম:

Share