21/08/2025
আশা করি এর আগে আপনি এমন ভয়ংকর ও মর্মান্তিক কাহিনী হয়তো কখনো শোনেননি....
“এমন এক আজব লোক” যিনি ৩ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে মোট ২৬ জন মেয়ের মৃতদেহ কবরস্থান থেকে চু/রি করেছিলেন। সেই লাশগুলোর পেট কে*টে, নাড়িভুঁড়ি আর হৃদপিণ্ড বের করে ফেলতেন। তারপর সেই শূন্য দেহের ভেতর বসিয়ে দিতেন মিউজিক সাউন্ড বক্স, যেনো পুতুল বানাচ্ছেন। কিন্তু কেন?
সময়টা ১৯৬৬ সালের ১লা সেপ্টেম্বর। রাশিয়ার নিঝনি নভগোরোদ নামের জায়গায় জন্ম হয় এক শিশুর। পিতামাতা খুশি হয়ে নাম রাখলেন— 'আনাতোলি মস্কভিন'।
তবে কাহিনীর সুবিধার্থে আমরা তাকে 'লুইস' বলে সম্মোধন করবো।
লুইস ছোটবেলা থেকেই ভদ্র, শান্ত আর পড়াশোনায় ভালো ছিল। স্কুলে সে সবসময় প্রথম পাঁচজনের মধ্যে থাকত। কিন্তু তার জীবনে একদিন এমন কিছু ঘটল যা তাকে চিরদিনের মতো পাল্টে দিল।
সেদিন স্কুলে যাওয়ার পথে মাঝপথে পড়ল একটি কবরস্থান। সেখানে দু’জন লোক দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ তারা লুইসকে দেখে তার হাত ধরে জোর করে টেনে নিয়ে গেল ভেতরে। ভেতরে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিল আরও কয়েকজন। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই লুইসকে নামিয়ে দেওয়া হলো এক খোলা কবরের ভেতর। ভয় আর আতঙ্কে সে থরথর করে কাঁপছিল।
এরপর তাকে বলা হলো কফিনের ঢাকনা খুলতে। কাঁপা হাতে ঢাকনা তুলতেই সে দেখতে পেল— তারই সমবয়সী এক মেয়ের লাশ। মেয়েটির নাম 'নাতাশা'। ওরা লুইসকে বলল, নাতাশাকে কিস করতে হবে। প্রথমে আতঙ্কে সে কেঁদে ফেললেও, একবার…দু’বার… তারপর অদ্ভুতভাবে তার ভেতরে জন্ম নিল এক অচেনা অনুভূতি। যেনো কিস করতেই তার ভালো লাগছে।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। আসলে ওই দু’জন লোক ছিল নাতাশার ভাই, আর যারা পাশে দাঁড়ানো তারা ছিল নাতাশার পিতা-মাতা। নাতাশার মা এগিয়ে এসে লুইসকে দিলেন দু’টি আংটি। একটি আংটি নাতাশার হাতে পরিয়ে দিতে বললেন, আরেকটি নিজের কাছে রাখতে বললেন। তারপর তারা ঘোষণা করলেন— আজ থেকে নাতাশা তোমার স্ত্রী।
ছোট্ট ছেলেটির মাথায় কিছুই কাজ করছিল না। মৃতদেহের সাথে এই অদ্ভুত বিবাহ সম্পন্ন করে তারা চলে গেল।
বাসায় ফিরে লুইস সব খুলে বলল মাকে। আংটিও দেখাল। কিন্তু মা বিশ্বাস করলেন না। বরং ভেবেছিলেন ছেলে পাগলামি করছে। ডাক্তার দেখানো হলো, খাবার ওষুধও দেওয়া হলো, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হলো না।
দিন যেতে লাগল, লুইসের চোখে-মনে শুধু ভেসে বেড়াতে লাগল মৃ/ত নাতাশার মুখ। স্কুল ছুটির পর প্রায়ই সে গিয়ে বসত সেই কবরস্থানের পাশে। মনে হতো নাতাশা যেনো ওখানেই আছে, তাকে ডাকছে।
এক রাতে স্বপ্নে লুইস নাতাশাকে জিজ্ঞেস করল— কি করলে তুমি আর আমাকে স্বপ্নে আসবে না? নাতাশা উত্তর দিল— তোমার দু’টি দাঁত তুলে বন্ধুর খাটের নিচে রেখে দাও। [ কল্পিত মনোভাব ]
কথা মতো লুইস পাথর দিয়ে নিজের দু’টি কাঁচা দাঁত তুলে নিল। আশ্চর্যের সাহস! তারপর দাঁতগুলো বন্ধুর খাটের নিচে রেখে এল। অবাক করার বিষয়, সেদিন থেকে আর কোনোদিন নাতাশা তার স্বপ্নে আসেনি। কিন্তু ঠান্ডা ঠোঁটে কিস করার সেই অনুভূতিটা বারবার তাকে মনে করিয়ে দিত অতীতের ঘটনা।
এরপর থেকে কবরস্থান হয়ে উঠল তার কাছে এক অদ্ভুত নেশার জায়গা। সেখানে বসে থাকতে থাকতে তার ভেতরে জন্ম নিল এক অচেনা টান।
কিছুদিন পর হঠাৎ ১১ জন লোক তাকে ধরে নিয়ে গেল পাশের জঙ্গলে। সেখানে নির্মমভাবে তাকে ধ/র্ষণ করা হলো। হ্যাঁ, লুইস ছেলে হলেও তাদের বিকৃত কামনার শিকার হলো। এরপর ছেড়ে দেওয়া হলো। সেই ঘটনার পর তার মানসিকতা আরও ভয়ংকর দিকে মোড় নিল। জীবিত মানুষের চেয়ে মৃতদেহের প্রতি আকর্ষণ দিনে দিনে বেড়েই চলল।
কলেজে ভর্তি হওয়ার পর লুইসের মাথায় তখন একটাই চিন্তা, কবর আর মৃতদেহ। লাইব্রেরিতে গিয়ে খুঁজতে লাগল বই, পড়তে লাগল মৃত্যু আর কবরস্থান নিয়ে লেখা। একসময় ১৩টি ভাষা আয়ত্ত করল, লিখল ১৩টি ইতিহাস বই। মিউজিয়ামে বক্তৃতা দেওয়ার ডাকও পেল।
তার জীবনে একসময় এলো এক মেয়ে— 'ওলিয়া'। কিন্তু লুইস সরাসরি বলল— আমাদের সম্পর্ক থাকবে ঠিকই, কিন্তু কোনো বিশেষ কথা হবে না, কোনো বিয়ে নয়, কোথাও বেড়াতে যাওয়া নয়…সবকিছু থাকবে শুধুই বন্ধুত্বের মতো। ওলিয়া বিস্মিত হলো। শেষমেশ সম্পর্ক ভেঙে গেল।
এরপর সংবাদপত্রে ছাপা হলো এক খবর— একজন নামকরা লেখক, যিনি কবরস্থান নিয়ে বই লিখছেন, তার দরকার মৃতদেহ সম্পর্কিত তথ্য। খবরটা দেখে লুইস এগিয়ে গেল। প্রস্তাব দিল কাজটি করার।
সেই থেকে মাত্র দুই বছরে লুইস প্রায় ৭৫২টা কবরস্থান ঘুরল। প্রতিটি মৃতদেহের নাম, জন্ম, মৃত্যু, কারণ সব তথ্য সংগ্রহ করল। অনেক রাতে যখন আর ফেরার উপায় থাকত না, তখন কবরের পাশেই শুয়ে পড়ত।
এক রাতে, যখন চারপাশ নিস্তব্ধ, হঠাৎ তার মনে এলো এক ভয়ংকর চিন্তা। কবর খুঁড়ে ভেতরে ঢুকতে হবে। দেখতে হবে, আসলে লাশের ভেতর কী আছে…!
চলবে...???
Story_By_Anatoly_Moskvin
Part_01
: