24/09/2025
কুমিল্লা সম্পর্কে কিছু অজানা / বিশেষ তথ্য
১. নাম ও উৎপত্তি
“কুমিল্লা” শব্দটি সম্ভবত পুরাতন “কমলাঙ্ক” (Kamalanka) থেকে হয়েছে। “কমলাঙ্ক” মানে ‘কমল + আঁক’ — গঙ্গা বা জলাশয়বেষ্টিত একটি পদ্মতল, বা পদ্মের চিহ্নবেষ্টিত।
কুমিল্লা জেলা হিসেবে গঠিত হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে “ত্রিপুরা জেলা (Tippera District)” নামে ১৭৯০ খ্রিস্টাব্দে।
কুমিল্লার হালনাগাদ জেলা নামকরণ “কুমিল্লা” হিসেবে করা হয় ১৯৬০ সালে।
২. প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় রাজধানী ও রাজত্ব
ললমাই-মেইনমাটি অঞ্চলে শালবন বিহার (Shalban Vihara) সহ বহু বৌদ্ধ বিহার ও ধ্বংসাবশেষ রয়েছে, যা মেইনমাটি পাহাড়ের জেড়ে ছড়িয়ে আছে।
মেইনমাটি অঞ্চলে চন্দ্র বংশ বেশ প্রভাবশালী ছিল, এবং তারা এখানকার বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্র গড়ে তুলেছিল।
কুমিল্লা অঞ্চলে এক পর্যায়ে ত্রিপুরা রাজোর আধিপত্য ছিলো — ত্রিপুরা রাজবংশের সাথে কুমিল্লার আদর্শ ও স্থাপত্য-সম্পদ জড়িয়ে আছে।
৩. জগন্নাথ মন্দির (সতেরো রত্ন মন্দির)
কুমিল্লার জগন্নাথ মন্দির, যা “সতেরো রত্ন মন্দির” নামেও পরিচিত, ১৭৬১ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়।
মন্দিরটি ত্রিপুরা রাজা রত্ন মণিক্য দ্বিতীয় ও কৃষ্ণকীশোর মণিক্য দ্বারা নির্মাণ করা হয়।
মন্দিরটি আর্কিটেকচারে বিশিষ্ট — এটি আসলে বাইরের দিকে ৩ তলা দেখায়, তবে ভিতরেরভাবে ৫ তলা প্রবেশযোগ্য।
মন্দিরটিতে নির্মাণকালে বিশিষ্ট “সতেরো রত্ন” (যারা মন্দিরের শীর্ষে সাজানো হয়েছিল) ছিল — আটটি প্রথম তলায়, আটটি দ্বিতীয় তলায় এবং একটি কেন্দ্রে — কিন্তু অনেকগুলি এখন ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।
৪. ধরমসাগর — একশত বছরের পুরনো পানি সরবরাহ ব্যবস্থা
কুমিল্লার ধরমসাগর একটি পুরনো জলাশয় / “ডিঙি / পুকুর” (pond / reservoir), যা ১৪৫৮ খ্রিস্টাব্দে ত্রিপুরা রাজা ধর্মা মণিক্য I কর্তৃক খনন করা হয়েছিল।
ধরমসাগর প্রায় ২৩.১৮ একর আয়তনের একটি জলাশয়।
ধরমসাগর কুমিল্লার “শহরজল ঐতিহ্য” হিসেবে বিবেচিত — এটি শুধু শৌখিন নয়, বরং কুমিল্লার সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিকাশের কেন্দ্র হিসাবেও দীর্ঘদিন ভূমিকা রেখেছে।
৫. মেইনমাটি ও যুদ্ধ কবরস্থান
কুমিল্লার মেইনমাটিতে একটি ** যুদ্ধ কবরস্থান (War Cemetery)** আছে, যেখানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পার্থক্যবহুল যুগে নিহত সৈনিকদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।