06/06/2025
নীল_রক্ত
#পর্ব_৫_৬_৭
#সিজন_১
লেখক_নীল_মাহামুদ
শুনশান রাস্তায় রিতু আবার বের হলো রাস্তায় এখন আর মানুষ চলাচল নেই বললেই চলে,
ইবু স্যার টা জানি কেমন আসলো না কেনো,
বলতে বলতেই সামনে এসে পড়ে ইবু স্যার,
ইবু- কেমন আছো?
রিতু-মনে মনে কেমন আছো মারাইয়ো না একটু আগে বিপদে পড়ছিলাম,
ইবু- কি ব্যাপার কথা বলছো না কেনো,
রিতু- জি ভালো, আপনি?
ইবু- হুম ভালো,হঠাৎ এই এলাকায় কেনো, কোন ইনফরমেশন দরকার নাকি?
রিতু - তা তো দরকারি কিন্ত খুব জরুরি,
ইবু- ওহ আচ্ছা তা কি এত জরুরি আমাকে বলা যাবে,
রিতু- বললে নিতে পারবেন তো,
ইবু- আচ্ছা হাটি আর কথা বলি,হুম বলো,
রিতু- সব খোলে বলল,
ইবু মাথায় হাত দিয়ে OmG আচ্ছা চল দেখা যাক কি হয়,
দুজন কথা বলতে বলতে নাইট ক্লাবের ভিতর ঢুকলাম,
এখানে কম বেশি সব অপরাধী আসে আবার সাধারণ মানুষও আসে,
এখানে পুলিশ আসতে ভয় পায়,
এই এলাকা খুবই বিপদজনক কখন কি হয় বলা যায় না,
এই পুরো এলাকা একজন নিয়ন্ত্রণ করে,
ভিতরে ঢুকে নীলের ছবি দেখাইলাম অনেকজন কে কিন্ত কেউ চিনে না,
হতাশ মনে বের হয়ে পড়ে দুজনেই,
রিতু ইবু স্যার কে বলল,চলেন থানায় যাই নীলের সাথে দেখা করে আসি,
রিতু থানায় গেলো রাত তখন ১০টা বাজে থানায় গিয়ে দেখলো নীল বসে আছে জেলের ভিতর দেয়াল হেলান দিয়ে,
রিতু তখন ইবু স্যার কে বললেন উনিই আমার বর,
তখন ইবু স্যার রিতুর কানে কানে বলল তুমি যা ভাবছো তা না এই হাদারাম,
নীল কে হাদারাম রিতু ইবু স্যারের দিকে আড় চোখে তাকায়,
ইবু স্যার তা বুঝতে পেরে , সরি সরি আসলে এ কি করে কোন ক্রিমিনাল হয় দেখতেই কি বলবো আবার রাগ করবে,
রিতু-হুম সেটা আমিও ভাবছি কি করে সম্ভব,
নীল রিতু কে দেখে এগিয়ে আসলো, আর মায়া ভরা দৃষ্টি দিয়ে বলল,আমার না অনেক ক্ষুধা লাগছে খাবার আনছেন,
তখন রিতু নীলের মায়ার কাছে হার মেনে বিপাকে পড়ে যায় কারণ খাবার আনে নাই,
রিতু বলল,তুমি জাস্ট ৫মিনিট ওয়েট করো আমি খাবার নিয়ে আসছে,
ইবু কে রেখেই থানা থেকে বের হয়ে যায়, ইবু পিছন পিছন ডাকতে থাকে রিতু ভুলেই গেছে যে ইবু স্যার আছে,
রিতু ইবুর ডাক শুনে দাঁড়ায়,
ইবু- আমাকে রেখে কোথাই যাচ্চো,
রিতু - ও স্যার সরি খেওয়াল ছিলো না,আমাকে খাবার আনতে নীলের জন্য,
এনে দিতে পারবেন,
ইবু স্যার মুচকি হেসে, তুমি যা আজ পর্যন্ত বলছো তা কোন দিন শুনি নি করি নি এমন হয়েছে তুমি এখানে অপেক্ষা করো আমি নিয়ে আসছি,
রিতু ইবু স্যারের কথা শুনে দাঁড়ালো রিতু জানে রাত যতই হোক ইবু স্যার হতাশ করবে না,
থানার বাহিরে রিতু দাঁড়িয়ে আছে পাশেই দাঁড়িয়ে আছে একজন কনস্টেবল বয়স্ক করে,
রিতু- চাচা ভালো আছেন?
চাচা ডাক শুনে উনি উত্তর দিলেন আলহামদুলিল্লাহ মা ভালো আছি,আপনি ভালো আছেন।
রিতু-বেশি ভালো নেই, চাচা
--কেনো মা কি হয়েছে,
-থানায় আমার স্বামী,
-কে ঐ নীল রক্ত যার,
--হুম,
-আচ্ছা মা আপনাদের বিয়ে হয়েছে কত বছর,
রিতু তখন হাত দেখিয়ে বলল,এই যে দেখেন এখনো মেহেদীর রং উঠে নাই,
বলতে গেলে বাসর ঘর থেকে ধরে নিয়ে আসছে,
--কিন্ত মা, তাহলে বাচ্চা টা কার।
--কিসের বাচ্চা মানে কার,
-ঐ নীলের সাথে দেখা করতে আসে,
--কি বলেন চাচা,
-আমি নিজের চোখে দেখছি বাবা বলে ডাকছিলো,
রিতু কথা টা শুনে অবাক হয়ে যায় মানে বিশ্বাস করতে পারছে না,
নীলের মেয়ে আসবে কোথা থেকে, পিচ্ছি একটা ছেলে,
এমন সময় ইবু চলে আসলো কলা আর পাউরুটি ছাড়া আর কিছুই পেলো না,
রিতু নিয়ে নীল কে দিলো নীল খাচ্ছে এর মধ্যে রিতু জিজ্ঞেস করলো থানায় কোন বাচ্চা আসছিলো,
নীল খেতে হুম আসছিলো তো,বাচ্চা টা অনেক কিউট কিন্ত ওর বাবা অনেক পচা খুন করে নাকি জেলে আসছে,
।
রিতু তখন মনে আবার বিশ্বাস ফিরে পেলো,
হয়তো কনস্টেবল চাচার দেখার ভুল নীল তো তা বলল,
নীলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে থানা থেকে বের হলো,
ইবু রিতু কে বাসা পর্যন্ত পৌঁছে দিলো,
বাসায় গিয়ে রিতু ভেজা জামা কাপড় চেন্স করতে যাবে জামার হাতায় নীল কিছু একটা দেখতে পেলো,
রিতু নীল রং টা আঙুল দিয়ে এনে নাকের কাছে ধরলো,
রক্তের গন্ধ আসছে,
তখন রিতুর মাথায় টনক করে একমাত্র নীলের রক্তই তো নীল।
আর হোটেলের যে কালো পোশাক পড়া লোকটা ছিলো সেই তো রিতুর কব্জির উপরে ধরে সরিয়ে ছেলেটির বুকে লাথি মেরে ছিলো,
তার মানে ঐটা নীল।
তখন রিতু আবার ইবু কে ফোন দেয়,
ফোন করে বলে,ইবু স্যার আমার দশজন অফিসার লাগবে,
ইবু- কেনো?
রিতু- শুধু একজন কে ধমকাবো,পারলে আপনিও চলে আসেন,
ইবু স্যার ডিবি পুলিশ উচ্চু পদে আছেন,
রিতু আবার রিং কোট গায়ে চাপিয়ে বের হলো কারণ বাহিরে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে,
রাত তখন ২টা বাজে সেই হোটেলে গেলো,বৃষ্টি থাকায় সেদিন তেমন কোন কাস্টমার ছিলো না,
এই সুযোগ টা তখন রিতু কাজে লাগায়,
রিতু একটা পিস্তল নিয়ে হোটেল মালিকের মাথায় ধরে বলে,
প্রায় ৮টার দিকে এখানে একজন মারা যায় লাথি মেরে বুকের ছাতি ভেঙে যাওয়ার ফলে কিন্ত যে লাথি মেরেছিলো সে কে,
সত্যি না বললে একদম মাথার খুলি উড়িয়ে দিবো,
--আপা আপা শুনেন,আমি উনাকে দেখি নাই,উনি তো মুখে মাস্ক পড়া ছিলো,
-তাহলে ঐ ছেলেগুলো বস বস বলছিলো কেনো,কি দেখে বস বস বলল,
--উনার চোখ নীল উজ্জ্বল ছিলো, আর উনি আমাদের বস,উনার চেহারা আজ পর্যন্ত কেউ দেখেনি,আর উনার রাগ হলে চোখ নীল হয়ে যায়,
রিতু- উনি যে প্লেটে খাচ্ছিলো সেটা আমার চাই আর কাটা চামচ,
-আপা প্লেট টা নিতে পারবেন কিন্ত চামচ টা বাকিয়ে বলের মতো করে ফেলছে,আর নীল রং লেগে আছে,,
রিতু- কই কই সেটা আমার লাগবে এখনই দে,
হোটেল মালিক চামচ দিলো রিতু ইবু স্যার কে বলল স্যার এটা নিশ্চয়ই যে বাকিয়েছে চামচ এর কাটা গুলো তার হাতে ক্ষত তৈরি করেছে,,
ইবু- হুম তা তো অবশ্যই।
রিতু- এবার স্যার থানায় চলেন,
ইবু- এত রাতে যাওয়া যাবে না তোমার,
রিতু প্লেট আর চামচ নিয়ে বাসায় গেলো নিজের কাছে রেখে দিলো,
সকাল হতেই রিতু সেগুলো ফরেনসিকে নিয়ে গেলো,
সেখান থেকে আবার সোজা থানায়,
রিতুর মাথায় অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে,
কিন্ত গিয়ে দেখলো নীল নেই,একদম ফাঁকা,
কনস্টেবল বলল আসামি পালিয়েছে শেষ রাতে,
এবার রিতুর সন্দেহ ঠিক হল,
#পর্ব_৬
,
নীল পালিয়েছে রিতুর মাথা ঠিক নেই,
কারণ নীল এমন ছেলে তা রিতু কল্পনাও করতে পারে নাই,
রিতুর লাইফটাই বরবাদ হয়ে গেলো বলতে মানুষ বলবে দেখো এই মেয়ের আগে একটি বিয়ে হয়েছিলো,
কিন্ত রিতুর মনে জেদ চাপলো নীল কে তা জেনে ছাড়বে,
তাই নীলের বাড়ি চলল সেখান থেকে সব কিছু গুছিয়ে নিজের বাবার বাড়ি যাবে সেখানে ২দিন থেকে থানার কাছে একটা বাসা নিবে,
নীলের বাসায় গেলো কিন্ত দরজা টা খোলা যেখানে রিতু তালা ঝুলিয়ে গিয়েছিল,
রিতু আস্তে করে ভিতরে ঢুকলো এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখলো তারপর শোবার ঘরে গেলো দেখলো নীল শুয়ে আছে,
নীল কে দেখে রিতু অবাক হয়ে গেলো তারপর নীল কে ডাকলো।
-এই এই নীল এই নীল।
-হ্যাঁ হ্যাঁ কে কে? (ভয় পেয়ে)
নীল চোখ খোলে তাকিয়ে দেখলো রিতু
-ওহ আপনি।
-হুম আমি কিন্ত তুমি থানা থেকে পালিয়েছো কেনো।
-এই আপনাকে কে বলল, আমি থানা থেকে পালিয়েছি,
-আমি নিজে থানায় গিয়েছিলাম,
-আপনি ভালো করে জানেন, আমাকে ছেড়ে দিয়েছে,
রিতু থানায় ফোন দিলো ওসি কে আর নীলের নাম বললেন, ওসি বলল নীল কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে,
রিতু যেনো দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বাঁচলো,
বাসায় দাদু না থাকায় নীল জিজ্ঞেস করলো,
নীল-আচ্ছা দাদু কই?
রিতুর চোখ গুলো তখন বড় বড় হয়ে গেলো এখন নীল কে কি উত্তর দিবে,
রিতু-......... চুপ।
নীল- কি হল বলছেন না কেনো দাদু কই?
রিতু-....... চুপ করেই আছে?
নীল- দাদু কই? কথা কানে যাচ্ছে না?(ধমক দিয়ে)
রিতু- চমকে যায় নীলের ধমক খেয়ে।
রিতু-আসলে দাদু কে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না,তোমাকে যেদিন জেলে যাও তারপর দিন থেকে,
নীল- কি? দাদু কে পাওয়া যাচ্ছে না,
রিতু - হুম।
নীল- আমাকে বলেন নাই কেনো,
রিতু- এখন রিতু পড়ে যায় বিপাকে কি বলবে,তাই রিতু বলল,
রিতু- বলি নাই এটা আমার ভুল হয়েছে,
নীল- ভুল হয়েছে নাকি আমার দাদু কে খুন করে গুম করে ফেলছেন,
রিতু- কি সব বাজে কথা বলছো আমি কেনো খুন করতে যাবো,
নীল- সম্পত্তির লোভে?
রিতু- হোয়াট?
নীল- ইয়েস বিকস,আমি জেলে দাদু গুম এই বিশাল সম্পত্তির মালিক কে থাকে তাহলে? ইউ?
তারপর আপনার পছন্দ মতো কোন ছেলে কে বিয়ে,
নীলের কথা ধরতে গেলে সত্যি,
রিতু- নীল দেখো আমি এমন টা করি নাই, তুমি আমাকে ভুল বুঝছো,
নীল- না, আমি ভুল বুঝছি না,আপনি চাইলেই আমাকে জেল থেকে বের করতে পারতেন,
কিন্ত আপনি তা করেন নাই,
নিজের ক্ষমতায় জেল থেকে বের হয়েছি,আর রাতের মধ্যে আমার দাদু কে চাই না হলে মামলা করতে বাধ্য হবো,
রিতু নীল যা মনে করেছিলো নীল তেমন না,আর নীল কে বলতেও পারছে ন,যে আমি তোমাকে সন্দেহ করেছিলাম
তুমি এই তুমি সেই,
তাহলে আরো বিপদে পড়ে যাবে রিতু,
উপায় না বুঝে রিতু মাথা ঘুরে পড়ে গেলো কিন্ত এটা একটা রিতুর অভিনয় ছিলো,যাতে নীলের কাছে কোন কৈফিয়ত না দিতে হয়,
নীল রিতু কে ধরে বেডে শুইয়ে দিয়ে কালো লম্বা চাদর মুরি দিয়ে বের হলো রিতু তখন আড় চোখে সব দেখছিলো,
সব থেকে বড় একটা আশ্চর্য কথা হল রুমের ভিতর একটা গোপন কক্ষ আছে যা রিতু জানে না কিন্ত আজ তা জানতে পেরেছে,
রিতু মনে মনে ঠিক করলো নীল একবার বের হোক তারপর দেখা যাক,
নীল বের হওয়ার সাথে সাথে রিতু উঠে দরজা লক করে গোপন কক্ষে যেতে চায় কিন্ত সেখানে কোন দরজা বা যাওয়ার কোন রাস্তা খোঁজে পেলো না,
কিন্ত কিছুক্ষণ আগেই দিব্যি দরজা দেখতে পেলো,
এখন রিতুর মাথা সত্যি সত্যি ঘুরছে,
ভেবে কিছু পাচ্ছে না থো মেরে বসে আছে রিতু,
দুপুর গড়িয়ে রাত হয়ে গেলো কিন্ত নীলের কোন খবর নেই,
রিতু এটা বুঝে গেছে নীল কোন সাধারণ মানুষ না,
রাত ১১টা ১৯ মিনিটে একটা কল আসে নীলের বিপদ,হসপিটালে আছে নীল।
অজানা এক অনুভূতির টানে রিতু ছোটে গেলো হসপিটালে সেখানে গিয়ে অবাক কান্ড পিচ্ছি একটা মেয়ে নীল কে রক্ত দিচ্ছে সব চেয়ে অবাক করা কথা হল মেয়েটির রক্তও নীল,
পিচ্ছি মেয়েটির বয়স আনুমানিক ৫-৬ বছর,
আর যিনি ডক্টর মনে হচ্ছে না উনি এই হসপিটালের দেখতে কেমন জানি ইয়া বড় বড় গোঁফ,
হঠাৎ একটা ব্যাগ চোখে পড়লো মনে হচ্ছে বাঘের চামড়া দিয়ে বানানো,
নার্স গুলো কোন কথা বলছে না হা করে তাকিয়ে আছে,
নীলের শরীরে যে রক্ত যাচ্ছে মনে হচ্ছে নীল রং যাচ্ছে,
রক্তের ব্যাগ দেখে মনে হচ্ছে নীল রং এর ডিব্বা ঝুলিয়ে রাখছে,
রক্ত দেওয়া শেষ হল, নীলের শরীরে
রিতু কিছু বলতে যাবে।
ডাক্তার বলল হুসসস চুপ।
নীলের শরীরে জায়গায় জায়গায় আঁচড়ের দাগ মনে হচ্ছে হিংস্র কোন জানোয়ার এর থাবা,
হঠাৎ রিতুর ওয়াশরুম চাপ হলো তাই সে উঠে ওয়াশরুমে গেলো কিন্ত ফিরে এসে যা দেখলো তা দেখে চোখ কপালে উঠে গেলো,
#পর্ব_৭
,
রিতু এসে দেখলো পিচ্ছি মেয়েটি গায়েব আর সেই অদ্ভুত ডক্টরটিও নেই,
নীল সুস্থ হয়ে বসে আছে বেডে কি অদ্ভুত ব্যাপার,
রিতুর মনে হচ্ছে আমি কি ভুল দেখছি
এতক্ষণ, নাকি টাইম ট্রাবল করছি,
কোন টা কিছুই বুঝতে পারছি না,
রিতু ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে নিরব
দর্শকের মতো বসে আছে,
কিছু বলছে না,
অবুঝ শিশুর মতো বসে আছে রিতু মুখে কোন কথা নাই,
নীল আবার শুয়ে পড়লো।
রিতু নীলের দিকে তাকিয়ে আছে
কি কিউট ছেলে,
নীল কে দেখেই যে কোন মেয়ে
ক্রাশ খাবে সেখানে রিতু তো,,,,,,,?
নীলের চুল গুলো ফ্যানের বাতাসে উড়ছে,
রিতুর ইচ্ছে করছে নীলের চুল একটু স্পর্শ করতে,
কিন্ত কি ভাবে চুল গুলো ধরবে,
এমন সময় নীল বলল,যদি কিছু মনে না করেন একটা কথা বলি,
রিতু- হুম বলো,
নীল- আমার খুব মাথা ব্যথা করছে একটু হাত বুলিয়ে দিবেন,
রিতু- মনে মনে এই তো সুযোগ,
রিতু দেড়ি না করে মাথার কাছে বসে
নীলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো,
নীল মাঝে চোখ বুঝে আবার খোলে ঘুম ঘুম ভাব,
একটু পর নীল ঘুমিয়েই পড়লো,।
রিতু নীল কে রেখে হসপিটাল থেকে
বের হল,
বের হয়ে মনে হল রিতু কোন মায়াজাল থেকে বের হল,
হঠাৎ মনে হল রিতুর, নীলের কি হয়েছে
শরীরে তো এখন কোন ক্ষত নেই,
রিতুর মনে অনেক প্রশ্ন কিন্ত নীলের কাছে গেলে সব ভুলে যায়,
এই সব আর কিছুই মনে থাকে না,
রিতু রেগে আগুন হয়ে বাসার দিকে গেলো,
ফ্রেশ হয়ে ঠাস করে বিছানায় শুয়ে পড়লো,
রিতুর কাছে রুম টা কেমন নীল মন্র হচ্ছে, মনে হচ্ছে রুমের ভিতর নীল লাইট লাগানো,
রিতু পিঠের উপর ভর দিয়ে মাথা তুলে তাকালো দেয়ালের এক পাশ থেকে
নীল আলো আসছে,
রিতু দেখার জন্য লাফিয়ে উঠে বিছানা থেকে,
আসতে আসতে দেওয়ালের আলোর দিকে এক পা দু পা করে এগিয়ে যায়,
নীল আলোতে রুম টা ঝলমল করছে,
ঠিক নীল দরজার কাছে গিয়ে রিতু অজ্ঞান হয়ে যায় মানে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে,
যখন রিতুর জ্ঞান ফিরে তখন চোখ খোলে তার বাবা মা কে দেখতে পায়,
সবাই খাটের চার পাশে দাঁড়িয়ে আছে আর রিতু খাটে শুয়ে আছে,
কেমন সব উল্টপাল্ট লাগছে,
এটা তো নীলের ঘর বলে মনে হচ্ছে না
তাহলে আমি কই,
রিতু ভালো করে চোখ মেলে তাকিয়ে দেখলো,
এটা তো রিতুদের নিজেদের বাড়ি রিতুর নিজের রুম,
দাঁড়িয়ে আছে বাবা মা বাড়ির কাজের লোক রহিমা খালা আর করিম চাচা
কিন্ত নীল নেই কোথাও,
রিতু মা কে ডেকে বলল,মা নীল কোথাই নীল কে তো দেখছি না,
রিতুর মা বাবা তখন রিতুর দিকে তাকিয়ে আছে,
রিতু মা কিছু বলবে তখন রিতুর ফোনের রিংটোন টা চেঁচিয়ে উঠলো,
ফোনের দিক তাকিয়ে দেখলো কনস্টেবল খালেক ভাই লিখা, রিতু ভাবলো এটা আবার কার নাম্বার
রিতু অবাকই হলো অচেনা অজানা একটা নাম্বার তাও সেভ করা
কিন্ত খালেক ভাই টা আবার কে?
রিসিভ করবে কি করবে না ভাবতে ভাবতে রিসিভ করে ফেলে,
রিতু কল টা রিসিভ করে কানে ফোন টা চেপে ধরলো,
রিতু- হ্যালো খালেক ভাই,
-- ম্যাডাম আপনি কোথায়?
--কেনো?আমি বাসায়।( অসংকোচ ভাব নিয়ে)
--ম্যাডাম ১০ নাম্বার স্যালের আসামি তো পালিয়েছে,
--কি......(অবাক হয়ে)দশ নাম্বার সেলের আসামি পালিয়েছে তাই আমার কি?
-কি বলেন ম্যাডাম, আপনার ডিউটির সময় পালিয়েছে আর আপনি বলছেন আপনার কি?
-বড় স্যারের কাছে তো আপনার জবাবদিহি করতে হবে তখন কি বলবেন,
রিতু কথার আগামাথা কিছুই বুঝলো বিরক্ত হয়ে ফোন টা কেটে দিলো,
রিতু ঘড়ির দিকে তাকালো দেখে বেলা ১১টা বাজে,
বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হলো আগে, তারপর রিতুর মা কে জিজ্ঞেস করলো,
মা আমি কত ঘন্টা অজ্ঞান ছিলাম,
আর নীল কোথাই দেখছি না যে নাকি হসপিটাল থেকে রিলিজ পায়নি,
মা তখন মনে রান্না করে কিছু রান্না করছিলো,
কিন্ত এই সব বলাতে মা গরম খুন্তি নিয়ে তেড়ে এসে বলল তুই এখান থেকে যাবি নাকি,
এমন রাগ দেখিয়ে বলল মনে আমি আম্মার কাছে গুপ্তধনের সন্ধান চাইছি।
আমি নিজেও বুঝলাম না এমন করলো কেন,
এত কস্ট করে পুলিশ হয়ে যদি জারিই খেতে হয় তাহলে লাভ কি আমার,
তখন পিচ্ছি ভাইটার কাছে গেলাম বাবার কাছে যেতে সাহস পাইলাম না কারণ যদি উনিও জারি দেয়,
তাই পিচ্ছি ভাই এর কাছে গেলাম পিচ্ছি বলতে ক্লাস ১০ পড়ে,
গিয়ে বললাম এই রিয়াদ তোর দুলাভাই আসছিলো কি?
উমা রিয়াদও চিল্লাইয়া উঠলো মা মা বলে আর বলল তোমার মেয়ের মাথা
গেছে,
কিন্ত আমি কিছুই বুঝলাম না,
একে একে সবার জারি খেয়ে রুমে এসে টিভি দেখতে লাগলাম দুপুর গড়িয়ে সন্ধা, আর সন্ধ্যা শেষ হয়ে রাত,
কিন্ত আমি কিছু বুঝলাম না,
সবাই এমন করছে কেনো,
রাত ১০টায় সবাই কে ডেকে বললাম তোমরা সারাদিন আমার সাথে এমন করছো কেনো,
সবাই শুধু জারি দেয়,আমি জিজ্ঞেস করছি নীল কোথায়, এমন ভাব করছো মনে হয় নীল কে চিনিই না,
ও যে তোমাদের মেয়ের জামাই তা তোমরা মনেই করছো না,
রাগ দেখিয়ে বলল কথা গুলো রিতু,
মা- তুই আমাদের সাথে ফাইজলামি শুরু করছিস,
রিতু- আমি করছি?
মা- হুম তা না হলে আমরা? এটা বলবি তো নীল টা কে?
রিতু মুখে অবাক করা হাসি এনে,মা তোমরা নীল কে চিনো না,যার সাথে আমার বিয়ে দিলে?
বাবা- রিতু তোর কি মাথা ঠিক আছে তুই কি বলছিস,আমরা তোর বিয়ে দিলাম কবে,তোকে বিয়ের কথা কথা বলতে বলতে আমাদের গলা শুকিয়ে গেছে আর তুই বলছিস,
রিতু তখন বড় ধরেন একটা সর্ট খেলো,
দৌড়ে গিয়ে রিতুর প্রতিনের লিখা ডায়েরি টা খোলে দেখলো,
আর যা দেখলো তা অবাক করার চাইতে বেশি কিছু,,,,,,,,
গতকালের ডেট দেওয়া দেখে তো আমার হাতের লিখা মনে হচ্ছে মিলিয়ে নিলাম হ্যাঁ এটা আমি কিন্ত তাহলে কি নীল নামে কেউ নেই তাহলে যার সাথে বিয়ে হল সে কে?
আর খালেক ভাই টা কে, কি হচ্ছে আমার সাথে কিছুই বুঝছি না,,,,,,
বিঃদ্রঃ আগেই বলছি সবার কাছে ক্ষমা প্রার্থী আমি,আমি খুব ব্যস্ত রাতে ছাড়া ফোন হাতেই নিতে পারি না ব্যস্ততার জন্য,খুব তারাতাড়ি কাজ শেষ হয়ে যাবে, অনেকই অনেক কথা বলছেন ভালো,খারাপ,হাস্যকর, অনেকে বাজে কথা বলে, সে গুলো নাই বললাম আসলে ব্যবহারে বংশের পরিচয়,
আর আমার ব্যবস্থা সারাজীবন থাকবে না,
(চলবে)