10/06/2025
কিছু কিছু পাব্লিক আছে—ভাইরে ভাই!
বিদেশ যাওয়ার আগেই এমন সিরিয়াস হইয়া যায়, মনে হয় যেন ওরা ভিসা পাইছে না, NASA-তে অ্যাস্ট্রোনট হিসেবে সিলেক্ট হইছে।
এয়ারপোর্টে ওঠার আগেই ফেসবুকে একটা নতুন পেইজ খুলে ফেলে—
নাম রাখে, “লাইফ ইন লন্ডন”, “মাই জার্মান জার্নি”, “কানাডা কলিং”, বা “ফ্রান্সের পথে”—এই টাইপ সেন্টিমেন্টাল নাম।
লোগো এমন ডিজাইন করায়, যেন ইউটিউবের হেড অফিস থাইকা অফার আসবো আজ না কাল।
তারপর ব্লগ চালু।
না ভাই, ভিডিও না, ভ্লগ না—লিখে ব্লগ, চুলায় যাক বানান ভুল আমার মত!
প্রথম ব্লগের টাইটেল: “বিদেশ জীবনের প্রথম সকাল...”
মনে হয় যেন সে হেমিংওয়ে, অভিজ্ঞতা লিখলে সবাই কাঁদবে!
আরো পাব্লিক আছেন, যারা তো আরোও হেভিওয়েট।
পেইজ খুলেই দ্যাখা যায়, “Blue Tick Verification Request Sent”
এমন ভঙ্গিতে পেইজে ছবি আপলোড দেয়, যেন Netflix ওদের ওপর ডকুমেন্টারি বানানোর কথা ভাবতেছে।
ভিডিওর ওপেনিং শট:
"Assalamu Alaikum viewers, আমি এখন জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট এয়ারপোর্টে... এ তো অন্যরকম অনুভুতি...”
আর ব্যাকগ্রাউন্ডে লো ফাই মিউজিক, চোখে RayBan, মুখে মাইনর মন খারাপ—
জাস্ট যেন দুনিয়ার সব দুঃখ নিজের ব্যাগে কাঁধে ঝুলায়া লাইছে।
কিন্তু আসল জ্বালা তো এইখানেই...
এইসব ব্লগ, ভিডিও, লাইভ—সব দেখে কারা?
তার বউ (বা গার্লফ্রেন্ড), একটা মামাতো আরেকটা চাচাতো ভাই, আর পাশের বাসার কালাম ভাইয়ের ছেলে, মানে আমি। যে নিজেই এখন TikTok-এ ব্যস্ত!
কমেন্টে থাকে—
“ভাই অনেক ভালো লাগলো, আর ও শেয়ার করেন।”
“দোয়া কইরেন ভাই, আমিও ফাইল সাবমিট দিছি।”
আর প্রিয়জনের এক লাইনের স্ট্যাটাস:
“Missing you 💔💔💔” —তাও একইরকম পেজে, মিলে গেলো ভার্স!
আর ভিডিওতে ৩৪টা ভিউ।
তার মধ্যে ১৭টা নিজের, বাকি ১৫টা রিলোড দিয়ে চেক করতেছে—“ভিডিও হেইপাইতেছে নাকি?”
শেষ কথা হইল ভাই—বিদেশ যাওয়াই এখন কন্টেন্ট!
কাজে জয়েন দেওয়া আগেই লাইফস্টাইল ইনফ্লুয়েন্সার।
বাসায় রান্না করতে পারে না, আর ফ্রাঙ্কফুর্টে কফির কাপ ধইরা লিখে:
“মাই নিউ মর্নিং রিচ্যুয়াল ইন ইউরোপ 🥹☕️”
অবশ্য, দেশের কালাম ভাইয়ের পোলা মানে আমি দেখি। হাসি, খারাপও লাগে না।
কারণ বিদেশে গিয়া কেউ সুখ পায়, কেউ ব্যস্ত থাকে, আর কেউ ব্যস্তাকে লোকজনকে দেখাইতে কেমনে সুখী!