25/08/2025
উসমানী সেনাদের জন্য রসদ সরবরাহ করত এই ট্রেন। ১ম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে লরেন্স অব অ্যারাবিয়ার আক্রমণে থেমে গিয়েছিল এর যাত্রা। আজও সৌদি আরবের মরুভূমিতে একই জায়গায় পড়ে আছে এটি।
উসমানী সাম্রাজ্যের অন্যতম প্রধান রেললাইন ছিল হেজাজ রেলওয়ে। ১৯০০ সালে নির্মিত এই লাইন মরুভূমি পেরোনোর এক গুরুত্বপূর্ণ পথ ছিল। এটি তৈরি হয়েছিল মূলত দামেস্ক থেকে মদিনা পর্যন্ত, পরিকল্পনা ছিল মক্কা পর্যন্ত সম্প্রসারণের, যাতে হজযাত্রীদের যাতায়াত সহজ হয়। সাম্রাজ্যের দূরবর্তী প্রদেশগুলোর উপর নিয়ন্ত্রণ আরও মজবুত করাও ছিল অন্যতম উদ্দেশ্য।
রেলপথ শেষমেশ মদিনা পর্যন্তই পৌঁছায়; মক্কার প্রায় ৪০০ কিলোমিটার আগে এসে থেমে যায়। এর মধ্যেই শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, ফলে সব নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়।
যুদ্ধ চলাকালে উসমানী সেনারা এই রেলপথকে সৈন্য ও সরঞ্জাম বহনের জন্য প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করত। আরবরা, ব্রিটিশ অফিসার টি. ই. লরেন্সের নেতৃত্বে, এই রেলপথকে লক্ষ্য করে আঘাত হানতে শুরু করে।
প্রথমবারের মতো গেরিলা বাহিনী রেললাইনের বড় অংশ উড়িয়ে দেয়, এমনকি চলন্ত লোকোমোটিভও ধ্বংস করে, যা ইতিহাসে প্রথম। পরে লরেন্স নিজেও সরাসরি আক্রমণে যোগ দেন এবং অসংখ্য সেতু ধ্বংস করেন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এই রেলপথ কার্যত পরিত্যক্ত হয়ে যায়। যদিও একে পুনরায় চালু করার চেষ্টা করা হয়েছিল কয়েকবার। আজও খুব অল্প কিছু লাইন চালু আছে, যেমন- জর্ডানের আম্মান থেকে সিরিয়ার দামেস্ক পর্যন্ত। আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই রুটে এখনও অনেক পুরনো ইঞ্জিন ও বগি চলছে। সবচেয়ে পুরোনো লোকোমোটিভটি তৈরি হয়েছে জার্মানিতে, ১৮৯৮ সালে।
মরুভূমির নিস্তব্ধতার মাঝে পড়ে থাকা সেই ট্রেন যেন উসমানী সাম্রাজ্যের পতনের নীরব সাক্ষী হয়েই পড়ে আছে।