28/08/2025
💔 রাকিব – সানজিদার কাহিনী
কলেজের প্রথম দিনেই রাকিবের চোখে ধরা পড়েছিল সানজিদা। মেয়েটির হাসি, চোখেমুখের সরলতা, পড়াশোনার প্রতি মনোযোগ – সবকিছু যেন তাকে অজান্তেই টেনে নিয়েছিল। প্রথমে বন্ধুত্ব, তারপর ধীরে ধীরে অচেনা এক টান—ক্লাস শেষে আড্ডা, লাইব্রেরিতে একসাথে পড়া, ক্যান্টিনের চায়ের কাপে ভাগাভাগি—সব মিলিয়ে তাদের সম্পর্ক কলেজ জীবনের সবার চোখে একটা অদ্ভুত মিষ্টি জুটিতে পরিণত করেছিল।
দিনের পর দিন তাদের গল্প জমতে লাগল। রাকিব নিজের স্বপ্নের সাথে সানজিদাকে মিশিয়ে ফেলল। ভবিষ্যতের সব পরিকল্পনায় সানজিদাই ছিল প্রধান চরিত্র। সানজিদাও রাকিবকে ভালোবাসত, তবে মনের গহীনে একটা দ্বন্দ্ব কাজ করত—পরিবারের কড়া শাসন আর নিজের অনুভূতির লড়াই।
কয়েকটা বছর এভাবেই কেটে গেল। কলেজের প্রতিটি দেয়াল যেন তাদের প্রেমের সাক্ষী হয়ে দাঁড়াল। রাকিব ভাবছিল, পড়াশোনা শেষ হলে পরিবারকে বোঝাবে, সবকিছু সময়মতো ঠিক হয়ে যাবে।
কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন খবর এল—সানজিদার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
রাকিব কিছুই জানত না। সানজিদা তাকে বলারও সাহস পায়নি। বিয়ের দিন কাছে চলে আসতেই চারপাশের গুঞ্জন রাকিবের কানে পৌঁছে গেল। প্রথমে সে বিশ্বাসই করতে পারছিল না। যে মানুষটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছে, প্রতিটি সকাল-সন্ধ্যায় যার নাম বুকের ভেতর উচ্চারণ করেছে, সে কীভাবে অন্য কারো হাত ধরে চলে যেতে পারে?
সেদিন রাতে রাকিব ভেঙে পড়েছিল। আকাশের দিকে তাকিয়ে শুধু প্রশ্ন করেছিল—“আমার দোষ কোথায় ছিল?”
বন্ধুদের সামনে হাসি দিয়ে লুকালেও, ভেতরে ভেতরে সে প্রতিদিন ভাঙতে লাগল। একসময় বই-খাতা সব এলোমেলো হয়ে গেল। সানজিদার সাথে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত তাকে তাড়া করতে লাগল। ক্যান্টিনে বসলে মনে হত এখনই হয়তো সানজিদা এসে বলবে—“চল, ক্লাসে যাই।” লাইব্রেরিতে ঢুকলেই মনে হত পাশের টেবিলে সানজিদা বসে আছে।
কিন্তু বাস্তব ছিল নির্মম। সানজিদা আর ফিরে আসেনি। পরিবার, সমাজ, ভাগ্য—সবকিছু মিলে তাকে আলাদা করে দিয়েছে।
রাকিব ধীরে ধীরে শিখল, কিছু মানুষ জীবনে এসে রঙ ছড়িয়ে দিয়ে হঠাৎ অচেনা হয়ে যায়। কিছু ভালোবাসা জীবনে থেকে যায় শুধুই স্মৃতি হয়ে।
সানজিদা হয়তো সংসারের ব্যস্ততায় হারিয়ে গেল, কিন্তু রাকিবের কাছে সে রয়ে গেল এক অসমাপ্ত গল্প, এক অদৃশ্য যন্ত্রণা।💔
সংগৃহীত