14/07/2023
দ্বীপাঞ্চল ভ্রমণ
নিঝুম দ্বীপ
৩য় পর্ব
১৯.০৬.২০২৩ ইং
আজও সকাল বৃষ্টি।প্রকৃতির এমন বৈরী আচরণের জন্য আমার আমার ভ্রমণ পরিকল্পনা পুরা উলটপালট হয়ে গেছে।সকাল ৮ টায় নিঝুম দ্বীপের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর কথা থাকলেও অবশেষে বের হয়েছি বেলা ১১ টায়।ওসখালী থেকে সরাসরি মোক্তারিয়া ঘাট পর্যন্ত মটর সাইকেলে যাওয়া যায়।তবে ভাড়া বেশ বেশি তাই আমি ভেঙ্গে ভেঙ্গে যাবো।প্রথমে আসি ৬০ টাকা ভাড়ায় লোকাল সি এন জিতে জাহাজমারা বাজার।জাহাজমারা বাজার থেকে ১০০ টাকা ভাড়ায় মটর সাইকেলে করে মোক্তারিয়া ঘাট যাওয়া যায় তবে বৃষ্টি থাকায় আমি ২৫০ টাকায় অটোরিকশার মোক্তারিয়া ঘাট আসি।মোক্তারিয়া ঘাটে প্রায় এক ঘন্টা অপেক্ষা করার পর ঘাটে ট্রলার আসে।এই ঘাটে একটাই ট্রলার যাত্রী পারাপারের জন্য।ট্রলার উঠার সাথে সাথেই ঝুম বৃষ্টি। কোন রকমে ক্যামেরাটা বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করতে পেরেছিলাম।সময় লেগেছে ৭-৮ মিনিট। ভাড়া ৪৫ টাকা।এই ঘাটের ভাড়াও বেশি মনে হয়েছে।ঘাটে একটাই মাত্র অটোরিকশা ছিলো।তাই আর কোন অপশন না থাকায় ৩৫০ টাকায় নামার বাজার পর্যন্ত রিজার্ভ করিরি,সময় লেগেছিল ১ ঘন্টার কিছু বেশি। রাস্তার অবস্থা খুবই ভয়াবহ ।নিঝুম দ্বীপের নামার বাজারেই পেয়ে যাবেন বেশ কয়েকটি হোটেল ও রিসোর্ট।পর্যটকরা এই বাজারেই থাকে কারন দর্শনীয় স্থানগুলো এর আশেপাশেই।যেমন সী বীচ,নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যান।আমি সী প্যালেস হোটেল রুম নেই ভাড়া ৫০০ টাকা।সীজনে এই রুমের ভাড়া ১২০০-১৫০০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে।তখনও বেশি বৃষ্টি হচ্ছিলো। ভেবেছিলাম আজ আর বের হওয়া হবেনা।দুপুরে খাওয়াদাওয়া করে রুমে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম আর জানালা দিয়ে দেখছিলাম বৃষ্টি থামে কিনা। বিকেল ৪ টার দিকে বৃষ্টি থেমেছে।
এখানে ঘুরাঘুরি জন্য বাইক ভাড়া পাওয়া যায়।দুই ভাবে ভাড়া নেয়া যায় চালক সহ এবং চালক ছাড়া।আপনি চাইলে নিজেই ভ্রাইভ করে দ্বীপ ঘুড়ে দেখতে পারবেন।ভাড়া ঘন্টা প্রতি ২৫০-৩০০ টাকা নিয়ে থাকে। আমি চালক সহ ২৫০ টাকা ঘন্টায় বাইক ভাড়া করি।বাইকের চালক রাশেদ খুবই বিনয়ী এবং স্মার্ট ছিলো। যার জন্য ওকে দিয়ে ক্যামেরাও চালাতে পেরেছি।
আমরা প্রথমে যাই হরিণ দেখার উদ্দেশ্যে। গন্তব্য
নিঝুম দ্বীপ উদ্যান।নামার বাজার থেকে বাইকে ১০ মিনিটের পথ।
বনের ভিতর প্রবেশ করতেই মশার আক্রমনের স্বীকার হলাম।রাশেদের দেখানো পথে বেশ কিছুদূর গিয়েও কোন হরিণের দেখা পেলামনা।মশার কামড় আর সহ্য করতে পারছিলাম না।তাই কয়েকটা ড্রোন শট নিয়ে দ্রুত বন থেকে বেড়িয়ে পরলাম।
বাজারে এসে দেখা মিললো হরিনের।এটা এই বাজারের আশেপাশেই থাকে।হরিণকে এক পেকেট চিফস খাওলাম।
বাজারের পাশেই জেলেদের মাছ ধরার নৌকা সারিবদ্ধভাবে রাখা আছে পাশেই ওয়াচ টাওয়ার। কয়েকটি ছবি তুলে ও ড্রোন উড়িয়ে চলে গেলাম সী বীচে।
নিঝুম দ্বীপের সী বীচে ঢেউ নেই।তখন ভাটা ছিলো তাই পানিও ছিলো অনেল দূরে।এখানে নাকি একটা পার্ক করবে সরকারি ভাবে।তখন হয়ত আরো আকর্ষণীয় হবে।
বীচে সন্ধ্যা পর্যন্ত সময় কাটিয়ে বাজারে ফিরে এলাম।
শুনলাম নামার বাজারের আশরাফ ভাইয়ের মহিশের দুধের ছানার মিষ্টি নাকি খুব জনপ্রিয়। তাই মিষ্টি খেতে বসে পরলাম।সাইজে ছোট আকৃতির এই মিষ্টি বিক্রি হয় পিস হিসেবে। প্রতি পিস ১০ টাকা।
সত্যিই খুবই সুস্বাদু ছিলো।আমি টপাটপ ৮-১০ টা খেয়ে ফেলেছি।
সন্ধ্যায় মিষ্টি খাওয়ার রাতে রাতে আর খেতে ইচ্ছে করছিলোনা।তারপরও রাত ১১ টার পর খেয়ে হোটেলে ফিরে গেলাম।
২০.০৬.২০২৩ ইং
টানা জার্নির ধকলের কারনে রাতে লম্বা একটা ঘুম হয়েছে।সকালে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে নিলাম.
সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি, তাই কোথাও বের হইনি।
গত রাতেই মাঝির সাথে যোগাযোগ করে রেখেছিলাম।সকাল ১০ টায় মনপুরার উদ্দেশ্যে ট্রলার ছেড়ে যাবে,,,,,
চলবে,,,,