25/10/2024
চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে এর সাবেক শিক্ষার্থী (এসএসসি ‘১৭ এবং এইচএসসি ‘১৯) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের বর্তমান শিক্ষার্থী জাওয়াদ শামসের (সেশন ২০১৯-২০২০) দারা সংগঠিত নারীদের প্রতি তার বিভিন্ন হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড সামনে তুলে ধরা হচ্ছে ।
প্রধান অভিযোগসমূহ:
১. জাওয়াদ শামস, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউটের ২০২৩-২০২৪ সেশনের একজন নারী শিক্ষার্থীকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশোভন বার্তা, ভিডিও পাঠিয়ে ও ঘন ঘন ভিডিও কল করে ও সেই কল রিসিভের জন্যে নানানভাবে জোরাজুরি করতেন। ১৩ অক্টোবর তিনি ওই শিক্ষার্থীকে বিনা অনুমতিতে শারীরিক স্পর্শ করেন ও উত্ত্যক্ত করেন। উল্লেখ্য যে, জাওয়াদ শামস শিক্ষার্থীটির অনুমতি ছাড়া কয়েকটি ছবি তোলেন এবং পরবর্তীতে তা বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক এবং অত্যন্ত আপত্তিকর তথ্য ছড়াতে ব্যবহার করেন।
২২ অক্টোবরে শিক্ষার্থীটিকে ভিডিও কল করতে নিষেধ করায় জাওয়াদ শামস শিক্ষার্থীটির একজন বন্ধুকে রড দিয়ে মারার জন্য প্রকাশে পরিকল্পনা করেন এবং এতে অংশ নিতে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউট এর সেমিনারে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের নির্দেশ করেন। উপস্থিত শিক্ষার্থীগণ এতে আপত্তি প্রকাশ করলে তিনি সেমিনারে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সাথে সাথে মাতাল অবস্থায় অত্যন্ত আপত্তিকর ও অসংলগ্ন আচরণ করেন এবং ক্ষমতার বলে নানা ধরনের হুমকি প্রদান করেন। ঐদিনই জাওয়াদ নারী শিক্ষার্থীটিকে সেমিনার রুমে আটকে রেখে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে এবং তার মাথায় ও গলায় স্পর্শ করেন। একই সাথে সেমিনারে অবস্থানরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের নানানভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে ইন্সটিটিউটের কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সবার সামনে তুলে ধরে এবং একে একে তার দীর্ঘদিন যাবত করা কুকর্ম, হয়রানি ও অনাচার প্রকাশ্যে প্রমানিত হয়। পরিস্থিতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়ায় উনি সেমিনারে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের নানানভাবে হুমকি দিতে থাকে। তার এরকম আচরণে ইন্সটিটিউটের অনেক শিক্ষার্থীই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
২. জাওয়াদ এর আগেও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে থাকা অবস্থায় নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি করেছেন।
৩. ২০২৪ সালের এপ্রিল-মে মাসে অন্য এক শিক্ষার্থীকে বিনা অনুমতিতে শারীরিকভাবে স্পর্শ করে এবং পরবর্তীতে তাকে হেনস্তা করেন।
৪. ২৩ অক্টোবর,২০২৪ এ তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের ক্ষমতার জোরে হুমকি দেন, যার ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
৫. তার কাছ থেকে পাওয়া একটা ডকুমেন্টে দেখা যায় বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের নাম এর লিস্ট যাদেরকে লাল এবং সবুজ রং দিয়ে মার্ক করা এবং পাশে ‘Acceptance Rate’ বক্স দেয়া যা খুবই ভয়ংকর একটা বিষয়।
শুধু তাই না, তার হেনস্তার শিকার হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বয়ং প্রক্টর স্যার ও। আজ প্রক্টর স্যার এর কাছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা দাবি নিয়ে গেলে তিনি তার সাথে করা জাওয়াদ শামস এর হেনস্থার বিষয়টিও জানান। জাওয়াদ শামস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যার এর সঙ্গে তার শক্ষতা বাড়ানোর জন্য নিজেকে আনোয়ার স্যার (প্রফেসর,সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগ) এর ছেলে হিসেবে পরিচয় দেন। প্রক্টর স্যার চিনতেন আনোয়ার স্যার এর ছেলেকে এবং এটাও জানতেন জাওয়াদ শামস যে সে নয়। এরপর জাওয়াদ প্রক্টর স্যার কে জানান যে, তাকে চলে যেতে হবে কারণ সময় হয়ে যাচ্ছে। প্রক্টর স্যার তাকে উবার নেওয়ার পরামর্শ দেন।
গন্তব্যে পৌঁছানোর পর, জাওয়াদ উবার চালককে তার বিকাশ নম্বর জিজ্ঞাসা করেন, চালক জানান যে তার বিকাশ নেই। তখন জাওয়াদ চালককে প্রক্টর স্যার এর নম্বর দিয়ে দেন এবং তাকে নির্দেশ দেন প্রক্টর স্যারের কাছে টাকা দাবি করতে। এর ফলে প্রক্টর একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েন যখন তিনি ওই ফোন কল পান।
এখন আসি আমাদের পদক্ষেপের বিষয়ে। আমরা ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর ম্যাডাম এবং প্রক্টর স্যার কে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চিঠি পাঠিয়েছি। জিডি ও করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। আশা করছি খুব জলদি আমরা এই বিষয়ের সমাধান করতে সক্ষম হব। এমন অবস্থায় আমরা আশা করছি সিসিপিসি এর সকল সাবেক এবং বর্তমান শিক্ষার্থীরা তাঁকে সব ধরনের কার্যক্রম থেকে নিষিধ ঘোষণা করবেন এবং তার বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে আমাদের সাহায্য করবেন ।