14/08/2025
কথা দিয়ে কথা না রাখার কী শাস্তি?কাউকে কোন কথা দেওয়া যখন হয়ে যায় তা ওয়াদায় পরিনত হয়ে যায়❤️
মিথ্যা কথা বা কথা দিয়ে কথা না রাখা আমাদের সমাজে আজকাল অহরহ। অনেকেই একে গুনাহ মনে করেন না। দেদারছে আওড়ে যান মিথ্যা বুলি। দেন প্রতিশ্রুতি। কিন্তু কুরআন হাদিসে মিথ্যা কথা বা কথা দিয়ে কথা না রাখার জন্য শোনানো হয়েছে কঠিন শান্তির বাণী।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে ইমানদাররা! আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সহযোগী হও।’ (সুরা তাওবা, আয়াত : ১১৯)
আর যারা কথা দিয়ে কথা রাখে না তাদের ব্যাপারে কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘এবং তোমরা ওয়াদা পালন করবে। ওয়াদা সম্পর্কে তোমাদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে’। [১৭ : ৩৪]
রাসুল সা. বলেন, এও বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি ওয়াদা রক্ষা করে না; দীন ইসলামে তার কোনো অংশ নেই। প্রিয় মুলসমান ভাই ও বোনেরা মোনাফেকের আলামত।
আল্লাহ না করুন এই জন্য হয়ত কিয়ামতের দিন আমাদের মোনাফেকদের কাতারে দাঁড়াতে হতে পারে। এই জন্য আসুন আমরা ওয়াদা রক্ষা করি।
আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা, তোমরা কেন এমন কথা বলো! যা কাজে পরিণত করো না, এটা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত জঘন্য ও ঘৃণিত কাজ যে তোমরা বলবে এমন কথা যা করবে না।’-(সুরা : সফ, আয়াত : ২-৩)
যে লোক নিজ (ওয়াদা) প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করবে এবং পরহেজগার হবে, অবশ্যই আল্লাহ পরহেজগারদেরকে ভালবাসেন। যারা আল্লাহর নামে কৃত অঙ্গীকার এবং প্রতিজ্ঞা সামান্য বিনিময়ে বিক্রয় করে, আখেরাতে তাদের কোনো অংশ নেই। আর তাদের সঙ্গে কেয়ামতের দিন আল্লাহ কথা বলবেন না। তাদের প্রতি (করুণার) দৃষ্টিও দেবেন না। আর তাদের পরিশুদ্ধও করবেন না। বস্তুত তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আজাব। -(সুরা ইমরান : আয়াত ৭৬-৭৭)
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা মুনাফিকের আলামত। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ বলেছেন, ‘মুনাফিকের আলামত তিনটি ১. কথা বললে মিথ্যা বলে, ২. ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে, ৩. তার কাছে আমানত রাখা হলে সে খেয়ানত করে।’-(বুখারি, হাদিস : ১/৩৩)
কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারীর ওপর রাগান্বিত থাকবেন। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কোনও মুসলিমের সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্য অথবা তার ভাইয়ের সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্য যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম করবে, আল্লাহর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ এমন অবস্থায় ঘটবে যে, আল্লাহ তার ওপর রাগান্বিত থাকবেন। এ কথার সত্যতার জন্য আল্লাহতায়ালা অবতীর্ণ করেন, নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছমূল্যে বিক্রি করে, তারা আখিরাতের নেয়ামতের কোনো অংশই পাবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৬৫৯)
একবার ভেবে দেখুন তো কেউ আপনাকে কথা দিয়ে যদি না রাখে আপনার কেমন লাগবে। আপনি যার কথা রাখেননি তার ওতো তেমন খারাপ লাগছে। আর কথা দিয়ে পালন না করলে আমাদের নানান ধরণের সমস্যায় পড়তে হয়।
অতএব আমরা কাউকে কথা দিলে সেটা পালন করবো।
আসুন, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি, রাজি, খুশি, নৈকট্য অর্জনে আমরা ওয়াদা বা প্রতিশ্র“তি যথাযথ পালনে সচেষ্ট হই।