14/08/2025
আল্লাহ্ মাফ করুন।
পোস্ট মডার্ন বাস্তবতায় গালি দিয়ে কথা বলা, স্ল্যাং ব্যবহার করে কথা বলাটাই নাকি ট্রেন্ড আর ফ্যাশন আজকাল।
খেয়াল করলে দেখবেন, আমাদের চারপাশের সেলেব্রেটি ফেইস, যারা নিত্যদিন ক্যামেরার সামনে আসেন বা সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখাজোকা লিখেন, পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিস্ট থেকে শুরু করে সাধারণ অ্যাক্টিভিস্ট, অনেকের কাছে গালি আর স্ল্যাং ব্যবহারটা কেমন যেন ডালভাত টাইপ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এটা নাকি উত্তর আধুনিক বিশ্বের রাজনৈতিক আর সামাজিক বাস্তবতা!
আপনারা যেটাকে ট্রেন্ড মনে করে অনুসরণ করা শুরু করেছেন, সেটা আদতে ফিতনা। এবং উত্তর আধুনিক যামানায় ফিতনার বৈশিষ্ট্যই হলো যে—সমাজে এটা ট্রেন্ড আকারে স্বাভাবিক হওয়া শুরু করে।
প্র্যাকটিসিং মুসলিম বলে চিনি এমন অনেককেও এই ফিতনায় দেদারসে গা ভাসাতে দেখি। সুবহানাল্লাহ, মুসলমানিত্বের মোরাল কোড, ম্যানারিজম, ইসলামের বেসিক প্রিন্সিপালকে ভুলে গিয়ে তারা তাল মিলাচ্ছে যুগের সেইসব ফিতনার সাথে যা ইসলামে কোনোভাবেই, কোনোরূপেই সমর্থনযোগ্য নয়।
আমি বুঝি যামানার বাস্তবতা অনুযায়ী একটু গালির মিশেল থাকলে, একটু স্ল্যাংয়ের উপস্থিতি থাকলে বক্তব্যে একটা জোশ আসে, একটু বেশি প্রতিবাদী শোনায়, একটু বেশি বোল্ড আর অপ্রতিরোধ্য বলে মনে হয়। জেনজিকে কানেক্ট করতে হলে এসব না করে উপায়ও থাকে না অনেকসময়।
কিন্তু, দিনশেষে গালি তো গালিই। স্ল্যাং তো স্ল্যাংই। ইসলামের সাথে অন্য সব বিধান, সব ধর্ম, মত আর পথের পার্থক্য হলো—এটা একটা পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। যামানার বাস্তবতা হয়ত আপনাকে স্ল্যাং ব্যবহারের জন্য উস্কানি দিচ্ছে, কিন্তু আপনাকে ভাবতে হবে—আল্লাহর দেওয়া জীবনবিধানের সাথে এই বাস্তবতা যায় কী না৷
কুরআনে স্পষ্ট বলা আছে, যখন মূর্খরা তর্ক করতে আসে, তখন তাদেরকে ‘সালাম’ বলে বিদায় নিতে। অথচ, আমরা এখন গালি আর স্ল্যাং ব্যবহার করে প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করতে মরিয়া৷ যার গালি আর স্ল্যাং যত ইউনিক, তার জনপ্রিয়তা, গ্রহণযোগ্যতা ততবেশি। গালির ব্যবহারে যে যত পারদর্শী, সে তত বড় বিপ্লবী।
সত্যিকারের মুমিন তারা, যারা নিজেদের সামনে বাটখারা হিশেবে রাখে আল্লাহর বিধানকে৷ যামানার সমস্ত বাস্তবতাকে, যেগুলোর অধিকাংশতেই ফিতনার ছড়াছড়ি, তারা সেই বাস্তবতাকে দ্বীনের বাটখারা দিয়ে মেপে নেয়। যদি তা আল্লাহর নাযিল করা বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক না হয়, যদি তা ইসলামের মোরাল কোডের বাইরে না চলে যায়, তবেই তারা সেই বাস্তবতাকে গ্রহণ করে।
ফিতনা তো ফিতনাই, দেখতে এবং শুনতে তা যতোই মাধুর্যমণ্ডিত হোক না কেন।