আকাশনীলা

আকাশনীলা আকাশ প্রিয় একজন।
(5)

আরাফার দিনে এক জীবন বদলে যাওয়ার ঘটনা-অবশ্যই পড়ুন ⬇️এক ভাই এই হৃদয়স্পর্শী গল্পটি শেয়ার করেছেন:ঠিক এক বছর আগে, আমার সুপ...
04/06/2025

আরাফার দিনে এক জীবন বদলে যাওয়ার ঘটনা-

অবশ্যই পড়ুন ⬇️

এক ভাই এই হৃদয়স্পর্শী গল্পটি শেয়ার করেছেন:

ঠিক এক বছর আগে, আমার সুপারমার্কেটে একটি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট হয় এবং আগুন লেগে যায়। এতে আমার পণ্যের তিন-চতুর্থাংশ ধ্বংস হয়ে যায়।

এই ঘটনাটি ঘটেছিল আরাফার দিনের ঠিক দুই দিন আগে!

আপনি কল্পনা করতে পারেন, আমি কী অবস্থায় ছিলাম — ঈদুল আযহা আসছে, অথচ আমার ব্যবসা, পণ্য, দোকান — সব কিছু ধ্বংসপ্রাপ্ত। কোনো ঈদের উপহার নেই, আনন্দ নেই, শুধু দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা, আর প্রচণ্ড ঋণ।

আমি তখন সদ্যবিবাহিত— মাত্র দুই মাস হয়েছে বিয়ে হয়েছে। যে পণ্যগুলো পুড়ে গেছে তার মূল্য ছিল প্রায় $১৫,০০০। তখন আমি ভাবতে থাকি: আমি এখন কী করবো? কীভাবে এটা সামলাবো? আমার স্ত্রীর গয়না বিক্রি করতে বলবো? সে তো এখনো নতুন বউ! কিংবা ঋণ নেবো? কার কাছ থেকে?

শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিলাম— বন্ধুবান্ধবদের থেকে ধার করবো। কিন্তু যাদের কাছেই গেলাম, তারা বললো,“ঈদ আসছে ভাই, এখন পারছি না।”

দুই দিন এভাবে কেটে গেল। হতাশ হয়ে কেবল $৮০০ জোগাড় করতে পারলাম। এটি আমার ক্ষতির তুলনায় এক ফোঁটা পানির মতো ছিল।

সেই রাতে বাসায় ফিরছিলাম, তখন পাশের বাসার একজন আমাকে বললেন,“ঈদ মোবারক ভাই! কাল যেন আরাফার রোজা রাখতে ভুলে যেও না!”

আমি মনে মনে বললাম, এখন রোজার কথা বলছো? দয়া করে আমাকে একা থাকতে দাও…

আমার স্ত্রী মন ভালো করার জন্য হাঁটতে যাওয়ার প্রস্তাব দিল। আমরা বের হলাম,কিন্তু আমি এতটাই চিন্তায় ডুবে ছিলাম যে কিছুই উপভোগ করতে পারছিলাম না।

বাসায় ফিরে সে বললো, “চলো সেহেরির জন্য প্রস্তুতি নেই, ভোর হয়ে আসছে।” আমি বললাম, “সেহরি? আমি তো ভুলেই গেছি আগামীকাল আরাফার দিন! তুমি আর আমি যেন দুই ভিন্ন জগতে বাস করছি। এখন সেহরি? এখন রোযা?”

সে মৃদুভাবে বললো, “আল্লাহ আমাদের জন্য এটা নির্ধারণ করেছেন। তিনি আমাদের ছেড়ে দেবেন না। কিন্তু আমাদের রোজা রাখা উচিত।”

তার অনুরোধে রোজার নিয়ত করলাম।
সন্ধ্যার পর সে বললো,“তোমার রবের কাছে দোয়া করো।”

আমি বললাম,“কি দোয়া করবো?”
সে বললো,“যা চাও তাই দোয়া করো।”

আমি বললাম,“১৫,০০০ ডলার চাওয়া কি সম্ভব? আকাশ থেকে টাকা পড়ে আসবে?”

সে বললো,“যিনি আকাশ সৃষ্টি করেছেন, তিনি সবকিছু করতে পারেন।”

সে নামাজে দাঁড়ালো,দোয়া করলো। আমিও দোয়া করলাম, যদিও মনজুড়ে শুধু ১৫,০০০ ডলারই ঘুরপাক খাচ্ছিল।

মাগরিবের পর এক বন্ধু ফোন করলো, বললো,“ক্যাফেতে আসো, জরুরি কথা আছে।”

গেলাম। সে বললো, “ভাই, একটা সুযোগ আছে, তুমি ছাড়া আমি আর কাউকে ভাবতে পারছি না। আমার এক বন্ধু সম্প্রতি টাকা পেয়েছে, ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে। তুমি কি অংশীদার হবে?”

আল্লাহু আকবার! সে ব্যক্তি এল, বললো,“আমার কাছে $৩০,০০০ আছে, বিনিয়োগ করতে চাই।”

আমি বললাম,“আমার দোকানে নতুন মাল আনতে $১৫,০০০ লাগবে। বাকি $১৫,০০০ দোকান সংস্কারে লাগবে। আপনি চাইলে অর্ধেক অংশীদার হতে পারেন।”

সব ঠিক হলো। ঈদের পর সুপারমার্কেট আবার খুলে দিলাম। আনন্দে মন ভরে উঠলো।

ওহ, আর একটা বিষয় বলতে ভুলে গেছি — দোকানে আগুন লাগার এক সপ্তাহ আগে আমার মা'র ক্যান্সারের সন্দেহে টেস্ট হয়েছিল। রিপোর্ট পাওয়ার কথা ছিল আরাফার দিন।

রিপোর্ট এলো — ক্যান্সার নেই! মা সম্পূর্ণ সুস্থ!
মা আনন্দে সারাদিন কেঁদেছেন — শুকরিয়া জানিয়েছেন আল্লাহর কাছে।

দোকানও খুলে গেল, মা সুস্থ হলেন, এমন সময় আমার স্ত্রী আমাকে ফোন করে জানালো — সে গর্ভবতী!

সে বললো: “এখন বুঝছো আরাফার রোজা ও দোয়ার শক্তি?”

আমি মনে মনে বললাম, সুবহানআল্লাহ… কিছুদিন আগেও মনে হচ্ছিল পৃথিবীটা ভেঙে পড়ছে, আজ সবকিছু বদলে গেছে — একটিমাত্র খাঁটি দোয়ার মাধ্যমে।

সেদিন আমি আল্লাহর সামনে বিনয় শিখলাম— যা কখনো ভুলবো না।

আল্লাহ আমাদের সাথে আছেন। কখনো কখনো তিনি আমাদের কষ্ট দেন যেন আমরা তাঁর দিকে ফিরে যাই।

ঈদের পর ব্যবসা ভালো চললো, পুরো $৩০,০০০ ফেরত দেওয়ার সময় এল। আমি সেই ব্যক্তিকে টাকা ফেরত দিতে গেলাম— কিন্তু তখন ঘটনা মোড় নিল।

সে বললো, “আসলে এই টাকা আমার না। কারো স্ত্রী ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়েছেন, তিনি এই টাকা কাউকে anonymously সাহায্য করতে চেয়েছিলেন — তাই তোমাকে দেওয়া হয়েছে।”

এই টাকা এখন তোমার। কেউ ফেরত চাইবে না।

আল্লাহর কসম করে বলছি, আমি বাসায় গিয়ে নিজের ঘরে দরজা বন্ধ করে এক ঘণ্টা কাঁদলাম — শিশুর মতো। আল্লাহর দয়া আর কৃপায় অভিভূত হয়ে পড়লাম।

আজও যখন এই ঘটনা মনে পড়ে, আমি শুধু চোখের জল ফেলি না — মনে হয় রক্তঝরা চোখে কাঁদছি। আল্লাহর কাছ থেকে এতটা দূরে ছিলাম, অথচ তিনি এত কাছে ছিলেন।

এই অভিজ্ঞতা আমাকে শিখিয়েছে আরাফার দিনের রোজা, দোয়া এবং আল্লাহর উপর ভরসা রাখার প্রকৃত অর্থ।

এটাই ছিল আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট— যেদিন আমি তওবা করলাম, আল্লাহর দিকে ফিরে এলাম।

©

31/05/2025

যে ফজরের সালাত আদায় করে সে আল্লাহর কাছে খুব সম্মানিত । আল্লাহ তাকে তাঁর রহমতের চাদরে আবৃত করেন, সে আল্লাহর হেফাজতে থাকে।

আল্লাহ যেন আমাদের ফজরের ঘুম ভাঙ্গিয়ে দেন এবং আল্লাহর সম্মানিত বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করুন ।

আমিন ইয়া রব।

শুভ মধ্যাহ্ন, চাঁদপুর।
31/05/2025

শুভ মধ্যাহ্ন, চাঁদপুর।

30/05/2025

আলহামদুলিল্লাহ্।
শুভ সকাল।

30/05/2025

কেন যেন মনে হয়- এটা কি আবার?

27/05/2025

*জিলহজ্জ মাসের প্রথম ১০ দিন*

*মহান জিলহজ্জের গুরুত্বপূর্ণ তারিখসমূহ:*

- ১ জিলহজ্জ – বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
- ২ জিলহজ্জ – বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
- ৩ জিলহজ্জ – শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫
- ৪ জিলহজ্জ – শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
- ৫ জিলহজ্জ – রবিবার, ১ জুন ২০২৫
- ৬ জিলহজ্জ – সোমবার, ২ জুন ২০২৫
- ৭ জিলহজ্জ – মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
- ৮ জিলহজ্জ – বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
- ৯ জিলহজ্জ – বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫ (আরাফাহ দিবস)
- ১০ জিলহজ্জ – শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫ (ঈদুল আযহা)

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
আল্লাহর কাছে এমন কোনো দিন নেই যেখানে নেক আমল এই দশ দিনের চেয়ে অধিক প্রিয়।
(বুখারী)

এই বরকতময় দিনগুলো থেকে সর্বোচ্চ ফায়দা তোলার কিছু পরামর্শ:

*১. নিয়ত ঠিক করুন*
— প্রতিটি কাজ শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করুন। ছোট কাজও এই দিনে বড় ফজিলতের কারণ হতে পারে।

*২. রোযা রাখুন (বিশেষত আরাফাহ দিবসে)*
— রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
আরাফাহ দিবসে রোযা রাখা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী এক বছরের গোনাহ মাফ করে দেয়।

*৩. নিয়মিত সালাত পড়ুন, সময়মতো আদায় করুন*
— এই দিনগুলো আল্লাহর নিকট খুবই প্রিয়। সালাতের মাধ্যমে তা প্রমাণ করুন।

*৪. তাকবীর, তাহমীদ, তাহলীল ও তাসবীহ বেশি বেশি বলুন*
— তাকবীর পাঠ করুন: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
— হৃদয় থেকে বলুন, বারবার বলুন।

*৫. দান করুন*
— নীরবে কাউকে সাহায্য করুন, হাসিমুখে দিন। আপনার ছোট্ট দান কারো জীবনে আশীর্বাদ হতে পারে।

*৬. বেশি বেশি কুরআন পড়ুন*
— প্রতিদিন কিছু আয়াত হলেও পড়ুন। কুরআনের সাথে হৃদয়ের বন্ধন গড়ে তুলুন।

*৭. দুআ বেশি করুন*
— এই দিনগুলো দুআ কবুলের দিন। আল্লাহর সাথে কথা বলুন — তিনি শুনছেন।

*৮. পাপ পরিহার করুন*
— তওবা করুন, ক্ষমা চান।
— এই দিনগুলো নতুনভাবে আল্লাহর পথে ফিরে আসার এক সুবর্ণ সুযোগ।

শ্রেষ্ঠ দিনগুলোতে দিন আপনার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা
— যেন এই দিনগুলো আর দশ দিনের মতো না কেটে যায়।

> আপনার পরিবার ও বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন, এটা আপনার জন্য সদকায়ে জারিয়াও হতে পারে।🌷

`সংগৃহীত__`

25/05/2025

ঈমান হোক পর্বতসম, নিয়ত হোক স্বচ্ছ।

24/05/2025

সকল প্রত্যাশা থাকুক শুধুমাত্র মহান রবের দরবারে।

অনেক ভুলের মাঝেই আমাদের বসবাস।
20/05/2025

অনেক ভুলের মাঝেই আমাদের বসবাস।

ডায়াবেটিস ॥ ভুল ধারণা ও প্রকৃত সত্য
অধ্যাপক (ডাঃ) এ বি এম আব্দুল্লাহ
ডায়াবেটিসকে বলা হয় নীরব ঘাতক। বিশ্বের বহু মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। মানুষের মাঝে এ রোগ নিয়ে একাধিক ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। আসল সত্য তুলে ধরেন।

বুধবার ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৯, ১৮ মে ২০২২ ঢাকা, বাংলাদেশ।
ফেসবুকঃ E-Daily Janakantha

(১) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস কোনদিনও ভাল হয় না :
* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিসকে বলা হয় চিরজনমের রোগ। তবে কিছু কিছু রোগের কারণে ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে, তাকে বলে সেকেন্ডারি ডায়াবেটিস। যেমন-এক্রোমেগালি, থাইরোটক্সিকোসিস, প্যানক্রিয়াটিক ডিজিজ, কুশিং সিনড্রোম। এ সমস্ত রোগের চিকিৎসা করলে ডায়াবেটিস ভাল হতে পারে। কিছু কিছু ওষুধ ব্যবহারে ডায়াবেটিস হয়। যেমন- অনেকদিন ধরে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ খেলে। এগুলো ছেড়ে দিলে আবার ডায়াবেটিস ভাল হয়ে যায়। নিয়মশৃঙ্খলা মেনে চললে এবং প্রয়োজনে ওষুধ নিয়মিত খেলে ডায়াবেটিস সেরে যেতে পারে।
(২) ভুল ধারণা- ভাত বা কার্বোহাইড্রেট একেবারেই খাওয়া যাবে না :
* প্রকৃত সত্য- অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিস হলে আর ভাত খাওয়া যাবে না। কথাটা একেবারেই সত্য নয়। ভাত বা কার্বোহাইড্রেট পরিমাণ মতো খাওয়া যাবে। সাধারণত সকালে- রাতে গমের রুটি খেতে বলা হয় এবং দুপুরে পরিমাণ মতো মেপে ভাত খেতে দেয়া হয়।
(৩) ভুল ধারণা- কৃত্রিম চিনি ইচ্ছামতো ব্যবহার করা যাবে :
* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিস রোগীদের কোন প্রকার মিষ্টান্ন খাওয়া উচিত নয় বলে ভাবেন অনেকে। এটি ভুল ধারণা। সাধারণ চিনি না খেয়ে কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সেটাও হতে হবে পরিমিত। ইচ্ছে মতো অতিরিক্ত কৃত্রিম চিনি ব্যবহার করা উচিত না।
(৪) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস রোগীরা ফল খেতে পারেন না:
* প্রকৃত সত্য- এটাও একটা ভুল ধারণা। ডায়াবেটিস রোগীরা যে কোন ফল খেতে পারবেন। যেমন- কলা, আপেল, কমলা, আঙ্গুর ইত্যাদি। তবে তা যেন হয় পরিমিত।
(৫) ভুল ধারণা - মিষ্টি খেলেই ডায়াবেটিস হয় :
* প্রকৃত সত্য- মিষ্টি খেলেই ডায়াবেটিস হয়- এ কথাটা ঠিক নয়। সরাসরি মিষ্টি খাওয়ার সঙ্গে ডায়াবেটিস হওয়ার কোন যোগসূত্র নেই। মিষ্টি বেশি না খেলেও ডায়াবেটিস হতে পারে। আসলে পারিবারিক ইতিহাস, ওজন বৃদ্ধি, অস্বাস্থ্যকর খাবার, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা বা পরিশ্রমবিহীন অলস জীবন যাপন ইত্যাদি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই বলে ইচ্ছে মতো চিনি বা মিষ্টি কোনক্রমেই বেশি খাওয়া উচিত নয়।
(৬ ) ভুল ধারণা- মিষ্টিজাতীয় ওষুধ খেলে ডায়াবেটিস বাড়বে :
* প্রকৃত সত্য- কিছু কিছু সিরাপ জাতীয় ওষুধ বেশ মিষ্টি, যেগুলোতে সামান্য সুগার বা স্যাকারিন দেয়া হয়। অনেক ডায়াবেটিস রোগীর ধারণা এগুলো খেলে ডায়াবেটিস বেড়ে যেতে পারে। আসলে তা ঠিক নয়। কারণ, এই সিরাপগুলোতে খুব সামান্য পরিমাণ স্যাকারিন মিশ্রিত থাকে। রোগের কারণে ওষুধটাই জরুরী। এগুলো সেবনে ডায়াবেটিস বাড়ার তেমন কোন ঝুঁকি নেই।
(৭) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস ছোঁয়াচে হতে পারে :
* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিস কোন ছোঁয়াচে রোগ নয়। বরং জেনেটিক বা বংশগত কারণে হতে পারে। যেমন- বাপ-মা, ভাই-বোন, নিকটাত্মীয় কারও ডায়াবেটিস থাকলে অন্যদেরও হতে পারে।
(৮) ভুল ধারণা- হোমিওপ্যাথিক বা হার্বাল মেডিসিনে ডায়াবেটিস ভাল হয় :
* প্রকৃত সত্য- আসলে এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি তিনটা ‘ডি’-
* প্রথম ডি-ডায়েট কন্ট্রোল বা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ। ৬০ থেকে ৮০ ভাগ রোগী এতেই ভাল থাকেন।
* দ্বিতীয় ডি- ডিসিপ্লিন বা শৃঙ্খলা। সুশৃঙ্খল জীবনযাপন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের মূল চাবিকাঠি।
* তৃতীয় ডি- ড্রাগ বা ওষুধ, খুব অল্প সংখ্যক রোগীর ওষুধের প্রয়োজন পড়বে।
(৯) ভুল ধারণা- তিতা জাতীয় জিনিস যেমন- করলা, মেথি বা নিমপাতা খেলে ডায়াবেটিস সেরে যায় :
* প্রকৃত সত্য- তিতা স্বাদযুক্ত খাবার রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হ্রাস করে বলে মনে করেন অনেকেই। এ কারণে করলা বা নিম বা অন্যান্য তিতা খাবার খান। এটা একটি ভুল ধারণা। তিতা খেলে ডায়াবেটিস রোগে উপকার হয়, এ রকম ধারণা কমবেশি প্রচলিত থাকলেও বিজ্ঞানসম্মত এর কোন প্রমাণ নেই যে, এগুলো রক্তে গ্লুকোজের নিয়ন্ত্রণ করে।
(১০) ভুল ধারণা- সাধারণ চিনিমুক্ত খাবার বা পানীয় ইচ্ছেমতো খাওয়া যায় :
* প্রকৃত সত্য- এ কথাও সত্য নয়। বাজারে ‘ডায়াবেটিক’ পানীয় যেমন- কোক, পেপসি, সেভেন আপ ইত্যাদি এমনকি ডায়াবেটিক সন্দেশ, বিস্কুট, জ্যাম, চকলেট পাওয়া যায়। এসব খাবারের গায়ে চমকপ্রদ কিছু লেখা আর চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে স্বাভাবিকভাবেই একজন ডায়াবেটিস রোগীর খেতে মন চায়। ডায়াবেটিক রোগীরা মাঝেমধ্যে মিষ্টির বদলে এগুলো খেতে পারেন। তবে সব সময় খাওয়া উচিত না।
(১১) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা প্রয়োজনে কাউকে রক্তদান করতে পারবেন না :
* প্রকৃত সত্য- ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা কখনও অন্য মানুষকে রক্তদান করতে পারেন না, এমনটাই ধারণা অনেকের। তবে এ ধারণা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলে বা অন্য কোন সমস্যা না থাকলে রক্তদানে কোন সমস্যা নেই।
(১২) ভুল ধারণা- নিয়ন্ত্রণে এলে অনেকেই শারীরিক সমস্যা হচ্ছে না মনে করে ওষুধ বন্ধ করে দেন। মনে করেন ওষুধ না খেলেও চলে :
* প্রকৃত সত্য- কোন কোন রোগী একবার সুগার নিয়ন্ত্রণে এসে গেলেই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু বাস্তবে ওষুধের কারণেই সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে। ওষুধ বন্ধ করা হলে সুগারের মাত্রা আবার বাড়তে থাকে। তাই নিয়ন্ত্রণে এলেই ওষুধ বন্ধ করা মোটেও ঠিক নয়।
(১৩) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিক রোগীরা ওষুধ খাওয়ার পরে যত খুশি মিষ্টি খেতে পারেন :
* প্রকৃত সত্য- এ ধারণাটা মোটেই ঠিক নয়। হয়ত মাঝেমধ্যে একটু আধটু মিষ্টি খাওয়া যেতে পারে। তার মানে যত খুশি তত মিষ্টি খাওয়া কোনক্রমেই উচিত হবে না। তবে অনেকেই ডায়াবেটিস অতিরিক্ত কন্ট্রোল করতে গিয়ে স্বাভাবিক খাওয়া-দাওয়া একেবারেই কমিয়ে দেন বা ছেড়ে দেন। তা মোটেও ঠিক নয়। অবশ্যই পরিমিত পুষ্টিকর বিশুদ্ধ খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে।
(১৪) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস সারা জীবনের সঙ্গী। এটি থেকে আর কোনদিন পরিত্রাণ পাওয়া যায় না :
* প্রকৃত সত্য- এই বিষয়টি সত্যি নয়। সঠিক নিয়ম ও উপায় অবলম্বন করে খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস মুক্ত হওয়া যায়।
(১৫) ভুল ধারণা- একবার ডায়াবেটিসের ওষুধ শুরু করলে আর কোন সময়ই তা বন্ধ করা যাবে না :
* প্রকৃত সত্য- এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। স্থূলকায় ব্যক্তিদের ওজন নিয়ন্ত্রণ, ডায়েট কন্ট্রোল এবং নিয়মিত ব্যায়াম করলে ডায়াবেটিস অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। প্রয়োজনে ওষুধ বন্ধ করা যেতে পারে।
(১৬) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা তাড়াতাড়ি মারা যায় :
* প্রকৃত সত্য- এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। শৃঙ্খলা মেনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করলে অবশ্যই জীবনযাত্রা স্বাভাবিক থাকবে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে অনেক ধরনের জটিলতা হতে পারে।
(১৭) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে ইনসুলিন সর্বশেষ চিকিৎসা :
* প্রকৃত সত্য- ইনসুলিন একজন ডায়াবেটিস রোগীর জীবনে যে কোন সময়ই লাগতে পারে। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়, যে কোন অপারেশনের সময়, কোন গুরুতর রোগে হাসপাতালে থাকাকালীন। যেমন- হার্ট এ্যাটাক, স্ট্রোক বা মারাত্মক কোন সংক্রমণের সময়, কিডনি বা যকৃতের জটিলতায় ইনসুলিনই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ। এ ছাড়া কোন কারণে রক্তে গ্লুকোজ অনেক বেড়ে গেলেও ইনসুলিন দরকার হবে। ব্যাপারটা এমন নয় যে, ইনসুলিন দেয়া হচ্ছে মানে অবস্থা খুব জটিল বা মরণাপন্ন। তবে অবস্থার উন্নতি হলে ইনসুলিন বন্ধ করা যেতে পারে এবং মুখে খাওয়ার ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। তার মানে ইনসুলিন সর্বশেষ চিকিৎসা নয়।
(১৮) ভুল ধারণা - একবার ইনসুলিন ব্যবহার করলে সারা জীবনই তা নিতে হবে :
* প্রকৃত সত্য- বিষয়টা আসলে তা নয়। নানা কারণে ইনসুলিনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে পারে। আবার পরে তা পরিবর্তন করে বা বন্ধ করে ওষুধ খাওয়াও যেতে পারে। যেমন- গর্ভাবস্থা কেটে যাওয়ার পর বা অস্ত্রোপচারের ঘা শুকিয়ে যাওয়ার পর একসময় ইনসুলিন বন্ধ করে আবার ওষুধ খাওয়া যায়। তবে টাইপ ১ ডায়াবেটিস, কিডনি ও যকৃতের গুরুতর সমস্যা এবং সর্বোচ্চ মাত্রায় ওষুধ ব্যবহার করেও যদি গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রিত না হয়, এসব ক্ষেত্রে সব সময়ের জন্য ইনসুলিন ব্যবহার করতে হবে।
(১৯) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মায়ের গর্ভধারণ করা ঠিক নয়, এমনকি বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো যাবে না:
* প্রকৃত সত্য- এ ধারণাটা মোটেও ঠিক নয়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে গর্ভধারণে কোন নিষেধ নেই, এমনকি বাচ্চাকে দুধ খাওয়ালেও বাচ্চার কোন ঝুঁকি নেই।
(২০) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা কখনোই রোজা রাখতে পারবেন না :
* প্রকৃত সত্য- এই ধারণা মোটেও ঠিক নয়। ডায়াবেটিসের চিকিৎসার মূলমন্ত্র হলো খাদ্য নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা। রোজা একটা সুবর্ণ সুযোগ, যা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকলে রোগীরা অবশ্যই রোজা রাখতে পারবেন। প্রয়োজনে ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। এমনকি রোজা রেখে দিনের বেলায় রক্তের সুগার মাপা যাবে, প্রয়োজনে রোজা রেখে ইনসুলিন ইনজেকশন দেয়া যাবে। এতে রোজা ভঙ্গ হবে না।

(২১) ভুল ধারণা- ডায়াবেটিস রোগীরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে ওরস্যালাইন খেতে পারবেন না :

* প্রকৃত সত্য - অনেকে মনে করেন ওরস্যালাইনের মধ্যে গ্লুকোজ থাকে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীর ডায়রিয়া হলে ওরস্যালাইন খাওয়া উচিত নয়। এ ধারণাটা মোটেও ঠিক নয়। কারণ ওরস্যালাইনে সামান্য গ্লুকোজ থাকে। এতে ডায়াবেটিসের ততটা ক্ষতি হয় না।

সুতরাং যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের এসব ভ্রান্ত ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ডায়াবেটিসকে ভয় না পেয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

লেখক : অধ্যপক ডা: এ বি এম আবদুল্লাহ

কী হচ্ছে এসব?
20/05/2025

কী হচ্ছে এসব?

উড্ডয়নের পরপরই পাইলট একটি ইঞ্জিনে কিছুটা স্পার্ক দেখতে পান। ধারণা করা হচ্ছে...

বিস্তারিত : https://www.somoynews.tv/news/2025-05-20/y21FJIM6

Address

Chittagang
Chittagong

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when আকাশনীলা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to আকাশনীলা:

Share

Category