মাসলাকে আ‘লা হযরত রহমতুল্লাহি আলাইহি

  • Home
  • Bangladesh
  • Chittagong
  • মাসলাকে আ‘লা হযরত রহমতুল্লাহি আলাইহি

মাসলাকে আ‘লা হযরত রহমতুল্লাহি আলাইহি Here We Will Publish Pure Aqida of Ahlu Sunnah wal Jamath.

23/06/2025

📌 রিজিকের ফয়সালা আসমানে হয়, জমিনে না!
✍️ আল-কুরআন ও হাদীসের আলোকে এক গুরুত্বপূর্ণ উপলব্ধি

"যদি রিজিক শক্তির ওপর নির্ভর করত, তবে বাঘ কোনো দিন না খেয়ে থাকত না — আর দুর্বল চড়ুই পাখি প্রতিদিন খাবার পেত না!"

🔰 কুরআনের ঘোষণা:

وَمَا مِن دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا
“যমীনে বিচরণকারী এমন কোনো প্রাণী নেই যার রিজিক আল্লাহর দায়িত্ব নয়।”
📖 সূরা হুদ – আয়াত ৬

🕊️ পাখির উদাহরণে রাসূল ﷺ বললেন:

«لَوْ أَنَّكُمْ تَوَكَّلْتُمْ عَلَى اللهِ حَقَّ تَوَكُّلِهِ، لَرُزِقْتُمْ كَمَا يُرْزَقُ الطَّيْرُ، تَغْدُو خِمَاصًا، وَتَرُوحُ بِطَانًا»
“তোমরা যদি আল্লাহর উপর যথার্থ ভরসা করতে, তবে রিজিক পেতে যেমন পায় পাখিরা—সকাল বেলা খালি পেটে বের হয়, সন্ধ্যায় পেটভরে ফিরে আসে।”
📘 তিরমিযী: ২৩৪৪

🟢 আল্লাহ বলেন:

إِنَّ اللَّهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ
“নিশ্চয়ই আল্লাহই রিজিকদাতা, শক্তিশালী ও সুদৃঢ়।”
📖 সূরা যারিয়াত – আয়াত ৫৮

📌 মূল বার্তা:
শক্তি নয়, আল্লাহর তাওয়াক্কুলই রিজিকের মূল চাবিকাঠি।
✔️ পরিশ্রম করো ✅
✔️ কিন্তু ভরসা রাখো একমাত্র আল্লাহর উপর ☝️

🤲 আল্লাহ আমাদের হালাল রিজিকের দরজা খুলে দিন – আমীন।

#রিজিক #তাওয়াক্কুল #আল্লাহর_উপর_ভরসা #رزق

প্রসঙ্গ  : ১হুযুর পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যবহৃত ও বরকতময় জিনিস সম্মানার্থে বিক্রি, নিলামে তোলা বা সংর...
24/12/2024

প্রসঙ্গ : ১
হুযুর পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যবহৃত ও বরকতময় জিনিস সম্মানার্থে বিক্রি, নিলামে তোলা বা সংরক্ষণ করার শরয়ী বৈধতা আছে কিনা?

- মুহাম্মদ রুবাইয়াত বিন মুসা
প্রভাষক : সাঁইদাইর গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া দিলোয়ারা বেগম সুন্নিয়া ফাজিল মাদ্রাসা।

হুকুম :
১. রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যবহৃত নিদর্শন থেকে বরকত অর্জন শরীয়তে বৈধ বরং সাহাবায়ে কেরামের সুন্নত।
২. নিদর্শন বিক্রি বা নিলামে তোলার ক্ষেত্রে শরীয়তের সীমারেখা মেনে চলতে হবে।
৩. নিদর্শন সংরক্ষণ করা এবং তা থেকে প্রজন্মান্তরে মুসলিম উম্মাহকে উপকৃত করা ইসলামী ঐতিহ্যের অংশ।

বিশ্লেষণ :
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিদর্শন, যেমন চুল, জামা, পানির পাত্র, লাঠি মুবারক ইত্যাদি, মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত বরকতময় এবং সম্মানের বিষয়। ইসলামি শরীয়তের দৃষ্টিতে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়। সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেয়ীনের আমলে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিদর্শন সংরক্ষণ, বিক্রয়, বরকত লাভ এবং প্রজন্মান্তরে হস্তান্তরের প্রমাণ বিদ্যমান।

১. বুখারী শরীফে রয়েছে,
উম্মে সালমা (রা) বর্ণনা করেন:
> "كَانَتْ عِنْدَ أُمِّ سَلَمَةَ زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَدَحٌ مِنْ فِضَّةٍ فِيهِ شَعَرَاتٌ مِنْ شَعَرِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكَانَ إِذَا أَصَابَ الإِنْسَانَ عَيْنٌ أَوْ شَيْءٌ بَعَثَ إِلَيْهَا مِخْضَبَهَا، فَتَرَسَلْ لَهُ فِيهِ.
- উম্মে সালমা (রাযি.)-এর কাছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু চুল সংরক্ষিত ছিল। যখন কেউ অসুস্থ হতেন বা দৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হতেন, তারা উম্মে সালমার কাছে একটি পাত্র পাঠাতেন। তিনি সেই পাত্রে চুল ধুয়ে সেই পানি তাদের দিতেন। [ বুখারী : আস সহীহ, কিতাবুল লিবাস, باب ما يذكر في الشعر، হাদীস নম্বর: ৫৮৭০]

২. ইমাম নববী (র) এর বক্তব্য:
ইমাম নববী (রহ.) বলেন,
وَالتَّبَرُّكُ بِآثَارِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُسْتَحَبٌّ، وَفِيهِ إِجْمَاعُ الْعُلَمَاءِ.
- রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিদর্শন থেকে বরকত অর্জন করা মুস্তাহাব। এ বিষয়ে উলামাদের মধ্যে ঐক্যমত রয়েছে। [শরহু মুসলিম, কিতাবুল ফাযাইল, باب فضل النَّبِيّ]

ফিকহের দৃষ্টিতে :
১. ফাতাওয়ায়ে আলমগীরি:
ফাতাওয়া আলমগীরিতে উল্লেখ করা হয়েছে,
وَيَجُوزُ التَّبَرُّكُ بِآثَارِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَإِنْ بِيْعَتْ فَلَا بَأْسَ بِذَلِكَ.
- রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিদর্শন থেকে বরকত লাভ করা বৈধ। যদি তা বিক্রি করা হয়, তবে তাতেও কোনো আপত্তি নেই। [ফাতাওয়ায়ে আলমগীরি, ৩য় খণ্ড ২৬০ পৃষ্ঠা]

২. আল-মাবসূত (ইমাম সারাখসি):
كَانَ النَّاسُ يَتَبَرَّكُونَ بِآثَارِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَيَاتِهِ وَبَعْدَ وَفَاتِهِ، وَهَذَا لَا يُنكَرُ.
- মানুষ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিদর্শন থেকে বরকত লাভ করত, তাঁর জীবদ্দশায় এবং তাঁর পর্দাগমনের পরেও। এটি অস্বীকারযোগ্য নয়। [আল-মাবসূত, الجزء الثاني، كتاب الطهارة]

৩. রদ্দুল মুহতার:
وَيُسْتَحَبُّ التَّبَرُّكُ بِآثَارِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، كَشَعْرِهِ وَثِيَابِهِ وَإِنَاءِ وُضُوئِهِ.
- রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিদর্শন, যেমন: চুল, পোশাক এবং অযুর পাত্র থেকে বরকত লাভ করা মুস্তাহাব। [রদ্দুল মুহতার, كتاب الطهارة]

৪. তুহফাতুল মুহতাজ (ইবন হাজর আল-হায়তামী):
وَأَجْمَعَ الْعُلَمَاءُ عَلَى أَنَّ آثَارَهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تُبَارَكُ بِهَا، وَيَجِبُ تَعْظِيمُهَا.
- উলামাদের মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিদর্শন থেকে বরকত লাভ বৈধ এবং তা সম্মান করা অপরিহার্য। [তুহফাতুল মুহতাজ, كتاب الطهارة]

প্রসঙ্গ : ২
আওলাদে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যবহৃত জিনিসের ক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশনা কী?

আওলাদে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ব্যবহৃত জিনিসের ক্ষেত্রে শরীয়তের নির্দেশনা তাঁদের মর্যাদা ও বংশধারার কারণে তাঁদের ব্যবহৃত জিনিসের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা কর্তব্য।

১. আওলাদে রাসূলের মর্যাদা সম্পর্কে কুরআনের নির্দেশনা:
"إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا"
[ আল কুরআন : আল আহযাব: ৩৩]
- নিশ্চয়ই আল্লাহ চান, তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করে দিতে এবং তোমাদের সম্পূর্ণরূপে পবিত্র রাখতে, হে আহলে বাইত।
বিশ্লেষণ:
আহলে বাইত তথা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং তাঁদের বিষয়াদিতে যত্নশীল হওয়া কুরআনের স্পষ্ট নির্দেশনা। তাঁদের ব্যবহৃত জিনিসকেও সম্মান ও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত।

২. হাদীসের আলোকে:
১. আওলাদে রাসূলের প্রতি ভালোবাসার নির্দেশ:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন:
"أُذَكِّرُكُمُ اللَّهَ فِي أَهْلِ بَيْتِي
- আমি তোমাদের প্রতি আহলে বাইতের ব্যাপারে আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি।
[ মুসলিম: আস সহীহ, হাদীস নং ২৪০৮]

২. সাহাবীদের সম্মান প্রদর্শন:
সাহাবীগণ শুধু রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নয়, বরং আহলে বাইতের বংশধরদের সঙ্গেও সম্মান ও ভালোবাসাপূর্ণ আচরণ করতেন।

৩. ফিকহের দৃষ্টিভঙ্গি:
১. আওলাদে রাসূলের ব্যবহৃত জিনিস বরকত লাভের জন্য ব্যবহার:
ইমাম নববী (রহ.) বলেন:
"التبرك بآثار الصالحين مشروع، وخاصة أهل بيت النبي صلى الله عليه وسلم."
- নেককার ব্যক্তিদের নিদর্শন থেকে বরকত লাভ বৈধ, বিশেষত নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পরিবারের বংশধরদের জিনিস থেকে।”
[আল-মাজমু’, ইমাম নববী]

২. বিক্রয়ের বৈধতা:
রদ্দুল মুহতার:
"إذا بيع شيء من آثار أهل البيت بغرض التبرك، فهو جائز بشرط تعظيمه وصيانته عن الامتهان."
- আহলে বাইতের নিদর্শন বরকতের উদ্দেশ্যে বিক্রি করা বৈধ, তবে তা সম্মান রক্ষার শর্তে।
[রদ্দুল মুহতার, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৬২৫]

৪. বিক্রয়ের ক্ষেত্রে শর্তাবলী:
১. উদ্দেশ্য বরকত ও সম্মান:
বিক্রয় বা বিতরণ শুধুমাত্র বরকত অর্জনের জন্য হতে হবে, আর্থিক লোভের জন্য নয়।
২. সম্মান বজায় রাখা:
জিনিসটি এমন কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না যা তা অবমাননা বা অপমান করে।
৩. প্রক্রিয়ায় ইসলামি শিষ্টাচার:
নিলাম বা বিক্রয়ের প্রক্রিয়ায় তা যেন খেলতামাশার বস্তু না হয় এবং ইসলামি আদর্শ বজায় রাখা হয়।

উপসংহার:
১. আওলাদে রাসূলের ব্যবহৃত জিনিস বরকতের জন্য সম্মান ও যত্নের সঙ্গে সংরক্ষণ করা বা বিক্রি করা বৈধ।
২. ফিকহের দলীল অনুযায়ী, বরকতের উদ্দেশ্যে এই জিনিস বিক্রি বা বিতরণ করা জায়েয, তবে তা দুনিয়াবি স্বার্থে না হওয়া উচিত।
৩. বিক্রয়ের প্রক্রিয়ায় সর্বদা সম্মান ও আদব বজায় রাখতে হবে।
৪. আওলাদে রাসূলের জিনিস ব্যবহার করা বা সংরক্ষণ করা ইসলামি ঐতিহ্যের অংশ এবং এটি নবীজীর প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের মাধ্যম।

প্রসঙ্গ : নামাযে কুরআন পাঠ করার সময় অর্থ বোঝা না গেলে নামায বিশুদ্ধ হবে কিনা এবং সওয়াব পাওয়া যাবে কিনা? - মুহাম্মদ রু...
22/12/2024

প্রসঙ্গ : নামাযে কুরআন পাঠ করার সময় অর্থ বোঝা না গেলে নামায বিশুদ্ধ হবে কিনা এবং সওয়াব পাওয়া যাবে কিনা?
- মুহাম্মদ রুবাইয়াত বিন মুসা
প্রভাষক : সাঁইদাইর গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া দিলোয়ারা বেগম সুন্নিয়া ফাজিল মাদ্রাসা।

এ বিষয়ে কুরআন, হাদীস ও ফিকহের দৃষ্টিকোণ থেকে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

কুরআনের দৃষ্টিকোণ
১. পাঠের সওয়াব
আল্লাহ তাআলা বলেন:
إِنَّ ٱلَّذِينَ يَتۡلُونَ كِتَٰبَ ٱللَّهِ وَأَقَامُواْ ٱلصَّلَوٰةَ وَأَنفَقُواْ مِمَّا رَزَقۡنَٰهُمۡ سِرّٗا وَعَلَانِيَةٗ يَرۡجُونَ تِجَٰرَةٗ لَّن تَبُورَ
- যারা আল্লাহর কিতাব পাঠ করে, সালাত কায়েম করে এবং আমি তাদের যা রিযিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করে, তারা এমন ব্যবসার আশা করে যা কখনো ধ্বংস হবে না।
[ আল কুরআন : আল ফাতির, ৩৫:২৯]

এ আয়াতে কুরআন পাঠের জন্য সরাসরি সওয়াবের কথা উল্লেখ রয়েছে, যা অর্থ বোঝার শর্ত ছাড়াই প্রযোজ্য।

কুরআন বুঝার আহ্বান
আল্লাহ আরও বলেন:
أَفَلَا يَتَدَبَّرُونَ ٱلۡقُرۡءَانَۚ أَمۡ عَلَىٰ قُلُوبٍ أَقۡفَالُهَآ
- তারা কি কুরআন নিয়ে চিন্তাভাবনা করে না? নাকি তাদের অন্তরগুলোর ওপর তালা মেরে দেওয়া হয়েছে?
[ আল কুরআন : মুহাম্মদ, ৪৭:২৪]

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, কুরআনের অর্থ নিয়ে চিন্তা করা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। যদিও নামাযে অর্থ না বোঝার কারণে সওয়াব কমে না।

হাদীসের দৃষ্টিকোণ
১. পাঠের ফযিলত
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন:
مَنْ قَرَأَ حَرْفًا مِنْ كِتَابِ اللَّهِ فَلَهُ بِهِ حَسَنَةٌ، وَالْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا
- যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাবের একটি অক্ষর পাঠ করে, তার জন্য একটি নেকি রয়েছে এবং প্রতিটি নেকি দশগুণ বৃদ্ধি পায়।
[ তিরমিযী : আস সুনান, হাদীস: ২৯১০]
এ হাদীসে কুরআন পাঠের সওয়াবের কথা বলা হয়েছে, অর্থ বোঝার শর্ত উল্লেখ নেই।

২. বিনয়ী- বিনম্র হয়ে নামাযের গুরুত্ব
হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন,
صَلِّ صَلَاةَ مُوَدِّعٍ.
- তোমার নামায এমনভাবে পড়ো যেন এটি তোমার শেষ নামায। [ আহমদ : আল মুসনাদ, হাদীস: ১৮৪০]
এ থেকে বোঝা যায়, মনোযোগ ও বিনয় (খুশু) নামাযে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্থ বুঝে কুরআন পড়লে খুশু বাড়ে।

ফিকহের দৃষ্টিকোণ

হানাফি মাযহাবের অবস্থান
১. নামাযের শর্ত:
হানাফি মাযহাবে কুরআন পাঠ করা নামাযের আবশ্যক অংশ। তবে অর্থ বোঝা ফরয নয়। ইমাম আল-কাসানি (রহ.) বলেন:
وأما قراءة القرآن فهي فرض في ركعتين؛ لقوله تعالى: فاقرءوا ما تيسر من القرآن
- নামাযে কুরআন পাঠ করা ফরজ, কেননা আল্লাহ বলেন, ‘কুরআন থেকে যা সহজ তা পড়ো।
[বদায়েউস সানায়ে, ১/১০৭]

২. অর্থ না বুঝলে সওয়াব-
فَإِنَّهُ يُثَابُ عَلَى التِّلَاوَةِ، وَإِنْ لَمْ يَفْهَمِ الْمَعْنَى
- কুরআন তিলাওয়াতের জন্য সওয়াব দেওয়া হয়, যদিও অর্থ বোঝা না যায়।"
[হাশিয়াতুত তাহতাবি, পৃষ্ঠা: ১৪০]

ইমাম নববীর মতামত
ইমাম নববী (রহ.) বলেন:
وقراءة القرآن في الصلاة من أعظم القربات ولو لم يفهم القارئ معناه
- নামাযে কুরআন পাঠ করা বড় ইবাদত, যদিও পাঠকারী অর্থ না বোঝে।
[আল-মজমু', ৩/৩৯০]

উপসংহার
১. নামাযে কুরআন পাঠ করার জন্য সওয়াব পাওয়া যাবে, এমনকি অর্থ না বোঝা হলেও।
২. অর্থ বুঝে পড়লে নামাযে বিনয় বৃদ্ধি পায়।
৩. অর্থ বোঝার চেষ্টা করা এবং কুরআনের বার্তা অনুসারে আমল করা প্রত্যেক মু'মীনের কর্তব্য।

প্রসঙ্গ : রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জন্মবৃত্তান্ত  বা সম্মান নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করার বিষয়ে শরিয়তের নির্দ...
21/12/2024

প্রসঙ্গ : রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর জন্মবৃত্তান্ত বা সম্মান নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করার বিষয়ে শরিয়তের নির্দেশনা কী?

- মুহাম্মদ রুবাইয়াত বিন মুসা
প্রভাষক : সাঁইদাইর গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া দিলোয়ারা বেগম সুন্নিয়া ফাজিল মাদ্রাসা।

#হুকুম
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সম্মান নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করা, বিশেষত তাঁর মিলাদ বা জীবনবৃত্তান্ত, তাঁর পবিত্র গুণাবলীসমূহ নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, অবজ্ঞা করা স্পষ্টভাবে কুফর হিসেবে বিবেচিত। এর শাস্তি ইসলামি হুকুমত অনুযায়ী মৃত্যুদণ্ড। নিম্নে এ বিষয়ে কুরআন, হাদীস ও ফিকহের কিতাব থেকে দলিল তুলে ধরা হলো:

কুরআনের প্রমাণ-

"قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ ۝ لَا تَعْتَذِرُوا قَدْ كَفَرْتُم بَعْدَ إِيمَانِكُمْ"
- তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর আয়াত ও তাঁর রাসূলকে নিয়ে ঠাট্টা করছিলে? অজুহাত দাঁড় করিও না। তোমরা ঈমান আনার পর কাফির হয়ে গেছ।
[ আল কুরআন : আত-তওবা, ৯:৬৫-৬৬]

এ আয়াতের তাফসিরে ইমাম কুরতুবি লিখেছেন,
"الاستهزاء بالنبي صلى الله عليه وسلم أو بسنته كفر، لأنه يدل على كراهية الشريعة."
“রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বা তাঁর সুন্নাহ নিয়ে ঠাট্টা করা কুফর, কারণ এটি শরিয়তের প্রতি বিদ্বেষ প্রকাশ করে।”
[ ইমাম কুরতুবী : আত তাফসির, আত-তওবা, আয়াত ৬৫-৬৬]

হাদিসের প্রমাণ

"لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّىٰ أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ نَفْسِهِ وَمَالِهِ وَوَلَدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ"
“কেউ মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে নিজের জীবন, সম্পদ, সন্তান-সন্ততি এবং সকল মানুষের চেয়ে প্রিয় না হই।”

[ বুখারী : আস সহীহ,কিতাবুল ঈমান, হাদিস নম্বর: ১৫]
মুসলিম: আস সহীহ, কিতাবুল ঈমান, হাদিস নম্বর: ৪৪]

#ফিকহের কিতাব থেকে প্রমাণ

১. আল-হিদায়া (ইমাম মারগিনানি, হানাফি)
ইমাম মারগিনানি লিখেছেন:
"من شتم النبي صلى الله عليه وسلم أو استخفّ به أو سبّه أو استهزأ به فقد كفر بالإجماع."
- যে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে গালি দিল, অবজ্ঞা করল, বা তাঁকে নিয়ে ঠাট্টা করল, সে সর্বসম্মতভাবে কাফির।”
[আল-হিদায়া, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৩৯৩]

২. আল-আশবাহ ওয়ান-নাযায়ের (ইবনে নুজাইম, হানাফি)

"من استهزأ بشيء متعلق بالنبي صلى الله عليه وسلم كفر لأنه يطعن في النبوة."
- রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো বিষয় নিয়ে ঠাট্টা করা কুফর, কারণ এটি নবুয়তের প্রতি আক্রমণ।
[আল-আশবাহ ওয়ান-নাযায়ের, পৃষ্ঠা ১২৩]

৩. আল-ইকনা (ইমাম খাত্তাব, শাফেয়ি)
من تكلم بكلمة فيها استخفاف بحق النبي صلى الله عليه وسلم، فقد كفر وخرج عن ملة الإسلام.
- যে ব্যক্তি এমন কথা বলল যা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি অবজ্ঞা প্রকাশ করে, সে কাফির হয়ে গেছে এবং ইসলাম থেকে বের হয়ে গেছে।
[আল-ইকনা, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৭৩৮]

৪. ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়া (ফিকহে হানাফি)
"إذا أظهر رجل كلمة استهزاء بالنبي صلى الله عليه وسلم، فإنه يكفر ويُقتل حَدًّا."
- যদি কেউ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর প্রতি ঠাট্টারত কোনো কথা প্রকাশ করে, তবে সে কাফির হবে এবং তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
[ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়া, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ২৭৬]

৫. আল-মুহাল্লা (ইবনে হাযম, জাহিরি)
ইবনে হাযম বলেন,
"من استهزأ برسول الله صلى الله عليه وسلم أو بشيء من شريعته فهو كافر بإجماع المسلمين."
- যে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে বা তাঁর শরিয়তের কোনো বিষয়ে ঠাট্টা করে, সে সর্বসম্মতভাবে কাফির।
[আল-মুহাল্লা, খণ্ড ১১, পৃষ্ঠা ৪১৩]

৬.আল-ফতাওয়া আল-কারিয়াহ (ইমাম ইবনে আবেদিন, হানাফি)
ইবনে আবেদিন লিখেছেন:
"السخرية بشيء من شعائر الدين كفر، سواء كان ذلك بالقول أو بالفعل."
- দ্বীনের কোনো নিদর্শন নিয়ে ঠাট্টা করা কুফর, তা কথায় হোক বা কাজে।
[আল-ফতাওয়া আল-কারিয়াহ, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৭৫]

৭. আল-ইখতিয়ার (ইমাম মাওয়ারদী, শাফেয়ি)

"ما يتعلق باحترام النبي صلى الله عليه وسلم واجب، ومن خالف ذلك فهو كافر."
- রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সম্মান রক্ষা করা বাধ্যতামূলক। আর যে এতে ব্যত্যয় ঘটায়, সে কাফির।
[আল-ইখতিয়ার, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১১০]

উপসংহার
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সম্মান নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা করা ইসলামে সর্বসম্মতভাবে কুফর। এটি ব্যক্তি ঈমান হারানোর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কুরআন, হাদিস এবং ফিকহের গ্রন্থসমূহের মাধ্যমে বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রমাণিত।

 #প্রসঙ্গ : কেবল জুম'আর দিন এককভাবে রোযা রাখার বিধান।- মুহাম্মদ রুবাইয়াত বিন মুসা প্রভাষক : সাঁইদাইর গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া দ...
21/12/2024

#প্রসঙ্গ : কেবল জুম'আর দিন এককভাবে রোযা রাখার বিধান।

- মুহাম্মদ রুবাইয়াত বিন মুসা
প্রভাষক : সাঁইদাইর গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া দিলোয়ারা বেগম সুন্নিয়া ফাজিল মাদ্রাসা।

জুম'আর দিন এককভাবে রোযা রাখা ইসলামে মাকরুহ কিনা, এ বিষয়ে কুরআন, হাদীস, এবং ফিকহের গ্রন্থসমূহে স্পষ্ট আলোচনা রয়েছে। নিচে এই বিষয়ে আলোচনা করা হলো:

#হুকুম:
যদি কেউ জুম'আর দিন এককভাবে রোযা রাখে, তবে এটি মাকরুহ। যদি এটি ধারাবাহিক রোযার অংশ হিসেবে হয় বা বৃহস্পতিবার ও শনিবারের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়, তাহলে এতে কোনো সমস্যা নেই।

#হাদীসের আলোকে-
প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-সূত্রে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশনা পাওয়া যায়:

১. হযরত আবূ হুরাইরা (রা.) সূত্রে বর্ণিত,

"لَا تَصُومُوا يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلَّا أَنْ تَصُومُوا يَوْمًا قَبْلَهُ أَوْ يَوْمًا بَعْدَهُ"
অর্থ: “তোমরা জুম'আর দিন একক রোযা রেখো না, তবে এর আগে একদিন অথবা পরে একদিন রোযা রাখো।”
[ বুখারী: আস সহীহ, হাদীস নং -১৯৮৫, মুসলিম: আস সহীহ, হাদীস নং -১১৪৪]

২.যু’হায়র ইবনে আবু সুলমা (রা.) থেকে বর্ণিত,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন
"إِذَا كَانَ أَحَدُكُمْ صَائِمًا فَلَا يَصُومَنَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلَّا أَنْ يَصُومَ قَبْلَهُ يَوْمًا أَوْ بَعْدَهُ يَوْمًا"
-তোমাদের কেউ যদি রোযা রাখে, তবে সে যেন জুম'আর দিন এককভাবে রোযা না রাখে, তবে আগে বা পরে একদিন মিলিয়ে রাখে।
[মুসলিম: আস সহীহ, হাদীস নং - ১১৪৪]

#ফিকহের দৃষ্টিভঙ্গি
হানাফী ফিকহে জুম'আর দিন রোযা রাখার বিষয়ে দলিল এবং দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট।

#হানাফী ফিকহে জুম'আর দিন রোযার বিধান

১. ইমাম সারাখসি (রহ.) উল্লেখ করেছেন:
وَكُرِهَ صَوْمُ يَوْمِ الْجُمُعَةِ مُنْفَرِدًا لِمَا رُوِيَ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّهُ قَالَ لَا تَصُومُوا يَوْمَ الْجُمُعَةِ إِلَّا أَنْ تَصُومُوا قَبْلَهُ يَوْمًا أَوْ بَعْدَهُ يَوْمًا.
- জুম'আর দিন এককভাবে রোযা রাখা মাকরুহ, যেমনটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, ‘তোমরা জুম'আর দিন একক রোযা রেখো না, তবে এর আগে বা পরে একদিন রোযা রেখো।'"
[আল-মাবসুত, সারাখসি, ৩/৮৮]

২. ইমাম কাসানি (রহ.) বলেন,

"وَيُكْرَهُ إِفْرَادُ يَوْمِ الْجُمُعَةِ بِالصَّوْمِ فَإِنْ أَضَافَ إِلَيْهِ يَوْمًا آخَرَ لَا يُكْرَهُ"
- শুক্রবারকে এককভাবে রোযার জন্য নির্ধারণ করা মাকরুহ। তবে যদি এর সঙ্গে আরেকটি দিন (বৃহস্পতিবার বা শনিবার) যোগ করা হয়, তাহলে মাকরুহ থাকে না। [বদায়েউস সানায়ে, কাসানি, ২/২১০]

৩. ইমাম তাহতাবী (রহ.) উল্লেখ করেন,

إِفْرَادُ يَوْمِ الْجُمُعَةِ بِالصَّوْمِ مَكْرُوهٌ إِذَا لَمْ يَكُنْ فِي سِيَاقِ عَادَةٍ أَوْ نَذْرٍ"
- জুম'আর দিন এককভাবে রোযা রাখা মাকরুহ, যদি এটি কোনো অভ্যাস বা মানতের সঙ্গে সম্পর্কিত না হয়।"
[তাহতাবী আলা মারাকি আল-ফালাহ, পৃষ্ঠা: ৬৭৭]

উপসংহার

হানাফী মাযহাবে শুক্রবার এককভাবে রোযা রাখা মাকরুহ। তবে ধারাবাহিক নফল রোযার অংশ হিসেবে, মানত হিসেবে, বা বৃহস্পতিবার/শনিবারের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হলে এটি বিশুদ্ধ ।
উপরন্তু, মাকরুহ বলতে এখানে " মাকরুহ তানযিহী" উদ্দেশ্য, যা এড়ানো উত্তম কিন্তু সম্পূর্ণ হারাম নয়।
[আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভালো জানেন]

ইসলামের দাওয়াত নিয়ে দুই পক্ষ মারামারি করলে, কেউ খুন হলে সে শহীদ হবে কি না?- মুহাম্মদ রুবাইয়াত বিন মুসা প্রভাষক সাঁইদাই...
20/12/2024

ইসলামের দাওয়াত নিয়ে দুই পক্ষ মারামারি করলে, কেউ খুন হলে সে শহীদ হবে কি না?

- মুহাম্মদ রুবাইয়াত বিন মুসা
প্রভাষক সাঁইদাইর গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া দিলোয়ারা বেগম সুন্নিয়া ফাজিল মাদরাসা

১. ইসলামের দাওয়াতের জন্য নিজেদের মধ্যে মারামারি ও খুনাখুনি সম্পূর্ণ হারাম।
২. এ ধরনের লড়াইয়ে মারা গেলে কেউ শহীদ হবে না। বরং এটি বড় গুনাহ এবং আল্লাহর শাস্তি পেতে হবে।

কুরআনের দলিল:
আল্লাহ বলেন:
- যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে একজন মুমিনকে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম, যেখানে সে অনন্তকাল থাকবে।
وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا
[ আল কুরআন : আন-নিসা: ৯৩]
হাদিসের দলিল:
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,
- যখন দুজন মুসলিম তরবারি নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করে, তখন নিহত ও হত্যাকারী উভয়ই জাহান্নামে যাবে।" সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, 'হত্যাকারী তো বোঝা যায়, কিন্তু নিহত কেন?' তিনি বললেন, 'কারণ সেও তার ভাইকে হত্যা করতে চেয়েছিল।'"
إِذَا الْتَقَى الْمُسْلِمَانِ بِسَيْفَيْهِمَا فَالْقَاتِلُ وَالْمَقْتُولُ فِي النَّارِ
[ বুখারী : আস সহীহ, হাদীস নং - ৩১, মুসলিম: আস সহীহ, হাদীস নং - ১৮৮৫]
রাসূলুল্লাহ ﷺ আরও বলেন,
- কেবল সেই ব্যক্তি শহীদ, যে আল্লাহর পথে লড়াই করে এবং ন্যায়সঙ্গতভাবে প্রাণ বিসর্জন দেয়।
مَنْ قُتِلَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَهُوَ شَهِيدٌ
[ বুখারী: আস সহীহ, হাদীস নং - ২৬৪৩]

ফিকহী দৃষ্টিকোণ :

ফকিহগণ উল্লেখ করেছেন, যদি কোনো মুসলমান অন্য মুসলমানের সঙ্গে ইসলামের নামে দাওয়াতের জন্য লড়াই করে এবং এতে একজন মারা যায়, তবে উভয়েই গুনাহগার হবে। শহীদের মর্যাদা পাওয়ার জন্য শর্ত হলো, তার লড়াই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য এবং ন্যায়সঙ্গত হতে হবে।
(ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়া, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৩০০)

19/12/2024

#কুরআন মাজিদ স্পর্শ করার জন্য অযু শর্ত কিনা?

- মুহাম্মদ রুবাইয়াত বিন মুসা
প্রভাষক সাঁইদাইর গাউছিয়া তৈয়্যবিয়া দিলোয়ারা বেগম সুন্নিয়া ফাজিল মাদরাসা

কুরআন মাজিদ স্পর্শ করার জন্য অযু করা বাধ্যতামূলক কিনা, এ বিষয়ে আমরা কুরআন, হাদিসগ্রন্থ এবং ফিকহের কিতাবের আলোকে আলোচনা করব।
হুকুম :
- অজু ছাড়া কুরআন শরীফ স্পর্শ করা জায়িয নেই। অতএব কুরআন শরীফ স্পর্শ কর‍তে চাইলে অযু করা শর্ত।

১. কুরআনের দলিল
আল্লাহ তাআলা বলেন:
لَا يَمَسُّهُ إِلَّا الْمُطَهَّرُونَ
“এতে (লওহে মাহফুয) কেউ স্পর্শ করতে পারে না, শুধুমাত্র পবিত্ররা।” (সূরা ওয়াকিয়া: ৭৯)

এই আয়াতের সাধারণ ব্যাখ্যা হলো, যারা অপবিত্র অবস্থায় আছে (যেমন, নাপাক বা বেহাত অজু), তারা কুরআন ধরতে পারবে না।

২. হাদিসের দলিল :
রাসুলুল্লাহ (দ) বলেছেন:
"لَا تَمَسُّوا القُرْآنَ إِلَّا وَأَنْتُمْ طَاهِرُونَ"
“তোমরা কুরআন স্পর্শ করো না, যতক্ষণ না পবিত্র অবস্থায় থাকো।” (মুয়াত্তা মালিক: ১/১৯৯)

এই হাদিসে সরাসরি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে যে, কুরআন ধরতে হলে পবিত্র থাকতে হবে। ফিকহে এই পবিত্রতা মানে অজু করা।

৩. ফিকহের কিতাব থেকে দলিল -

হানাফি মাজহাবের নির্ভরযোগ্য ফিকহের কিতাবগুলোতে কুরআন স্পর্শ করার অজুর শর্ত বিষয়ে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু কিতাবের দলিল তুলে ধরা হলো:

১. আল-হিদায়া (ইমাম মারগিনানি, হানাফি ফিকহের প্রাথমিক গ্রন্থ)
قال: ولا يجوز مس المصحف إلا بطهارة.
- “মুসহাফ স্পর্শ করা জায়েজ নয়, যদি না পবিত্রতা (অজু) থাকে।” (আল-হিদায়া, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৭৩)
এই বক্তব্যে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, অজু ছাড়া মুসহাফ স্পর্শ করা বৈধ নয়।

২. البدائع والصنائع (ইমাম কাসানী)
ولا يجوز للمحدث مس المصحف لأنه كالرسم لما فيه من القرآن، وحرمة القرآن توجب الطهارة عند مسه كالصلاة.
- “যে ব্যক্তি অজু ছাড়া আছে, তার জন্য কুরআন স্পর্শ করা বৈধ নয়। কারণ এটি কুরআনের সম্মানের জন্য প্রয়োজন, যেমন নামাজের জন্য পবিত্রতা শর্ত।” (বদায়েউস সানায়ে, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ১০৫)

৩. ফতাওয়া আল-হিন্দিয়া (আলমগীরি)
ولا يجوز للمحدث مس المصحف.
“অজু ছাড়া মুসহাফ স্পর্শ করা বৈধ নয়।”
(ফাতাওয়া আল-হিন্দিয়া, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ৩৮)

৪. الدر المختار (ইবনে আবেদিন শামী)
ويمنع المحدث من مس المصحف.
“অজু না থাকলে কুরআন স্পর্শ করা নিষিদ্ধ।”
(আদ-দুররুল মুখতার, খণ্ড: ১, পৃষ্ঠা: ১১৯)

উপসংহার
কুরআন মাজিদ স্পর্শ করার জন্য অজু করা শর্ত। এটি কুরআনের সম্মান এবং পবিত্রতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য একটি অপরিহার্য বিধান।

02/01/2024

Address

Chittagong

Telephone

+8801843706773

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when মাসলাকে আ‘লা হযরত রহমতুল্লাহি আলাইহি posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share