08/12/2024
#সম্পর্কে_দুরত্ব_বাড়ে_কেন?
অনেক কিছু ভাবতে পারি,অনুভব করতে পারি,চোখের সামনে ভিজুয়ালাইজ করতে পারি, কিন্তু কখনো সেটা কাউকে এক্সপ্লেইন করতে পারিনা,যেভাবে বোঝাতে চাই সেভাবে পারিনা।আসলে চিন্তা করতেই সাচ্ছন্দ্য বোধ করি,মানুষকে বুঝিয়ে কি হবে? মানুষ তো সিরিয়াসলি নেবে না আপনাকে।ধরুন কখনো আপনার মন খারাপ,ভীষণ ভাবে,আপনার চোখ,কথা বলার ধরন,গলার স্বর শুনেও যদি আপনার আপনজন বুঝতে না পারে যে আপনি ঠিক কেমন আছেন, তাহলে আপনার তাকে আলাদা করে আর বোঝানোর দরকার নাই আপনি কেমন আছেন।আমাদের মাঝে এমন কিছু সম্পর্ক থাকে প্রেম ভালোবাসা কিংবা বিয়ে, এই সম্পর্কগুলোতে ফাটল ধরার কিছু সুপ্ত কারণ আমাদের চোখ এড়িয়ে যায়। হয়তো ভাবতে পারেন এত ছোট ছোট বিষয় কি করে একটা সম্পর্কের দুরত্ব বাড়িয়ে তা ইতি টানতে পারে!কোন মানুষ পারফেক্ট হয় না,কোন না কোন দিক দিয়ে তার খুত থাকবে,আমরা কি পারিনা সেই বিষয় টা মানিয়ে নিতে? একটা সম্পর্কে আমাদের অনেক রাগ,অভিমান, অভিযোগ তৈরি হয়,সেই বিষয় টাকে বড় করে না দেখে আমরা সেটাকে দুজন মিলে কথা বলে ঠিক করতে পারি,এতে যেমন দুজনের মতামতের গুরুত্ব বাড়ে তেমন সম্পর্ক কোন দ্বিধা থাকেনা।এরপর আসি,কে কাকে কতটুকু বোঝে? বা বুঝতে চেষ্টা করেনা কেন? আমাদের উচিত একটা সম্পর্ক দুজন দুজন কে সমান ভাবে বোঝা, দেখা যাচ্ছে একজন একটা বিষয় নিয়ে খুব বেশি ডিপ্রেশনে আছে,অপরজনও একই পরিস্থিতি তে ভুগছে,কিন্তু একজনের যখন নিজেকে সাপোর্ট করার জন্য তার সঙ্গীর দরকার হয়,তখন সে নিজেকে সামলে নিয়ে তার সঙ্গীকে মানসিক ভাবে সাপোর্ট দেয়ার চেষ্টা করছে,তার হ্যাপিনেস খুঁজে বের করার ট্রাই করছে,অথচ যার জন্য এতকিছু করা হচ্ছে সে সাপোর্ট দেয়া মানুষটার উপর রাগ করছে,তাকে গালাগাল দিচ্ছে, তারপরেও সেই মানুষ টা চেষ্টা করছে তাকে একটু নরমাল করার,সে কি করলে ভালো থাকবে সেটা করার।মেয়েরা একটু আবেগী,এদের অভিমান থাকবে তা অস্বাভাবিক কিছু নয়,কিন্তু তার অভিমান যদি না বোঝে,এটা যদি তার সঙ্গীর কাছে বিরক্তির কারণ হয়,সেটার ক্ষেত্রেও সম্পর্ক দুরত্ব বাড়ে।কিছু ছোট ছোট বিষয় যেমন একটা সম্পর্ক ভালোবাসা বাড়ায় তেমন কমিয়েও দিতে পারে।যেমন,আপনি খেয়েছেন কিনা?মন ভালো আছে কিনা,মন খারাপ আছে,সবকিছু একটা মানুষ খেয়াল করছে,আপনাকে একটু হ্যাপি করতে চাইছে কোনভাবে কিন্তু আপনি তার বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন, আপনি তাকে জিজ্ঞেস করছেন না সে খেয়েছে কিনা,তার খারাপ লাগছে কিনা।আপনার কাছে তার কোন মূল্যায়ন নেই,সে কি বলছে,কি করছে,আপনার কিছু আসে যায় না।অথচ অপর পক্ষের মানুষ টা তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে আপনাকে সুখী করার কিন্তু আপনি তাকে বুঝতেও চেষ্টা করছেন না।একটা বার ভাবুন তো সেই মানুষ টা তার কথা কাউকে বলতে পারছে না,আপনাকে সে যেভাবে হ্যাপি করার ট্রাই করছে,তাকে কেউ করছে না,এতকিছুর পরেও সে কোন অভিযোগ করছে না,সে আপনাকে নিয়ে ভাবছে।তারপরও সেই মানুষ টা অবহেলা পাচ্ছে, খারাপ ব্যবহার পাচ্ছে। কিন্তু তবুও আপনাকে ছেড়ে যাচ্ছে না।কিন্তু সে ধীরে ধীরে চুপ হয়ে যাচ্ছে, ব্যবহারে পরিবর্তন এসেছে,রাগ, অভিমান,অভিযোগ কিছুই করছে না।তখন বুঝতে পারবেন মানুষ টা হারিয়ে যাচ্ছে, সেই মানুষ টা ভিতরে ভিতরে দুমরে মুচরে যাচ্ছে, একটা সম্পর্কে দুজনের মাঝে সব থাকবে,কিন্তু অতিরিক্ত আত্ন অহমিকা থাকা উচিত নয়,মাঝে মাঝে ছোট হলে ভালবাসা কমে না বরং বাড়ে,একটা মানুষ যতই ম্যাচিউর হোক না কেন,তার ভালোবাসার মানুষের কাছে ভুল করার জিনিস,ভালোবাসা মানেই একটু আধটু পাগলামী,এখানে ম্যাচিউরিটি খোঁজা উচিত নয়।যদি খুঁজতে হয় সেটা আর ভালোবাসা থাকে না।মানুষ ভালোবাসায় শুধু শারীরিক সুখ না,মানসিক প্রশান্তি খোঁজে,ভালোবাসার মানুষের কাছে যদি বাচ্চামি না করে তাহলে কার সাথে করবে?এসব বিষয় যাদের কাছে ন্যাকামি মনে হয় তাদের কোন সম্পর্কে না জড়ানোই উচিৎ। যুগটাই এখন ছেড়ে যাওয়ার, আমরা পারিনা মানিয়ে নিতে।পারি আমাদের ইগোকে মূখ্য করে তুলতে।দুজন দুজন কে মানিয়ে চলতে পারলে সম্পর্ক কখনো ঠুনকো হয়ে যায় না,একজন বুঝবে আরেকজন বুঝবেনা, জানতে চাইবেনা,এভাবে তো দায়সারা হয়।ভালোবাসা না,এতে করে বাড়ে দুরত্ব কমে ভালোবাসা,এমনকি সম্পর্ক আনে বিচ্ছেদ বিষাদ!
✍️সুমাইয়া নূর