দৈনিক চট্টগ্রাম জেলা

দৈনিক চট্টগ্রাম জেলা দৈনিক চট্টগ্রাম জেলা একটি জনপ্রিয় অনলাইন সংবাদ মাধ্যম।

খুবই মর্মান্তিক ঘটনা... শোকাবাহ..উত্তর চট্টগ্রামের ভূজপুর ইউনিয়ন.. উল্লেখ্য যে,যিনি গিয়েছিলেন ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে প্রি...
05/07/2025

খুবই মর্মান্তিক ঘটনা...
শোকাবাহ..
উত্তর চট্টগ্রামের ভূজপুর ইউনিয়ন..

উল্লেখ্য যে,
যিনি গিয়েছিলেন ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে প্রিয়জনের লাশ আনতে,

আজ সেই তিনিই কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিজেরাই লাশ হয়ে ফিরতেছেন বাড়ি...

إِنَّا لِلّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ

(নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয়ই তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।)

ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বাকরুদ্ধ আমরা।

জীবন কত অস্থায়ী, মৃত্যু কত অপ্রত্যাশিত—এই ঘটনা তার জ্বলন্ত প্রমাণ।

আল্লাহ তাঁদের উভয়কে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করুন এবং পরিবারের সবাইকে এই বিশাল শোক সইবার তাওফিক দিন।

উত্তর চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি ভূজপুর ৩নং নারায়ণহাট ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী প্রবাসী মানব কল্যাণ পরিষদ এর নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কমিটি ...
03/07/2025

উত্তর চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি ভূজপুর ৩নং নারায়ণহাট ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী প্রবাসী মানব কল্যাণ পরিষদ এর নবনির্মিত কেন্দ্রীয় কমিটি সম্পূর্ণ।

সেচ্ছাসেবী সংগঠনের সকল দ্বায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।

এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারা আনিসা পরিক্ষা দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। স্ট্রোক করা মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পরীক্ষায় দেরি...
27/06/2025

এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারা আনিসা পরিক্ষা দেয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

স্ট্রোক করা মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পরীক্ষায় দেরি হয়ে যায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী আনিসা আহমেদের। ফলে কেন্দ্রে পৌঁছেও তিনি পরীক্ষায় বসতে পারেননি।

তবে তিনি পরীক্ষার সুযোগ পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানান সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট (ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল) মো. রুহুল কুদ্দুস (কাজল)।

পোস্টে তিনি লেখেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। এইচএসসি পরীক্ষার্থী আনিসার সঙ্গে আমার মাত্র কথা হয়েছে। তার নাম আনিসা আহমেদ। আনিসার অসুস্থ মা ও তার কলেজ, ঢাকা শিক্ষাবোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান স্যারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। বাঙলা কলেজের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কর্মী শিব্বির আহমেদ উসমানি আমাকে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন।

27/06/2025

চট্টগ্রাম, উত্তর ফটিকছড়ি, নারায়ণহাট , তানভিরুল কুরআন মাদ্রাসা।

Send a message to learn more

26/06/2025

দ্রুত মেয়াটির পরীক্ষার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নেয়া হোক দাবী আপামর সচেতন জনসাধারণ।

মা' স্ট্রোক করার কারণে মেয়েটির সময়মতো পরীক্ষার হলে যেতে পারেনি। অসহায় মেয়েটি ভেঙ্গে পড়েছে তাই তার উপর মানবিক সহযোগিতা দিয়ে পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার সুব্যবস্থা করা হোক এই দাবি সচেতন জনসাধারণের।

তাই সবাই শেয়ার করে সহযোগিতা করুণ নিজস্ব মন্তব্য দিয়ে।

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে ব্যতিক্রমধর্মী Go Skate Day উদযাপন!চট্টগ্রাম | ২১ জুন ২০২৫ফিলিস্তিনে চলমান গণহত...
22/06/2025

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে ব্যতিক্রমধর্মী Go Skate Day উদযাপন!

চট্টগ্রাম | ২১ জুন ২০২৫
ফিলিস্তিনে চলমান গণহত্যা ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানাতে ব্যতিক্রমীভাবে "Go Skate Day" পালন করেছে চট্টগ্রামের স্কেটবোর্ডিং ক্লাব Skatepara। এ উপলক্ষে শনিবার (২১ জুন) আয়োজিত হয় স্কেটবোর্ডিং র‍্যালি, শো, প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনী এবং স্লোগানসমৃদ্ধ প্রতিবাদী কর্মসূচি।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সিআরবি মোড় থেকে বিকেল ৪টায় র‍্যালি শুরু হয়ে গন্তব্যে পৌঁছায় এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে। সেখানেই অনুষ্ঠিত হয় স্কেটবোর্ডিং শো ও ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতিমূলক বার্তা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনী।

স্কেটবোর্ডাররা এদিন ব্যবহার করেন ফিলিস্তিনের পতাকার চারটি রঙ — কালো, সাদা, লাল ও সবুজ — যা দিয়ে রাঙানো ছিল প্ল্যাকার্ডগুলো। প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল প্রতিবাদী স্লোগান ও বার্তা, যেমন:
"Children Deserve Childhood",
"No Bomb On Babies",
"Free Palestine, Free Gaza",
"O Muslim Army, If You Think You Are Lesser in Number Then Recruit Us"।

Skatepara ক্লাবের সদস্য এবং ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী প্রত্যয় বড়ুয়া বলেন,

> “বিশ্বব্যাপী Go Skate Day উপলক্ষে আমাদের এই ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের মাধ্যমে আমরা ফিলিস্তিনের নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিতে চেয়েছি। স্কেটবোর্ডের চাকাগুলো যেন হয়ে ওঠে নির্যাতিতদের কণ্ঠস্বর, যা যুদ্ধবিরোধী এবং মানবতাবাদী বার্তা বহন করে।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় স্কেটিং ক্লাব CU Skaters-এর সদস্য মোসলেহ উদ্দিন বলেন,

> “স্কেটবোর্ডিং শুধু একটি খেলা নয়, বরং এটি নেটওয়ার্কিং, চিন্তার বিনিময় এবং সামাজিক উদ্যোগে সক্রিয় হওয়ার একটি মাধ্যম।”

চট্টগ্রাম স্কেটবোর্ডারস কমিউনিটির সদস্য মাহফুজ বলেন,

> “স্কেটবোর্ডিং একটি পোস্টমডার্ন চিন্তার খেলা যা তরুণ সমাজকে মাদক ও মোবাইল আসক্তি থেকে দূরে রেখে একটি সুস্থ গেমিং সংস্কৃতি তৈরি করে।”

চট্টগ্রাম স্কেটবোর্ড লাভারস-এর সদস্য মাহবুব আহসান বলেন,

> “স্কেটবোর্ডিং একদিকে যেমন শরীরচর্চা, তেমনি এটি গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের নানা জটিল বিষয়কে অনুশীলনের মাধ্যমে সহজে শেখার সুযোগ তৈরি করে।”

অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে চট্টগ্রাম স্কেটবোর্ডিং ক্লাবের উপদেষ্টা জনাব রবিউল চট্টগ্রামে একটি স্থায়ী স্কেটবোর্ডিং পার্ক বা খেলার মাঠ তৈরির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও সিটি কর্পোরেশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এই প্রতিবাদী ও সৃজনশীল আয়োজনে স্পনসর হিসেবে পাশে ছিল DOB Skateshop ও SkateBoardLovers Chattogram।
ইভেন্ট ব্যবস্থাপনায় ছিলেন CU Skaters এবং Chattogram Skateboarders Community-এর সদস্যরা, যারা চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার মানবিক উত্তর ফটিকছড়ির সেলাইমেশিন বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন। সামাজিক সেবামূলক সংগঠন মানবিক উত্তর...
11/06/2025

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার মানবিক উত্তর ফটিকছড়ির সেলাইমেশিন বিতরণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন।

সামাজিক সেবামূলক সংগঠন মানবিক উত্তর ফটিকছড়ির উদ্যোগে ২৫ টি অসহায় পরিবারের মাঝে সেলাইমেশিন বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে।

শান্তির হাট মিসকাতুন্নবী দাখিল মাদ্রাসা হলরুমে আজ সকাল ১১টায় সংগঠনের উপদেষ্টা মাওলানা মুহিউদ্দিন আহমদ এর সভাপতিত্বে মানবিক উত্তর ফটিকছড়ির সমন্বয়ক এম ওসমান গনির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মোজাম্মেল হক চৌধুরী, উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি জামায়াত মনোনীত ফটিকছড়ি আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ নুরুল আমিন।

প্রধান আলোচক ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আবদুল জব্বার, আমন্ত্রিত মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবদল নেতা এডভোকেট আবছার উদ্দিন হেলাল,থানা জামায়াতের আমির অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম, মাস্টার আবদুল বারেক,সুপার মাওলানা জহুরুল হক,সুপার মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, জামায়াত নেতা ইউসুফ বিন সিরাজ,জিয়াউল হক,মাওলানা এম এ হালিম, বিএনপি নেতা আহমদ ছাফা মেম্বার, ইলিয়াস মেম্বার, মাস্টার জাহাঙ্গীর আলম, এম এ মান্নান, ব্যাংকার হারুন রশিদ,ডাক্তার শফিউল আলম,মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, ছাত্রনেতা শহিদুল কায়সার সুমন সুমন নাজমুল হাসান,মামুনুর রশিদ জাফর ইমাম,শফিউল আলম, ইকবাল হোসেন, শাওন মাহমুদ,ইমরান খান ফরহাদ,তানজিমুল ইসলাম,রাকিব,কুতুব উদ্দিন,আরাফাত সাকিব,বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রদান শিক্ষকবৃন্দ,মানবিক উত্তর ফটিকছড়ির সদস্যবৃন্দ।

11/06/2025

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা ভূজপুর থানাধীন ২ নং দাঁতমারা ইউনিয়নে মানবিক উত্তর ফটিকছড়ির পক্ষ থেকে সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠান।

উক্ত সেলাই মেশিন বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উক্ত উপজেলার UNO এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ প্রমূখ।

অধ্যাপক ইউনুস হয়তো তার সরকারের মেয়াদকালীন সময়ে তেমন কিছুই পরিবর্তন করতে পারবেন না (রাজনীতিবিদদের অনাগ্রহের কারনে)।কিন্তু...
11/06/2025

অধ্যাপক ইউনুস হয়তো তার সরকারের মেয়াদকালীন সময়ে তেমন কিছুই পরিবর্তন করতে পারবেন না (রাজনীতিবিদদের অনাগ্রহের কারনে)।

কিন্তু,,
তিনি যে রাজনীতির ইতিহাসে এক অনন্য ইতিহাস সৃষ্টি করে যাবেন, সেটা বলাই যায়।

যাদের সাথে একটা সাক্ষাৎ এর জন্য ১৫০ কোটি মানুষের প্রধানমন্ত্রীকে সিডিউল নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়, তারাও অধ্যাপক ইউনুসকে স্যার ডেকে সম্মোঔদ্ধত্য দেখায় না।

হতভাগা এই জাতি,,
তার মতো এমন নেতা পেয়েও সন্তুষ্ট নয়... ❗

তারা না তাকে কোনো কাজ করতে দিচ্ছে, না কাজের পরিবেশ সৃষ্টি করতেছে, বরং তারা নিজেদের চুরি বাটপারি জায়েজ করার জন্য এক তসবি বারবার জপতেছে।

জিয়াউর রহমান যেভাবে দম্ভ করে বলেছিলেন, তিনি রাজনীতিবিদদের জন্য রাজনীতিকে কঠিন করে দিয়ে যাবেন।

ঠিক তেমনি,,
অধ্যাপক ইউনুসও (তার কর্মের মাধ্যমে) ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য একটা স্ট্যান্ডার্ড / চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করে দিচ্ছেন...।

নির্বোধের দল ভুলে গিয়েছে যে,,
শুধুমাত্র শাসক পরিবর্তনের জন্য জুলাই বিপ্লবধন করে।

যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টরা ৩য় বিশ্বের কোনো রাষ্ট্রের প্রধানকে পাত্তাই দেয় না, সেখানে তারা অধ্যাপক ইউনুসকে বুকে টেনে নেয়।

যার এক কলে জাতিসংঘের মহাসচিব সফরে চলে আসে, ব্রিটেনের রাজা যার সাথে সাক্ষাৎ এর জন্য অপেক্ষা করে, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা যার সামনে পা তুলে বসার মতো হয়নি,
বরং জুলাই বিপ্লব হয়েছে "Acts ব্যবস্থা" পরিবর্তনের জন্য।
সৌজন্যে: সংগৃহীত 🌹

ছোটবেলায় কেউ তাঁকে দেখে বলে নি, “এই ছেলেটা একদিন নোবেল জিতবে।কেউ ভাবেনি, এই ছেলেটাই একদিন পৃথিবীর অর্থনীতির ধারা বদলে দ...
10/06/2025

ছোটবেলায় কেউ তাঁকে দেখে বলে নি, “এই ছেলেটা একদিন নোবেল জিতবে।
কেউ ভাবেনি, এই ছেলেটাই একদিন পৃথিবীর অর্থনীতির ধারা বদলে দেবে।

তাঁর শৈশব ছিল খুবই সাধারণ, চট্টগ্রামের এক শান্ত গ্রামে কাটানো সাদামাটা জীবন। কিন্তু তাঁর চোখে ছিল স্বপ্ন, আর মনে ছিল এক অদ্ভুত ধরণের কৌতূহল, “কেন দারিদ্র্য মানুষকে এমন অসহায় করে ফেলে?”

এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ড. মুহাম্মদ ইউনুস যাত্রা শুরু করেন। পড়ালেখার প্রতি তাঁর ভালোবাসা তাঁকে আমেরিকায় নিয়ে যায়, যেখানে তিনি অর্থনীতি নিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। চাইলেই তিনি বিলাসবহুল বিদেশি জীবনে থেকে যেতে পারতেন। কিন্তু দেশপ্রেম আর দায়িত্ববোধ তাঁকে টেনে আনে বাংলাদেশে, এক যুদ্ধবিধ্বস্ত, দরিদ্র, অথচ সম্ভাবনাময় এক দেশে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার সময়, ইউনুস সাহেব উপলব্ধি করলেন, বইয়ের জ্ঞান দিয়ে সমাজের পরিবর্তন সম্ভব নয়, যতক্ষণ না তিনি বাস্তব জীবনের সমস্যাগুলোকে ছুঁয়ে দেখছেন। তিনি গ্রামে গ্রামে হাঁটতেন, মানুষের ঘরে ঢুকতেন, কথা বলতেন। একদিন তিনি দেখলেন, কিছু মহিলা মাত্র ৩০-৫০ টাকার জন্য সুদখোরদের কাছে নিজের শ্রম বিক্রি করে দিচ্ছে। এত পরিশ্রম করেও কিছুই থাকছে না হাতে। তিনি ভাবলেন, এই অবস্থা তো বদলাতেই হবে।

তখন তিনি করলেন এক ‘অসম্ভব’ কাজ, নিজের পকেট থেকে ৮৫ টাকা দিলেন ৪২ জন নারীকে। কেউ বাঁশের পণ্য বানালো, কেউ মুরগি পালল, কেউ চাল কিনে বিক্রি করল। এবং সবাই এক টাকাও বাকী না রেখে ফিরিয়ে দিল সেই ঋণ। এখানেই ইতিহাসের মোড় ঘুরল।

এই ঘটনা থেকেই তৈরি হলো এক দৃষ্টান্ত: গ্রামীণ ব্যাংক।

এটা ছিল এমন এক ব্যাংক, যেখানে দরিদ্র, নিরক্ষর, সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষরাই ছিল কেন্দ্রবিন্দু। ব্যাংক মানে যেখানে সাধারণত বড়লোকেরা যায়, সেখানে ইউনুস সাহেব প্রমাণ করলেন, সবচেয়ে দরিদ্র মানুষরাও ঋণগ্রহীতা হতে পারে, সময়মতো টাকা ফেরত দিতে পারে, নিজের জীবন বদলে দিতে পারে।

এই ব্যাংক শুধু অর্থ দেয়নি, মানুষের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিয়েছে। নারী ক্ষমতায়নের এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের ৯৭ শতাংশই ছিল নারী, যারা আগে কখনও নিজের নামে ১০ টাকাও ধার নেননি, এখন তাঁরা নিজের ব্যবসার মালিক।

বিশ্ব হতবাক হয়ে গেল। এই মানুষটা কে? কীভাবে তিনি দারিদ্র্য মোকাবেলার এত সহজ কিন্তু কার্যকর পদ্ধতি বের করলেন?

২০০৬ সালে ড. ইউনুস ও গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে পান নোবেল শান্তি পুরস্কার। এটাই ছিল এক দেশের গরিব মানুষের গল্প, যেটা বিশ্বমঞ্চে শ্রদ্ধা পেল। তাঁর Social Business মডেল এখন পৃথিবীর নানা দেশে পড়ানো হয়, অনুসরণ করা হয়।

কিন্তু এই সাফল্যের পথটা ফুলে ফুলে ঢাকা ছিল না। অনেক বাধা এসেছে, দেশের ভেতরে রাজনীতি, অপপ্রচার, প্রতিষ্ঠানে হস্তক্ষেপ। অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলেছে, তাঁর কাজকে থামাতে চেয়েছে। কিন্তু তিনি সবসময় বিশ্বাস করেছেন, যে কাজ মানুষের উপকারে আসে, সেটাকে কেউ চিরদিন আটকে রাখতে পারে না।

আজ ড. মুহাম্মদ ইউনুস শুধু একজন নোবেল বিজয়ী নন, তিনি বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) অর্জনে প্রধান উপদেষ্টা এবং পৃথিবীর নানা দেশে দারিদ্র্য দূরীকরণ, সামাজিক ব্যবসা ও উদ্ভাবনী সমাধানের পরামর্শদাতা। তাঁর কথা শুনতে আসে রাষ্ট্রপ্রধান, গবেষক, তরুণ উদ্যোক্তা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও।

তাঁর জীবন আমাদের একটাই জিনিস শেখায়, সমস্যা দেখেই হাত গুটিয়ে বসে থাকলে সমাজ কখনও বদলাবে না। একমাত্র কাজের মাধ্যমেই পরিবর্তন আসে। একজন মানুষও চাইলে একটা দেশ, এমনকি একটা পৃথিবী বদলে দিতে পারে, শুধু দরকার সেই বিশ্বাসটা নিজের মধ্যে জাগিয়ে তোলা।

ড. ইউনুস আমাদের দেখিয়েছেন, স্বপ্ন শুধু দেখা যায় না, স্বপ্ন বাস্তবেও রূপ দেওয়া যায়, যদি সেই স্বপ্নে কাজ জুড়ে থাকে। তাঁর জীবন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমরা কেউই ছোট নই, আমাদের প্রতিটি সিদ্ধান্তই কারও জীবনে আশার আলো হতে পারে।

এই মানুষটাই আমাদের জন্য আমাদের দেশের জন্য আমাদের সবার জন্য সবচেয়ে বেশি যোগ্য একজন মানুষ।
ড. ইউনুসের জীবনের দিকে তাকাও। ভাবো, তুমি এখন যেখানেই থাকো, সেখান থেকেই তুমি শুরু করতে পারো।
তুমিও একদিন এক অনুপ্রেরণার গল্প হয়ে উঠতে পারো।

সবাই আমার পেইজটি ফলো করুন।
Unknown Facts About

1. Founding and History: BMW, Bayerische Motoren Werke AG, was founded in 1916 in Munich, Germany, initially producing aircraft engines. The company transitioned to motorcycle production in the 1920s and eventually to automobiles in the 1930s.

2. Iconic Logo: The BMW logo, often referred to as the "roundel," consists of a black ring intersecting with four quadrants of blue and white. It represents the company's origins in aviation, with the blue and white symbolizing a spinning propeller against a clear blue sky.

3. Innovation in Technology: is renowned for its innovations in automotive technology. It introduced the world's first electric car, the BMW i3, in 2013, and has been a leader in developing advanced driving assistance systems (ADAS) and hybrid powertrains.

4. Performance and Motorsport Heritage: BMW has a strong heritage in motorsport, particularly in touring car and Formula 1 racing. The brand's M division produces high-performance variants of their regular models, known for their precision engineering and exhilarating driving dynamics.

5. Global Presence: BMW is a global automotive Company

6. Luxury and Design: is synonymous with luxury and distinctive design, crafting vehicles that blend elegance with cutting-edge technology and comfort.

7. Sustainable Practices: BMW has committed to sustainability, incorporating eco-friendly materials and manufacturing processes into its vehicles, as well as advancing electric vehicle technology with models like the BMW i4 and iX.

8. Global Manufacturing: BMW operates numerous production facilities worldwide, including in Germany, the United States, China, and other countries, ensuring a global reach and localized production.

9. Brand Portfolio: In addition to its renowned BMW brand, the company also owns MINI and Rolls-Royce, catering to a diverse range of automotive tastes and luxury segments.


Unknown Facts About

1. Founding and History: BMW, Bayerische Motoren Werke AG, was founded in 1916 in Munich, Germany, initially producing aircraft engines. The company transitioned to motorcycle production in the 1920s and eventually to automobiles in the 1930s.

2. Iconic Logo: The BMW logo, often referred to as the "roundel," consists of a black ring intersecting with four quadrants of blue and white. It represents the company's origins in aviation, with the blue and white symbolizing a spinning propeller against a clear blue sky.

3. Innovation in Technology: BMW is renowned for its innovations in automotive technology. It introduced the world's first electric car, the BMW i3, in 2013, and has been a leader in developing advanced driving assistance systems (ADAS) and hybrid powertrains.

4. Performance and Motorsport Heritage: BMW has a strong heritage in motorsport, particularly in touring car and Formula 1 racing. The brand's M division produces high-performance variants of their regular models, known for their precision engineering and exhilarating driving dynamics.

5. Global Presence: BMW is a global automotive Company

6. Luxury and Design: BMW is synonymous with luxury and distinctive design, crafting vehicles that blend elegance with cutting-edge technology and comfort.

7. Sustainable Practices: BMW has committed to sustainability, incorporating eco-friendly materials and manufacturing processes into its vehicles, as well as advancing electric vehicle technology with models like the BMW i4 and iX.

8. Global Manufacturing: BMW operates numerous production facilities worldwide, including in Germany, the United States, China, and other countries, ensuring a global reach and localized production.

9. Brand Portfolio: In addition to its renowned BMW brand, the company also owns MINI and Rolls-Royce, catering to a diverse range of automotive tastes and luxury segments.

Unknown Facts About

1. Founding and History: BMW, Bayerische Motoren Werke AG, was founded in 1916 in Munich, Germany, initially producing aircraft engines. The company transitioned to motorcycle production in the 1920s and eventually to automobiles in the 1930s.

2. Iconic Logo: The BMW logo, often referred to as the "roundel," consists of a black ring intersecting with four quadrants of blue and white. It represents the company's origins in aviation, with the blue and white symbolizing a spinning propeller against a clear blue sky.

3. Innovation in Technology: BMW is renowned for its innovations in automotive technology. It introduced the world's first electric car, the BMW i3, in 2013, and has been a leader in developing advanced driving assistance systems (ADAS) and hybrid powertrains.

4. Performance and Motorsport Heritage: BMW has a strong heritage in motorsport, particularly in touring car and Formula 1 racing. The brand's M division produces high-performance variants of their regular models, known for their precision engineering and exhilarating driving dynamics.

5. Global Presence: BMW is a global automotive Company

6. Luxury and Design: BMW is synonymous with luxury and distinctive design, crafting vehicles that blend elegance with cutting-edge technology and comfort.

7. Sustainable Practices: BMW has committed to sustainability, incorporating eco-friendly materials and manufacturing processes into its vehicles, as well as advancing electric vehicle technology with models like the BMW i4 and iX.

8. Global Manufacturing: BMW operates numerous production facilities worldwide, including in Germany, the United States, China, and other countries, ensuring a global reach and localized production.

9. Brand Portfolio: In addition to its renowned BMW brand, the company also owns MINI and Rolls-Royce, catering to a diverse range of automotive tastes and luxury segments.


#টেইকব্যাকবাংলাদেশ
#টেইক_ব্যাক_বাংলাদেশ


















Unknown Facts About

1. Founding and History: BMW, Bayerische Motoren Werke AG, was founded in 1916 in Munich, Germany, initially producing aircraft engines. The company transitioned to motorcycle production in the 1920s and eventually to automobiles in the 1930s.

2. Iconic Logo: The BMW logo, often referred to as the "roundel," consists of a black ring intersecting with four quadrants of blue and white. It represents the company's origins in aviation, with the blue and white symbolizing a spinning propeller against a clear blue sky.

3. Innovation in Technology: is renowned for its innovations in automotive technology. It introduced the world's first electric car, the BMW i3, in 2013, and has been a leader in developing advanced driving assistance systems (ADAS) and hybrid powertrains.

4. Performance and Motorsport Heritage: BMW has a strong heritage in motorsport, particularly in touring car and Formula 1 racing. The brand's M division produces high-performance variants of their regular models, known for their precision engineering and exhilarating driving dynamics.

5. Global Presence: BMW is a global automotive Company

6. Luxury and Design: is synonymous with luxury and distinctive design, crafting vehicles that blend elegance with cutting-edge technology and comfort.

7. Sustainable Practices: BMW has committed to sustainability, incorporating eco-friendly materials and manufacturing processes into its vehicles, as well as advancing electric vehicle technology with models like the BMW i4 and iX.

8. Global Manufacturing: BMW operates numerous production facilities worldwide, including in Germany, the United States, China, and other countries, ensuring a global reach and localized production.

9. Brand Portfolio: In addition to its renowned BMW brand, the company also owns MINI and Rolls-Royce, catering to a diverse range of automotive tastes and luxury segments.


Unknown Facts About

1. Founding and History: BMW, Bayerische Motoren Werke AG, was founded in 1916 in Munich, Germany, initially producing aircraft engines. The company transitioned to motorcycle production in the 1920s and eventually to automobiles in the 1930s.

2. Iconic Logo: The BMW logo, often referred to as the "roundel," consists of a black ring intersecting with four quadrants of blue and white. It represents the company's origins in aviation, with the blue and white symbolizing a spinning propeller against a clear blue sky.

3. Innovation in Technology: BMW is renowned for its innovations in automotive technology. It introduced the world's first electric car, the BMW i3, in 2013, and has been a leader in developing advanced driving assistance systems (ADAS) and hybrid powertrains.

4. Performance and Motorsport Heritage: BMW has a strong heritage in motorsport, particularly in touring car and Formula 1 racing. The brand's M division produces high-performance variants of their regular models, known for their precision engineering and exhilarating driving dynamics.

5. Global Presence: BMW is a global automotive Company

6. Luxury and Design: BMW is synonymous with luxury and distinctive design, crafting vehicles that blend elegance with cutting-edge technology and comfort.

7. Sustainable Practices: BMW has committed to sustainability, incorporating eco-friendly materials and manufacturing processes into its vehicles, as well as advancing electric vehicle technology with models like the BMW i4 and iX.

8. Global Manufacturing: BMW operates numerous production facilities worldwide, including in Germany, the United States, China, and other countries, ensuring a global reach and localized production.

9. Brand Portfolio: In addition to its renowned BMW brand, the company also owns MINI and Rolls-Royce, catering to a diverse range of automotive tastes and luxury segments.

Unknown Facts About

1. Founding and History: BMW, Bayerische Motoren Werke AG, was founded in 1916 in Munich, Germany, initially producing aircraft engines. The company transitioned to motorcycle production in the 1920s and eventually to automobiles in the 1930s.

2. Iconic Logo: The BMW logo, often referred to as the "roundel," consists of a black ring intersecting with four quadrants of blue and white. It represents the company's origins in aviation, with the blue and white symbolizing a spinning propeller against a clear blue sky.

3. Innovation in Technology: BMW is renowned for its innovations in automotive technology. It introduced the world's first electric car, the BMW i3, in 2013, and has been a leader in developing advanced driving assistance systems (ADAS) and hybrid powertrains.

4. Performance and Motorsport Heritage: BMW has a strong heritage in motorsport, particularly in touring car and Formula 1 racing. The brand's M division produces high-performance variants of their regular models, known for their precision engineering and exhilarating driving dynamics.

5. Global Presence: BMW is a global automotive Company

6. Luxury and Design: BMW is synonymous with luxury and distinctive design, crafting vehicles that blend elegance with cutting-edge technology and comfort.

7. Sustainable Practices: BMW has committed to sustainability, incorporating eco-friendly materials and manufacturing processes into its vehicles, as well as advancing electric vehicle technology with models like the BMW i4 and iX.

8. Global Manufacturing: BMW operates numerous production facilities worldwide, including in Germany, the United States, China, and other countries, ensuring a global reach and localized production.

9. Brand Portfolio: In addition to its renowned BMW brand, the company also owns MINI and Rolls-Royce, catering to a diverse range of automotive tastes and luxury segments.


#টেইকব্যাকবাংলাদেশ
#টেইক_ব্যাক_বাংলাদেশ

















বিসমিল্লাহির রহমানির রহিমপ্রিয় দেশবাসী, শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, ছাত্র-ছাত্রী, বয়স্ক, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাইকে আম...
06/06/2025

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

প্রিয় দেশবাসী, শিশু, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, ছাত্র-ছাত্রী, বয়স্ক, বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ সবাইকে আমার সালাম জানাচ্ছি।

আসসালামু আলাইকুম।

শুরুতেই আপনাদের সবাইকে জানাই পবিত্র ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক। প্রতি বছরই এই দিনটি আমাদের সামনে হাজির হয় ত্যাগের এক মহান দৃষ্টান্ত হয়ে।

আমরা যদি কোরবানীর মাহাত্ম্যকে ধারণ করে লোভ, স্বার্থপরতা, হিংসা-বিদ্বেষ মুক্ত হয়ে সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে নিজেদের নিয়োজিত করতে না পারি, তাহলে কোরবানীর ঈদ আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়। আসুন, এ বছর কোরবানিকে সুন্দর, ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত করে গরিববান্ধব করে তুলি।

প্রিয় দেশবাসী,
কোরবানির পশুর চামড়া থেকে অর্জীত আয়ে আমার-আপনার দরিদ্র আত্মীয়পরিজন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও দেশের লক্ষ লক্ষ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী উপকৃত হয়। আমাদের গরীব স্বজন ও প্রতিবেশিরা তাদের হক যেন ঠিক ঠিক বুঝে পায় সেদিকে আমাদের মনোযোগ দিতে হবে। তবেই এই উৎসবটি হয়ে উঠবে ধনী গরীব সকলেরই উৎসব।

পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক বিষয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সরকারের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি কাজ করছে, একটি কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। কোরবানির চামড়া সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা, অভিযোগ ও পরামর্শ এই হটলাইনের নম্বরে ফোন করে নেওয়া যাবে। আমরা এবছর কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে ৩০ হাজার টন লবণ বিনামূল্যে সরবরাহ করেছি।

কোরবানির ঈদে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পরিস্কার পরিচ্ছনতা। আমি দেশবাসীর প্রতি আকূল আহ্বান জানাই আপনারা সকলে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে সমবেতভাবে এগিয়ে আসবেন। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

এ বছর যারা পবিত্র হজব্রত পালন করেছেন তাদের প্রত্যেককে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। মহান রাব্বুল আলামিনের অশেষ মেহেরবাণীতে আপনাদের দোয়ায় এবং সংশ্লিষ্ট সবার সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের ফলে এ বছর আমাদের হজ ব্যবস্থাপনায় সাফল্য এসেছে। প্রথমবারের মতো সরকারি ব্যবস্থাপনায় ‘লাববায়েক’ অ্যাপের মাধ্যমে হজের সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত হজ ব্যবস্থাপনায় কোনো অনিয়মের খবর আসেনি। টাকা দিয়েও হজে যেতে না পারার যন্ত্রণায় কাউকে কাঁদতে হয়নি। হজক্যাম্প কিংবা বিমানবন্দরে কোনো হাজিকে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ করতে হয়নি। প্রথমবারের মতো সরকারি টাকায় কাউকে হজে পাঠানো হয়নি।

প্রিয় দেশবাসী,
ঈদ-উল-ফিতরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘমেয়াদে বাজারের জিনিসপত্রের দাম স্থিতিশীল রাখতে আমরা তৎপর হয়েছি। এবার কোরবানির ঈদেও কোনো জিনিসের দাম যাতে আকস্মিকভাবে বেড়ে না যায় সেদিকে আমরা সর্বোচ্চ নজর দিয়েছি। ফলে এবার আলু, পেঁয়াজ, ডিম, চিনি, শাকসবজি-তরিতরকারি ও মসলাসহ অধিকাংশ পণ্যের দাম গত বছরের তুলনায় কমেছে। আমরা সার্বিক বাজার ব্যবস্থাকে দুর্বৃত্তদের চক্র থেকে বের করে এনে বাজারে একটা প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছি। জনগণকে নায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দিতে সরকারের সবরকমের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
পাশাপাশি, এই কোরবানির ঈদেও দেশবাসী যাতে নির্বিঘ্নে নিজেদের দেশের বাড়িতে যাতায়াত করতে পারেন সেজন্য সরকার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মানুষের জান-মালের নিরাপত্তায় সজাগ রয়েছেন, ঈদের ছুটির মধ্যেও বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। আমি আপনাদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
শুধু ঈদের সময় নয়, আগামী দিনে কখনোই বাস, রেল ও বিমানযাত্রায় কোনো ধরনের অনিয়ম যাতে না হয় সেজন্য সরকার একটি কেন্দ্রীয় অনলাইন টিকেটিং প্ল্যাটফর্ম করতে যাচ্ছে, যেখানে একই প্ল্যাটফর্ম থেকেই যাত্রীরা খুব সহজেই বাস, ট্রেন ও ফ্লাইটের টিকেট ক্রয় করতে পারবেন।
একইরকমভাবে সব ধরনের সরকারি সেবা যাতে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায় সেজন্য ‘নাগরিক সেবা বাংলাদেশ’ এই নামে একটি সেন্টার পরিচালিত হচ্ছে। দেশের সর্বত্র-শহরে, হাট-বাজারে তরুণ-তরুণীদের মাধ্যমে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সার্ভিস সেন্টার স্থাপনের কাজ শুরু করেছি। এটি ঢাকা শহরে কয়েকটি সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে শুরু হয়েছে।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্থানীয় তরুণ উদ্যোক্তারা নাগরিক সেবা কেন্দ্র থেকে সাধারণ নাগরিকদের এনআইডি, পাসপোর্ট, লাইসেন্স, পুলিশের কাছে জিডি করা, কর ফাইলিং করাসহ বিভিন্ন সরকারি ডিজিটাল সেবা দেবেন। এর ফলে দালাল চক্রের খপ্পর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে, নানা রকম হয়রানি ও ভোগান্তি কমবে বলে আমরা আশাবাদী। এই প্রজেক্ট শূন্য বাজেটে আমরা শুরু করেছি। দেশের বিদ্যমান অব্যবহৃত সম্পদ ব্যবহার করেই সামনে এগিয়ে চলা সম্ভব- এটাই আমরা বাস্তবে করে দেখার চেষ্টা করছি।

আমাদের চেষ্টা হচ্ছে প্রতিটি মন্ত্রণালয় থেকে যতগুলো সেবা এর আওতায় আনা যায় সবগুলোকে নিয়ে আসা। আমরা চেষ্টা করছি যাতে শিশু জন্মগ্রহণ করা মাত্রই তার জন্মসনদ পেয়ে যায়। ওটাই হবে তার নাগরিক স্বীকৃতি এবং রাষ্ট্র কর্তৃক তার দায়িত্ব গ্রহণের অঙ্গীকার। ওখান থেকেই যাবতীয় সকল সনদ সে তার নাগরিক অধিকার হিসেবে ক্রমাগতভাবে সম্মানের সঙ্গে পেতে থাকবে। এক অফিস থেকে আরেক অফিসে তার দৌঁড়াতে হবে না। দালালের পেছনে মাসের পর মাস ঘুরতে হবে না।
বিদেশ সফরে গেলে সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রায়ই আমাদেরকে সরকারি সেবা পেতে নানারকম দুর্ভোগের কথা জানান। প্রবাসীদের জন্যও বিদেশে তাদের নিজ নিজ শহরে আমরা বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত নাগরিক সেবাকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নিচ্ছি। সেখান থেকেই তারা পাসপোর্ট নবায়ন, জাতীয় পরিচয়পত্র ইত্যাদি সংগ্রহ করতে পারবেন।

এগুলি কঠিন কাজ। এগুলোকে কঠিন করা হয়েছে। কিন্তু এখন সরকারের অভ্যন্তরে সাহসী ও উদ্যোগী সিনিয়র সচিব, সচিব এবং ডিজিদের সহযোগিতায় অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদকালে আমরা এটা সমাপ্ত করতে বদ্ধপরিকর।

প্রিয় দেশবাসী,
আপনারা জানেন, ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের পর এ সরকার যখন দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল ভয়াবহ। ভয়ংকরভাবে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের অর্থনীতিও এতটা খারাপ থাকে না, যতটা খারাপ করে দিয়েছে ১৬ বছরের লাগামহীন লুটপাটতন্ত্র।
আশার বিষয় হচ্ছে শুধু ব্যাংক নয়, প্রত্যেকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এখন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। জনগণের আমানত এখন নিরাপদ। অর্থনীতির অধিকাংশ সূচক ইতিবাচক ধারায় ফিরে এসেছে। আমাদের অর্থনীতির ইতিবাচক ধারা বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরকেও আকৃষ্ট করছে।

বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ শূন্যে নেমে যাওয়ার ভয়ে পতিত সরকার বিদেশি ব্যবসায়ীদের আয় নিজ দেশে নিতে দিচ্ছিল না। আমরা সেটা নিরসন করেছি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে ইতিবাচক অবস্থায় নিয়ে আসতে পেরেছি।
এ অর্থবছরের আমরা চেষ্টা করেছি এমন একটি বাজেট দিতে যা সত্যিকার অর্থে জনকল্যাণমুখী হয়। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি বাজেট তার আগের বছরের চেয়ে ছোট হয়েছে। প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক ধারণা থেকে সরে এসে আমরা চেষ্টা করেছি সামগ্রিক উন্নয়নের ধারণায় জোর দিতে। এই বাজেট প্রথাগত ভৌত অবকাঠামো তৈরির খতিয়ান নয়, এই বাজেটে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে মানুষকে।

নজরদারি বৃদ্ধির ফলে রপ্তানি আয় বেড়েছে। অর্থনীতির দুঃসময়ে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা রেমিটেন্স যোদ্ধা হিসেবে এগিয়ে এসেছেন, যার ফলে রেমিটেন্স প্রবাহ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি জাতির পক্ষ থেকে সকল রেমিটেন্স যোদ্ধাকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।



স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পর অর্থ পাচার রোধে কঠিন পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ছাড়া পুরোনো আমদানি দায় পরিশোধ হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপরও চাপ কমে এসেছে।

রাজস্ব আদায় বাড়ানোর জন্যে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভেঙে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ এবং ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে দুটি স্বতন্ত্র বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এটি একটি বড় কাঠামোগত সংস্কার। এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশাল আকারের দুর্নীতি কমবে, রাজস্ব ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়বে, স্বার্থের দ্বন্দ্ব কমবে এবং রাজস্ব আহরণের আওতা সম্প্রসারিত হবে।

অর্থনীতিসহ বিগত মাসগুলোতে সরকারের প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় ছোটবড় বহু সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। মোট ৫৪টি মন্ত্রণালয়ে এক হাজারেরও ওপরে সংস্কার ও উন্নয়ন সংক্রান্ত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি আমরা যে সংস্কার কমিশন করেছিলাম তাদের সুপারিশের মধ্য থেকে আশু করণীয় সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়গুলো কাজ করে যাচ্ছে। মে মাস পর্যন্ত বিভিন্ন সংস্কার কমিশন থেকে প্রাপ্ত সুপারিশের ভিত্তিতে ৫৪টি মন্ত্রণালয়ে ১২৯টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

এ সকল সংস্কারকাজের মধ্যে কয়েকটি চুম্বক অংশ আজ আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। আইন ও বিচার বিভাগ মোট ৩৩টি গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইবুনালস) অ্যাক্ট ১৯৭৩ সংশোধন ও পুর্নগঠন করে আইনটি আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা। বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্ট বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়ন ও জারি করা হয়েছে।
এর অধীনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ইতিহাসে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে।

দেওয়ানি কার্যবিধির সংশোধন করা হয়েছে। যার ফলে এখন বাদীকে আর দিনের পর দিন সশরীরে আদালতে যেতে হবে না। একেকটি দেওয়ানি মামলা নিষ্পত্তি হতে আগে যত সময় লাগত এই সংশোধনীর ফলে সময়সীমা অর্ধেকে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে আমরা মনে করছি।

দেশের একহাজারের বেশি অবকাঠামো এবং প্রতিষ্ঠানের নাম পলাতক প্রধানমন্ত্রীর বাবা-মা-ভাই-বোন-আত্মীয়স্বজনের নামে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল। তার মধ্যে ছিল সেনানিবাস, বিমানঘাঁটি, নৌ-বাহিনীর জাহাজ, মেগাসেতু, সড়ক, স্থাপনা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, গবেষণাকেন্দ্র- আরও বহু কিছু। এগুলো সব নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করা হয়েছে। প্রবাসী ভাই-বোনদের অনেকদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পাওয়ার অব অ্যার্টনি বিধিমালা সংশোধন করা হয়েছে। এখন পুরোনো পাসপোর্টে ‘নো ভিসা রিকোয়ার্ড স্টিকার’ থাকলে কিংবা জন্মসনদ থাকলে বিদেশ থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পাদন করতে পারবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে আইনগত সহায়তা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে বিস্তার করা হবে। বছরে এখন গড়ে ৩৫ হাজার মামলা নিষ্পত্তি হয়, আমাদের লক্ষ্য এটিকে ২ লক্ষ মামলায় উন্নীত করা। মামলা দায়েরের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই যাদের বিরুদ্ধে মামলার কোনো ভিত্তি নেই তাদের বাদ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি দেশের মানুষকে লুটপাটতন্ত্র থেকে বের করে আনতে। আপনারা জানেন, বিগত ১৬ বছরে উন্নয়নের নামে মেগা প্রকল্প নিয়ে কি পরিমাণ লুটপাট হয়েছে। মেগা প্রকল্পগুলো যেন হয়ে উঠেছিল মেগা ডাকাতির প্রকল্প। আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প পুনঃরায় মূল্যয়ন করে দেখেছি যে প্রায় সব প্রকল্পেই ভৌতিক ব্যয় ধরা হয়েছে। শুধুমাত্র সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, সেতু বিভাগ, রেল মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ—এই পাঁচটি বিভাগেই ব্যয় সংকোচ করা হয়েছে ৪৬ হাজার ৩০৮ কোটি টাকা।
এই টাকা দিয়ে জ্বালানি খাতে সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দিয়ে বকেয়ার পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনা হয়েছে। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করে সব ধরনের ঋণের ফাঁদ থেকে বেরিয়ে আসা আমাদের অগ্রাধিকার।

দেশে বিনিয়োগ বাড়ানো ও নতুন কর্মসংস্থান তৈরিতে আমাদের গুরুত্ব দিতেই হবে। তা না হলে এদেশকে আমরা যে স্থানে নিয়ে যেতে চাই সেখানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ব্যাপারে রাজনৈতিক দল ও জনগণ আমাদের সর্বাত্মক সমর্থন করছেন। সকলের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ, কৌতূহল আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নত করতে ৩০টি মূল সংস্কারকাজকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যেই ১৮টি সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে এবং দেশি-বিদেশি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংযোগ সৃষ্টি করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। গত অক্টোবর হতে মার্চ পর্যন্ত নেট বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে মোট ৭৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ প্রায় ৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫-এ নির্দিষ্ট খাতভিত্তিক সেশনের মাধ্যমে ব্যবসায়ী চেম্বার, ব্যাংক ও বেসরকারি খাতের অন্যান্য অংশীদারদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ইনভেস্টমেন্ট সামিটে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও আলোচনার জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, যাতে করে পরবর্তীতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা যেন বিনিয়োগবান্ধব বাংলাদেশ গড়তে নিজেদের প্রতিশ্রুতির কথা জানাতে পারেন। সম্প্রতি চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী চীনের ১০০টি কোম্পানির প্রায় দেড়শ বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুতই বড় আকারের বিদেশি বিনিয়োগ দেখতে পাব।
সম্প্রতি আমি চীন, কাতার, জাপানসহ কয়েকটি দেশ সফর করেছি। এসব সফরেও বিভিন্ন বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও অগ্রগতির কথা তুলে ধরেছি। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি যাতে বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পায় সে চেষ্টা করেছি। বাংলাদেশে কাতারের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশের লাখো লাখো ছেলে-মেয়েরা মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে। তাদের জন্য প্রযুক্তি শিক্ষা ও বিদেশি ভাষা শিক্ষা চালু করতে আমরা কাতার চ্যারিটির সাহায্য চেয়েছি।

গত মাসে আমি জাপান সফরে গিয়েছিলাম। এ সফরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা ও রেলপথ উন্নয়নের জন্য এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ ঘোষণা করেছেন। দ্বিপাক্ষিক তিনটি চুক্তিপত্র বিনিময় হয়েছে। এই সফরে দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক বিনিয়োগ ও অন্যান্য সহযোগিতার ক্ষেত্রে ছয়টি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে।

বাংলাদেশের কর্মশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধি এবং জাপানে তাদের কর্মসংস্থান সহজতর করার লক্ষ্যে জাপানের সঙ্গে আমরা দুটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছি। জাপানের শ্রমিক সংকট রয়েছে। আমরা আগামী পাঁচ বছরে জাপানে এক লক্ষ কর্মী পাঠানোর চুক্তি সই করেছি। এর চাইতেও আরও বেশি শ্রমিক ক্রমাগতভাবে পাঠানোর আয়োজন করে এসেছি।

প্রিয় দেশবাসী,

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর অর্থনৈতিকভাবে আমাদের যে উন্নতির শিখরে থাকার কথা ছিল, বিশ্বের কাছে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার কথা ছিল সে উচ্চতায় আমরা পৌঁছাতে পারিনি। আমরা চাই, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হোক। এ কারণে বিনিয়োগ পরিষেবার উন্নয়নের পাশাপাশি বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগ নিয়েছি। এটা করা সম্ভব না হলে দেশের কোটি কোটি মানুষের বেকারত্ব ঘুচবে না। অর্থনৈতিক সংকট রয়েই যাবে।
চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে অনেকের মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। মাঝেমাঝে এমন কথাও শুনেছি যে এ বন্দর বিদেশিদেরকে নাকি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

আমি আগেও জানিয়েছি, চট্টগ্রাম বন্দর হলো বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড। বর্তমানে এই হৃৎপিণ্ড অতি দুর্বল। এখন যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় তাকে রেখে দিলে আমাদের অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। এই হৃদপিণ্ডকে বড় করতে হবে। মজবুত করতে হবে। সুঠাম করতে হবে। তা করতে হলে বহু উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অভিজ্ঞদের সাহায্য লাগবে। আমরা যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি তারা বন্দর ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের সেরা, সবচেয়ে অভিজ্ঞ। তারা ইউরোপ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকাসহ বিশ্বজুড়ে বন্দর পরিচালনা করে। তাদের কাজ বন্দর ব্যবস্থাপনা করা, আমাদের লক্ষ্য হলো বন্দর ব্যবস্থাপনার কাজ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের কাছ থেকে শিখে নেওয়া। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, যদি ৩১ সালের মধ্যে আমরা বন্দরের কাজ শিখে ফেলি এর পরবর্তী ৫ বছরে অর্থাৎ ৩৬ সালের মধ্যে পৃথিবীর যত দেশে যত বন্দর এই কোম্পানিগুলো চালায় তাদের বহু বন্দর এই বাংলাদেশিরাই পরিচালনা করবে। আপনারা যে বন্দরেই পা দেবেন, দেখবেন সেখানে বাংলাদেশিরা আছেন। বহু লোকের কর্মসংস্থান হবে। বহু লোকের ওপরে ওঠার সুযোগ হবে। তাদের নিজেদের প্রয়োজনেই তারা আমাদের চাকরি দেবে। আগে যেকোনো জাহাজে চড়লে দেখতাম জাহাজের নাবিক চট্টগ্রামের কিংবা সিলেটের। বন্দরের কাজ একবার শিখে নিতে পারলে ভবিষ্যতে আমরা যে বন্দরে যাব না কেন দেখব সেখানে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, সিলেট আর বরিশালের লোক। বাংলাদেশের লোক।

আমাদের বন্দর যদি আধুনিক হয়, তা শুধু বাংলাদেশের অর্থনীতিতেই ভূমিকা রাখবে না, বরং আমরা নেপাল, ভূটানসহ পাশ্ববর্তী সকল দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবো। এই বন্দরই হবে এই অঞ্চলের অর্থনীতির সমৃদ্ধির চাবিকাঠি।

কুমিরা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত নানা বন্দরের কর্মচাঞ্চল্যে সমগ্র উপকূল অঞ্চল দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এই পুরো অঞ্চলে অনেকগুলো শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠবে শুধু সমুদ্রের সান্নিধ্য এবং তার ব্যবহারের দক্ষতার কারণে।
তার সঙ্গে গড়ে উঠবে আরেকটি নতুন শিল্প। আধুনিক পদ্ধতিতে সমুদ্রে মাছ পালন, আহরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের শিল্প। এটি আরেকটি নতুন জগত সৃষ্টি করবে। এ ব্যাপারে আমরা আমাদের বন্ধু দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি এবং তারা উৎসাহ সহকারে সাড়া দিয়েছেন।
বন্দর ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা যাদেরকে আনছি তারা পৃথিবীর যে-সব দেশে কাজ করে সেসব কোনো দেশেরই সার্বভৌমত্ব, জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েনি। আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই আপনারা নিজেদেরকে ভিত্তিহীন বিরোধিতা এবং অপপ্রচারের শিকার হতে দেবেন না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বন্দর ব্যবস্থাপনার উদ্যোগে আপনাদের দৃঢ় সমর্থন অব্যাহত রাখুন। যারা বিরোধিতা করছে তাদের প্রতিহত করুন।
আপনারা জানেন, আমাদের দেশে এখন ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। প্রায় ১ লক্ষ রোহিঙ্গা এসেছে ২০২৩ সাল থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর সময়কালে, যখন রাখাইন রাজ্যে ব্যাপক যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছিল। সেখানে চলমান সংঘাত ও মানবিক পরিস্থিতির কারণে এখনো অনেকে আসতে চেষ্টা করছেন। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসা বন্ধ করতে এবং যারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন তাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি।

আমরা যখন দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম, তখন রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে প্রায় মৃত অবস্থায় পেয়েছিলাম। আন্তর্জাতিক এজেন্ডা থেকে ইস্যুটি ঝরে পড়েছিল। সেই অবস্থা থেকে আমরা ইস্যুটিকে বিশ্ববাসীর দৃষ্টির সম্মুখভাগে নিয়ে আসতে পেরেছি।

আমি গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা বিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানিয়েছিলাম। আপনারা জেনে খুশি হবেন, জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র এ বিষয়ে একমত হয়েছে এবং তারা একটি উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হবে।
একইসাথে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা আন্তর্জাতিক জনমত গঠন করতে পেরেছি। গত মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসংঘের মহাসচিব এনতোনিও গুতেরেজ পরিষ্কারভাবে ঘোষণা করেছেন যে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান।
প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আরেকটি বড় অগ্রগতি হচ্ছে মিয়ানমার সরকার কর্তৃক প্রত্যাবাসনযোগ্য রোহিঙ্গাদের সর্বপ্রথম তালিকার ঘোষণা। গত এপ্রিল মাসে ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে আলোচনার সময় মিয়ানমার সরকার প্রথমবারের মতো ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনযোগ্য বলে ঘোষণা করেছে।

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ও আমাদের সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের সরকারসহ সেখানকার বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। আমরা যত দেশেই সফর করেছি সব দেশে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় রাষ্ট্রীয় নেতা ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তাদের সহযোগিতা চেয়েছি। তারাও ইতিবাচকভাবে আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব গত মার্চ মাসে ঢাকা সফরকালে রাখাইন‌ রাজ্যে মানবিক বিপর্যয়ের মোকাবেলার জন্য একটি ত্রাণ চ্যানেলের প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন এই প্রস্তাবটি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে সহায়ক হবে। বিষয়টি প্রস্তাব পর্যায়েই রয়ে গেছে।

আমরা লক্ষ্য করেছি রাখাইনের জন্য বাংলাদেশ করিডোর দিয়ে দিয়েছে বলে একটা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমি সুস্পষ্টভাবে বলছি, এটি সর্বৈব মিথ্যা। এটা চিলে কান নিয়ে যাওয়ার গল্প। যারা অসত্য কল্পকাহিনী বানিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে ক্রমাগত বিভ্রান্ত করে অশান্তি সৃষ্টিতে নিয়োজিত, এটা তাদেরই শিল্পকর্ম। আপনারা এ বিষয়ে হুঁশিয়ার থাকবেন। কোনোভাবেই বিভ্রান্ত হবেন না। এসব অপপ্রচার সত্ত্বেও আমরা লক্ষ্যচ্যুত হবো না। এই জটিল সমস্যাটি সমাধানে আমাদের কাজ চালিয়ে যাব। ‌

প্রিয় দেশবাসী,
আগামী মাসে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বছর পূর্ণ হবে। যাদের আত্মত্যাগের কারণে এই অভ্যুত্থান সম্ভব হলো আমরা তাদেরকে এবং তাদের পরিবারকে প্রতি মুহূর্তে আমাদের দৃষ্টিতে রেখেছি। তাদের জন্য নানা কর্মসূচি আমরা বাস্তবায়ন করে চলেছি। এখন পর্যন্ত ৮৩৪টি শহীদ পরিবারের মধ্যে ৬৩০টি শহীদ পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ৬৩ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্রের জন্য ব্যাংক চেক দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট যাঁরা আছেন, তাঁদের ওয়ারিশ নির্ধারণ সংক্রান্ত বিষয় নিষ্পত্তি সাপেক্ষে সঞ্চয়পত্র দেওয়া হবে।

এর পাশাপাশি গণ-অভ্যুত্থানে আহত প্রায় সাড়ে ১২ হাজার জনকে ১০৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের মধ্যে সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে এ পর্যন্ত ১৫ হাজার ৩৯৩ জন চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের মাধ্যমে ৪০ জন আর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ১১ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। তাঁদের চিকিৎসা বাবদ এ পর্যন্ত সরকার ৬১ কোটি টাকা ব্যয় করেছে এবং এই ব্যয় অব্যাহত আছে।

আরও ২৮ জন জুলাই যোদ্ধাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও তুরস্কে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, চীন, মালয়েশিয়া ও নেপাল থেকে ২৬ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিয়েছেন। এই চিকিৎসকবৃন্দ শুধু যাতায়াত খরচ গ্রহণ করেছেন। এর বেশি কিছু তাঁরা গ্রহণ করতে চাননি। আমরা তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

এ পর্যন্ত শহীদ পরিবারগুলোকে সঞ্চয়পত্র প্রদান, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও চেক প্রদান বাবদ সরকার মোট ২৮৫ কোটি টাকা ব্যয় করেছে।

প্রিয় দেশবাসী,



আমি শুরু থেকেই বলেছি, পতিত স্বৈরাচার বাংলাদেশকে যেভাবে ধ্বংসস্তূপ বানিয়েছে সেখান থেকে নতুন করে যাত্রা শুরু করতে হলে ন‍্যূনতম তিনটি আবশ্যিক কাজ সম্পন্ন করতে হবে:
প্রথমত, বিচার ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ দৃশ্যমান করে তোলা।

দ্বিতীয়ত, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক পুর্নগঠন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর সংস্কার সাধনে প্রয়োজনীয় ঐক্যমত ও পথনকশা তৈরি করা।

তৃতীয়ত, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করে ক্ষমতা হস্তান্তরের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। এ লক্ষ্যে ধ্বংসপ্রাপ্ত নির্বাচন ব্যবস্থাকে স্থায়ীভাবে সংস্কার করা।
এই তিনটি ম‍্যান্ডেট হচ্ছে দেশবাসীর সাথে আমাদের চুক্তি। চব্বিশের শহীদের রক্তেভেজা এই চুক্তি আপনাদের সার্বিক সমর্থন, আস্থা ও সহযোগিতা নিয়ে এবং পতিত শক্তি ও তার দোসরদের সৃষ্ট সকল বাধা-বিপত্তিকে পরাভূত করে আমরা সম্মিলিতভাবে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবো বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।

গত বছর জুলাই-আগস্ট মাসে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞসহ বিগত ১৬ বছরের গুম-খুন নির্যাতনের সত্য উদঘাটন এবং আর্থিক খাতের সীমাহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর প্রসিকিউশন টিম গঠন ও তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের পাশাপাশি বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা প্রক্রিয়াধীন ছিল। যত দ্রুত সম্ভব বিচারকাজ শুরুর ব্যাপারে আমরা আশাবাদী ছিলাম। আপনারা জানেন, জুলাইয়ে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের বিচার ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। বিচারকাজ যেন দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হয় সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে যত রকম সহযোগিতা প্রয়োজন আমরা তা দিচ্ছি। বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এজলাস কক্ষ ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো বিচার পর্ব আদালতের অনুমতিক্রমে সরাসরি কিংবা রেকর্ডকৃত পদ্ধতিতে গণমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। আমরা বিশ্বাস করি, এতে করে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে। বিচার নিয়ে অপপ্রচার বন্ধ হবে।

প্রসিকিউশন বলছে, বিগত সরকার পতনের পর তাদের আজ্ঞাবহ ব্যক্তিরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্যপ্রমাণ বিনষ্ট করার চেষ্টা করেছে। থানা, হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানের দলিলপত্র পুড়িয়ে বা লুকিয়ে নষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। বিভিন্ন অপরাধমূলক স্থাপনার আকার আকৃতি, দেয়াল ইত্যাদি ভেঙে এবং বিকৃত করে প্রমাণ লুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। বিভিন্ন ডিজিটাল এভিডেন্স, যেমন ভিডিও, অডিও, ইন্টারনেট ডেটা যেগুলো ডিলিট বা ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তারা সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেগুলো রিকভার এবং রেস্টোর করার কাজ করছেন। এ কাজে আমরা দেশবাসীর কাছেও সহযোগিতা কামনা করছি।

স্বৈরাচারী সরকারের আমলে গত ১৬ বছরে রাজনৈতিক ভিন্নমত দমনের জন্য বিপুল সংখ্যক মানুষকে গুম করা হয়েছে। এই মানুষগুলোকে এমনসব বন্দিশালায় আটকে রাখা হয়েছিল যাদের কোনো কোনোটির আয়তন ছিল মাত্র তিন ফিট বাই তিন ফিট।

গুমের ঘটনা তদন্ত ও এই ভয়াবহ অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচারের জন্য একটি স্বাধীন গুম সংক্রান্ত কমিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তারা গুমের এমন এমন রোমহর্ষক ঘটনা আবিষ্কার করেছে যা নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত সীমা ছাড়িয়ে গেছে। মানুষকে পেট কেটে সিমেন্টের বস্তা ঢুকিয়ে নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হতো, ইনজেকশন দিয়ে অজ্ঞান করে জলন্ত ইট ভাটায় নিক্ষেপ করা হতো, ট্রেন ও গাড়ির নিচে ছুঁড়ে ফেলা হতো। কমিশন এখন পর্যন্ত দুটি অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তারা এখনো প্রতিনিয়ত নতুন নতুন অভিযোগ পাচ্ছে।

ইতোমধ্যে গুমের তদন্ত কার্যক্রমের জন্য ঢাকা শহরের তিনটি, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়া জেলায় তিনটি গুমের কেন্দ্র পরিদর্শন ও সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্তকাজে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়-মাদ্রাসা পর্যায়ে গণশুনানি গ্রহণ করা হয়েছে। মোট আট শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ গণ-শুনানিতে অংশ নিয়েছেন।

গুম সংক্রান্ত বেশ কিছু অভিযোগ ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কাছে জমা হয়েছে। এছাড়াও এ সংক্রান্ত একটি আইন প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এটি চূড়ান্ত হবে বলে আশা করছি।

গত ১৬ বছর ধরে এদেশের প্রতিটি স্তরে অপরাধ, অনিয়ম, দুর্নীতির ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। এই রোগাক্রান্ত রাষ্ট্রব্যবস্থাকে রোগমুক্ত করে জনগণের কল্যাণমুখী করতে হলে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর সক্রিয় অংশগ্রহণ জরুরি। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। বিভিন্ন ইস্যুতে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলাদা এবং একত্রিতভাবে বৈঠক করেছি।

সর্বশেষ গত মাসের শেষ সপ্তাহেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমি বৈঠক করেছি এবং চলতি সপ্তাহে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার শুরু করেছি। সরকার পরিচালনায় তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেছেন। রাজনৈতিক দলগুলো শুরু থেকে আমাদের সাথে সহযোগিতা করে এসেছে এবং সবসময়ই তারা সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

প্রিয় দেশবাসী,

আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব ও অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা একটি ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার কথা জানিয়েছিল। তারা আমাকেও সেখানে আমন্ত্রণ জানায়। আমি বলেছিলাম, দেশের সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ অন্যদের সঙ্গে নিয়ে সকলে মিলে এ ঘোষণাপত্র দেওয়া ভালো হবে।

এর পাশাপাশি আগামী জুলাই মাসেই সকল রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করে আমরা জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারবো বলে আশা করছি।

এই জুলাই সনদ হলো একটি প্রতিশ্রুতি। একটা জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছে সেগুলোর মধ্য থেকে রাজনৈতিক দলগুলো যেকয়টিতে একমত হয়েছে তার তালিকা থাকবে এই সনদে। জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে তারা জাতির কাছে সেগুলো বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করবে।

জুলাই সনদ অনুযায়ী আশুকরণীয় সংস্কার কাজগুলো আমরা বাস্তবায়ন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বাকি অংশের বেশকিছু কাজও আমরা শুরু করে যেতে চাই। আশা করি, অবশিষ্ট অংশ পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন অব‍্যাহত থাকবে।

প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে আমাদেরকে দৃঢ়ভাবে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। এর বাস্তবায়নের মাধ্যমে পুরো বিশ্বের কাছে দেশের নতুন ঐক্যবদ্ধ ভাবমূর্তি তুলে ধরা যাবে। বিশ্বব্যাপী সবার কাছে জাতি হিসেবে বাংলাদেশের শক্তি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি হবে।

ঐকমত্য কমিশন গঠন করা আমাদের একটি দুঃসাহসিক উদ্যোগ ছিল। অন্য কোনো দেশে এমন কোনো নজির নেই। এর মাধ্যমে আমরা জাতি হিসেবে রাজনৈতিক গভীরতার সন্ধান পেয়েছি। রাজনৈতিক ঐক্যে পৌঁছার জন্য ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সকল দলের দলগত প্রস্তুতি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা কমিশনের সঙ্গে ঐকান্তিক আলোচনা, জাতীয় লাইভ টেলিভিশনের সামনে সকল দলের ঐকমত্যে পৌঁছার একান্ত প্রয়াস আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এই কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে আমি সকল রাজনৈতিক দলের কাছে তাদের সীমাহীন ধৈর্য এবং কমিশনের প্রতি তাদের সহযোগিতা এবং সৌজন্য প্রকাশের জন্য জাতির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করি, আমাদের অসমাপ্

Address

Chittagong
4353

Telephone

+96894197966

Website

http://www.Facebook.com/

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when দৈনিক চট্টগ্রাম জেলা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to দৈনিক চট্টগ্রাম জেলা:

Share