12/08/2025
বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে উত্তাপ ক্রমেই বাড়ছে। তবে, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি) পরিচালিত সর্বশেষ জরিপে উঠে এসেছে এক চমকপ্রদ চিত্র। কাকে ভোট দেবেন, সেই বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি ৪৮ শতাংশেরও বেশি ভোটার। এই সংখ্যাটা দেশের রাজনৈতিক অগ্রগতির জন্য বড় এক প্রশ্নও তুলে ধরছে।
দলভিত্তিক জনসমর্থনের হিসাব:
জরিপ অনুযায়ী, যারা ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের মধ্যে :
বিএনপি: ১২%
জামায়াতে ইসলামী: ১০.৪%
এনসিপি: ২.৮%
তুলনামূলকভাবে আট মাস আগে (অক্টোবর) বিএনপির সমর্থন ছিল ১৬.৩%, জামায়াতের ১১.৩% এবং এনসিপির ২%। অর্থাৎ, বিএনপি ও জামায়াত উভয়ের ভোট কিছুটা কমেছে, এনসিপির ভোট সামান্য বেড়েছে।
বয়সভিত্তিক ভোটার প্রবণতা: জরিপে সবচেয়ে নজরকাড়া বিষয় হলো তরুণদের ভোট আচরণ।
২৭ বছরের নিচে: বিএনপি (৯%), জামায়াত (১২%), এনসিপি (৪%)।
২৮–৩৫ বছর: বিএনপি ও জামায়াত সমান জনপ্রিয় (প্রত্যেকে ১১%)।
৫০ বছরের বেশি: বিএনপি (১৬%), জামায়াত (৯%), এনসিপি (৪%)।
শিক্ষার স্তরভিত্তিক জনসমর্থন:
গ্রাজুয়েট: বিএনপি ও জামায়াত (প্রত্যেকে ১০%), এনসিপি (৪%)।
আনুষ্ঠানিক শিক্ষা নেই: বিএনপি (১৪%), জামায়াত (৯%), এনসিপি (২%)।
নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে জনমত:
৭০% অংশগ্রহণকারী মনে করেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তবে ১৫% একেবারেই ভিন্নমত পোষণ করেছেন, যা রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যাল।
এই জরিপ আমাদের সামনে দুইটি স্পষ্ট বাস্তবতা তুলে ধরছে। প্রথমত, বিপুলসংখ্যক (প্রায় অর্ধেক) ভোটার এখনো সিদ্ধান্তহীন। এর অর্থ, যে কোনো দল এখনো কৌশলগত প্রচারণা, জনসংযোগ ও বিশ্বাস অর্জনের মাধ্যমে ভোটের সমীকরণ বদলে দিতে পারে।
দ্বিতীয়ত, তরুণদের রাজনৈতিক ঝোঁক মূলধারার দলগুলোর প্রতি সীমিত আস্থা নির্দেশ করছে, যা দীর্ঘমেয়াদে রাজনৈতিক কাঠামোতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করতে পারে।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণে এই অনির্ধারিত ভোটার গোষ্ঠী হবে মূল ‘কিংমেকার’। তাই নির্বাচনী মাঠে শুধু দলীয় আনুগত্য নয়, বরং বিশ্বাসযোগ্যতা, স্বচ্ছতা এবং বাস্তব সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতিই নির্ধারণ করবে আগামী সংসদের রূপ।
— W TV সম্পাদকীয় ডেস্ক